ভয় থেকে জ্বর 😪
হ্যালো,
আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।
আজ আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো আমার মেয়ে পাগল দেখে ভয় পেলো কি করে এবং জ্বর চলে আসলো ভয়ের কারণে।
তো চলুন দেখা যাক কি ঘটেছিলো ভয় পাওয়ার মতো ঘটনা।
দেশের পরিবেশ পরিস্থিতি থমথমে ছিলো ও অনলাইন বন্ধ ছিলো আর সেজন্য আমাদের একমাত্র খবর পাওয়ার মাধ্যম ছিলো টেলিভিশন।যখন ওয়াইফাই দিয়েছেন তখন রুমে নেটওয়ার্ক পেতো না এবং বাইরে গিয়ে ফোন চালাতে হতো তো আমি বাড়ির বাইরে চেয়ারে বসে বাংলা ব্লগে ঢুকতাম ও সবার সাথে কুশল বিনিময়ের চেষ্টা করতাম কিন্তুু সেখানেও নেটওয়ার্ক সমস্যা করতো অনেক। যাইহোক আমি বসে বসে কমেন্ট করার চেষ্টা করেছিলাম দুপুর বেলায় হঠাৎ দেখলাম একটি উঠতি বয়সের ছেলে আসছে। যেহেতু বাড়ির পাশেরও বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে অলটাইম মানুষ যাতায়াত করে তাই আমি ভাবলাম সে-রকম কেউ তবে অপরিচিত হওয়ার কারণে তাকালাম আবারও ততক্ষণে ছেলেটি আমার পাশে এসে দাড়িয়ে গেছে এবং তখন দেখে ও তার চাহুনি দেখে বুঝতে পেলাম সে মানুষিক ভারসাম্যহীন।
একটু মনে মনে ভয় পেলাম যেহেতু আমি একা।তারপর ভাবলাম আমি উঠে যাই তাহলে ছেলেটি চলে যাবে এবং তারপর আমি আবারও এসে বসবো।যে ভাবনা সেই কাজ উঠে আসলাম এবং আড়াল থেকে দেখতে লাগলাম কি করে পাগল ছেলেটা। ওমা আমার উঠে আসা দেখে আমার জায়গা দখল করে বসে পড়লেন আমার চেয়ারে এবং চেয়ারের পাশে আমার মেয়ে তিনটি পেয়ারা রেখেছিলো আর পাগল ছেলেটি পেয়ারা খাওয়া শুরু করলো।
একবার ভাবলাম ছেলে টিকে বলবো উঠতে আবার ভাবলাম না থাক আর একটু সময় দেখি তারপর না হয় উঠতে বলবো এইরকম আধা ঘন্টা দেখলাম তারপরও যখন যাচ্ছে না তখন গিয়ে বল্লাম চেয়ার টা আমার লাগবে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যাবো সে বিরবির করে কি জানি বলতে লাগলো। বুঝতে পারলাম এখানে বৃথা কথা বলে লাভ নাই এবং আবারও আড়ালে চলে গেলাম। একটু পর একটা বাচ্চা বলছে বাড়িতে ঢুকলো পাগল।ততক্ষণে পাগলটি গেটের ভিতরে বারান্দায় গিয়ে দাড়িয়ে আছে।
রুমে আমার বর ছিলো আর সে তখন পাগল ছেলেটির হাত ধরে বাইরে বের করে রাস্তা অবদি রেখে এসেছে। আমি আবারও চেয়ারে বসেছি পাশের বাড়ির একটি মহিলাও মেয়ে এসে দাড়িয়ে আছে আমার পাশে।পাগলকে নিয়ে কথা হচ্ছিল। মহিলাটি বলছিলো আসলে পাগলের মতো করে অনেক চোর ডাকাত আসে এসব বলাবলি করতেই পাগলটি আবারও চলে এসেছে এবং তার গায়ের যতো শার্টও গেঞ্জি ছিলো সেগুলো জলে কেচে নিয়ে এসেছে এবং আমাকে বলছে নাও শার্ট এটা তোমাকে দিলাম। আমি বল্লাম আমি শার্ট কি করবো আপনি রাখন আর তখন সে আমার গায়ে শার্টটি দিয়ে দেয়ার জন্য এগিয়ে এসেছে রাগান্বিত হয়ে আর আমি ভয়ে দাড়িয়ে সরে গেছি আর এই সব কিছু শুরু থেকে দেখে ভীষণ ভয় পেয়ে গেছে।
