নাটক রিভিউ -- 💞 " লাল মাংসের ঝোল " | | আমার বাংলা ব্লগ
আসসালামু আলাইকুম
হ্যালো বন্ধুরা,
আছেন কেমন আপনারা??
"আমার বাংলা ব্লগ" এর ভারতীয় ও বাংলাদেশী ভাই ও বোনেরা,আমি@shimulakter,আমি একজন নিয়মিত ইউজার।প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু নিয়ে পোস্ট শেয়ার করতে।আজ আমি নাটক রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। বাংলা নাটক আমার খুব ভালো লাগে।আশাকরি আমার আজকের নাটকের রিভিউ পোস্ট আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
স্ক্রিনশর্টঃ ইউ টিউব
নাম | লাল মাংসের ঝোল |
---|---|
পরিচালনা | মাসুম প্রধান |
রচনা | অনিমেষ আইচ |
দৈর্ঘ্য | ৪৩.২০ মিনিট |
অভিনয়ে | ফজলুর রহমান বাবু, শিল্পী সরকার অপু,অর্চিতা স্পর্শিয়া |
মুক্তির তারিখ | ২৪ শে জুন ২০২৩ ইং |
ধরন | নাটক |
ভাষা | বাংলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
নাটকটি সম্পূর্ণ গ্রামীন পরিবেশে নির্মিত হয়েছে। প্রথম দৃশ্যে দেখা যাবে ফজলুর রহমান বাবু আর তার স্ত্রী শিল্পী সরকার অপু বেত দিয়ে নানা রকমের জিনিস তৈরী করছে।এসব জিনিস গ্রামের হাটে নিয়ে নিজেই বিক্রি করবে। তবেই ঘরে খাবার আসবে।ফজলুর রহমানের দুই মেয়ে।বড় মেয়ে ফুলি বেশকিছু দিন জ্বরে আক্রান্ত।কিছুই মুখে দিতে পারছেনা।আর তারা তেমন স্বচ্ছল ও নয় যে ঘরে অন্য কোন খারার আছে যা কিনা মেয়ে জ্বরের মুখে খেতে পারে।এক কথায় দিন এনে দিন খায় এমন অবস্থা। যাক শেষে ফজলুর রহমান বাবু হাটে ছোট মেয়েকে নিয়ে গেলো।কারন এতো সব বেতের বানানো জিনিস একা তার পক্ষে এতো দূরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
স্ক্রিনশর্টঃ ইউ টিউব
ছোট মেয়েকে নিয়ে সব জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে তারা হাটে যাচ্ছিল।এমন সময় ফজলুর রহমান বাবু দেখে তার বড় মেয়ে ফুলি পুকুরঘাটে বসে আছে।আর পুকুরের পাশে ঝোপে গ্রামের কিছু বখাটে ছেলে তাস খেলছিলো।ফুলি কিংবা তার বাবা তাদের দেখেনি।কিন্তু আড়াল থেকে ছেলেগুলো ফুলিকে দেখছিলো।এরপর ফুলিকে তার বাবা বলেন, মা তুমি এখানে কি করো।ছোট মেয়ে বলে উঠে বাবা এ জায়গাটা আপুর খুব প্রিয়।তখন বড় মেয়ে ফুলির কাছে জানতে চায়, মা হাটে যাচ্ছি তোমার কিছু লাগবো।কিছু খাইতে মন চায়? তখন বড় মেয়ে কিছু সময় ভেবে নিয়ে বলে,বাবা আমি মাংস দিয়ে ভাত খাবো।তখন বড় মেয়ের কথা শুনে ফজলুর রহমান বাবু বলে ঠিক আছে আমি নিয়ে আসবো।এরপর মেয়ে বাড়ির দিকে চলে যায়। আর ছোট মেয়েকে নিয়ে বাবা হাটে চলে গলো।
স্ক্রিনশর্টঃ ইউ টিউব
