ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে গ্রাম থেকে পালালো সিদ্ধান্ত একটি পরিবারের ❤️
হ্যালো
আমার বাংলা ব্লগবাসি বন্ধুরা। কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন সবাই। আমিও সৃষ্টি কর্তার কৃপায় ভালো আছি
আমি @shapladatta বাংলাদেশ গাইবান্ধা জেলা থেকে যুক্ত। আমি বাংলা ব্লগের একজন নিয়মিত ভেরিফাই মেম্বার। আমার বাংলা ব্লগে যুক্ত হতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।যতো দিন যাচ্ছে ততোই বাংলা ব্লগের প্রেমে পড়ে যাচ্ছি। ব্লগিং যেন আমার পেশা ও নেশায় পরিনত হয়ে যাচ্ছে।
আজ আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে গ্রাম থেকে পালানো একটি পরিবারের কাহিনী।
আমাদের বাড়ির পাশের বাড়ির একটি ছেলে বাবা মায়ের বর্তমান একমাত্র ছেলে সন্তান যদিও বা বাবা-মা বেঁচে নেই। বোনদের সব বিয়ে হয়ে গেছে বড় ভাই ছিল সুইসাইড করেছে। এর আগে ওর বড় ভাইকে নিয়ে একটি পোস্ট লিখেছিলাম। এখনো ওদের জমি জমা বেশ ভালই আছে কিন্তু দুঃখের বিষয় ওদের জমির সিস্টেমেই এমন যে শুধুমাত্র ভোগ দখল করতে পারবে কিন্তু বিক্রয় করতে পারবে না। বিশাল বড় বড় পুকুর আছে সেগুলো বন্ধক রেখে দিয়েছে কিন্তু বিক্রি করতে পারে না।
ছেলেটির পরিবারে স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে সন্তান তিনজনের পরিবার কিন্তু ঋণের বোঝা মাথায়। 8 থেকে 10 লক্ষ টাকার ঋণ। কিছু বছর আগেও ঋণের দায়ে গ্রাম ছাড়া হয়েছিল পরিবারটি তারপর ঢাকা শহরে গিয়ে স্বামী-স্ত্রী মিলে দুজনে চাকুরী করে টাকা ইনকাম করে ঋণ শোধ করার পর গ্রামে এসেছিলো।ভালোই চলছিল তাদের সংসার। আমাদের এলাকার স্থানীয় রাস্তার ধারে ছোট বাজারে একটি ফলের দোকান দিয়ে ছিল ছেলেটি। বেশ ভালই চলছিল দোকানটিও।
কিন্তু আবারো সে এত পরিমান ঋণের বোঝা মাথায় নিয়েছে যে ঋণের দায়ে আবারও গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে ঢাকায়। ছেলেটির ঋণ হওয়ার মূলত কারণ তার একটু বাজে নেশা আছে। জুয়া খেলা, মেয়েদের প্রতি আসক্তি ও নেশা।আসলে একটি মানুষ সঠিক পথে চললে কোন কারন ছাড়াই লক্ষ লক্ষ টাকার ঋণ হতে পারে না। এরকম বাজে অভ্যাসের জন্যই এত টাকা ঋণ হয়ে গেছে।
আমি আজকে যখন বাড়ির সামনে হাঁটছিলাম তখনই এক পাওনা পাওনাদার দম্পতি ওদের বাড়ি থেকে চিৎকার চেঁচামেচি করে করে যাচ্ছিলো।প্রশ্ন করলাম কি হয়েছে। ওই দম্পতির কাছে যা শুনলাম তা হলো আমাদের মেয়ের বিয়ের টাকার অভাবে ভেঙ্গে যাচ্ছে। আর ওই ছেলের কাছে আমরা টাকা পাই সে টাকা দিচ্ছে না। এজন্য বাড়িতে এসে শাসিয়ে রেখে গেলো।আসলে সুদের উপরে টাকা নিয়েছিল এই ব্যক্তির কাছে ছেলেটি। সুদে আসলে টাকা এক লক্ষ্য বেশি দাঁড়িয়েছে কিন্তু দিতে পারছে না।আমার দেওর ওর জায়গা কিনেছিল আমাদের বাড়ির সাথেই লাগানো ৬ শতক জায়গা তিন লক্ষ টাকা আজ পর্যন্ত দলিলও করে দিতে পারেনি টাকাও ফেরত দেয়নি।
ওই দম্পতি চলে যাওয়ার পর পাশের বাড়ির ভাবি আমাকে বলল যে ও তো পালাবে দোকানের সবকিছুই গোপনে বিক্রি করে ফেলেছে। দু একদিনের মধ্যেই পালিয়ে চলে যাবে বউ বাচ্চা কে নিয়ে। বিষয়টা জেনে বেশ খারাপই লাগছিলো।আসলে টাকার জন্য মানুষ কত অসহায় হয় । জন্ম স্থান ভিটে মাটি সব ছেড়ে যেতে হবে ছেলেটিকে পালিয়ে। আর ১০ লক্ষ টাকা দেয়ার মত কোন পরিস্থিতি নেই ঢাকায় গিয়ে স্বামী-স্ত্রী দুজন মিলে চাকরি করে ও এত পরিমাণ টাকা শোধ করতে পারবে না।