এরপর আমি একটা ভুল করে ফেলেছি তা হলো পাগল চলে যাওয়ার পর মেয়েকে বলেছি গেইট সব সময় লক করে রেখো খুলে রেখো না পাগল এসে গলা কেটে দিয়ে যাবে আর এই কথায় মেয়ে খুব ভয় পেয়ে গেছে এবং সারাদিন রুমের বাইরে ও বাড়ির বাইরে যায় নি।আমি দুপুরের ঘুমিয়ে গেছি আর সে বার বার গেইট চেক করেছিলো কেউ আবার খলে রেখেছে না কি।
এরপর রাতে ঘুমিয়ে গেছে এবং সারারাত শুধু বার বার জাগনা পেয়েছে এবং বলে মা ভয়।পরদিন ও সেম অবস্থা। এরপর চলে আসলো জ্বর।আমি এখন সিওর হয়ে গেছি যে জ্বর এসেছে পাগলের ভয়ে। দুদিন থেকে জ্বর ঔষধ খাওয়ানোর পরেও একদমই কমছে না।জ্বর কখনো একশো দুই, একশো তিন,চার পর্যন্ত ওঠানামা করছে।ঔষধ খাওয়ানোর পর জ্বর কমে কিন্তুু একশোর নিচে আসে না।ভাবছি এভাবে এতো জ্বর নিয়ে আর থাকা যাবে না আগামী কাল শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
বাচ্চাদের জ্বর হলে কিছু ভালো লাগে না।যে সারাক্ষণ খুটিনাটি করতে থাকে ও খেলায় মাতোয়ারা থাকে সে একদমই শয্যাশাই হয়ে গেছে। একদমই বিছানা ছেড়ে উঠতে পারছে না।খেতে পারছে না।ঠিক মতো ঘুমাতে পারছে না।সৃষ্টিকর্তা আমাকে সুস্থ স্বাভাবিক রাখলে কালকে সকালে উঠে মেয়েকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে চলে যাবো জেলাশহর গাইবান্ধায়।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।আমার মেয়ের জন্য সবাই একটু দোয়া ও আশির্বাদ করবেন সে যাতে করে তারাতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে পারে এবং দুষ্টমীতে ভরিয়ে রাখে পুরাবাড়ি।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্যকোন পোস্টের মাধ্যমে সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।
টাটা
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
পাগলের গল্প পড়ে তো আমারই ভয় লাগছে।কি ভয়ংকর? আপনার তো দেখছি খুবই সাহস মোটেই ভয় পান নি।আমি বাবা পাগল অনেক ভয় পাই।যে ঘটনা ঘটেছে তাতে বাচ্চা মানুষ ভয় তো পাবেই।দ্রুত ভয় কাটাতে হবে বাবু টার।তাহলেই জ্বর চলে যাবে।
সত্যি এখন ভয় লাগছে সেদিনের কথা ভেবে। ঠিক বলেছেন ভয় ভাঙ্গাতে হবে।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ইনশাল্লাহ আপু আপনার মেয়ে খুব শীঘ্রই সুস্থ হয়ে যাবে। অনেক অনেক দোয়া রইল আপনার মেয়ের জন্য🤲🤲🤲🤲।আসলে আপু বাচ্চাদের অনেক সময় ভয় থেকে এরকম জ্বর চলে আসে। দোয়া করি আপনার মেয়ে আবার দুষ্টুমিতে ঘর ভরে তুলুক। আমাদের পাশে বাচ্চাটা কিছুদিন আগে এরকম ভয় থেকে অনেক জ্বর চলে আসছিল কিছু তে কিছু হচ্ছিল না পরে মসজিদের ইমাম হুজুর থেকে পড়া পানি এনে খাইয়েছে আর একটু জাগিয়ে এনেছে পরে গেছিলাম সুস্থ হয়েছে। আপনাদের এরকম কোন কিছু থাকলে ওষুধের পাশাপাশি করে দেখতে পারেন।
