বাবার জন্য মেয়ের কান্না 😪
হ্যালো,
আমার বাংলা ব্লগবাসি বন্ধুরা। কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন সবাই। আমিও সৃষ্টি কর্তার কৃপায় ভালো আছি।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ গাইবান্ধা জেলা থেকে যুক্ত। আমি বাংলা ব্লগের একজন নিয়মিত ভেরিফাই মেম্বার। আমার বাংলা ব্লগে যুক্ত হতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।যতো দিন যাচ্ছে ততোই বাংলা ব্লগের প্রেমে পড়ে যাচ্ছি। ব্লগিং যেন আমার পেশা ও নেশায় পরিনত হয়ে যাচ্ছে।
আজ আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো বাবার জন্য আমার মেয়ের কান্না নিয়ে কিছু কথা।
প্রতিটি সন্তানেই বাবা,মাকে খুব ভালোবাসে। তবে ইদানীং লক্ষ্য করা যায় সবার বাচ্চাদের বাবার প্রতি ভালোবাসার মাপ টা একটু বেশি।বাবা বলতে সব বাচ্চারা ব্যাস্ত।মায়ের কাছে সারাদিন থাকবে মা বাচ্চাদের সব কাজ করবে স্নান
করানে,খাওয়ানো,সাজুগুজু করিয়ে দেয়া কিন্তুু তবুও বাবার প্রতি ভালোবাসা টা খুব বেশি মনে হয়।
মেয়ে বাচ্চাদের বাবার প্রতি বরাবরই টান একটু বেশি থাকে।আশে পাশের বাচ্চাদের দেখেছি এবং এখন আমার মেয়ের বেলায়ও দেখছি।
আমার মেয়ের বাবা যেহেতু বাইরে থাকে তাই বাবার প্রতি দূর্বলতা বেশি প্রকাশ পায়।বাবা বাড়িতে আসলে আমার মেয়ে যেন স্বর্গ হাতে পায় এমন অবস্থা। আমার বর সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন তাই ব্যাস্ততা বরাবরই একটু বেশি তাই খুব বেশি ছুটি পায় না তবে সাপ্তাহিক ছুটিতে বাড়িতে আসার চেষ্টা করে এবং আসেনও।কোরবান ঈদে যেহেতু মুসলিমদের একটা বড়ো ধর্মীয় অনুষ্ঠান তাই মুসলিমের ছুটি হলেও হিন্দুদের ছুবি স্বাভাবিক ভাবেই বন্ধ থাকে।
আর এজন্যই ঈদের সময় থেকে ঈদ পরবতী সময় সাপ্তাহিক ছুটিতে বাড়িতে আসার সুযোগ হয়ে ওঠেনি।ঈদের ছুটি কাটিয়ে যখন সবাই কর্মস্থলে চলে এসেছে তখন স্বাভাবিক ভাবেই সাপ্তাহিক ছুটিতে আসার কথা।কিন্তুু প্রমোশনের জন্য আটকে যায়।প্রমোশনের কাগজ পত্র যে কোন সময় আসবে এবং কিছু ফর্মালিটি আছে সেগুলোর জন্য ছুটিতে আসা হয়ে উঠছে না।
এদিকে মেয়ে প্রতিদিন হাতে গুনতে থাকে আজ কি বার কাল কি বার কারন বৃহস্পতিবার বাবা আসে এবং আসবে এই আশায় বসে থাকে।আজ বৃহস্পতিবার আসার কথা ছিলো তবে রবিবারে মধ্যেই প্রমোশন হয়ে যাবে জন্য আসেনি।মেয়েকে বলেছিলাম বাবা আসবে মেয়ে তো আনন্দ আত্নহারা। বার বার জানালা দিয়ে তাকায় বাইকের শব্দ পেলে।হঠাৎ ফোন করে আমাকে বল্লেন যে আজ ছুটুতে যাওয়া হবে না রবিবার অবদি অপেক্ষা করতে হবে।প্রমোশনের রেঙ্ক লাগিয়েই যাই।
কথা শেষ করছি মেয়েও ঘরে ঢুকেছে এবং আমিও বলে ফেলেছি যে বেটা বাবা আজ আসতে পারবে না কাজে আটকে গেছে। এই কথা শোনা মাত্রই ফ্লোরে গড়াগড়ি দেওয়া শুরু করে দিয়েছে সাথে কান্না। আমি তো বলি আহাম্মক সেজে গেছি। আসলে বলবোই না বা কেন বারবার কয়টা বাজে বাবা কখন আসবে এরকম শুরু করে দিয়েছিল। না বললে তো আশায় আশায় বসে থাকবে।
