বৃষ্টিভেজা শৈশবটা- পড়ছে ভীষণ মনে, হারিয়ে যাওয়া বন্ধুরা আজ,জানিনা কোন খানে -?
সকলকে বৃষ্টি ভেজা দিনের শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও বেশ ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন। এটাই প্রত্যাশা করি।
পড়ছে ভীষণ মনে,
হারিয়ে যাওয়া বন্ধুরা
জানিনা কোন খানে -?
🥀 লাইফস্টাইল 🥀
শৈশবের স্মৃতি এক অমূল্য ধন, যা মনে পড়লে হৃদয়ে উঁকি দেয় এক অনন্য অনুভূতি। আমার শৈশব ছিল এক মনোরম জায়গার মধ্যে। সেখানকার সবুজ মাঠ, নদীর ধারে সাইকেল চালানো, এবং বৃষ্টির দিনে কাদা খেলা—এসব স্মৃতি আজও আমার মনে উজ্জ্বল। সবাই মিলে বৃষ্টির পানিতে খুবই মজা করে বাড়ির অঙ্গীনায় গামছা দিয়ে ছোট ছোট মাছ ধরতাম। রঙিন কাগজের নৌকা ভাসাতাম। ফুটবল খেলতাম। আর লাফালাফিতে ছিলাম সেরা।
শৈশবের বৃষ্টিভেজা দিনগুলো ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে মধুর স্মৃতি। মনে আছে, যখন আকাশে কালো মেঘ জমে উঠত, তখন আনন্দে আমরা সবাই মিলে মাঠে ছুটতাম। বন্ধুদের নিয়ে সাঁতার কাটা, কাদা মেখে খেলা—এসব ছিল আমাদের জন্য এক দারুণ উৎসব।
একবার বৃষ্টির দিনে, আমরা সবাই পুকুরের কাছে জমায়েত হয়েছিলাম। কেউ ছাতা নিয়ে এসেছিল, কেউ আবার কিছুই নিয়ে আসেনি। সেই দিন আমরা প্রতিযোগিতা করেছিলাম—কে বেশি দূরে সাঁতার কাটতে পারে। একে অপরকে উত্সাহিত করে, গাঢ় জলে ঝাঁপিয়ে পড়ছিলাম। সবার মুখে হাসি, আর চিৎকারে চারপাশ মুখরিত ছিল।
কাদা মেখে হঠাৎ যখন কেউ পা পিছলে পড়ত, তখন হাসির রোল উঠত। আমাদের প্যাকেটের ভিতর থাকা স্ন্যাকসও গলে যাচ্ছিল, কিন্তু সেই চিন্তা ছিল না। বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো সেই মুহূর্তগুলোতে ছিল এক অদ্ভুত আনন্দ।
সন্ধ্যা বেলা, যখন বৃষ্টি থামল, আমরা গাছের তলায় বসে গল্প করতাম। কেউ বলত, “কেমন হবে যদি আমরা দুনিয়া ঘুরে বেড়াই?” অন্যরা হাসত, কিন্তু সেই স্বপ্নগুলো মনে গেঁথে থাকত।
শৈশবের বৃষ্টিভেজা দিনগুলো শুধু পানি আর কাদার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং সেগুলো ছিল বন্ধুত্বের, একত্রে হাসির, আর অসীম আনন্দের দিন। আজও যখন বৃষ্টি আসে, তখন মনে পড়ে সেই দিনগুলোর কথা। শৈশবের সেসব মুহূর্ত আজও আমার হৃদয়ে উজ্জ্বল।
প্রতি সকালেই সূর্য উঠে, পাখির ডাক শোনা যেত। আমি, আমার ভাই, এবং বন্ধুদের নিয়ে ছুটে যেতাম মাঠে। সেখানে আমরা খেলতাম দাড়িয়াবান্ধা, সাত তাড়াতাড়ি, আর কখনও কখনও গাছের ডালে চড়ে বসে গান গাইতাম। একদিন, আমরা একটি বড় গাছের নিচে বসে গল্প বলছিলাম। হঠাৎ, এক বন্ধু আমাদের বলল, “চল, গাছের উপরে উঠি!” আমরা সবাই মিলে উঠলাম, এবং সেই গাছের শিখর থেকে নিচে দেখতে পুরো গ্রামটা কেমন লাগছিল!
