আমার ছেলেবেলা -- 🥰 " এমন ঘটনায় খুব শব্দ করে কান্না করেছিলাম " || আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগে সবাইকে স্বাগতম
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয় "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ্র অশেষ রহমতে বেশ ভাল আছি।আর প্রতিনিয়ত ভালো থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশাকরি আপনারা ও এমনটাই চেষ্টা করে যাচ্ছেন ভালো থাকার।
আমি @shimulakter,"আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার।আমি ঢাকা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে।প্রতিদিনের মত আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু শেয়ার করতে তাইতো আজ ছেলেবেলার স্মৃতি নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়ে গেলাম।
এমন ঘটনায় খুব শব্দ করে কান্না করেছিলামঃ
প্রতিটি মানুষের জীবনে শৈশব হচ্ছে সোনালী অতীত।সেই অতীত কখনও সুখের। কখনও বা কষ্টের।তবে এখন সেই ছেলেবেলার স্মৃতিগুলো ভাবলে ভালো লাগাই কাজ করে।সেই দিন গুলো ছিল খুবই সুন্দর ও আনন্দমুখর।সেই ছেলেবেলার একটি ঘটনা আজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এলাম।আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে।
এই ঘটনাটি যখন ঘটে তখন আমি অনেকটা ই ছোট। আর ছেলেবেলা থেকে আমি আব্বুকে একটু বেশীই ভালোবাসি।তবে এখন আব্বু-আম্মু দুজনকেই বেশী ভালোবাসি। আজকের ঘটনাটি আমার আব্বুকে কেন্দ্র করে।আমার আব্বু যখন কলেজে পড়াশোনা করতো তখন থেকেই তিনি গান,নাটক বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বিষয়ের সাথে জড়িত ছিল,আম্মুর কাছে শুনেছি।কারন আমার আব্বু আমার আম্মুর ফুপুর ছেলে ছিল।আমার আব্বুর গানের গলা ছিল ভীষণ সুন্দর। এখনো যদি আমরা, সবাই গেট টুগেদার করি সেখানে আব্বু গলা ছেড়ে গান এখনো করেন।আর সবাই খুব ইনজয় করি।
আজকের ঘটনা যখন ঘটেছিল তখন আমি অনেকটা ই ছোট।তখন আমি আর আমার ভাইয়া ই ছিলাম।ছোট ভাই-বোন দুটো তখন ও হয়নি।তখন ও আব্বু মাঝে মাঝে সুযোগ পেলে মঞ্চে নাটক করতো।কিন্তু আম্মু কখনও নাটক দেখতে যায়নি।কারন আমরা যৌথ পরিবারে ছিলাম।আর যৌথ পরিবারে যারা থাকেন তারা জানেন কতোটা দায়িত্ব কর্তব্য ঘরের বউদের উপরে থাকে।
আম্মু খুব নরম স্বভাবের একজন মানুষ ছিলেন।আমরা ছোট ছোট দুই ভাই বোন ছিলাম।আমরা ই বা কোথায় থাকবো? তাই সবকিছু মিলিয়ে হয়তো কখন ও মঞ্চ নাটক আম্মুর দেখা হয়ে উঠেনি।তো একবার আব্বু খুব করে বলল আম্মুকে নাটক দেখতে যেতে।আম্মু আমাদের কার কাছেই বা রেখে যাবে, তাই রাজি হচ্ছিল না।পরে যাই হোক রাজি হলো আমাদের নিয়েই যাবে।আমিতো খুবই ঠান্ডা স্বভাবের ছিলাম।খুব একটা কথা বলতাম না।ভাইয়াকে নিয়ে একটু ভয় ছিল।কারন ভাইয়া খুব ছোটাছুটি করে।ছেলে বাচ্চা তো ছটফট ভাবটা বেশী।সেখানে গিয়ে কতোটুকু সময় সুস্থ হয়ে বসে সেটাই হচ্ছে ব্যাপার।তাই আম্মু ভাইয়ার জন্য বেশ কিছু খাবার নিয়ে নিলো।আর ঠিক করলো আম্মু আমাদের কে নিয়েই যাবে।