আসলে এরকম ঘটনাগুলো খুব দুঃখজনক হয়। পৃথিবীতে টাকা ছাড়া কেউ কারো নয়। টাকাই যেন সব।ছেলে টিএনজিও থাকে যেগুলো টাকা তুলেছে সেগুলো আলাদা ব্যাপার কিন্তু যেগুলো টাকা সুদের উপরে নিয়েছে সেগুলো ভয়ংকর ভাবে বেড়ে গেছে। হয়তোবা কারো কাছে নিয়েছিল ২০ হাজার টাকা সে টাকা না দিতে পারার কারণে দিনের পর দিন বেড়ে বেড়ে সেটি এক লক্ষ টাকায় পরিণত হয়েছে। শুধু কি এই ১ লক্ষ আরো অনেক আছে এরকম।
ছেলেটির ভুলের জন্য পুরো পরিবারটিকে সাফার করতে হচ্ছে। ছোট্ট একটি বাচ্চা তার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। ভালোবেসে বিয়ে করেছিল ভালোই গৃহস্থ পরিবারের মেয়ে ওর বউ। অথচ স্বামী শ্বশুর বাড়িতে এসে এই পরিস্থিতি। শশুর বাড়ি থেকেও অনেক হেল্প করে ছেলেটির কিন্তু ওই যে ভাঙ্গা কলসি কখনো ভরানো সম্ভব হয় না এটাই হলো আসল কথা। যতই দেক না কেন বিশাল পরিমাণের ঋণর বোঝা কখনোই
ঘার থেকে নামবে না।
আসলে কারো খারাপ কিছু শুনলে খুব খারাপ লাগে। ভালো কিছু শুনলে অনেক ভালো লাগে। কতটা অসহায় হলে মানুষ ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে গ্রাম থেকে পালিয়ে যায় এটাই শুধু ভাবছি। টাকা এই টাকার জন্য কিনা হয়। কেউবা টাকার জন্য খুন হয় কেউবা টাকার জন্য দুবেলা দুমুঠো খেতে পারে না। এই টাকার জন্য আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায় ভাইয়ে ভাইয়ে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়।
টাকা ছাড়া পৃথিবীটাকে চেনা যায় খুব ভালো করে। এজন্য সবার জীবনে টাকার প্রয়োজন অনেক। কথায় আছে অর্থই অনর্থের মূল। কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে অর্থ ছাড়া জীবন অচল। পৃথিবী মূল্যহীন। আমি ভাবছি এত ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ছেলেটি পালিয়ে কতদিন বা ঢাকা শহরে থাকতে পারবে। তাকে তো কোন না কোন দিন গ্রামে আসতেই হবে তখন কি সে ঋণ থেকে মুক্তি পাবে।
এসব নানা ভাবনা আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। আজকের মত এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্য কোন পোষ্টের মাধ্যমে সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন নিরাপদে থাকু।
টাটা
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
পোস্টের প্রথম কয়েক লাইন পড়ে একটু কষ্ট লাগলো মনে হচ্ছিল একটা মানুষ এত টাকা ঋণ হয় কিভাবে পরবর্তীতে যখন বিস্তারিত পড়ে জানতে পারলাম ছেলেটা জুয়ার নেশায় আসক্ত তখন বুঝতে পারলাম এত টাকা ঋণ হওয়া স্বাভাবিক।
হ্যাঁ ভাইয়া আজে বাজে নেশায় আসক্ত। ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
ঋণের বোঝা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বোঝা যা বহন করারর ক্ষমতা সবার থাকে না।অজিতের এই করুন দশা জেনে খুবই খারাপ লাগলো যা খুবই দুঃখজনক ঘটনা।ও যদি পালিয়ে যায় তাহলে তো ছোড়দারও অনেক গুলো টাকা আটকে যাবে এই মাসে না ওর টাকা দেওয়ার কথা ছিলো!ভগবান সহায় হোক তাহলে অন্তত ওর বাচ্চা টা বেঁচে যাবে।দুঃখজনক একটি ঘটনা শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