বৃষ্টির দিনগুলো ছিল আমাদের কাছে বিশেষ দিন । আকাশে কালো মেঘ এলেই আনন্দে ফেটে পড়তাম। সারা দিন ধরে পুকুরে সাঁতার কাটতাম, কিংবা কাদা মাখা হয়ে বৃষ্টির পানিতে লাফালাফি করতাম। মা বলতেন, “বৃষ্টিতে সর্দি লেগে যাবে!” কিন্তু আমরা খেয়ালই করতাম না। শুধু মজা করার চিন্তায় মগ্ন থাকতাম। একদিন, আমাদের বানানো কাগজের নৌকা ভাসিয়ে দিয়েছিলাম। সেদিনের আনন্দের কথা আজও মনে পড়লে হাসি আসে। কত শত মজা করেছিলাম আমরা।
অন্য একদিন, আমরা রাতে মোমবাতি জ্বালিয়ে চারপাশে বসে গল্প করছিলাম। অন্ধকারে, মোমের আলো আমাদের মুখগুলোকে আরও উজ্জ্বল করে তুলেছিল। মনে পড়ে, আমি এক রহস্যময় গল্প বলেছিলাম, আর সবাই শোনার জন্য উত্সুক ছিল। সেই রাতের স্নিগ্ধতা আর বন্ধুত্বের বন্ধন আজও আমাকে আবেগে ভরিয়ে দেয়। স্মৃতি গুলো আজো স্মৃতিময়।
শৈশবের সেই দিনগুলোতে এক অদ্ভুত নিস্কলুষতা ছিল। যত সময় গড়িয়েছে, আমরা বড় হয়েছি, কিন্তু সেই স্মৃতিগুলো আমাদের মনে বেঁচে আছে। সেই সময়ের হাসি, খেলাধুলা, এবং নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব আজকের জীবনে অনেক আনন্দ নিয়ে আসে।
প্রতি বছরের বর্ষায়, যখন আকাশে কালো মেঘ জমে, তখন আমি ফিরে যাই সেই সবুজ মাঠে। ভাবি, যদি সেই দিনগুলোতে ফিরে যাওয়া যেত! তবে জানি, শৈশবের স্মৃতিগুলোই আমাদের জীবনের এক অপরূপ অংশ। এগুলো আমাদেরকে জীবনের বাস্তবতার মাঝে খুঁজে পেতে শেখায়, এবং মনে করিয়ে দেয়, ছোট ছোট আনন্দগুলোই আসল সত্য।
বন্ধুরা আশা করছি আমার আজকের এই গল্পটিও আপনাদের কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আশা রাখছি লাইভ স্টাইলে আবারও নতুন নতুন গল্প নিয়ে হাজির হব। সে পর্যন্তই সকলেই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আর ঝাল মরিচের গান গাইবেন।
বন্ধুরা আমার আজকের এই রাইটিং টি , নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। আমি সেলিনা সাথী
💞
🥀 ধন্যবাদ 🥀
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়:
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
সত্যি আপু হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না। আপনার মত বৃষ্টির দিন আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। সত্যি আপু শৈশবের বন্ধুদের মত বন্ধু আর পাওয়া যায় না। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
সত্যি আপু আপনার পোস্ট টা পড়ে অনেক কিছু মনে পড়ে গেল। বৃষ্টির দিনে মাঠে ফুটবল খেলতে যাওয়া। কারো নিষেধ না শোনা। বৃষ্টি হলেই স্কুল ফাঁকি দেওয়ার বাহানা খোঁজা। আরও কতশত স্মৃতি আছে বৃষ্টি নিয়ে। যখন বৃষ্টি নামে এই স্মৃতিগুলো মনের মধ্যে এসে উকি দেয়। আপনার পোস্ট টা পড়ে অসংখ্য মূহূর্ত মনে চলে আসলো।
আসলে বৃষ্টি নিয়ে শৈশবের স্মৃতির অন্ত নেই।
আমি নিজেও খুব মিস করি সেইসব স্মৃতি মনে করে।