♥বড় ভাইয়ের সাথে জড়ানো "মধুময় শৈশব" এবং ফেলে আসা "স্নেহ মাখা স্মৃতি"♥
সকলকে শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক ভালো আছিআর আপনারা সকলেই সবসময় সুস্থ থাকবেন। ভালো থাকবেন। এটাই আমার প্রত্যাশা।
বন্ধুরা আজ আমি আমাদের "আমার বাংলা ব্লগ "এর সম্মানিত মডারেটর আল সারজীল সিয়াম @alsharzilsiam এর পোস্ট করে আবেগে আপ্লুত হলাম।ও খুব সুন্দর করে ছোট ভাইকে নিয়ে চমৎকার একটি কবিতা লিখেছে।কবিতাটি পড়ে আমার বড় ভাইয়ের কথা খুব মনে পড়ে গেল।বন্ধুরা আমরা তিন ভাই দুই বোন।ভাই বোনের মধ্যে আমি তিন নাম্বার।সবচেয়ে বড় বোন তারপর বড় ভাই তারপর আমি আমার ছোট দুই ভাই। আমার বড় ভাই এবং আমি বয়সের অনেক পার্থক্য।তারপরেও বড় ভাইয়ের সাথে আবার খুব মিল ছিল।আমার মনে আছে ও অনেক খাবার জিনিস এনে লুকিয়ে রাখত।যেমন নারকেল পেয়ারা চকলেট,চিপস আরো অনেক কিছু এনে লুকিয়ে রাখত।কেউ যেন না দেখে।এরপর ইশারায় আমাকে ডাকতো। ডেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে, এরপর আমাকে খেতে দিত।দু ভাইবোন মিলে খুব মজা করে খেতাম।ভাই ঘুরতে গেলে কিংবা কোথাও বেড়াতে গেলে, আমার কাছে জিজ্ঞেস করত। কোন শার্ট, কোন প্যান্ট, কিংবা কোন গেঞ্জিটা পড়বে। এরপর আমি যেটা পছন্দ করে দিতাম। ঠিক সেটাই পড়তো।
একবার ভাই যখন প্রথম সাইকেল চালা শিখল।তারপর একদিন আমাকে বলল ওটা আমার সাইকেলের সামনে।ও আমাকে সামনে নিয়ে এরপর সাইকেল চালাতে লাগলো।কিছুদূর যেতে যেতে হঠাৎ কি যে হলো, ভাই দুলতে দুলতে রাস্তার ওপাশে কাটার গাছের উপরে পড়ে গেলাম।দুই ভাই বোনে কাটার গাছের উপরে,, সেদিন কত যে কষ্ট পেয়েছি। তা বলে বোঝাতে পারবো না।এরপর অনেকবার ভাইয়ের সাইকেলের সামনে বসে, অনেক জায়গায় ঘুরেছি। আর কোনদিন কখনো পরি নাই।এরপর ভাই যেদিন প্রথম বাইক কিনল।আমার মনে আছে গেট থেকেই সে আমাকে ডাকা শুরু করেছিল।এরপর আমাকে নিয়ে সেদিন গোটা নীলফামারী শহরের অলি গলি সব ঘুরেছে নতুন বাইকে করে।খুব মজা করেছিলাম দুভাই বোন।এই ফাঁকে একটু বলে নেই। ভাই কিন্তু দুর্দান্ত বাইক এবং সাইকেল দুটোই চালাত। এত জোরে চালাত রাস্তার মানুষ দেখে ভয় পেত।
এরপর যখন বিশ্বকাপ ফুটবল কিংবা ক্রিকেট খেলা হতো।তখন ভাই তার বিছানায় আমাকে সামনে বসিয়ে এরপর ও এবং ওর কয়েকজন বন্ধু,,কিংবা আমার মামাতো ভাই বোনেরা সবাই বসতো।যখন ছক্কা কিংবা গোল হত, ভাই আমাকে কোলে নিয়ে লাফাতে থাকতো।কিযে মধুময় দিনগুলো ছিল। সেসব ভাবলে এখনো চোখে পানি আসে।দু ঈদে যখন ভাই নিজের জন্য প্যান্ট, শার্ট, কিংবা গেঞ্জি কিনতে সেগুলো আগে আমাকে পরিয়ে দেখতো। যদি ভালো লাগে তবে সেটা সে কিনত। এরপর বাইরে যদি কোন মেয়েকে তার পছন্দ হতো, তাহলেও সে এসে আমাকে বলতো।জানিস আজকে না একটা মেয়ে দেখেছি খুব সুন্দর দেখতে।আমিও বলতাম ভাবি বানাবো নাকি।এরকম ছোটখাটো অনেক দুষ্টুমি করেছি দুজন মিলে।পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজন সবাই অবাক হতো আমাদের দুই ভাই-বোনের মিল দেখে।
