[কাজলের দিনরাত্রি নাটকের রিভিউ]
হ্যালো বন্ধুরা
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।আজকে একটা বাংলা নাটকের রিভিউ দেওয়ার চেষ্টা করছি,সাথে সুন্দর ভাবে নাটক টা আমার ভাষায় উপস্থাপন করার চেষ্টা করছি।
কাজলের দিনরাত্রি
আমার নাটক দেখতে অনেক ভালো লাগে।কাজের ফাকে ফাকে সময় পেলেই আমি নাটক দেখতে বসি।
নাটক, মুভি যেকোনো সুন্দর সিরিজ আমি দেখি।এখন অনেক সুন্দর সুন্দর নাটক বের হয়েছে..বেশ প্রায় নাটকই দেখে ফেলেছি ইতিমধ্যে। কাল রাতে এই নাটকটি দেখে অনেক খারাপ লেগেছে।অনেক ইমোশনাল একটি নাটক..।দেখলেই কান্না পাবে এমন একটা নাটক।এখানে অসাধারণ অভিনয় করেছে মেহজাবিন।বরাবরের মত আমি মেহেজাবিনের অভিনয় দেখে মুগ্ধ।এইবার চলুন নাটকের পুরো কাহিনি আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
নাটকের কিছু তথ্য
নাটকের নাম | কাজলের দিনরাত্রি |
---|---|
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
পরিচালক | ভিকি জাহেদ |
অভিনয় | মেহজাবিন চৌধুরি,তওসিফ মাহাবুব,সামিয়া অথোই |
প্রকাশিত | ০১ জানুয়ারি ২০২৩ |
সময় | ১ ঘন্টা ৭ মিনিট |
এখানে মেইন ক্যারেক্টরের চরিত্রে আছে কাজল(মেহজাবিন),আর শুভ্র (তওসিফ)।কাজল একজন স্পেশাল চাইল্ড।খুব ছোট বেলায় কাজলের বোন রেখাকে ছোট বেলায় এক দূর্ঘটনা থেকে বাচাতে গিয়ে কাজল মাথায় প্রচন্ড আঘাত পায়।সেই থেকে কাজল এখনো ছোট্ট বেলাতেই আটকিয়ে আছে।
একদিন কাজলদের পাশের বাসার আন্টি আসে বাচ্চা নিয়ে তাদের বাসায়।সে বাচ্চার পায়ে লাইট ওয়ালা জুতো দেখে কাজল পিচ্চি মেয়েটার কাছ থেকে সেই জুতো নেওয়ার জন্য অনেক পাগলামো করে।তখন বাচ্চার মা এসে অনেক আজে বাজে কথা শুনিয়ে যায় কাজলের মাকে..।
কাজল তখন অনবরত জেদ করতেই থাকে তখন কাজলের মা কাজলকে শান্ত করার জন্য বলে তুমি আমার লক্ষি বাচ্চা না।আমার লক্ষি বাচ্চা রেখা। এটা বললেই কাজল তখন তার মাকে জড়িয়ে ধরে বলতো মা আমি তোমার সব কথা শুনবো।আমি তোমার লক্ষি বাচ্চা এজ লাইক কিড কাজল তখন সব কথাই শুনতো।কাজলের মা আর কাজলের বোন রেখা অনেক ভালোবাসে কাজলকে।একদম আগলে রাখে।কাজলের মা ছিলেন তার কাজলের সৎ মা।
এরমধ্যে কাজলের জন্য রেখার অনেক বিয়ে ভেংগে গেছে।একদিন কোনো এক বিয়েতে শুভ্রর মা রেখাকে দেখে অনেক পছন্দ করে তার ছেলের জন্য। শুভ্র চাইছিল বিয়ের আগে রেখাকে নিয়ে সময় কাটাতে মোট কথা দুজন দুজকে একটু বুঝতে চেয়েছিলো।
শুভ্র রেখাকে কল দিয়ে ওদের বাড়ি আসতে চায় আর।ওদের বাড়িতে এসে শুভ্র সেদিন প্রথম কাজলকে দেখে।শুভ্র যখন রেখাকে নিয়ে বের হতে চায় তখন কাজলও বায়না ধরে তাদের সাথে যাওয়ার জন্য। এতে কাজলের মা বাধা দিলেও রেখা আর শুভ্র ঠিকি কাজলকে নিয়ে যায়। কারন শুভ্র ততক্ষণে ঠিকই বুঝতে পেরেছে কাজল স্বাভাবিক নয়।
এর মধ্যে শুভ্র রেখাকে পছন্দ করে ফেলে।তারা সেদিন অনেক কথা বলে।তিন জনে সুন্দর সময় কাটায়।
একদিন কাজলকে নিয়ে রেখা তার ভার্সিটিতে গিয়েছিলো।ফেরার পথে রেখার কলেজের সামনে কয়েকজন বখাটে ছেলে থাকে যারা রেখাকে অনেক বিরক্ত করে।তখন রেখা বিরক্ত হয়ে বলছিলো " আপনি আমাকে আর বিরক্ত করবেন না,আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে"। আর এইসব দৃশ্য কাজল গাড়ি থেকে দেখছিলো..
