"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ২৩ || শেয়ার করো তোমার স্কুল জীবনের কোন তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি
সকলকে শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক ভালো আছি।
আজ আমি "আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ২৩ || শেয়ার করো তোমার স্কুল জীবনের কোন তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি""শেয়ার করব।তার আগে সন্মানীত এডমিন বন্ধুদের প্রতি রইল,,অশেষ কৃতজ্ঞতা।এত চমৎকার একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য।
জীবনের শুরুতে মানুষের সুন্দর জীবন গঠনের সর্বোত্তম সময় হল ছাত্র জীবন। আর তাই মানুষের সমগ্র জীবন পরিসরে এই ছাত্র জীবনের মূল্য অত্যধিক। আসলে মানুষের জীবনটাকে যদি তুলনা করা হয় একটি বৃক্ষের সাথে,তাহলে ছাত্রজীবন হলো সেই বৃক্ষের শিকর বা মূল । একটি গাছের শিকর বা মূল যত শক্ত হবে বৃক্ষটি ও তত মজবুত হবে। তাই জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় হচ্ছে ছাত্র জীবন।অনেক চড়াই-উতরাই পার করতে হয় ছাত্রজীবনে।কত আনন্দ বেদনায় একাকার এই ছাত্র জীবন। ছাত্রজীবনে যেমন মজার ঘটনা আছে ঠিক তেমনি তিক্ত অনুভূতিও আছে অনেক।সেই তিক্ত অনুভূতি আজ আমি আপনাদের সাথে কিছুটা শেয়ার করব।
স্কুল জীবনে আমি খুবই চঞ্চল আর মিশুক ছিলাম।বান্ধবী স্কুলের স্যার ম্যাডাম খালা সবার সাথে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল আমার।এক কথায় সাড়া স্কুলটাকে মাতিয়ে রাখতাম আমি।স্কুলে পড়াশোনা করতে গিয়ে বেশ তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে আমার।তার মধ্যে থেকে কিছুটা আপনাদের সাথে শেয়ার করব আজ।তবে আগে আমার কিছু বান্ধবীদের সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেই।মনি, মাহমুদা, তহমিনা, অঞ্জলি, শিরিন, শিলা, ময়না,শান্ত, শম্পা, শিল্পী আরো বেশ কয়েকজন মিলে আমরা খুব ভালো বান্ধবী ছিলাম।সবার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল কিন্তু মনির সাথে কেন যেন একটু গভীর সম্পর্ক ছিল।তবে ক্লাস সব বান্ধবীদের চেয়ে আমি লেখাপড়ায় একটু বেশি ভালো ছিলাম।মজার বিষয় হলো পরীক্ষার হলে আমরা যখন পরীক্ষা দিতাম,,তখন মনি তহমিনা আমার খাতা দেখে দেখে লিখত।কোন কোন সময় এমন হয়েছে আমার খাতা ওদের কাছে থাকতো আর ওদের খাতায় আমি লিখে দিতাম।তাহলে ভাবুন কত মিল ছিল আমাদের।চলুন এবার আসল ঘটনায় যাই---