তবে দুঃখের বিষয় অনেক ছোটবেলার কথা বলছি।যখন নাকি আমি শুধু হামাগুড়ি দেই। হাঁটতেও শিখি নাই।ঠিক সেই সময় শীতের সকালে। আমার বাবা একটি রেডিও ঠিক করার জন্য। ব্লেড টেস্টার আরো কি কি সব যন্ত্রপাতি নিয়ে রোদে বসে ছিল।মাদুর বিছিয়ে সাথে আমার ভাই এবং আমিও বসে ছিলাম পাশাপাশি।আমি কিছু না বুঝে ব্লেড হাতে নিয়ে ভাইয়ের রানে জোরে টান দিয়েছি অনেকখানি,সরলরেখার মত।এরপর রক্তের বন্যা বয়ে যেতে লাগলো।প্রথমে মা-বাবা কেউ বুঝতে পারেনি কোথা থেকে আসছে রক্ত। পরে আমার হাতে ব্লেড দেখে এরপর ভাইয়ের পা লক্ষ করে দেখে ভাইয়ের পা অনেকখানি কেটে দিয়েছি আমি। সাথে সাথে ভাইকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিল।সেসব গল্প যখন দাদির মুখে, মা বাবার মুখে, শুনতাম। তখন খুব কষ্ট পেতো আবার হাসিও পেতো।
বন্ধুরা এ রকম আরও অনেক মজার মজার স্মৃতি আছে। সে সব না হয় আস্তে, আস্তে অন্যদিন আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আজ এ পর্যন্তই। ভালো থাকবেন। সুখে থাকবেন। শান্তিতে থাকবেন। আমার ভাই বোনদের জন্য দোয়া করবেন।
আমি সেলিনা সাথী। আমার প্রফেশন, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার ও মোটিভেটর। আমি একজন সমাজ কর্মি ও সংগঠক। এছারা ও তৃনমূল নারী নেতৃত্ব সংঘের নির্বাচিত সভাপতি বাংলাদেশ। আমি "নারীসংসদ"
এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি "সাথী পাঠাগার"। আমার লেখা মোট ১০ টি একক ও যৌথ কাব্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। একুশে বই মেলায় প্রতি বছর একটি করে কাব্য গ্রন্থ প্রকাশের চেস্টা করি। আমার লেখা কাব্যগ্রন্থের মধ্যে "মিস্টি প্রেম" (উপন্যাস), "অশ্রু ভেজা রাত" (কবিতা), "জীবন যখন যেমন" (কবিতা), "একুশের বুকে প্রেম" (কবিতা), "নারীকন্ঠ" (ম্যাগাজিন) অন্যতম।
আপু ভাই বোনের সম্পর্কের মত মধুর সম্পর্ক পৃথিবীতে আর নেই। আপনার ভাইয়ের সাথে আপনার দুষ্টু মিষ্টি মুহূর্তগুলো পড়ে আমারও বোনের সাথে কাটানো সময় গুলোর কথা মনে পড়ে গেল। তবে এই কথাটি শুনে খারাপ লেগেছে যে বুলেট দিয়ে আপনি আপনার ভাইয়ের পা কেটে দিয়েছেন। অবশ্য তখন অবুঝ যদি না থাকতেন এমন কাজ করতেন না। ভালই লাগলো অনুভূতিগুলো পড়তে পেরে।
তখন না বুঝেই ব্লেড দিয়ে পা কেটে দিয়েছিলাম। তবে সেই কথা এখন ও শুনলে যেমন হাসি পায়। তেমনি কষ্ট পাই।♥♥
আপু আপনার সাথে আমার অনেকটায় মিলে গেছে আমরাও তিন ভাই দুই বোন আবার আমি তিন নাম্বারে কিন্তু আমার প্রথমে সবার বড় ভাই তারপর বড় বোন তারপর আমি তারপর ছোট দুই ভাই। আপনাদের ভাই বোনের এত মিল দেখে খুব ভালো লাগলো। আপনার মত আপনার ভাই ও খুব সুন্দর দেখতে। আপনি তো ছোটবেলার না বুঝে আপনার ভাইয়ের পা কেটে দিয়েছেন তবে লেখাটা পড়ে আমারও খুব খারাপ লেগেছে। আপনার লেখাগুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো আসলে আপনার বড় কি আপনাকে খুব আদর করত এজন্যই আপনাকে নিয়ে এতো ঘুরাঘুরি করতো আপনার সাথে সবকিছু শেয়ার করতো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের ভাই বোনের মত সম্পর্কে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য পড়ে খুব ভালো লাগলো। এভাবে সব সময় আপনাদের ভাই বোনের সম্পর্ক অটুট থাকুক এই কামনা করি।
