বাইক দূর্ঘটনায় ❤️
হ্যালো,
আমার বাংলা ব্লগবাসি বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই।আশা করছি ভালো আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় ভালো আছি।সুস্থ আছি,নিরাপদ আছি।
আমি আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমি কিভাবে বাইক দূর্ঘটনার সমমুখী হলাম সেই গল্প।
ভাই এর বিয়ের কারণে কেনাকাটা যে-কোনো প্রয়োজনে প্রায় প্রতিদিন জেলা শহরে যেতে হতো।যখন যা মনে হতো কিনতে যেতাম।বরের সাথে বাইকে।তো বিয়ে উপলক্ষে তো কোন গিপ্ট দিতে হবে আর আমি ভাবলাম বিয়েতে কমবেশি সব গিপ্ট পাবেই। আপনজনেরা সোনার গহনা দেবেই তো আমি ভেবে নিলাম স্মার্ট টিভি গিপ্ট করবো।টিভি যে বাড়িতে নাই তা নয় কিন্তুু নতুন বউ এর ঘরে নেই টিভি ভাবলাম টিভি দেই তাহলে সে ইউটিউব বা পছন্দসই যা মন চায় দেখে সময় কাটাতে পারবে নিজের রুমে শুয়ে বসে।যে কথা সেই কাজ চলে গেলাম এলজির শোরুমে। কিনে নিলাম ৩২ইন্চি টিভি।বেড রুমের টিভি তাই ৩২ইন্চি নেয়া হলো।
পরিচিত এক দাদার জুয়েলার্সে টিভিটি রেখে প্রয়োজনীয় সব কাজ সেরে নিলাম এবং আসার সময় টিভি নিয়ে রওনা দিলাম অটোর উদ্দেশ্য। তো দেখলাম আমি খুব ভালো ভাবেই টিভিটি বাইকের পিছনে মাঝে নিয়ে বসতে পারছি।তাই বরকে বল্লাম বাইকেই যাওয়া সম্ভব সমস্যা নেই আস্তে আস্তে যেতে পারো।মেয়ে বরাবরই বাইকের সামনে বসতে ভালোবাসে ও বসে তাই পিছনে টিভি নিয়ে বসতে সমস্যা হয়নি একটুও।
তো আমরা আসছি টিভি থাকার কারণে বাইকের গতি কম। হঠাৎ আচমকা কিচ্ছু বুঝে ওঠার আগেই বাইক নিয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়লাম।মেয়ের আত্মচিৎকারে চমকে গেলাম।সজোরে ব্যাথা পাওয়ার পরেও উঠে দারালাম মেয়েকে দেখার জন্য। ততক্ষণে হাজার মানুষ জমে গেছে। আমি যখন রোডে শুয়ে বাইকের সাইডে চারপাশের মানুষদের দৌড়ে আসা দেখে আরো বেশি ভয় পেয়ে গেছি।পুরা শরীর কাপছিলো। দাঁড়ানোর সাহস পাচ্ছিলাম না। মেয়ে মানুষ জন্য হয়তো কেউ আমাকে ধরেনি তবে মেয়েকে ও বরকে ও বাইটাকে তুলেছেন। আমি মেয়ের কান্না শুনে ও বাইকের নিচ থেকে বের করা দেখে ভেবে নিয়েছি দাঁতগুলো সব পড়ে গেছে। মাক্স পড়া ছিলো তাই বুঝতে পারছিলাম না।কোন মতে কাছে গিয়ে মেয়ের মাক্স খুলে দেখলাম কিচ্ছু হয়নি কিন্তুু সে কান্না করেই যাচ্ছে। বল্লাম কোথায় লেগেছে। বল্লো লাগেনি ভয় পেয়েছি। এরপর কিছু সময় জড়িয়ে ধরে থাকলাম কান্না বন্ধ করলো।আমি কোমড়ে ও হাটুতে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করলাম ছিলেও গেছে হাটু।বরেও হাটু ছিলে গেছে।
ঘটনার সূত্রপাতঃআমরা আসছিলাম আমাদের সাইড দিয়েই তো এক মহিলা আলুর বস্তুা কাঁধে নিয়ে ছিলো দাড়িয়ে রাস্তার এক সাইডেই।হঠাৎ আমাদের বাইকটি ওনার কাছাকাছি যেতেই বাইকের সামন দিয়ে দিয়েছে দৌড়ে আর ব্রেক কশলেও ওনার আলুর বস্তায় গিয়ে ধাক্কা গেলে আমরা সবাই পড়ে গেছি। ওনিও পড়ে গেছে কিন্তুু কিচ্ছু হয়নি ওনার কারণ আলুর বস্তায় লেগেছে তবে আলুর বস্তুা না থাকলে ওনার বড়ো ধরনের ক্ষতি হতো।