তারা দুজন অনেকটা পথ হেঁটে হাটে গেলো।হাটে গিয়ে সেই জিনিসপত্র গুলো বিক্রি করার চেষ্টা করে যাচ্ছিলো।আর তাদের উল্টো দিকেই মাংসের দোকান।মেয়ে খেতে চেয়েছে মাংস দিয়ে ভাত বাবার চিন্তা কিভাবে মাংস নিয়ে যাবে।অনেকেই এলো কিন্তু কেউ দাম বলছে না জিনিসের।সবাই দামাদামি করে চলে যায়।জিনিসের দাম ই কেউ বলে না আর লাভ তো দূরেরই কথা।
ফজলুর রহমান বাবু সারাদিনে কিছুই বিক্রি করতে পারেনি।কিন্তু মেয়ের জন্য মাংস ও নিয়ে যেতে হবে।তাই সে হাটের পাশেই দোকান সেই দোকানে লাভ ছাড়াই সব জিনিসগুলো তার কাছে রেখে টাকা নিয়ে মাংসের দোকানে চলে গেলো।
অন্যদিকে মেয়ের জ্বর আবার বেড়ে গেছে।তাই মা তার মাথায় পানি দিচ্ছে।তখন মেয়েকে কিছু মুখে দিতে বলে কিন্তু মেয়ে মাকে বলে,বাবা মাংস নিয়ে আসবে, মাংস দিয়ে সে ভাত খাবে আজ।ওদিকে বাবা মাংসের দোকানে গিয়ে মাংস কিনতে গেলো। হাড় ছাড়া মাংস দিতে বলল।
স্ক্রিনশর্টঃ ইউ টিউব
এরপর বাবা যখন মাংস নিয়ে বাসায় আসে।দুই মেয়ে মাংস নিয়ে বসে তখন গল্প করতে থাকে।তারা শেষ কবে মাংস দিয়ে ভাত খেয়েছে।তখন ছোট মেয়ে বলে, তার বাবা গত কুরবানীর সময় ঢাকা থেকে মাংস এনে তাদের খাইয়েছিল।আর আজ এতোদিন পর আবার মাংস এলো বাসায়।তাদের ঘরে যেন ঈদের মতো আনন্দ হলো।
স্ক্রিনশর্টঃ ইউ টিউব
বড় মেয়ে মাংস দেখে আনন্দে তার বাবাকে বলে মাওলানা সাহেবকে আর তার বান্ধবীকে দাওয়াত দিতে চায়।তার বাবা তখন রাজি হয়।তাদের বাড়িতে আনন্দ উৎসব শুরু হয়ে গেলো।বড় মেয়ে মাওলানা সাহেবকে আর তার বান্ধবীকে দাওয়াত দিয়ে এলো।সবাইকে বিকেলে আসতে বলল।কারন রান্না হতে হতে বিকেল হয়ে যাবে।এভাবেই নানা আয়োজন চলতে লাগলো।কিন্তু শেষ পর্যন্ত আসলে কি হয়েছিল? মেয়েটি কি মন ভরে লাল মাংসের ঝোল দিয়ে ভাত খেয়েছিল।তার না খাওয়া অতৃপ্ত আত্মা কি লাল মাংসের ঝোল দিয়ে ভাত খেয়ে শান্তি পেয়েছিল?? সত্যি কথা বলতে এসব কিছু জানতে হলে আপনার নাটকটি দেখতে হবে।তবেই এ সবকিছুর উত্তর আপনি পেয়ে যাবেন।
আমার মতামত
লাল মাংসের ঝোল নাটকটিতে সবার অভিনয় এক কথায় অসাধারন হয়েছে। ফজলুর রহমান বাবুর অভিনয় সব সময় ই অন্য রকম।গ্রামীণ পরিবেশে তার অভিনয় এক কথায় দারুন।নাটকটি দেখতে বসে আমি এতোটাই নাটকের মধ্যে ডুবে গিয়েছিলাম যে,শেষ পর্যন্ত নাটকটি দেখে আমি কেঁদে ই ফেলেছি।সত্যি সব আর্টিষ্ট এতো সুন্দর অভিনয় করেছে যা দেখে মন ভরে গেছে।বড় মেয়ে ফুলি জ্বরের কারনে বেশ কিছুদিন কিছুই খেতে পারেনি।বাবার কাছে তার আবদার ছিল মাংসের ঝোল দিয়ে ভাত খাওয়ার।অভাবী বাবা মেয়ের শখ পূরণ করতে সেদিনের সব টাকা দিয়ে ই মাংস নিয়ে এসেছিল।কিন্তু লাল মাংসের ঝোল দিয়ে মেয়ের আর ভাত খাওয়া হয়নি।গ্রামের সেই বখাটে ছেলেগুলো তার সেই শখের লাল মাংসের ঝোল দিয়ে ভাত খেতে দেয়নি।অকালেই হারাতে হয়েছিল তার জীবন।খুব খারাপ লেগেছিল নাটকটি শেষ পর্যন্ত দেখে।কতটা ভালো অভিনয় করলে দর্শকের চোখে জল আসে তা আপনারা ভালোই বুঝতে পেরেছেন।আশাকরি আপনাদের কাছে ও ভালো লাগবে।