বলছি নবম-দশম শ্রেণীর কথা।মনি প্রতিদিন স্কুলে আগে আসত এবং ফাস্ট বেঞ্চিতে আমার জন্য জায়গা রাখত। সেদিন স্কুলে গিয়ে দেখি ফার্স্ট বেঞ্চে পুরোটাই ফাঁকা।যাই হোক সেদিন মনি স্কুলে আসেনি।বলছি শনিবারের কথা।আর আমি আবার বৃহস্পতিবার স্কুলে যাইনি।যাইহোক স্কুলের পিছনে মনিরের বাসা।স্কুল ছুটির পর মনিদের বাসায় আমরা তিন-চারজন মিলে গেলাম।ওকে বললাম স্কুলে যাসনি কেন? ও কেমন যেন আমতা-আমতা করছিল।আমি রেগে খুব জোরে একটা থাপ্পড় দিলাম মনির গালে।ও খুব ব্যথা পেয়েছিল।কাঁদো কাঁদো অবস্থায় বলল জানিস কবি বৃহস্পতিবার আমার সাথে কি হয়েছিল?তুই তো সেদিন স্কুলে আসিস নি।ক্লাসে পড়া পারিনি বলে ম্যাডাম আমাকে 50 বার কান ধরে উঠিয়েছে বসিয়েছে।আর সেজন্য আমার পায়ে খুব ব্যথা হওয়ার কারণে স্কুলে যায়নি আজ।(এই ফাঁকে বলে নেই মনে কিন্তু আমাকে কবি বলেই ডাকতো)।ওর কথা শুনে আমি হেসেই পাগল মাত্র 50 বার কান ধরে উঠা-বসা করলে বুঝি পা ব্যথা হয়।মনি বললো হয়।সেদিন মনের সাথে বাজি হল আমার।আমিও ইস্কুলের 50 বার কান ধরে উঠা-বসা করব যদি না পারি তাহলে মনি আমাকে জোরে থাপ্পড় দেবে।যাইহোক পরদিন সবাই স্কুলে আসলাম।টিফিনের সময় আমি 50 বার কান ধরে উঠা-বসা করার জন্য রেডি হয়ে গেলাম।মাত্র 20 বার কান ধরে উঠা-বসা করার পর পা গুলো কেমন যেন ব্যথা।কিন্তু কাউকে তো বুঝতে দেয়া যাবে না।তাই খুব কষ্ট করে রেস্ট নিয়ে নিয়ে 50 বার করে ফেলেছি।পরদিন সত্যিই এত তীব্র পায়ের ব্যথা অনুভূত হচ্ছিল যা আপনাদের কে বলে বোঝাতে পারবো না।এ যাত্রায় মনির হাতে থাপ্পড় খাওয়া থেকে বেঁচে গেলাম।কিন্তু সামনে এসএসসি পরীক্ষা।ফরম ফিলাপ করতে হবে।আমাদের পরিবার থেকে সবাইকে ফরম ফিলাপের টাকা দেওয়া হয়ে গেছিল।কিন্তু মনি, তহমিনা এবং অঞ্জলি,এদের পরিবারের অবস্থা এতটাই অসচ্ছল ছিল যে তাদের বাবা তাদের ফরম ফিলাপের টাকা দিতে পারছিল না।এদিকে ওদের তিনজনের জন্য আমিও ফরম ফিলাপ করতে পারছিনা।কারন আমাদের সবার ইচ্ছা একসাথে ফরম ফিলাপ করলে পাশাপাশি সিড বসবে।অনেক ভেবেচিন্তে একটা আইডিয়া মাথায় আসলো।আমি কয়েকজন বান্ধবী মিলে রাস্তায় বের হলাম,,পরিচিত যাদের দেখা পেয়েছি তাদের কাছেই হাত পেতেছি টাকা চেয়েছি।কেউ 10 টাকা কেউ 20 টাকা কেউ 50 টাকা কেউ একশত টাকা এভাবে দিয়েছিল।এভাবে যতগুলো টাকা উঠল,,বাকি টাকাটা আমি আমার বাবাকে বলে অনুনয়-বিনয় করে বাবার কাছ থেকে নিলাম।এরপর সবাই মিলে একসাথে ফর্ম ফিলাপ করলাম।
সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো যে পরীক্ষার বেশ কিছুদিন আগে হঠাৎ আমি অনেক অসুস্থ হয়ে গেলাম।তীব্র মাথা ব্যথা বুকে ব্যথা।শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল চোখে ঝাপসা দেখছিলাম।আর মাত্র পরীক্ষার দুদিন বাকি,,আর আমি হাসপাতালে ভর্তি।অক্সিজেন চলছে।পরীক্ষার কথা বলে নাই।আমি আমার বাবা মাকে খুব অনুরোধ করে বলছিলাম আমি পরীক্ষা দিব।তখন আমাদের ইস্কুলের শিক্ষকরা আমাকে দেখতে হাসপাতালে আসেন।এবং আমি স্যারের হাত ধরে অনুনয়-বিনয় করে বললাম স্যার আমি পরীক্ষা দিব।