জেনারেল রাইটিং সত্যি ঘটনা অবলম্বনে গল্প দ্বিতীয় পর্ব💓
হ্যালো,
আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই।আশা করছি ভালো আছেন। আমিও সৃষ্টি কর্তার কৃপায় ভালো আছি।
আজ আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো সত্যি ঘটনা অবলম্বনে গল্পের ২য় পর্ব।
আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
মা এবং ভাই মেয়েটিকে যাওয়ার কথা বলে এবং মেয়েটি দু-টানায় দিন পার করে আসলে সে কি করবে চলে যাবে না কি থাকবে।এসব ভাবতে থাকে।
এর মাঝে হয়েছিল কি মেয়ে পূজাকে ওর মা ###### প্রতিদিনের ন্যায় পড়তে বসিয়েছিলেন। দরজা লাগিয়ে পড়ায় প্রতিদিন। এটা আবার ছেলেটির এক জেঠি লক্ষ্য করেছেন এবং একদিন কান লাগিয়ে দিয়ে শুনেছেন আসলে কি পড়ায়।তো শুনতে পায় আরবি শিক্ষা দিচ্ছে পূজাকে। তখন ঢাকায় ছেলেটির কাছে ফোন করে সব বলে দেয় তার জেঠি।ছেলেটি রেগে মেগে বউকে শাসন করে এবং এরকম কাজ আর যেন কোনদিন না করে জানিয়ে দেয়।
মনকষ্টে মোয়েটি ভাবে তার মেয়ে পূজাকে নিয়ে চলে যাবে সবার অজান্তেই।
মেয়ের মা ও ভাই মেয়েটিকে পালাতে বলে দ্রুত। ওনাদের কথায় মেয়েটি ভাবল সত্যিই তাই হবে সে পালিয়ে বাবা-মার কাছে চলে যাবে বাচ্চাকে নিয়ে। তাহলে তার বর
একদিন তার কাছে যাবে এবং মুসলিম ধর্ম গ্রহন করে সেখানেই বসবাস করবে। একদিন রাত্রে মেয়ে পূজাকে নিয়ে মেয়েটি ভাইয়ের সাথে পালিয়ে গেলেন।যেহেতু বাড়ির পাশেই শহর মাইক্রো নিয়ে ঢাকা থেকে ভাই এসেছিল। শহরে অপেক্ষা করছিল বোনকে ফোন দিয়ে। যখন সবাই ঘুমিয়ে গেছে তখন মেয়েকে কোলে নিয়ে এক কাপড়েই চুপিচুপি পালিয়ে গেছে। ভাইয়ের সঙ্গে মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় নিজ বাড়িতে চলে গেল মেয়েটি।এদিকে পরদিন সকালে তো মা-মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ছোট্ট একটা বাচ্চাকে নিয়ে রাত্রের বেলায় কোথায় গেল সবাই ভীষণ চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল। সকালে গ্রামের তোলপাড় অবস্থা। ছেলেটি ঢাকায় ছিল বাড়ির লোকেরা ছেলেটিকে ফোন করে বিস্তারিত সব ###### জানালো যে তার বউ এবং মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন ছেলেটি আন্দাজ করতে পারল হয়তো বা বাড়িতে পালিয়ে গেছে। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারল যে সত্যি তারা বাড়িতে গেছে। এবার ছেলেটি ঢাকায় শ্বশুর বাড়িতে গেলেন এবং নিয়ে আসতে চাইলেন কিন্তু তারা জানিয়ে দিলেন তুমি এখানে থাকলে থাকো আমাদের মেয়ে আর তোমার সাথে যাবে না। এদিকে ছেলেটির যে মেয়ে হয়েছে সে মেয়েটি ছেলেটির প্রাণ। মেয়েকে ছাড়া সে একদম কিছুই বোঝে না। সুন্দর ফুটফুটে মেয়ে মেয়েটির নাম রেখেছিল পূজা। তারপর ছেলেটি তার শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার আশা করতে লাগলো অনেক বোঝালো কিন্তু তার বউ কিছুতেই আসতে রাজি হলো না। এভাবে প্রায় এক বছর কেটে গেলো।যখন পালিয়ে ছিল তখন পূজার বয়স ছিল দুই বছর। এখন সে তিন বছরের মেয়ে। খুব সুন্দর এবং বুদ্ধিমান হয়েছে মেয়েটি। মেয়েটি ও বাবা বলতে পাগল বাবা ছাড়া কিছুই বোঝেনা।
ছেলেটি শ্বশুর বাড়িতে যাওয়া আসা করতে করতে একদিন মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে চলে গেল তার বড় বোনের বাসায় ময়মনসিংহ। সেখানে গিয়ে একমাস লুকিয়ে থাকলো। একমাস থাকার পর বাচ্চাকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসলো ছেলেটি। বাচ্চাটি এতই বুদ্ধিমান ছিল যে বাবাকে ছাড়া কোথাও যাবে না এটা বলতে লাগলো। তবে নিয়ে আসার পর ছেলেটি তার শশুর বাড়িতে এবং বউ এর কাছে ফোন করে জানিয়েছিল যে সে তার মেয়েকে নিয়ে চলে এসেছে।ওনারা অনেক চেষ্টা করেছিলো বাচ্চাকে নেয়ার কিন্তুু পারেন নি। এভাবে কেটে গেল অনেকগুলো বছর।