প্রযুক্তি যখন অভিশাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়<@10%for shyfox>
আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন? আশা করি সবাই সুস্থ এবং ভালো আছেন।
প্রযুক্তির কল্যাণ যেমন আশীর্বাদ হয়ে আসে তেমনি অকল্যাণকর এবং অমঙ্গলকর দিক ও নিয়ে আসে। প্রযুক্তির কল্যাণকর দিক নিতে নিতে কখন যে অকল্যাণের ফাঁদে পা দিয়ে দেই আমরা সহজে বুঝতেই পারিনা।
ইন্টারনেটের ব্যাপক বিস্তারের কারণে পৃথিবীর সবকিছুই আমরা হাতের নাগালে পেয়ে যাই। এক কথায় নিত্যদিনে চলার মতো সবকিছুই সহজে প্রযুক্তির কল্যাণে ঘরে বসেই করতে পারি।
আর এই প্রযুক্তির কারণে ছোট ছেলে মেয়ে থেকে শুরু করে সকল বয়সের মানুষের ওপর ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলছে। আর এর মূল কারণ হলো সকল বয়সের মানুষের হাতে ছোট্ট মোবাইল ফোন। আর এর মাধ্যমেই সকল কার্যকলাপ (ভাল বা খারাপ) মানুষ করে থাকে।
আমাদের স্বভাব যে আমরা যখন কোনো ভালো জিনিস পাই তখন এর থেকে খারাপ জিনিসের প্রতি আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি থাকে। আর এই বিষয়টি কাজ করে সবচেয়ে বেশি যুবক বয়সে। আর মোবাইলের মাধ্যমেই এসব কিছু সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।
আর এই তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির কৌশলগত কারণে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ,টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি বিস্ফোরণের মত যুব সমাজের মধ্যে ব্যাপকতা লাভ করেছে। আর এই মাধ্যমে উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও হবে।
আর এই ব্যাপকতা লাভ করার কারণে ছোট শিশু থেকে যুবক বয়সের মানুষেরা এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এমন কিছু কাজ করছে যার মাধ্যমে তারা তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আর এরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তারা নিজেরাও তা বুঝতে পারছে না।
মূলত এই ফেসবুকের প্রসারতার মাধ্যমে বেশিরভাগ ছেলে মেয়ে এর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। তারা কোনভাবেই ফেসবুক থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে পারছে না। এছাড়াও তারা ফেসবুকে সময় দিয়ে নিজেদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে দিচ্ছে। ছাত্রজীবন যে কতটা মূল্যবান তা বোঝা যায় যখন শেষ হয়ে যায় তখন এর মূল্য আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায়। কিন্তু তখন আর কিছু করার থাকে না।
আর আমরা এতটাই আসক্ত হয়ে পড়ছি যে এই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে চোখের পলক ফেলার মতো সময় আমরা পাই না। যখন আমরা মোবাইল ব্যবহার করতে থাকি তখন চোখকে আমরা কখনো প্রশান্তি দেই না।
শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ই বিশ্রামের প্রয়োজন। কিন্তু চোখ এমন একটি মূল্যবান অঙ্গ যেটি ছাড়া এক মুহূর্তও কল্পনা করতে পারিনা।
এই মোবাইলের প্রতি আসক্তি হওয়ার কারণে আমাদের ছোটবেলা থেকেই চোখের সমস্যা দেখা দেয়। এমন সমস্যা যা চশমা ছাড়া কোন ভাবেই চলতে পারি না। আর চশমা ব্যবহার করেও আমরা এই আসক্তি থেকে সহজে বের হয়ে আসতে পারি না।
সবচেয়ে মূল্যবান কথা এইযে, আমরা ছাত্রজীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় কাটিয়ে দেই। ছাত্রজীবনের কষ্টের ফল আমরা কর্মজীবনে গিয়ে পাই। কিন্তু আমরা ছাত্র বয়সে এই সময় তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণ কে অকল্যাণ হিসেবে ব্যবহার করে আমাদের মূল্যবান সময়কে নষ্ট করে দিচ্ছি।
আর আজকে যারা ছাত্র জীবন অতিক্রম করেছেন কিছুদিন পর তারাই দেশের হাল ধরবে এবং দেশকে উন্নতির উচ্চ শিখরে নিয়ে যাবে। কিন্তু এই ছাত্র জীবনে এর গুরুত্বপূর্ণ সময় গুলোকে অযথা কাজে ব্যবহার করে শুধু যে নিজেকেই ধ্বংসের দুয়ারে ঠেলে দিচ্ছে তা নয় বরং নিজের দেশকেও তারা কঠিন এক দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। যার কারণে দেশ অন্যান্য পারিপার্শ্বিক দেশের তুলনায় সব দিক থেকে পিছিয়ে যাবে।
পরিশেষে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুস্থ সুন্দর পরিবেশ উপহার দিতে হলে আমাদেরকে এই প্রযুক্তির অকল্যাণকর দিক এবং খারাপ দিক থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভালো দিকগুলোকে ব্যবহার করে এমন কিছু করা যার মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ সুন্দর এবং উজ্জ্বল হয়। ছোট শিশুরা যেন এই ভয়াবহতার হাত থেকে বের হয়ে ভালো কিছু করতে পারে সেদিকে প্রত্যেকের খেয়াল রাখা। প্রযুক্তির এই ভয়াবহতা থেকে বের হওয়ার জন্য প্রত্যেক শ্রেণীর বয়সের মানুষ কে সচেতন হতে হবে।
আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্ট টি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি ভবিষ্যতে আপনাদের জন্য ভালো কিছু নিয়ে আসতে পারবো। আপনাদের সকলের জন্য শুভকামনা রইল।
আমি মোহাম্মাদ সামাউন আলী। পড়াশোনা করছি প্রকৌশলবিদ্যায় চুয়েটে । আমি আমার পোস্টটি সকলের মাঝে শেয়ার করতে পারেন আনন্দিত। নিজের দেশ ও জাতির জন্য ভালো কিছু করার লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি। আশাকরি সকলেই আমার জন্য দোয়া রাখবেন।