তখন স্যার আমাকে আশ্বাস দিলেন ঠিক আছে তুমি পরীক্ষা দিবে,,আমি ব্যবস্থা করতেছি।কিন্তু এই অবস্থায় তুমি কি আদৌ পরীক্ষা দিতে পারবে।আমি কনফিডেন্সলি বলছিলাম পারব।তখন স্যার আমার জন্য বেটে পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করলেন।এক রুমে একা।মেঝেতে বিছানা।আশেপাশের ডক্টর আর দুজন স্যার ছাড়া আর কেউ নাই।পরীক্ষা দিতে গিয়ে বেশ ভয় পেয়েছিলাম।আমার বান্ধবীদের কথা ভাবছিলাম তাদের কারো সাথে আমার বস হলো না।বান্ধবীরাও বেশ হতাশ হয়ে গিয়েছিল।যাইহোক মনে মনে দোয়া করছিলাম ওরা যেন খুব ভালোভাবে ভালো পরীক্ষা দেয়।আমি বাংলা ইংরেজি পরীক্ষা কোন রকম দিতে পেরেছিলাম।কিন্তু অংক পরীক্ষার দিন হলে যাওয়ার 15 মিনিট পর থেকেই,, আমার মাথা এবং বুকের তীব্র থেকে তীব্রতর ব্যথা।চোখে ঝাপসা দেখছিলাম।হাতে কলম নিয়ে খাতায় লিখব এমন পরিস্থিতি আর ছিলনা।আমাকে দ্রুত চিকিৎসার আওতায় সেখানে আনা হয়,,ট্যাবলেট ক্যাপসুল ইনজেকশন,,কোন কিছুতেই আমার ব্যথা এতোটুকু উপশম হচ্ছে না।তখন সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক বলল-আমাকে রংপুর হাসপাতালে নিতে হবে।কিন্তু আমি কিছুতেই রাজি হলাম না।ইতিমধ্যেই স্কুলের স্যার এসে আমাকে বোঝাতে লাগলো,,আমরা গাড়ি ঠিক করে ফেলেছি ওদিকে তোমার অভিভাবক দের কে জানানো হচ্ছে,,দ্রুত তোমাকে রংপুরে নিতে হবে।নইলে তোমার সাথে অনেক খারাপ কিছু হতে পারে।আমি স্যারকে বললাম স্যার একদিন তো মরতেই হবে।আমি মারা গেলে যাব কিন্তু পরীক্ষা শেষ না হয়ে আমি কোথাও যাবো না।আমার সব কথাগুলো একজন ম্যাজিস্ট্রেট দাঁড়িয়ে শুনছিলেন।এক পর্যায়ে তিনি আমার কাছে আসলেন এবং আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,,,লেখাপড়ার জন্য কেউ নিজের জীবন এভাবে বাজি ধরে, তা আজ তোমাকে না দেখলে, কোনদিনও আমার জানা হতোনা।যাই হোক আমি তোমাকে বলছি জীবনে বেঁচে থাকলে অনেক সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারবে। কিন্তু তুমি নিজেই যদি পৃথিবীর বুকে না থাকো, তাহলে আজকের এই যুদ্ধ করে লাভ কি?? তাই বলছি মা তুমি আগে চিকিৎসা,, আগে জীবন তারপর পরীক্ষা।মনে রেখো জীবনের চেয়ে পরীক্ষার মূল্য বেশি নয়।তার পরেও আমি তাদের কারও কথাই রাখিনি।আমার একটাই জিদ পরীক্ষা দিব।যাইহোক আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার মাথা ব্যথাটা একটু কমে,,মাথাটিকে ওড়না দিয়ে বেঁধে,,এরপর অংক করেছি কিন্তু কয়টি অংক করেছি আমি নিজেও জানিনা।ঠিক হয়েছে কিনা তাও জানিনা।এক পর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।আর জ্ঞান ফিরে দেখি আমি রংপুর হাসপাতালে।তখন পরীক্ষার দুই দিন বিরতি ছিল।পরীক্ষা দেয়ার জন্য আমি অনেক কান্নাকাটি করি জ্ঞান ফেরার পর।