কাজল গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে রেখাকে বাচানোর চেষ্টা করছিলো।ঐ ছেলেগুলোর সাথে হাতাহাতি করছিলো কাজল।একপর্যায়ে কাজল ছেলেটার হাতে কামড় বসিয়ে দেয়।তারপর রক্ত দেখে কাজল অজ্ঞান হয়ে পরে।
(নাটকের ভাষ্যমতে কাজলের এপিলেপসি ছিলো।অর্থাৎ রক্ত দেখলে তখন তার প্যারালাইসিস শুরু হয়)
তখন কাজলের এক্সট্রা কেয়ার প্রয়োজন হয়।
অসুস্থ থাকা অবস্থায় শুভ্র কাজলকে খাবার থেকে শুরু করে ওষুধটাও পর্যন্ত খায়িয়ে দেয়..কাজল একদিন বায়না করে শুভ্রর সাথে ঘুরতে যাবে বলে..
তারপর শুভ্র এসে কাজলকে বাইরে নিয়ে যায়।
সেদিন দুজনে বৃষ্টিতেও ভিজে..
তারপর একদিন শুভ সময় দেখে শুভ্র আর রেখার এংগেজমেন্ট হয়ে যায়।
সব কিছু ঠিকঠাকই ছিলো।কিন্তু হঠাৎ একদিন সেই বখাটে ছেলেরা রেখা আর কাজলকে কিডনাপ করে নিয়ে যায়..অনেকটা সময় দুজনের খোজ না পাওয়াই ওদের মা শুভ্রকে কল দিয়ে জানতে চায় দুজনের কথা।
শুভ্র অনেক খুজতে থাকে।বেশ সব জায়গায় খোজ নেওয়া হয়ে গিয়েছে কিন্তু কোথাও পায়নি।কাজলের বাসায় যেতে যেতে দেখে বাসার নিচে পুলিশের গাড়িতে করে কাজলকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
তখন শুভ্র জানতে পারে রেখাকে বখাটে ছেলেরা তাদের প্রাইভেট প্লেসে নিয়ে গিয়েছিলো ধর্ষণ করার জন্য।তখন কাজল শক্ত কিছু দিয়ে ওই ছেলেটার মাথায় আঘাত করতে করতে মেরে ফেলে।এই খবর পুলিশ জানতে পেরে তাকে নিয়ে যাচ্ছে।
তারপর সবাইতো কাজলকে দেখতে যায় জেলে।কাজল অনেক বায়না ধরে জেল থেকে বের হওয়ার জন্য। কিন্তু কিছুতে কেও পারেনা ওকে বের করতে।কাজলের উকিল ও অনেক চেষ্টা করছিলো কিন্তু কিছুতেই পেরে উঠছিলো না কেনোনা ওই বখাটে ছেলেটার বাবা অনেক প্রতাপশালী একজন।
কাজলের ১২বছরের মেডিকেল রিপোর্ট যখন আদালতে জমা দেয় তখন মাননীয় আদালত ঘোষণা দেয় কাজলকে মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হবে।কিন্তু যেদিন রিহাবে পাঠানোর কথা ঠিক তার আগের দিন রাতে কাজলের পিরিয়ডের ব্যাথা শুরু হয়।তখন কাজল অনেক কান্নাকাটি করছিলো আর মা মা বলে ডেকে যাচ্ছিলো।এরি মধ্যে কাজল তার পিরিয়ডের রক্ত দেখে আবার জ্ঞেন হারায়।তখন সেখানে থাকা এক মহিলা জেলার সেখানে গিয়ে কি হচ্ছে তা বুঝে উঠতে পারেনি।কারন সবাই তো আর জানেনা কাজলের সিচুয়েশনে। তারা হাসলাতালের নিয়ে যাচ্ছিলো।
