ডালিয়াতে ঘুরতে যাওয়ার কিছু মুহূর্ত

আসসালামু আলাইকুম। আশাকরি সবাই ভালো আছেন।আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ডালিয়াতে ঘুরতে যাওয়ার কিছু মুহূর্ত। আশাকরি ভালো লাগবে আপনাদের।

ডালিয়াতে ঘুরতে যাওয়ার মুহূর্ত শেয়ার করার আগে আমি শেয়ার করব আপনাদের সামনে আমার ব্যস্ত সময়ের কথা। বড় আপু ভাইয়াদের কাছে শুনেছি অনার্স লাইফ নাকি অনেক চিল করার সময়। কিন্তু আমি কোথাও দেখি না কোন চিল করার সময় বা সুযোগ। এত প্যারা অনার্স লাইফে আগে জানতাম না। রেগুলার ক্লাস করতে হয়। বড় আপু ভাইয়াদের কাছে শুনেছি তারা নাকি রেগুলার ক্লাস করেনি। কিন্তু আমি যে ডিপার্টমেন্টে পড়ি সেখানে রেগুলার ক্লাস না করলে স্যারের অনেক ঝাড়ি খেতে হয়।স্যারদের হাতে অনেক মার্ক থাকে এবং প্র্যাকটিক্যাল মার্ক থাকে সেগুলো তারা দিতে চায় না। দুইদিন পর পর অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হয। এরই মাঝে দুই সপ্তাহ ধরে পরীক্ষা হয়ে গেল। গতকাল পরীক্ষা শেষ হয়েছে । পরীক্ষার জন্য দুই সপ্তাহ ধরে প্রায় পোস্ট করাই হয়নি। পরীক্ষা শেষ করে ভাবলাম কোথাও থেকে ঘুরে মাইন্ড ফ্রেশ করে আসি। তাই বন্ধুদের সাথে চলে গেলাম ডালিয়া। অনেকদিন ঘুরা হয় না। তো সব ফ্রেন্ড মিলে ঠিক করলাম ঘুরে আসি ডালিয়া।

ডালিয়া যাওয়াটা হঠাৎ করেই ঠিক হয়। আগে থেকে কোন প্ল্যান করা হয়নি। গতকাল রাতে হুট করেই সবাই বলাবলি করছে যে চলো ডালিয়া বেড়াতে যাই। তো সেই অনুযায়ী সকলেই প্রস্তুত যাওয়ার জন্য। আজ সকালে প্রায় ঘুম থেকে ওঠা হয়েছে ৭:০০ টার দিকে। আমি ঠিক কাজ না থাকলে এতটা সকালে ঘুম থেকে উঠি না। তো সকাল ৭ টায় আমার ফ্রেন্ড আমাকে কল দিয়ে ঘুম ভাঙিয়ে দেয়। এরপর আমরা তৈরি হয়ে বের হয়ে পড়ি ৮:০০ টার দিক।তো আমরা ডালিয়া যাই বাইকে করে।আমাদের সাথে দুজন ছেলে ফ্রেন্ড ছিল আমরা ছিলাম চারজন মেয়ে ফ্রেন্ড। ছেলে ফ্রেন্ডের বাইক ছিল তাই আর আমরা অটো ভাড়া করিনি ওদের বাইকে করেই গিয়েছি।তাদের নিয়ে যাওয়ার একটাই উদ্দেশ্য তা হলো ছবি তুলে দেয়া😁।একটা বাইকে তিনজন করে বসেছি। রাস্তা সেরকম চেনা ছিল না। আগে এভাবে কখনো যাইনি। এবারই প্রথম। তো যাওয়ার পথে আমরা জলঢাকাতে গিয়ে নাস্তা করি। জলঢাকা পৌঁছাতে আমাদের সময় লাগে প্রায় সাড়ে নয়টা । নাস্তা শেষে আমরা ডালিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেই।