দূর্ঘটনাটি রাস্তার সাইডের বাজারের কাছে এবং খেলার মাঠ হওয়ার কারণে নিমিষেই অনেক মানুষ জমে যায় এবং সবাই বেশ সাহায্য করে।অনেকেই ওই মহিলাকে রাগ করে কারণ ওনারা বলছিলো বাইক নিয়ে ধীর গতিতে এক সাইড দিয়েই আসছিলো আপনি সামন দিয়ে দৌড় দিলেন কেন।
আমি শুধুই কাপছিলাম। এরকম দূর্ঘটনার সমমুখী হবো কখনো ভাবি নি।আজ অবদি কোনদিন দূর্ঘটনায় পড়িনি।আর সেই দূর্ঘটনায় পড়লাম।আমি ভীষণ ভয় পাই দূর্ঘটনা গুলোকে।সব সময় রিক্সা, অটো,বাইকে উঠলে আস্তে যেতে বলি।
সেদিন যদি আমাদের বাইকের গতি বেশি থাকতো তাহলে অবশ্যই অনেক বড়ো ক্ষতি হয়ে যেতো আমাদের সবার।রাস্তায় ছিটকে পড়তাম অন্য যানবাহনের সামনে তখন কি অবস্থা হতো।আবার ঐমহিলাকে সজোরে ধাক্কা লাগলে অনেক বড়ো ক্ষতি হয়ে যতো।
এসব এখনো ভাবলে খুব খারাপ লাগে।
সৃষ্টিকর্তা কাছে একটাই প্রার্থনা আর কখনো যেন এমন ভয়ংকর পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়।
বাড়িতে এসে মা,বাবাকে বলিনি ঘটনাটা।যদি বলি তাহলে আর যেতে দেবে না গাইবান্ধা কিন্তুু আমাকে তো আরো বেশ কয়েকদিন যেতেই হবে।মেয়েকে নিষেধ করেছি বলতে বলেনি।মেয়ে এমন ভয় পেয়েছে যে সে আর গাইবান্ধা বাইকে যেতে চায় না।বাইকে উঠলেই বাবাকে বলে আস্তে চালাও।গতি কমাও।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আবারও দেখা হবে অন্যকোন পোষ্টের মাধ্যমে সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন নিরাপদে থাকুন।
টাটা
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | গাইবান্ধা, বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
বাইক এক্সিডেন্ট দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রতিদিন যে এক্সিডেন্ট গুলো ঘটে আমাদের দেশে, তার বড় অংশ বাইক দূর্ঘটনা। খুব ভালো লাগলো যে আপনাদের তেমন ক্ষতি হয়নি এবং আলুর বস্তার উপর দিয়ে গিয়েছে বলে ঐ মহিলারও কিছু হয়নি। বাইক চালালে শুধু নিজে সবধান নয়,আমাদের সবাইকে সাবধান হতে হবে।ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। আসুন আমরা সবাই ট্রাফিক আইন মেনে চলি।পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ দিদি।
অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আমার পোস্টে।
আসলে দিদি সব সময় যে নিজের ভুলে এক্সিডেন্ট হবে সেটা কিন্তু নয়, অনেক সময় অন্যের ভুলেও এক্সিডেন্ট হয়। আলুর বস্তা নিয়ে আসা ঐ মহিলাটা হঠাৎ করে বাইকের সামনে দিয়ে দৌড় না দিলে হয়তো এই এক্সিডেন্টটা হতো না। তবে এটা শুনে অনেকটা ভালো লাগলো যে, আপনাদের কারোরই কিছু হয়নি, সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি আসতে পেরেছেন। তবে বাইকের গতি যদি বেশি থাকতো তাহলে কিন্তু বড় ধরনের সমস্যা হলেও হতে পারতো। ভালোই হয়েছিল বাইকের গতি কম রেখে।