"পুঁজিবাদী সমাজের এক ভয়ঙ্কর সত্য"||~~😭
"পুঁজিবাদী সমাজের এক ভয়ঙ্কর সত্য"
সকলকে শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও বেশ ভালো আছি আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন এটাই প্রত্যাশা করি।
বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের জন্য নারীদের আত্মমর্যাদার কিছু কথা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম। একটি নারীর মান সম্মান আর আত্মমার্যাদা এবং জীবনের বিনিময় যদি টাকা হয়, তাহলে এর চেয়ে লজ্জাস কর আর কিছুই হতে পারে না। এই তাড়না থেকেই আজকের জেনারেল রাইটিং নিয়ে হাজির হলাম।
"পুঁজিবাদী সমাজের এক ভয়ঙ্কর সত্য"
🥀 জেনারেল রাইটিং 🥀
আমাদের সমাজে নারীর মর্যাদা, সম্মান, এবং আত্মপরিচয় আজ এক গভীর সংকটে। আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়ত যে অবমাননা, অত্যাচার, এবং অপমান নারীদেরকে সহ্য করতে হয়, তা আমাদের সভ্যতার বিকৃতি এবং নৈতিকতার অপচয়ের প্রমাণ। এই সমস্যা শুধু কোনো ব্যক্তিগত বা পারিবারিক সমস্যা নয়; বরং এটি একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যাধি যা দিনের পর দিন আরো গভীরে শিকড় গেড়ে বসছে।
বর্তমান সমাজে নারীর মর্যাদা যেন কোনো সহজলভ্য পণ্য হয়ে উঠেছে। টাকার বিনিময়ে নারীদের আত্মমর্যাদা, ইজ্জত এবং সম্মানকে কেনার চেষ্টা করা হয়, যা নারীর নিজস্ব পরিচয় ও আত্মসম্মানের ওপর ভয়ঙ্কর আঘাত। এই প্রবণতা আমাদের সমাজের নৈতিকতা এবং মানবিকতার বিরুদ্ধে এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র। এই সমাজে নারীদের শুধুমাত্র একটি ভোগ্য পণ্য হিসেবে দেখা হয়, যেন তাদের জীবন ও মর্যাদার মূল্য শুধুমাত্র কিছু টাকার বিনিময়ে নির্ধারিত হতে পারে।
নারীর ইজ্জত বা মর্যাদার মূল্য কখনোই টাকা হতে পারে না। নারী, একজন মানুষ হিসেবে, তার আত্মসম্মান, মর্যাদা, এবং ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তার ইজ্জত হলো তার আত্মার একটি অংশ, যা কখনোই টাকার বিনিময়ে বিক্রি হতে পারে না। এই সমাজে নারীর মর্যাদা নিয়ে ছিনিমিনি খেলার প্রবণতা শুধু নারীরই অপমান নয়, বরং এটি মানবতার পরিপন্থী এবং সভ্যতার অবমাননা।
আমাদের সমাজে নারীর প্রতি যে অবমাননা করা হয়, তা কোনো নতুন বিষয় নয়। যুগ যুগ ধরে নারীকে পদদলিত করা হয়েছে, তার সম্মান হরণ করা হয়েছে, এবং তার আত্মপরিচয়কে অস্বীকার করা হয়েছে। ইতিহাসের পৃষ্ঠায় নারীর এই দুঃখগাথা বারবার উঠে এসেছে। কখনো তাকে দেবী হিসেবে পূজা করা হয়েছে, আবার কখনো তাকে পতিতা হিসেবে নিগৃহীত করা হয়েছে। এই দ্বৈত মানসিকতার কারণেই নারী আজও তার যথাযথ মর্যাদা ও সম্মান অর্জন করতে পারেনি।
এই অবমাননাকর প্রবণতা আজও অব্যাহত রয়েছে। আজও নারীকে তার নিজের ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা, এবং স্বপ্নের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে বিক্রি হতে হয়। তাকে বাধ্য করা হয় এমন পরিস্থিতিতে, যেখানে তার আত্মসম্মান ও মর্যাদা হুমকির মুখে পড়ে। আমাদের সমাজের এই কুপ্রবৃত্তি শুধু নারীরই নয়, বরং পুরুষেরও বিকৃতি ঘটিয়েছে। পুরুষ আজও নারীকে সমান মর্যাদা দিয়ে দেখতে ব্যর্থ হচ্ছে, এবং তাকে একটি পণ্য হিসেবে ব্যবহার করার প্রবণতা তার মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে।
নারীর আত্মমর্যাদা কখনোই টাকা দিয়ে কেনা যায় না। তার ইজ্জত বা সম্মান কখনোই কোনো পুঁজিবাদী মূল্যায়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। নারীর আত্মসম্মান তার নিজস্ব অর্জন, তার ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন। তাকে একটি ভোগ্য পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা, তার সম্মান নিয়ে খেলা করা, এবং তাকে শুধুমাত্র শরীর হিসেবে বিবেচনা করা আমাদের সমাজের নৈতিকতা এবং মানবিকতার চরম অপমান।
নারীর মর্যাদা রক্ষার জন্য আমাদের সমাজকে পুঁজিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে যে, নারী কোনো পণ্য নয়, তিনি একজন ব্যক্তি, যিনি তার নিজের সম্মান এবং মর্যাদার অধিকারী। সমাজের সকল স্তরে নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনোভাব গড়ে তোলা প্রয়োজন, যাতে নারীর আত্মসম্মান, মর্যাদা এবং ইজ্জত সুরক্ষিত থাকে।
সমাজের প্রতিটি মানুষকে এই পরিবর্তনের অংশ হতে হবে। আমাদের ছেলে-মেয়েদের ছোটবেলা থেকেই শেখাতে হবে যে, নারীর সম্মান এবং মর্যাদা অপরিসীম, এবং এটি কোনো টাকার বিনিময়ে কেনা-বেচা করা যায় না। নারীর প্রতি এই শ্রদ্ধা আমাদের সমাজের নৈতিকতার ভিত্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। একমাত্র তখনই আমরা একটি ন্যায়পরায়ণ, মানবিক, এবং সমতাপূর্ণ সমাজ গড়ে তুলতে পারবো, যেখানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই সমান মর্যাদা ও অধিকার ভোগ করতে পারবে।
অতএব, আসুন আমরা সবাই মিলে এই সংকীর্ণ মানসিকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হই। নারীর ইজ্জত, মর্যাদা, এবং আত্মমর্যাদাকে রক্ষা করি এবং তার স্বাধীনতাকে সুরক্ষিত করার দায়িত্ব পালন করি। নারীর আত্মমর্যাদা কখনোই টাকা দিয়ে কেনা যায় না, এবং এ সত্য সমাজের প্রতিটি স্তরে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। একমাত্র তখনই আমরা একটি সত্যিকার মানবিক ও ন্যায্য সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।
বন্ধুরা আমার আজকের এই জেনারেল রাইটিং টি , নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। আমি সেলিনা সাথী
💞
🥀 ধন্যবাদ 🥀
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়: জেনারেল রাইটিং
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......