যে কান্না শুরু হয়ে গেছে সে কান্নার আর শেষ নেই। এদিকে আমি নানান ভাবে সান্তনা দিচ্ছি কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। টিস্যু দিয়ে বারবার চোখ মুছে দিচ্ছে কিন্তু অনর্গল কান্না করেই যাচ্ছে। কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। তাড়াতাড়ি ফোনটা দিয়ে দিলাম হাতে। ফোন পেলে দিন দুনিয়া সব ভুলে যায়। গেম ও কার্টুন খেলে। কিন্তু আজকে আর ফোন নিচ্ছে না। ভিডিও ওপেন করে সামনে ধরছিলাম কিন্তু সে দেখবে না তো দেখবেই না। তু কান্না আর কান্না করেই চলছিলো।
পাশের বাড়ির দুজন বাচ্চা আসলো খেলা করার জন্য।তাদের সাথেও খেলবে না সাব জানিয়ে দিলো।আসলে ওর বাবার জন্য বুকটা খা খা হয়ে গেছে। কিছুদিন থেকেই আসছে না তো তাই বাবার জন্য ব্যস্ত হয়ে গেছে। বারবার বোঝাচ্ছিলাম বাবা আসলে বাইকে চড়ে ঘুরবো আমরা। পার্কে গিয়ে বসে থাকবো। মামার বাড়িতে যাবো।
মিথ্যা সান্ত্বনা দিলাম একটু যে আজকে আসলে মাত্র এক দিনের ছুটি দেবে তাই আসলো না। কয়েকদিন পর এক সপ্তাহের ছুটি নিয়ে আসবে আর তখন আমরা মজা করে ঘোরাফেরা করবো। কিছুতেই মানে না কিছুই বোঝেনা কান্না করেই যাচ্ছে। এরপর কান্না করতে করতে বাবাকে মেসেজ করলো। বাবা তুমি আসছো না আমি কান্না করি। এটা দেখে বাবা ফোন দিল এবং বাবাকে দেখে আরো বেশি কান্না শুরু করে দিলো মেয়ে।
এরপর বাবা কিছু সান্তনা মূলক কথাবার্তা বলল একটু হাসালো তারপর আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে গেলো।আবারো মেয়ে অপেক্ষায় বসে আছে বাবা আসবে। বাবা আসলে বাবার সঙ্গে পার্কে যাবে বাবার সঙ্গে ফুচকা খাবে। পতি পদে পদেই মেয়ের বাবা কে লাগবে। বাবার সঙ্গেই ভাত খাবে বাবার সঙ্গেই ব্রাশ করবে বাবাকেই স্নান করিয়ে দিতে হবে। বাবা আসলে সবকিছুই যেন বাবাকেই করতে হবে।
আমার অবশ্য ঝামেলা কম হয় ওরা বাবা মেয়ে দুজনে মিলে সব কাজ করে। আর আমি শুয়ে শুয়ে কোন চাপতে পারি।
আসলে প্রতিটি সন্তানের বাবার প্রতি দূর্বলতা বেশি প্রকাশ করে। আমার মেয়ে তোর বাবা আসলে সারাদিন ওর বাবার পিছনেই থাকো। কোন কাজে গেলে সাথে করে নিয়ে যেতে হয় বাজারে গেলেও সাথে করে নিয়ে যেতে হয়। বাবাকে ছাড়া সে খায় না বাবাকে ছাড়া সে ঘুমায় ন। ঘুম থেকে উঠে যদি বাবাকে চোখের সামনে দেখতে না পায় ঘুম থেকে চোখ খুলেই আগেও প্রশ্ন বাবা কোথায়।
আমি মাঝে মাঝে বলি বাবা চলে গেছে দৌড়ে গিয়ে ব্যাগ দেখে আছে কিনা। আমার মেয়ের এই বুদ্ধিটি অনেক ছোটবেলা থেকেই। ওর বাবা কোন কাজে কোথাও একটু গেলে যদি আমাকে প্রশ্ন করতো বাবা কোথায়। আমি মজা করে বলতাম বাবা চলে গেছে। তখন সে দৌড়ে গিয়ে ওর বাবার ব্যাগ দেখে নিতো এবং বলতেই তো ব্যাগ আছে পাওয়া যায়নি। অতটুকু বাচ্চার এই বুদ্ধি দেখে আমি অবাক হয়ে যেতাম। বাবার জন্য মেয়ের আজকের কান্না দেখে আমারও খুব খারাপই লাগলো।