দোয়া করবেন আপু। এভাবেই যেন আমরা সারাজীবন আমাদের মধুর একটা বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে পারি। আমার বড় ভাই সহ সকল ভাই-বোনদের আমি খুব ভালোবাসি♥♥
আপনার ভাইয়ের সাথে আপনার মধুর সম্পর্কের কথা শুনে সত্যি খুব ভালো লাগলো। আসলে ভাই বোনের সম্পর্ক এমনই মধুর হওয়া উচিত। কিন্তু আফসোস আমার কোন বড় ভাই বোন নেই। শুধু ছোট একটি বোন আছে। মাঝে মাঝে মনে হয় যে বড় ভাই থাকলে যেমন শাসন করতো তেমনি ভালোবাসা দিয়ে তার আড়ালে সব সময় জড়িয়ে রাখত। যাইহোক দোয়া করি আপু এভাবেই আপনারা সবসময় ভালো থাকুন।
আসলে বড় ভাই বোন থাকলে যেমন আদর করে,ঠিক তেমনি শাসন করে আগলে রাখে।দুঃখ নেই। আপনি তো কারো বড় বোন হতে পেরেছেন। এটাই পরম পাওয়া।♥♥
পৃথিবীতে সবচেয়ে মুধুর সম্পর্ক হলো ভাইবোনের সম্পর্ক। আমি মনে করি সব সম্পর্ক শেষ হয়ে গেলেও ভাইবোনের সম্পর্ক কখনো শেষ হয়না। আপু আপনাদের দু'ভাইবোনকে দেখে আমার কিছু মধুর স্মৃতি মনে পড়ে গেলো, আগের স্মৃতি মনে পড়লে খুবই ভালো লাগে। আপু আপনাদের মুধুমাখা সম্পর্ক দেখে খুবই ভালো লাগলো। আপনি ছোটবেলায় ভাইয়ার পা কেটে দিয়েছিলেন সেটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা কিন্তু এতে আপনার কোন দোষ ছিলনা আপনি তো তখন অনেক ছোট ছিলেন না বুঝেই করে ফেলেছেন। ভাইয়া ও আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপু।সবসময়ই এরকম মধুর সম্পর্ক নিয়ে থাকেন ঈশ্বরের কাছে এই প্রার্থনা করি। 🙏🧡
আসলে খুব ছোটবেলায় না বুঝে ভাইয়ের পা কেটে দিয়েছিলাম। যখন বুঝতে পেরেছি তখন অনেক কষ্ট পেয়েছি। বুঝলে তো আর এমনটা করতাম না। তবে এটাও একটা মধুময় স্মৃতি।ভাইয়ের পায়ে এখনো সেই কাটার দাগ আছে।অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু। সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য♥♥
পৃথিবীর অন্যতম অনুপম এক শব্দ হচ্ছে ভাই বোনের স্নেহ মমতা ভালবাসা।ভাই বোনের মধুর সম্পর্ক পৃথিবীর অনেক সম্পর্ক কে হার মানায়।
শুনে খারাপ লাগল। আপনার বোন নেই। তবে আমাদেরকে বোনের মতোই দেখবেন। আমরা আপনার বোনের মতোই।আমার বাংলা ব্লগে আমরা অনেক বোন আছি।তাদের ভাইয়া হয়ে থাকবেন।♥♥
আপু আপনি সিয়াম ভাইয়ার পোষ্ট করেছেন ঠিক বুঝলাম না।যাইহোক ভাই-বোনের সম্পর্কগুলি অনেক মধুময় হয় সবসময়।আপনার সঙ্গে আপনার দাদার মিষ্টি মুহূর্তগুলি পড়ে বেশ ভালো লাগলো।কিন্তু আপনি যে অবুঝ অবস্থায় ব্লেড দিয়ে আপনার দাদার রানে কেটে দিয়েছেন এটা অনেক ভয়ের বিষয় ছিল।অনুভূতিগুলি বেশ ছিল আপু ♥।
গতকাল সিয়াম ওর ছোট ভাইকে নিয়ে, পোস্ট করেছিলো সুন্দর একটি কবিতা। সেটা পড়েই আমার ভাইয়ের কথা মনে পড়েছিল। তাই এই পোষ্টটি করেছি।প্রিয় আপু♥♥