গল্প "কাবিননামা " পর্ব ০৩ (শেষ) 10% beneficially @shy-fox
বন্ধুরা আজ কাবিননামার তৃতীয় পর্ব অর্থাৎ শেষ পর্ব। আজকের পর্ব থেকে আমরা অনেক কিছু জানতে পারবো আবেগ আর বাস্তবতার এক কথা নয়।
তাই আসুন আবেগকে প্রশ্রয় না দিয়ে বিবেককে জাগ্রত করি।
চলুন তবে শুরু করা যাক তৃতীয়
কাবিননামা
মিলন এইতো আর কয়েকটা দিন আমি নিজেই সবাইকে জানাবো।
আর একটু ধৈর্য ধরো এমনি করে বেশ কিছু সময় আবারো কেটে যায় দুজনের। বাড়ি থেকে প্রায় বিয়ের চাপ শুরু হলো। কিন্তু কেউ হ্যাঁ বলছে না। একদিন ছোট্ট একটা বিষয় নিয়ে মোবাইল ফোনে দুজনের ভীষণ ঝগড়া হয়।।
রাত পেরিয়ে সকাল
সকাল পেরিয়ে আবার সন্ধা ঝগড়ার শেষ নেই।
দুজন দুজনকে কে কাকে কি বলছে তারা নিজেরাই বুঝতে পারছে না।
একটা পর্যায়ে গিয়ে মিলন চিৎকার করে উঠে বলে দেখো মিষ্টি তুমি আর আমার সাথে যোগাযোগ করবে না।
তোমার সাথে আমার আর কোন সম্পর্ক নেই।
আর যদি কখনো যোগাযোগ করার চেষ্টা কর তাহলে আমি আত্মহত্যা করবো। তোমার বাবা মায়ের কসম দিলাম আর কখনোই তুমি আমার সাথে যোগাযোগ করবেনা।
মিষ্টি ভাবলো ও রাগের মাথায় এসব বলছে।
অনেক পরে মিষ্টি আবারও মিলনকে ফোন দিয়ে বলে ঠান্ডা মাথায় ভাবো তুমি কি আমার সাথে সম্পর্ক রাখতে চাও না? সত্যিই চাইনা ।
মিষ্টি আবারও বলছে তুমি যা বলছ, মন থেকে বরছ তো? ভেবে চিন্তে বলছো তো,,,,,,,
মিলন আবারো চিৎকার করে বলে না, না, না আমি তোমার সাথে আর কোন সম্পর্ক রাখতে চাই না। সত্যিই চাইনা।
মিষ্টি আবারো বলছে তুমি যা বলছ তা মন থেকে বলছো তো?
ভেবে চিন্তে বলছো তো? মিলন হ্যাঁ মন থেকে বলছি। তোমার মত মেয়েকে ভালোবেসে আমি ভুল করেছি। সত্যিই জীবনে একটা বড় ভুল করেছি।।
তুমি তোমার মতো চলো আমাকে আমার মত চলতে দাও প্লিজ।
মিষ্টি গুমড়ে গুমড়ে কেঁদে কেঁদে তবুও বলছে -আই লাভ ইউ আই., লাভ ইউ মিলন।
তুমি অমন করে বলো না।
মিলন কোন জবাব না দিয়ে ফোন বন্ধ করে রেখে দিলো।
মিষ্টির মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে চেতনার সুর।
আজ যেন কেউ দেখছেনা আত্মার আকুতি।
অসহ্য যন্ত্রণায় তিলে তিলে ক্ষয়ে দিচ্ছে জীবনের গতি। কেঁদে কেঁদে নাওয়া-খাওয়া ভুলে অন্ধকার ঘরের বিছানাকে সঙ্গী করে নীরবতা পালন করছে আর ভাবছে আমি যে ভুল করেছি---
এ তারই ফল। আমি বাবা-মাকে কি করে বলি কিছুই খুঁজে পাচ্ছিনা।
নানারকম অশুভ কল্পনা করে প্রায় সিদ্ধান্ত নিল এ জীবন সে আর রাখবে না।
আত্মহত্যা করবে।
বাবা-মা অস্থির হয়ে জানতে চায় ওর কি হয়েছে।
সে কিছুই বলছেনা।
উপায় না পেয়ে ওর মা আমার কাছে আসলো বললো দেখো তো মা মিষ্টির কি হয়েছে আজ তিনদিন ধরে কিছু খায়না কিছু বলে না শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। আমি দেরি না করে ওর মায়ের সাথে ওদের বাড়িতে যাই। মিষ্টির রুমে।
ওর পাশে গিয়ে বললাম কিরে কেমন আছিস? খেয়েছিস ওর কোন উত্তর পেলাম না আমি।
আবারো বললাম কি হয়েছে তোর যা আমাকে বলা যাবে না।
এত দিনের বন্ধু আমরা আজ আমাকে পর করে দিলি।।
সঙ্গে সঙ্গে ও বালিশ থেকে মাথা তুলে আমাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কান্না শুরু করলো। কিছুতেই থামছে না। একটা পর্যায়ে ও আমাকে সব কথা খুলে বলে ওর সব কথা শুনে আমি মুহুর্তেই অন্য জগতে হাড়িয়ে গেলাম।
খানিক পরে ওকে বললাম অবশেষে তুই ও শিকারীর জালে আটকে গেলি।
এত বড় ভুল তুই কিভাবে করলি, প্রেম কর ভালো কথা
মিথ্যে মিথ্যে বিয়ে খেলায় কি করে তুই কিভাবে অংশ নিলি তা তো ভেবে পাচ্ছিনা।
তুই কি জানিস আমাদের সমাজে কত রকম পুরুষ আছে??