ডালিয়া বাংলাদেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প। তিস্তা ব্যারেজ লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলাধীন গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানী এবং পার্শ্ববর্তী নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলাধীন খালিসা চাপানী ইউনিয়নে অবস্থিত ডালিয়া।আমরা ম্যাপ দেখে দেখে যাচ্ছিলাম। নীলফামারী থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ডালিয়া। যা আমরা বাইকে করে অতিক্রম করি। ৪২ কিলোমিটার অতিক্রম করে আমরা পৌঁছে গেলাম ডালিয়াতে। ডালিয়াতে পৌঁছাতে সময় লেগেছে প্রায় দুই ঘন্টার মত। ওখানে গিয়ে আমরা প্রথমে একটু বসে রেস্ট নেই এবং ফুচকা খাই। ফুচকাটা একদম ভালো ছিল না, আমাদের নীলফামারের মতো ফুচকা আমি কোথাও খাইনি সেখানেও পাইনি আমাদের নীলফামারের মত কোন স্বাদ। টাকটাও ছিল অনেক বাজে। আমাদের নীলফামারীর মতো ফুচকা কোথাও পাওয়া যায় না। আপনারা চাইলে এসে খেয়ে দেখতে পারেন নীলফামারীর ফুচকা।

এরপর আমরা চারিদিক ঘুরে দেখার যাওয়ার জন্য বের হলাম। এরপর আমরা কয়েকটি গ্রুপ ছবি তুলি।

আমি ছবি তুলতে অনেক ভালবাসি যার জন্য প্রায় অনেকগুলো ছবি তুলেছ। যা নিচে দেখানো হলো আপনাদের ।

অনেক রোদ ছিল যার জন্য ভালোভাবে আমরা ঘুরতে পারিনি। পানিতেও নামতে পারিনি সেভাবে নৌকাতেও ঘুরতে পারিনি। কিন্তু নৌকাতে বসে ছবি তুলেছি।

যেহেতু আমরা বাইক এক স্থানে রেখে ঘুরতে গিয়েছিলাম তো এসে দেখি বাইকের মধ্যে রাখা হেলমেট খুঁজে পাচ্ছিলাম না। আমরা তা ভেবেছি হেলমেটটি হারিয়ে গিয়েছে। তো একটু খোঁজাখুঁজির পর যে ফুচকার দোকানের সামনে গাড়িটি রাখা ছিল সেই ফুচকার দোকানদার হেলমেটটি খুব যত্নে রেখেছিল তার দোকানের ভিতর। তার কাছেই খুঁজে পাই হেলমেটটি । সকলের রোদের মধ্যে ঘেমে অবস্থা খারাপ প্রায়। তারপরেও যতটুকু ঘরা যায় আমরা ততটুকু ঘুরেছি। ঘুরতে ঘুরতে বেজে গেল দুপুর একটা। সকালে যেহেতু আমরা না খেয়েই বের হই তাই সকলের অনেক ক্ষুদা লেগে যায়। এরপর আমরা বাসায় আসার জন্য গাড়িতে উঠি। প্রচুর গরমে আসার সময় আমরা কিছু লাচ্চি খেয়েছি। গরমের চোটে লাচ্ছি পিক তুলতে ভুলে গিয়েছি। বাসায় এসে পৌঁছাতে সময় লেগেছে প্রায় দুইটা। আসার সময় অনেক তাড়াতাড়ি আসতে পেরেছি। যাওয়ার সময় রাস্তা চেনা ছিল না যার জন্য আমাদের খুঁজে বের করে যেতে একটু সময় বেশি লেগেছে।

যাই হোক সকলে মিলে ঘুরার মজাটাই অন্যরকম। আর সেটা বন্ধুবান্ধবদের সাথে হলে তো কোন কথাই নেই। সকলে অনেক মজা করেছি। আগে কখনো এভাবে যাওয়া হয়নি এবারই প্রথম। জায়গাটাও ভালো লেগেছে সকলের। অনেকদিন পর বন্ধুবান্ধবদের সাথে ঘুরে আসলাম। ভালোই লাগছে। কিছু কিছু অনুভূতি তো বলে প্রকাশ করা যায় না। ঘোরাঘুরি করার মাধ্যমে আমার মাইন্ডটি একদম ফ্রেশ হয়ে গেল। আর সেই ফুরফুরে মাইন্ড নিয়ে আমি পোস্টে লিখছ। ব্যস্ত সময়ের মাঝে একটু ঘোরাঘুরি করলে ভালোই লাগে।

বন্ধুরা আজ এখানেই শেষ করছি। আগামীতে নতুন বিষয় তুলে ধরবো আপনাদের সামনে।আপনারাও চাইলে ঘুরে আসতে পারেন ডালিয়া । আমার অনেক ভালো লাগেছে। আশা করি আপনাদেরও ভালো লাগবে।বন্ধুবান্ধব পরিবারের সাথে ঘুরতে গেলে আরো ভালো লাগবে।