দুদিন পর আবারো রংপুর হাসপাতাল থেকে সোজা পরীক্ষার হলে গিয়ে পরীক্ষা দিলাম।বিশ্বাস করুন কি যে তীব্র যন্ত্রনার নিয়ে আমি সে পরীক্ষাগুলো দিয়েছি তারা শুধুমাত্র উপর আলা আর আমি ছাড়া কেউ জানে না।হ্যাঁ অনেকেই দেখেছে আমার কষ্টগুলো।পরীক্ষার হলে আমার অক্সিজেন চলছিল।কতটা তিক্ততা বয়ে যাচ্ছিল আমার উপর দিয়ে একবার ভাবতে পারেন।এত কষ্ট করে জীবনের সাথে যুদ্ধ করে পরীক্ষা দেয়ার পরেও বান্ধবীদের কথা বারবার মনে হচ্ছিলো।ওরা স্কুলের পরীক্ষায় আমার খাতা দেখে লিখত কিংবা আমি লিখে দিতাম।চাঁদা করে তিনজন বান্ধবীদের ফরম ফিলাপের টাকা অ্যারেঞ্জ করি দিলাম।সবাই একসাথে বসে পরীক্ষা দেবো বলে।কিন্তু বিধাতা আমাদের উপর সহায় হন নি।যাইহোক এমনি করেই যুদ্ধ করেই এসএসসি পরীক্ষা দিলাম।আর সেই সময়টায় আমি খুব বেশি অসুস্থ হতাম।কেন হতাম ইতিমধ্যেই যারা আমার জীবন সম্পর্কে এতোটুকু অবগত তারা ঠিক বুঝতে পারছেন।পরীক্ষার পর সব বান্ধবীরা এসে আমার গলা ধরে খুব কান্নাকাটি করছিল।অবশেষে রেজাল্ট হওয়ার পালা।আসলে আমি ভাবতেও পারিনি আমি পরীক্ষায় পাশ করব।যে বাজে পরীক্ষা দিয়েছি পরীক্ষার পর আর কখনোই প্রশ্নপত্র হাতে নিয়ে দেখি নি।কারণ পরীক্ষার খাতায় কি করেছি,,আমার কিছুই মনে নাই।অবশেষে পরীক্ষার রেজাল্ট হলো যেদিন,,,স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ আরো দুইজন সহকারি শিক্ষক আমার বাসায় চলে আসলেন,,মিষ্টি হাতে নিয়ে।আমার রেজাল্ট মোটামুটি ভালো।স্যারেরা আমার মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করে দিলেন তুমি একদিন মস্ত বড় হবে।কিন্তু আমি যখন আমার বান্ধবীদের রেজাল্ট জানতে চাইলাম,,,তাদের মধ্যে মাত্র 2 থেকে 3 জন পাস করেছে আর বাকি সবাই ফেল করেছে।শুনে খুব আহত হলাম।কষ্টে দুঃখে বুকের পাঁজর গুলো ছিড়ে যাচ্ছিল।আমি এত কষ্ট করে পরীক্ষা দিয়ে ঠিক পাস করলাম কিন্তু আমার বান্ধবীরা।আমার পাশ করার খুশিটা ম্লান হয়ে গেল।তাদের চোখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না ঝর ঝর করে চোখ দিয়ে পানি ঝরছিল।
বন্ধুরা আজ এই অনুভূতির লিখতে গিয়ে আবারও ঝর ঝর করে পানি ঝরছে চোখ দিয়ে।পুরনো এই স্কুল জীবনের ক্ষতগুলো আজও দাগ কেটে যায় মনে।স্কুল জীবনে ঘটে যাওয়া তিক্ত অভিজ্ঞতা গুলোর মধ্যে এই অভিজ্ঞতাগুলো আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করে অনেকটা হালকা লাগছে ঠিকই। আবার অনেক কষ্ট হচ্ছে।তবে আমি যখন নীলফামারী সরকারি কলেজে এডমিশন হলাম।তার বেশ কিছুদিন পর হঠাৎ করে সেই কলেজে সেই ম্যাজিস্ট্রেট। উনি আর আমি প্রায়ই মুখোমুখি।উনি আমাকে দেখে থমকে গেলেন,,বললেন তোমাকে বেশ চেনা চেনা লাগছে,,,আচ্ছা তুমি কি বেডে পরীক্ষা দিয়েছিলে?? আমি বললাম জি স্যার।উনি বললেন তুমি পাশ করেছ।আমি বললাম জি স্যার।তিনি বললেন আমি আমার জীবনে কখনই তোমাকে ভুলবো না তোমার গল্প যে আমি কত জনের সাথে করেছি।।আমার জীবনে আমি এই একজন কে দেখেছি যে কিনা পড়াশোনার জন্য নিজের জীবন বাজি রাখে।আমি দোয়া করি তুমি একদিন অনেক বড় হবে।আমি বললাম স্যার আমার পরম পাওয়া।