হ্যাঁ শ্রয়ানের বাবাকে জানানো হয়েছে বিষয় টি।ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
বিষয়টা পড়ে ওভারল বোঝা গেল যে এই ছেলেটার নিজের মধ্যেই সমস্যা আছে। সে যদি আজেবাজে খরচ না করতো, নেশা না করতো তাহলে হয়তোবা সংসারে এত বড় ঋণের বোঝা হতো না। সুদের উপরে টাকা নেয়াটাও ঠিক নয়। তবে সে যে এমন পরিস্থিতিতে পড়েছে সে পরিস্থিতি থেকে উঠে আসতে পারবে কিনা এটাই সন্দেহ। তবে তার সাথে হয়তোবা গ্রামের বাকিদের সম্পর্কটাও ঠিক থাকবে না যদি ফিরে আসে আবারো কখনো। যাইহোক মানুষের দিন কখন কেমন যায় কেউই জানেনা। বিধাতাই শ্রেষ্ঠ তিনিই জানেন কার দিন কেমন নিবেন। ভালো লাগলো আপনার পোস্টটা পড়ে।
একদম ঠিক বলেছেন আপু বিধাতাই জানেন কার দিন কেমন দিবেন। ধন্যবাদ সাবলীল মন্তব্য করার জন্য।
ছেলেটি প্রথমে তার ঋণের বোঝা হালকা করে ফলের দোকান দিয়েছিল জেনে ভালো লেগেছিল।কিন্তু পরে বিভিন্ন নেশায় পড়ে আবার ঋণ করে এটা জেনে খুবই খারাপ লাগলো।কোথায় আছে না সুখে থাকতে ভূতে কিলায় তেমন হয়েছে। যাই হোক পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
ঠিক বলেছেন আপু শুখে থাকতে ভুতে কিলায় এমন অবস্থা হয়েছে ছেলেটির।
বলে না নেশা নারী তাস মানেই সর্বনাশ। এই লোকের দেখছি কোনটাই বাদ ছিল না। ব্যাপার টা খুবই দুঃখজনক আপু। বেশ খারাপ লাগল শুনে। বেশি খারাপ লাগছে তার স্ত্রী এবং সন্তানের জন্য। এভাবে নিজের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাওয়া ঋণের জন্য বেশ অপমানজনক।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া ঋণের জন্য নিজের বাড়ি ঘর ছেড়ে যাওয়া অপমানজনক।
আমি আমাদের গ্রামে অনেক পরিবারকে দেখেছি ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে গ্রাম থেকে পালিয়েছে। সব কিছুর একটা লিমিট থাকা দরকার। ঋণ করার সময় মাথায় কিছু থাকে না। তবে সবাই পালিয়ে ব্যস্ত নগরী ঢাকাতেই আসে। এখানে এসে ধীরে ধীরে ঋণ পরিশোধ করার চেষ্টা করে। এখন দেখা যাক এই পরিবারটি কিভাবে সব কিছু সামাল দেয়। ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া গ্রামের অনেকেই ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ঢাকা শহর ব্যস্ত নগরীতে ঘাঁটিগারে কেউবা ধীরে ধীরে ঋণ পরিশোধ করতে পারে। দেখা যাক ছেলেটি কি করে ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপু কথাটি একদম ঠিক বলেছেন টাকা ছাড়া পৃথিবীটিকে চেনা যায় খুব ভালোই ভাবে। ঋণ এমন একটি জিনিস পরিশোধ না করতে পারলে অনেক মানুষ পালিয়ে যায় এবং অনেক আত্মহত্যা করে। তবে পরিবারটির কথা শুনে নিজের কাছে খারাপ লাগলো। বউ এবং ছেলেকে নিয়ে সেই পালিয়ে যেতে বাধ্য। কারণ ঋণের টাকাগুলো পরিশোধ না করতে পারলে হয়তোবা পাওনাদার গুলো তার উপর আরো ছড়া হবে। অনেক সুন্দর করে বাস্তবে একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
ধন্যবাদ আপু ধৈর্য ধরে আমার পোস্ট টি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।