কত রুপ, কত ভঙ্গিমায় তারা সমাজে বিচরন করছে।
তোর সাথে ওর বিয়ে হয়েছে তার প্রমাণ কি?? তোদেরকে কাবিননামা আছে??
মিষ্টি না।
ভন্ড প্রেমিকরা সমাজে এভাবেই নারীদের মন নিয়ে, নারীদের জীবন নিয়ে খেলছে।
আর আমরা নারীরা তাদের খেলার সুযোগ করে দিয়ে, প্রতারনার ফাঁদে পা দিচ্ছি।
আমরা কত সহজেই তাদের জালে আবদ্ধ হচ্ছি।
মিষ্টি তুই ওর নাম্বারটা আমাকে দে দেখি।
মিষ্টির কাছে মিলনের নাম্বারটা নিয়ে আমি কথা বললাম।
আমি বললাম কি হয়েছে আপনাদের দুজনের মধ্যে?কেনইবা সম্পর্কের বিচ্ছেদের প্রসঙ্গ আসছে বলতে পারেন??
মিলন আমি যা করেছি ভুল করেছি।
ওর মত মেয়েকে আমার পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব না।এত ঝগড়া আমার ভাল লাগেনা।
ওকে বলে দেবে ন ও যেখানে খুশি বিয়ে করতে পারে আমার কোনো আপত্তি থাকবে না।
তাছাড়া আপনারা আমার কিছুই করতে পারবেন না। তাহলে বিয়ে করলেন কেন?
মিলন আমি বিয়ে করেছি এর কোন প্রমান আছে কি কোন কাবিননামা আছে কি।
তাহলে কিছুই হবেনা আমার।
কিন্তু বিয়ে করার সময় কি বলেছিলেন মনে নেই। সেগুলো ছিল আবেগের কথা।
আবেগ আর বাস্তবতা এক কথা নয়।
তাই বলছি মাথা খারাপ না করে,, অযথা সময় নষ্ট না করে, আপনারা অন্য কোনো ভালো সিদ্ধান্ত নেন।
আর দয়া করে আমাকে বিরক্ত করবেন না।
মিষ্টিকে তাৎক্ষণিক সান্ত্বনা দেয়া ছাড়া আর কিছুই করার ছিলনা আমার।
মিষ্টি মনে মনে ভাবছে বেদনার বিষাক্ত স্মৃতিগুলো কেন বার বার চোখের সামনে ভাসছে।
সতেজ দেহখানি এখন নিস্তেজ পথ যাত্রী।
ক্লান্ত আমার চোখের রেটিনা। ফোকাস হয়েছে দূর্বল।
হিসাবের খাতায় সংখ্যা মেলানোর অংকরা মিছিল করে।
সন্ত্রাসী ভালোবাসা অনুভূতিকে নিহত করে আজ। ভালোবাসা পালিয়ে যায় অবৈধ নীতির সাম্রাজ্যে।মিথ্যার তাণ্ডবে চিৎকার করে সত্যরা।
আমার জীবনটা এমন হলো কেন?
প্রেম ভালোবাসা কি অন্যায়?