যথারীতি সেই দিনটি এলো।আব্বু আগেই চলে গিয়েছিল।আমরা পরে গেলাম।অনেক মানুষের ভীড় দেখলাম।আমরা যাওয়ার পর আমাদের ফুলের তোড়া দিয়ে বরন করে নিলো।তখন আমার খুব ভালো লেগেছিল।এতো মানুষের মাঝে আমাদের হাতে ফুলের তোড়া দেওয়াতে আমি অনেক বেশি ভালো লাগা অনুভব করছিলাম।এরপর আমাদেরকে হল রুমের প্রথম সারিতে বসিয়ে দেয়া হলো। আব্বু এসে আমাদের সাথে দেখা করে গেলো।
এরপর নাটক শুরু হওয়ার পালা।নাটক শুরু হলো।আব্বু জমিদার সেজেছিল।চুল সাদা করেছিল।আমার এখনো মনে আছে।আর নাটকের গানগুলো চমৎকার ছিল।যদিও গানের কথাগুলো আজ আর মনে নেই।নাটক খুব আনন্দ নিয়েই দেখছিলাম।আব্বু অভিনয় করছে এই প্রথম দেখছি। তারপরে এতো মানুষের মাঝে সে এক অন্য রকম ভালো লাগা মনের মাঝে অনুভব করছিলাম।ওদিকে ভাইয়া নানা রকমের খাবার খেয়ে যাচ্ছিল।বাবার প্রতি মেয়েদের ভালোবাসা একটু বেশীই থাকে।আমার তার চাইতেও ভালোবাসা একটু বেশীই ছিল।তাই আমি মুগ্ধতা নিয়ে নাটক দেখে যাচ্ছিলাম।
নাটকের ঠিক শেষ দৃশ্যের দিকে ভিলেন আব্বুকে অর্থাৎ জমিদার সাহেবকে গুলি করে দেয়।আব্বু সাথে সাথে মাটিতে পরে যায়।আর আব্বুর বুক থেকে রক্ত বের হতে দেখে আমি কান্না শুরু করে দেই।এতো জোরে জোরে কান্না শুরু করি আর দাঁড়িয়ে স্টেজের দিকে যাওয়ার জন্য উঠে পরি। কিন্তু আম্মু সাথে সাথে আমাকে ধরে ফেলে।আর বুঝাতে থাকে এটা নাটক।সত্যি সত্যি মারেনি।কে শোনে কার কথা।আমি জোরে জোরে কাঁদতে থাকলাম।আমার হাত ধরে আম্মু বসে রইলো।তখন সবাই নাটক না দেখে আমাকেই দেখছিলো।আজ ও এই ঘটনাটি মনে হলে খুবই হাসি পায়।ভাবি বসে সেদিন কি করেছিলাম।আব্বু নাটক শেষ করে তাড়াতাড়ি আমার সাথে দেখা দিতে এসেছিল।কারন আমার কান্না কিছুতেই থামছিল না।আব্বুকে দেখে আমার বিশ্বাস হয়েছিল আব্বু মারা যায়নি।সেদিন ভালো মতো বুঝে গিয়েছিলাম নাটক কাকে বলে। আজ আপনাদের মাঝে ছেলেবেলার এই ঘটনাটি শেয়ার করে নিজের ছেলেবেলার স্মৃতি স্মরন করলাম।আশাকরি আপনারা ও উপভোগ করেছেন। আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য চাইলে শেয়ার করতে পারেন।
পোস্ট বিবরন
শ্রেণী | আমার ছেলেবেলা |
---|---|
ক্যামেরা | SamsungA20 |
পোস্ট তৈরি | @shimulakter |
লোকেশন | ঢাকা,বাংলাদেশ |
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।আমার ছেলেবেলার আকস্মিক দূর্ঘটনার গল্পটি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমার পরিচয়