আমিও ভাবছি আপু কোন হুজুরকে দিয়ে ঝাড়ফুঁক দিয়ে নেবো।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ঘটনাটি অনেক ভয়ঙ্কর ছিল। কিন্তু আপনার মেয়ের জ্বর হয়েছে শুনে খুব খারাপ লাগছে, আপনি আপনার মেয়েকে পাগলরা অনেক ভাল হয় এমন কিছু কথা বলে ওর মনের ধারনাটা পাল্টাতে পারলেই দেখবেন ও সুস্থ্য হয়ে গেছে। আপনার মেয়ের জন্য দোয়া করছি যেন অতি দ্রুত সুস্থ্য হয়ে ওঠে।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া পাগল সম্পর্কে ভালো কথা শোনাতে হবে।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
পাগল দেখলে তো আমারই ভয় লাগে। আর আপনার মেয়ে তো এখন অনেক ছোট। আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম আপনার মেয়ে পাগলের সব ঘটনা দেখেছে এতে সে আরো বেশি ভয় পেয়ে গেছে। এমনিতেই জ্বরের ঔষধ খেয়ে জ্বর সারছে না আপনি শিশু বিশেষজ্ঞ কাছে নিয়ে যেতে চাইছেন এটা খুবই ভালো কথা। তবে এই সময় ওর সাথে সব সময় থাকবেন আপু। আপনার মেয়ের জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল।
হ্যাঁ আপু ওর পাশে পাশেই থাকি সব সময়। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
বেশ ভয়ংকর একটি বিষয় আপনি শেয়ার করলেন আসলে সাবধান থাকা উচিত। কারণ এই ধরনের পাগল ছন্দ সেজে অনেকেই ঘরে ঢুকে যায় এবং ঘরে ঢুকে গিয়ে মানুষের ক্ষতি করে জিনিসপত্র নিয়ে যাই। আপু আপনি গেট লক করে দিছেন ভালো করছেন। তবে যেহেতু একটু আলাদা বাড়ি পাশে কোন ঘর নেই তাহলে আপনাকে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আর মেয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।
ঠিক বলেছেন আপু পাগল সেজে ঘরে ঢুকে অনেক ভয়ংকর কাজ করে থাকে অনেক সময়।দিনে গেটলক করে রাখি।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
হঠাৎ করে বাড়ির সামনে এভাবে পাগলের আগমন আমার কাছে অনেকটাই অদ্ভুত লাগলো দিদি। তাছাড়া এরা কিন্তু পাগলের অভিনয় করে বাড়ির সবকিছু চুরিও করে নিয়ে যায়। তবে আপনি আপনার মেয়েকে যে কথাটা বলেছেন অর্থাৎ যদি গেট বন্ধ না রাখা হয় তাহলে পাগল এসে গলা কেটে দিয়ে যাবে, এই কথাটা খুব সম্ভবত আপনার মেয়ে কল্পনা করেছে, আর এই কারণেই তার জ্বর এসেছে। যাইহোক, যেহেতু ভয় পেয়েছে আশা করা যায় তেমন কোন সমস্যা হবে না। ভালো ডাক্তার দেখান অথবা ঝাড়ফুঁকও করা যেতে পারে যেহেতু ভয় পেয়েছে।