নাকি সত্যি সত্যি ভালোবাসা ভুল
কি করবো আমি পথহারা এসব চিন্তা চেতনা এখন আমার প্রতি মুহূর্তের ত্রাস। যে মুখে ছিল প্রেমালাপ প্রেমের অনির্বাণ শিখা।
ভালোবাসার জোয়ারে নীতিবাক্য আর অসম্ভব ব্যাকুলতা।
আজ সে মুখে প্রতারণার বুলি। সত্যিই তুমি প্রমাণ করলে পুরুষ কতটা মহৎ, কতটা আদর্শবান কতটা ছদ্দবেশী প্রতারক।
জয় হোক তোমার সুখি হও তুমি।
মনে বড় কষ্ট নিয়ে দু চোখের কান্না আর থামে না মিষ্টির।
বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই এখানেই শেষ করলাম কাবিননামা যদি আপনাদের ভালো লাগে, কারো কোনো উপকারে আসে তবেই আমার সার্থকতা।। ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ।
আমি সেলিনা সাথী। আমার প্রফেশন, প্রেজেন্টার, ট্রাইনার ও মোটিভেটর। আমি একজন সমাজ কর্মি ও সংগঠক। এছারা ও তৃনমূল নারী নেতৃত্ব সংঘের নির্বাচিত সভাপতি, বাংলাদেশ। আমি "নারীসংসদ" সংগঠেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি "সাথী পাঠাগার"। আমার লেখা মোট ১০ টি একক ও যৌথ কাব্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। একুশে বই মেলায় প্রতি বছর একটি করে কাব্য গ্রন্থ প্রকাশের চেস্টা করি। আমার লেখা কাব্যগ্রন্থের মধ্যে "মিস্টি প্রম" (উপন্যাস), "অশ্রু ভেজা রাত" (কবিতা), "জীবন যখন যেমন" (কবিতা), "একুশের বুকে প্রম" (কবিতা), "নারীকন্ঠ" (ম্যাগাজিন) অন্যতম।
Cc:
কাবিননামা গল্পটি অনেক সুন্দর হয়েছে আপু।
বাস্তবিক কিছু কথা তুলে ধরেছে যা যানার খুবই দরকার ছিলো। তবে খুব সুন্দর গল্প লিখেছেন আপনি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ
গল্পটির কথা আমার মনেও ছিল না।খুব সুন্দর হয়েছে গল্পটি।ধারাবাহিক এরকম গল্পঃ পড়তে খুব ভালো লাগে আমার।এরকম আরো ৩/৪ পর্বের গল্পঃ আপনার থেকে আশা করছি।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া♥
গল্পটা খুবই রোমান্টিক কথার সাথে এগোচ্ছে আমরা আশা করি সামনে আরও ভাল কিছু পাব
ধন্যবাদ। আজ শেষ পর্ব ছিল।
আপু এই পর্বের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম।ভালো লাগ্লো।তবে দ্রুত শেষ করে দিলেন।আশা করি এরপরে আবার লিখবেন এবং লং করবেন।ধন্যবাদ আপু।
ধন্যবাদ ভাইয়া♥
গল্পটি অনেক সুন্দর করে লিখেছেন আপু ।আমার পড়ে ভালো লাগলো ।আপনার জন্য শুভ কামনা রইল।
অসংখ্য ধন্যবাদ♥
গল্পটি মনে হচ্ছে এখনো আরো পর্ব আছে। অনেক কিছু ভাবাচ্ছে যতই পড়ছি। ততই ভালো লাগছে। আসলেই তাদের প্রেমের সম্পর্ক খুব ভালোই মনে হচ্ছে। আশা করি সামনে আরও ভাল কিছু আশা করব। আপনার কাছ থেকে চালিয়ে যান।
ধন্যবাদ
গল্পটার শেষ পর্বটা খুব সুন্দর ছিক আপু। আপনার লেখা সব সময়ই সুন্দর হয়। এভাবেই আমাদের বিভিন্ন নতুন নতুন গল্প উপহার দিয়ে যান আপু। শুভ কামনা রইল।
ধন্যবাদ ভাইয়া♥
মিষ্টির জীবন টি শেষ হয়ে গেল জেনে খারাপ লাগছে।সুন্দর হয়েছে গল্পটি আপু।আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
ধন্যবাদ আপু। এরকম হাজারো মিষ্টির জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
আপনার গল্পটা অসাধারণ হয়েছে ।।। "কাবিননামা " সত্যি গল্পটা পড়ে খুবই ভালো লাগলো।।
আপনার জন্য শুভ কামনা রইল ❤️🥰🌷
অনেক অনেক ধন্যবাদ♥
গল্পতো স্বল্প,
জীবনের কথা কয়।
গল্পে গল্পে,
প্রেমের শুরু হয়।
গুনিজন ভেবে কয়,
প্রেম বিয়ে এক নয়।
প্রেম মানে বিয়ে নয়,
বিয়ে মানে প্রেম নয়।
প্রেম বিয়ে এক হলে,
সংসার পাততো সবাই মিলে।
কাবিন নামায় স্বাক্ষরে যদি,
সংসার পাতা হতো।
তাহলে সকল ছেলেরা,
কাবিন ঘরে যেতো।
মেয়েরা থাকত বাইরে বাইরে,
খেলত প্রেমের খেলা।
কান্না হাসি থাকত না আর,
সহসায় পার হতো জীবনের বেলা।
ভালো লিখেছেন কবি মশাই
অনুভূতি বেশ,
কান্না হাসির খেলায় এখন
ব্যস্ত পরিবেশ।
প্রেমের নামে ভন্ডামি
চলছে অহরহ
কাবিননামার গুরুত্বটা
দেয় না কেহ কেহ।।
শুভকামনা জানাই মশাই
কবিতা চাই আরো
মিথ্যে প্রেমের অপরাধে
জীবন নষ্ট কারো।♥