কিন্তু হাসপাতালে নিতে নিতেই কাজলের মৃত্যু ঘটে।
হাসপাতালে গিয়ে শুভ্র যখন কাজলের মুখের দিকে তাকায় তখন সে বুঝতে পারে সে রেখাকে নয় বরং কাজলকে ভালোবেসে ফেলেছিলো
যেহেতু সে রেখাকে নয় কাজলকে ভালোবেসেছিলো,আর রেখাকে বিয়ে করা মানে তাকে ঠকানো হবে তাই সে বিয়ে করবেনা জানিয়ে দেয়।
আর এখানে অনেক বড় একটা টুইস্ট হলো- সেদিন যখন রেখাকে ধরে নিয়ে ধর্ষণ করতে গিয়েছিলো তখন কাজল ওই বখাটেকে হত্যা করেনি বরং রেখা হত্যা করেছিলো।সেখান থেকে রেখা কাজলকে নিয়ে বাসায় চলে যায়।আর সব কথা তার মাকে খুলে বলে।
মুলত কাজলকে এই কেসে ফাসানো হয়েছিলো তার মায়ের প্ল্যানে।
কাজলের মায়ের পরিকল্পনা ছিলো অন্যরকম।সে ভেবেছিলো কাজলের যদি শাস্তি হয় তাহলে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে তাকে রিহাব সেন্টারে পাঠানো হবে।তারপর ওখনে কিছুদিন রেখে ছেড়ে দিবে।আর রেখা জেলে গেলে তার মৃত্যুদন্ড হবে।দুইমেয়ের সেইফটির কথা চিন্তা করে এই ডিসিশন নিয়েছিলো কিন্তু রেখার মেনে নিতে অনেক কষ্ট হচ্ছিলো।কিন্তু রেখার মা জড় করায় সে রাজি হয়।তারপর কাজলের কাছে গিয়ে কাজলের মা বলে কাজলকে বলে "তুমি কি আম্মুর লক্ষি বাচ্চা?লক্ষি বাচ্চা হলে তুমি বলবে খুন টা তুমক করেছো" আর কাজল তো নাবুঝ মেয়ে,কাজল রাজি হয়ে যায়। আর এই সুজোগ টাই কাজে লাগিয়েছে কাজলের সৎ মা..।
কাজলের লাশ দেখার পর রেখা আর রেখার মা নিজেদের দোষী মনে করছে।তারা ছাড়া কেও জানতো না এই আসল ঘোটনা।
মাঝেমধ্যে সময় পেলে নাটক দেখতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আর মেহজাবিনের নাটকগুলো আমার বেশি পছন্দের। কাজলের দিন রাত্রি এই নাটকটি আমি কয়েকদিন আগে দেখেছিলাম। নাটকটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আপনি খুব সুন্দর ভাবে এই নাটকের রিভিউ দিয়েছেন। পুরো নাটকের রিভিউ টি আবার পড়ে ভালই লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ আপু।
নাটক যেন মনের শান্তি যোগায় নতুন কিছু শিক্ষা দান করে এবং মনের মধ্যে অন্যরকম অনুভূতি জাগ্রত করে। আমিও মাঝেমধ্যে সুযোগ পেলে নাটক দেখে থাকি। আর আপনাদের এই নাটক রিভিউ গুলো দেখে আমারও মনের মধ্যে উৎসাহ হয়ে গেছে নাটক রিভিউ করে আপনাদের মাঝে শেয়ার করে দেখাবো বলে। তবে খুব শীঘ্রই আমি আপনাদের মাঝে নাটক রিভিউ করে দেখানোর চেষ্টা করব। বেশ ভালো লাগলো আপনার এই নাটক রিভিউটা।