কবে আসতে পারবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্য কোন পোষ্টের মাধ্যমে সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন নিরাপদে থাকুন।
টাটা।
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | general writing |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
কপি লিংক
আপনার মেয়ে তাহলে দাদাকে অনেক বেশি ভালোবাসে। প্রতিদিন যদি দিন গুণতে থাকে তাহলে বুঝুন তার বাবাকে কতটা ভালোবাসে। বাবা মেয়ের ভালোবাসা অটুট থাকুক শুভকামনা রইল তাদের জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া চমৎকার সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আসলে আপু মেয়েরা সাধারণ বাবার প্রতি দুর্বলতা বেশি থাকে। আর এমনিতে অনেক দিন থাকা যায় কিন্তু একবার আসতে চাইলে না আসলে খারাপ লাগা স্বাভাবিক। এটা সত্যি বাচ্চারা ফোন পেলে দুনিয়া ভুলে যায় কিন্তু রাগ করলে আর নেবে না।ধন্যবাদ আপু পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু আসার কথা শুনলে মনটা আলগা হয়ে যায় আর না আসলে তখন প্রচন্ড খারাপ লাগে। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
সন্তানের কাছে শুধু বাবা নয়, মা ও বাবা, দুজনেই সমান প্রয়োজনীয়। আপনার সন্তানের বাবার সাথে থাকে না বলে আপনার সন্তান তার বাবাকে প্রচন্ড মিস করে, আবার ও যদি বাবার কাছেই থাকতো আর আপনি কর্মসূত্রের বাইরে থাকতেন তখন দেখতেন আপনাকেও প্রচন্ড মিস করছে। আসলে মা ও বাবা দুই সন্তানের জন্য অপরিহার্য অঙ্গ। আমাদের কিছু করার থাকে না কাজের তাগিদে এদের ব্যস্ত রাখতে হয়। ভালো থাকুন সন্তান নিয়ে পরিবার নিয়ে সবাইকে ভাল রাখুন।
একদমই ঠিক বলেছেন দিদি, যার অভাব যখন হয় তখন তার প্রতি দুর্বলতা বেশি দেখায় সন্তানেরা এবং যেকোনো মানুষই। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
বাবার প্রতি মেয়েদের টান একটু বেশি থাকে। বাবারা মেয়েদের একটু বেশি ভালোবাসে।আর মেয়েরা বাবাকে সবসময় চোখে হারায়।আপনার মেয়ে নিজের বাবাকে ভীষণ ভালোবাসে।এমন ভালোবাসা দেখে খুবই ভালো লাগলো আপু।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
মনের কথা বলেছেন আপু সারাদিন এমনভাবে দেখাশোনা করি খেয়াল রাখি তাও বাবার প্রতি ভালোবাসা বেশি। আমার ছেলেও তাই।যাই হোক মেয়ের অবস্থা শুনে বেশ খারাপই লাগলো। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি মেয়ে তার বাবাকে কাছে পাবে। আর দাদার প্রমোশনের জন্য অগ্রিম শুভকামনা রইল।
আরাধ্যার বরাবরই মেজদার প্রতি ভালোবাসা টা একটু বেশি।যখনই মেজদা বাড়িতে আসে সারাক্ষণ আরাধ্যা মেজদার সাথেই থাকে।আর মেজদাও বাচ্চাদের সাথে খুব ভালোভাবে মিশতে পারে তাই সব বাচ্চারাই মেজদা কে বেশি ভালোবাসে।মেজদার প্রমোশনের কথা শুনে খুবই ভালো লাগলো।আশা করি খুব দ্রুত প্রমোশনের পরই মেজদা ছুটি নিয়ে বাড়িতে চলে আসবে।আর মেজদার প্রমোশনের জন্য অগ্রিম শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।