আমি সেলিনা সাথী। আমার প্রফেশন, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার ও মোটিভেটর। আমি একজন সমাজ কর্মি ও সংগঠক। এছারা ও তৃনমূল নারী নেতৃত্ব সংঘের নির্বাচিত সভাপতি বাংলাদেশ। আমি "নারীসংসদ"
এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি "সাথী পাঠাগার"। আমার লেখা মোট ১০ টি একক ও যৌথ কাব্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। একুশে বই মেলায় প্রতি বছর একটি করে কাব্য গ্রন্থ প্রকাশের চেস্টা করি। আমার লেখা কাব্যগ্রন্থের মধ্যে "মিস্টি প্রেম" (উপন্যাস), "অশ্রু ভেজা রাত" (কবিতা), "জীবন যখন যেমন" (কবিতা), "একুশের বুকে প্রেম" (কবিতা), "নারীকন্ঠ" (ম্যাগাজিন) অন্যতম।
আপনার শৈশব স্মৃতিটা অনেক ভালো লাগলো। তবে আপনার পরীক্ষার সময়কার ঘটনাটা পড়ার সময় খুব খারাপ লাগছিলো। কিন্তু সেই সময় আপনার দৃঢ় মনোবলের জন্য আপনি পরীক্ষাটা দিতে পেরেছিলেন। সৃষ্টিকর্তা আপনার পাশে ছিল সব সময়।
এটা সত্যি যে প্রচন্ড অসুস্থ তার মাঝেও আমি আমার মনোবল হারাইনি।তখন মনে মনে ভাবছিলাম মরতে তো একদিন হবেই।তো পরীক্ষা চলাকালীন যদি মৃত্যু হয় হোক।যাই হোক মহান আল্লাহতায়ালা আমার সহায় ছিলেন।♥♥
অনেক দুঃখজনক আপু।এত ডেডিকেশন পড়াশুনা নিয়ে আমি খুব কমই দেখেছি।আমি হলে এত অসুস্থতার মাঝে জীবনেও পরীক্ষা দিতাম না।আর আপনি আসলেই অনেক উদার না হলে বান্ধবীদের টাকা যোগাড় করে দিতেন না।ধন্যবাদ আপু আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আমি অনেক ছোটবেলা থেকেই অনেক উদার।কারো কষ্ট কারো অভাব সহ্য করতে পারতাম না।কারোর বিপদ দেখলে দৌড়ে সেটা সমাধান করার চেষ্টা করতাম পারি কিংবা না পারি♥♥।
একদম ঠিক কথা বলেছেন সেই ক্লাস সেভেনে থেকেই আমি সংগ্রামী।জীবন চলার পথে নানাভাবে সংগ্রাম করতে হয়েছে আমাকে আজও করছি।আসলে সংগ্রাম করেই আমাদের বাঁচতে হয়।দেখবেন ছোট ছোট পোকামাকড়, পশুপাখি, বড় বড় পোকামাকড় পশুপাখিদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করছে অবিরত।আর আমরা তো মানুষ।♥♥
আমরা যেমটা ভেবে রাখি সবসময় সেইরকম হয় না। ঐরকম অসুস্থতা নিয়ে আপনি পরীক্ষা দিয়েছেন সত্যি আপু আপনার মনোবল ছিল আকাশচুম্বী। আপনার অনূভুতি টা বেশ তিক্ত ছিল কিন্তু এটা বেশ মোটিভেট করার মতো। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