এর মধ্যে অনেকবার পূজাকে নিতে এসেছিল ওর মা কিন্তু সে যায়নি। সবাইকে বলিয়ে দিত বাবাকে ছাড়া সে কোথাও যাবে না। এভাবে কেটে গেল অনেকগুলো বছর। পূজা যখন ক্লাস থ্রিতে উঠল তখন ওর বাবা আবার বিয়ে করলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি মেয়েকে। সৎ মা কখনো ভালো হয় না কিন্তু পূজাকে ভালোবাসতো কারণ গ্রামের সবাই পাড়া-প্রতিবেশী পরিবারের মানুষ এবং ওর বাবা এতটাই বেশি কেয়ার করতেন ভালোবাসতো যে ওর সৎ মা সাহস পায়নি খারাপ আচরণ করার জন্য। এরপর ওর সৎ মায়ের কোল জুড়ে আসলো একটু ছেলে সন্তান। সৎ মা খারাপ ব্যবহার করতে না পারলেও বাচ্চার সব কাজ করে নিতো পূজাকে দিয়ে। স্কুল থেকে এসে সারাদিন বাচ্চাকে কোলে নিয়ে থাকতে হতো খাওয়াতে হতো স্নান করাতে হতো ঘুম দিতে হতো। পূজা সব সময় চুপচাপ থাকতো কিছু বলতো না কারণ যদি ওর সৎ মা ওকে বাড়িতে থাকতে না দেয় ছোট মানুষ তো এসব ভাবতো। বাবাকে ছাড়া একদমই থাকতে পারে না এবং পারবেও না।পূজার বাবা যতক্ষণ বাড়িতে থাকতো ততক্ষণ পূজার সঙ্গে ওর সৎ মা খুব ভালো ব্যবহার করত বলতো যা ওকে নিয়ে থাকতে হবে না পড়তে বসো পড়াশুনা করো বাবা আড়াল হলেই বাচ্চার সব কাজ করে নিতো। পূজা ওর বাবাকে কিছু বলত না অশান্তি হবে ভয়ে।
এরপর শোনা গেল যে পূজার যে নিজের মা ছিল ঢাকায় ওনার বিয়ে হয়ে গেছে। বাবা ভাই যেহেতু বিদেশে থাকে তাই বিদেশি কোন এক ছেলের সঙ্গে উনার বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। এদিকে পূজার বাবা কিছুটা অসুস্থ হয়ে গেলেন। হাজারো হোক প্রথম বউকে তো ভালোবেসেই বিয়ে করেছিলেন তাই উনার মনে সব সময় অশান্তি কাজ করতেন কষ্ট পেতেন কাউকে কিছু বলতে পারতেন না কিন্তু নিয়ম মাফিক চলাফেরা করতেন না। ডায়াবেটিস হয়েছিল কিন্তু নিয়ম মেনে না চলার কারণে ডায়াবেটিস অনেক বেড়ে গিয়েছিল।পূজা বড় হয়ে গেছে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে তাই একদিন ওর নানি ফোন করে বলে যা হবার হয়ে গেছে তুমি তো পরীক্ষা দিয়েছো এখন ঢাকায় এসে কিছুদিন থেকে যাও। বাড়িতে থেকে থ থেকে পূজারও ভালো লাগছিকে না।হাজার হোক মায়ের সাথে দেখা হবে এই আশায় সে রাজি হয়ে যায় ওর বাবা ও রাজি হয়ে যায়। মেয়েকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয় এক সপ্তাহের জন্য।কিন্তু এক মাস দু মাস হয়ে যায় মেয়েকে আর পাঠায় না টাল বাহানা শুরু করে দেয়। আজ নয়তো কাল কাল নয় তো পরশু এভাবে বেশ দুতিন মাস কেটে যায়। পূজাকে ওর বাবার সাথে যোগাযোগ করা বন্ধ করে দেয়। পূজা বাড়িতে আসার জন্য ছটপট করতে থাকে। আসলে ওনাদের উদ্দেশ্য ছিল পূজাকে ওখানে বিয়ে দিয়ে দেবে কোন এক মুসলিম ছেলের সঙ্গে। বিদেশি এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করে ফেলে ওনারা পূজার
(চলবে)
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে বিয়ে হলে অনেকটা এমনি হয়। যাইহোক পূজা যেহেতু অনেকটা বড় হয়েছে তাই তাকে জোড় করে বিয়ে দেওয়াটা ঠিক হবে কিনা। আর যে মেয়ে ছোট বয়সে বাবার সাথে পালিয়ে গিয়েছে সে এখন যে পালাবে না তার কোন নিশ্চয়তা নেই। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়।
ঠিক বলেছেন আপু হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে বিয়ে হলে এমনি হয়।
যেকোনো কাজ করার আগে অবশ্যই ভেবেচিন্তে কাজ করা উচিত। আমরা অনেকেই জানি ভালোবাসা কোনো বাধা মানে না। তারপরও সবদিক বিবেচনা করা উচিত। আজ যদি তারা ভেবেচিন্তে কাজ করতো তাহলে পূজার এমন অবস্থা হতো না। এই গল্পের প্রথম পর্বটি আমি পড়েছিলাম দ্বিতীয় পর্বটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। এখন দেখা যাক পরবর্তী পর্বে পূজার জন্য কি অপেক্ষা করছে।আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন পরবর্তী অংশ।ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন আপনি যে কোন কাজ করার আগে ভেবে চিন্তে করা উচিত। ধন্যবাদ প্রথম পর্ব ও দ্বিতীয় পর্ব পড়ার জন্য। অবশ্যই বাকি পর্বগুলো ভাগ করে নেব আপনাদের সাথে।
পূজার মা পূজার জন্য মুসলিম ছেলের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করেছে। কিন্তু কারো ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেওয়া ঠিক না এতে করে হিতে বিপরীত হতে পারে। দারুন একটি গল্প লিখেছেন আপু ।আপনার লেখা গল্পটি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। অনেক সুন্দর ভাবে গুছিয়ে গল্পটি উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন কারো ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেয়া ঠিক নয় তাও আবার সে নাবালিকা মেয়ে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।