আমি শিমুল আক্তার।আমি একজন বাংলাদেশী।বাংলাদেশ ঢাকা থেকে আমি আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।আমি এম এস সি ( জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। ভালোবাসি বই পড়তে, নানা রকমের রান্না করতে,আর সবাইকে নতুন নতুন রান্না করে খাওয়াতে ভীষণ ভালোবাসি।ফটোগ্রাফি করতে আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।
Twitter link
ভালো লাগলে জেনে যে আংকেল সংস্কৃতির সাথে জড়িত ছিলেন।আর মঞ্চ নাটকে আপনি বাবার কে লুটিয়ে পড়তে দেখে ও বাবার বুকে রক্ত দেখে বেশ ভয়ে পেয়ে কান্না করেছেন।আসলে ছোট মানুষ তখন আপনি বুঝতে পারেন নি অভিনয় তাই এমন করে কান্না করেছেন।সবাই আপনার দিকে তাকিয়েছে আর মনে মনে নিশ্চই ভেবেছে যে বাবার প্রতি ছোট্ট মেয়েটার কি ভালোবাসা।ধন্যবাদ আপু ছোটবেলার সৃতিচারণ করে পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ দিদি সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।
আমরাও তো আপনার মত এরকম নাটক দেখার সুবিধা এখনো হয়নি। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো সত্যি সত্যি গুলি লেগে গিয়েছে। তারপর বুঝতে পারলাম এটা নাটক ছিল। এটা ঠিক যে মেয়েদের তাদের বাবার প্রতি ভালোবাসা এবং টান টা একটু বেশিই থাকে। আর আপনিও আপনার বাবাকে ভালোবাসেন বলেই তখন কান্না করে ফেললেন। যাইহোক আপনার ছোটবেলার গল্পটি জানতে পেরে বেশ ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ ভাইয়া ঘটনাটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আসলেই ছেলে সন্তানদের চেয়ে মেয়ে সন্তানদের বাবার প্রতি ভালোবাসা বা মায়া বেশি থাকে। আপনার বাবা তাহলে মঞ্চ নাটক করতেন। জেনে ভীষণ ভালো লাগলো আপু। উনি তাহলে মাঝেমধ্যে এখনো গান শুনায় আপনাদেরকে। আমার আব্বু ও ভালো গান করে। বিশেষ করে হিন্দি গান খুব ভালো গায়। আপনি ছোট ছিলেন বলে তখন বুঝতে পারেননি এবং নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি,সেজন্য সেই দৃশ্য দেখে কান্না করে দিয়েছিলেন। যাইহোক হলরুমে থাকা সবাই আপনাকে দেখে এটাই ভেবেছে যে,মেয়েটা তার বাবাকে খুব ভালোবাসে। যাইহোক ছোটবেলার স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
ঘটনাটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি গল্পটি যখন পড়ছিলাম তখনই কিছুটা আন্দাজ করে নিয়েছি যে এরকম কিছুই ঘটবে। গ্রামে শীতের সময় এইরকম রঙ্গমঞ্চের নাটক হতো সেই নাটকগুলো আমি উপভোগ করেছি। আপু আপনার বাবা তাহলে তো ভালোই নাটক করতেন। আপনি যে কাজটি করেছিলেন সেখানে তো দুঃখ পাওয়ার থেকে হাস্যকর বিষয়টি বেশি ফুটে উঠেছিল ।🤩শেষ মুহূর্তে গল্পটি পড়ে অনেক হাসি পেয়েছে। দর্শককে ভালোই হাসিয়েছিলেন আপনিও তো দেখছি নাটকের অংশ হয়ে গিয়েছিলেন। 😁
আপনার হাসি পাচ্ছে, আর আমি তখন কতো কষ্ট পেয়েছিলাম।😂যাই হোক সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।