আমার এই তিক্ত অনুভূতির অভিজ্ঞতাটুকু যদি কাউকে মোটিভেটেড করে তবে সেটা আমার জন্য হবে আরে এক প্রাপ্তি।তবে তখনকার সেই সময়টা ছিল এতোটাই তিক্ত,,যা আসলে আবেগ অনুভূতি বা লিখে প্রকাশ করা যাবে না।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য♥♥
আপনি ছোটবেলা থেকে অনেক উদার মনের মানুষ। আর যাই হোক সত্যি সত্যি আপনি কষ্ট করে 50 বার কান ধরে উঠবস করেছেন। না হলে থাপ্পর খেতে হতো। যাক থাপ্পর খাওয়া থেকে তো বেঁচে গিয়েছিলেন।
হা হা হা সত্যিই কান ধরে উঠ বস করা অনেক কষ্টের এবং প্রচুর পা ব্যথা হয়।♥♥
ইস্কুল জীবনে কান ধরে উঠবস করে নাই এমন মানুষ হয়তো কমই খুঁজলে পাওয়া যাবে।।
আমার কথাই বলি লেখাপড়ার জন্য তেমন একটা মাইর কোনদিন খাই নাই।।
তবে দুষ্টুমির জন্য কত মায়ের আর কত কান ধরে উঠবস পায়ের মধ্যে হাত দিয়ে কান ধরা অনেক বার হয়েছে আমার সাথে এরকম।।।
ছোটবেলায় অনেক দুষ্টু ছিলাম তো।।
আমার একটা অভ্যাস ছিল সেটা হচ্ছে পরীক্ষার আগে জ্বর আর মাথা ব্যাথা বেড়ে যেত।। আপনার মত আমিও জ্বর মাথা ব্যাথা অসুস্থতা এর সাথে যুদ্ধ করে পরীক্ষা দিয়েছে।।
কেন যে এরকম হতো পরীক্ষা সামনে এলেই অসুস্থ আজও বুঝতে পারি না।।
আসলে জীবনে অনেক পরীক্ষা দিয়েছি কিন্তু এসএসসি পরীক্ষার মতো এইরকম অসুস্থ কোন পরীক্ষায় আমি হইনি।তবে কারো কারো এমন হয় পরীক্ষার সময় করে জ্বর সর্দি কাশি।
তবে ম্যাক্সিমাম সময় আমি দেখেছি পরীক্ষার সময় একটা না একটা দুর্ঘটনা আমার সাথে ঘটেছে আমি যখন ২০১৪ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেই তবে ওভার জ্বর আসেনি তবে বাইক নিয়ে গুরুতর একটা অ্যাক্সিডেন্ট করেছিলাম ওই যে শুরু থেকে হয়ে আসছে তার কোনো রদবদল হলো না।।।
কি বলেন আপু আপনার লেখাগুলো যতক্ষণ পড়ছিলাম মনে হচ্ছিল যেন আমি নিজেই অনেক ঘোর তর অসুস্থ। আর আপনার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য এত কাকুতি মিনতি যেন করতে করতে চোখে জল চলে আসলো। এত কষ্ট করে আপনি পরীক্ষাটা দিয়েছেন আমি হলে হয়তোবা পারতাম না। তার মাঝে আবার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যন্ত আপনার কাছে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। এত কষ্টের মাঝে আবার বান্ধবীদের কথা ও চিন্তা করছিলেন। এত কষ্ট করে পরীক্ষার রেজাল্ট ভালো হয়েছে এটা শুনে সত্যিই ভালই লাগলো। আসলেই আপনার অভিজ্ঞতাটা পরে আমি নিজেই যেন হারিয়ে গেলাম।
আসলে আপু কিছু কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা এ রকম। যে, মানুষকে মাঝে মাঝে হারিয়ে দেয়। হারিয়ে নিয়ে যায় ভিন্ন এক জগতে।সেই সময়টা অনেক যুদ্ধ করতে হয়েছে।নিজের শরীরের সাথে, মনের সাথে, বাবা মায়ের সাথে, শিক্ষকদের সাথে, বান্ধবীদের সাথে, প্রতিটা সময় যেন যুদ্ধই চলছিল আমার।♥♥