ছোট গল্প -||"গোধূলি বেলা"||~~
ছোট গল্প -"গোধূলি বেলা"
সকলকে শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও বেশ ভালো আছি আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন এটাই প্রত্যাশা করি।
বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের জন্য রহস্যময় একটি প্রেমের গল্প নিয়ে হাজির হলাম। আশা করছি আমার আজকের গল্পটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। আর গল্পের শিরোনাম গোধূলি বেলা।
🥀 গল্প :- গোধূলি বেলা 🥀
শিমুল গ্রামের একটি ছোট্ট ছেলে। প্রতিদিন বিকেলে সে নদীর ধারে বসে গোধূলি বেলার সৌন্দর্য উপভোগ করত। একদিন হঠাৎ নদীর ধারে বসে থাকা এক অচেনা মেয়েকে দেখে সে মুগ্ধ হয়ে যায়। মেয়েটি চোখে মুখে রহস্যের ছাপ, চুলে হালকা খোঁপা, আর একহাতে একটি পুরনো বই ধরা।
শিমুল কিছুটা সাহস নিয়ে মেয়েটির পাশে গিয়ে বসে, কিন্তু কিছু বলার সাহস পায় না। মেয়েটি ধীরে ধীরে বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছিল, যেন তার চারপাশের সবকিছু থেকে আলাদা হয়ে গেছে। শিমুলের মনে হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল - কে এই মেয়ে? কী তার পরিচয়? কেন সে এখানে আসছে?
একদিন হঠাৎ মেয়েটি শিমুলের দিকে তাকিয়ে বলল, “তুমি প্রতিদিন এখানে আসো, তাই না?” শিমুল অবাক হয়ে মেয়েটির দিকে তাকায়। তার হৃদয়ের গভীর থেকে উত্তপ্ত কিছু অনুভূতি উঠে আসে, কিন্তু সে বলতে পারে না। মেয়েটি আবার বলল, “আমাকে খুঁজে পেতে চাও?”
শিমুল মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানায়। মেয়েটি মুচকি হাসল, কিন্তু সেই হাসির মধ্যেও যেন কোনো গভীর দুঃখ লুকিয়ে আছে। তারপর মেয়েটি একটি ছোট্ট চিরকুট বের করে শিমুলের হাতে দিল। শিমুল সেই চিরকুট খুলে দেখল, সেখানে লেখা আছে, “গোধূলির শেষ আলো যেখানে মিলিয়ে যায়, সেখানেই তোমাকে অপেক্ষা করতে হবে।”
শিমুল সেই রাতেই ঠিক করল, সে পরদিন গোধূলি বেলায় সেই জায়গায় যাবে। পরের দিন, গোধূলির শেষ আলো মিলে যাওয়ার সময়, শিমুল নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগল। কিন্তু মেয়েটি আর এল না। শিমুল হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে আসতে লাগল, তখনই এক অচেনা বাতাস তার চারপাশে ঘুরে বেড়াল। হঠাৎ তার মনে হল, মেয়েটি তার পাশেই আছে। সে পেছনে তাকিয়ে দেখল, কিন্তু কেউ নেই।
পরের দিন শিমুল গ্রামের প্রাচীন বইয়ের দোকানে গিয়ে সেই মেয়েটির দেওয়া বইটি খুঁজে পেতে চেষ্টা করল। বইয়ের দোকানের মালিক তাকে বলল, “এটা তো বহু পুরনো বই, এই বইয়ের লেখিকা একজন মেয়ে, যে বহু বছর আগে নদীর ধারে আত্মহত্যা করেছিল।”
শিমুল তখন বুঝতে পারল, সে যে মেয়েটির প্রেমে পড়েছে, সে আর জীবিত নয়। কিন্তু সেই মেয়েটির প্রেম আর স্মৃতিতে সে নিজেকে আবদ্ধ করে রাখল। সেই মেয়েটির প্রতি শিমুলের অনুভূতি কখনোই কমে গেল না। প্রতিদিন সে গোধূলি বেলায় নদীর ধারে গিয়ে বসত, সেই রহস্যময় মেয়েটির স্মৃতির ছায়ায়।
সময়ের সাথে সাথে শিমুল নিজেও অদৃশ্য হয়ে গেল, গ্রামের লোকেরা বলত, শিমুল আর সেই মেয়েটির আত্মা এখন নদীর ধারে গোধূলি বেলায় দেখা যায়, তাদের ভালোবাসা কখনোই মলিন হয়নি।
বন্ধুরা আমার আজকের গল্পটি , নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। আমি সেলিনা সাথী
💞
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়: ক্রিয়েটিভ রাইটিং
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
প্রেম। গভীর প্রেম। মিষ্টি করে লিখেছ। পরিণতি পেলেই যে সেই প্রেম মধুর এই কথা আমি সব সময় মানি না। বরং পরিণতিতেই প্রেমের মৃত্যু ঘটে। এর থেকে প্রেমকে মনের মধ্যে লালন করে দীর্ঘ জীবন বেঁচে থাকাই অন্যরকম স্বাদ। খুব ভালো লিখেছ অণুগল্পটি
আমি তোমার সাথে একদম সহমত পোষণ করছি। গল্পটি তোমার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। আমার জন্য দোয়া কর।আমি যেন আগামীতে আরও ভালো লিখে পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করতে পারি।