রেটিং
পরিচালনা | ৯ |
---|---|
কাহিনী | ৯ |
অভিনয় | ৯ |
বন্ধুরা সম্পূর্ণ নাটকটি নিজের ভাষায় লিখেছি।আশা করি নাটকটি আপনাদের ভালোই লাগবে।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।আবার কথা হবে পরবর্তী ব্লগে।আজ এখানেই বিদায়।সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
বাংলাদেশের নাটকের জগতের জনপ্রিয় একজন অভিনেতার নাম বজলুর রহমান বাবু। আগে ইনার নাটক প্রচুর পরিমাণে দেখতাম। দারুন একটা নাটকের রিভিউ আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন। আপনিও দারুন ভাবে নাটকের রিভিউটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
ফজলুর রহমান বাবুর নাটক বাস্তবধর্মী হয়।খুব ভালো লাগে। ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
Twitter link
ফজলুর রহমান বাবুর অভিনয় গুলো দারুণ হয়।একদম মনে হয় যে বাস্তবে করছে।আপু এখনো হয়তো এমন পরিবার আছে দিনে এনে দিনে খেতে হয়।বাস্তবের সাথে মিল রেখে নাটক টা করেছে। আপনার রিভিউ দেখে সত্যি অনেক ভালো লেগেছে আপু। অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল।
সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু আপনাকেও।
আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে লালা মাংসের ঝোল নাটকটি বেশ দারুন ভাবে রিভিউ এর মাধ্যমে শেয়ার করেছেন। আসলে এ নাটকটি আমি অনেকদিন আগে দেখেছিলাম আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছিল। আপনার নাটক রিভিউ দেখে আজকে আবার মনে পড়ে গেল। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি নাটক রিভিউ এর মাধ্যমে শেয়ার করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে ও।
আপু খুব সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দিয়েছেন। আপনার সম্পূর্ণ রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লেগেছে।গ্ৰামে যদি এমন কিছু বখাটে ছেলে থাকে তাহলে তাদের জন্য কখনো শান্তিতে বাঁচা সম্ভব নয়। এই ধরনের নাটক দেখলে খুব খারাপ লাগে। সময় পেলে অবশ্যই দেখবো। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
সুন্দর মন্তব্য পেয়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আপু।
এজাতীয় সামাজিক নাটকগুলো আমি বেশ পছন্দ করে থাকি। খুবই ভালো লাগে আমার কাছে এত সুন্দর সুন্দর নাটকগুলো। যেখানে হাস্যরস আর ভালোলাগা খুঁজে পাওয়া যায় সর্বদা।