♥☆꧁::.🌷সেই ছোটবেলার মধুর স্মৃতিচারণ || অপূর্ব তুমি🌷 .::. ꧂☆♥
সকলকে শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও বেশ ভালো আছি।আর আপনারা সবাই সবসময় ভালো থাকবেন এটাই প্রত্যাশা করি।
♥☆꧁::. স্মৃতিচারণ::. ꧂☆♥
বন্ধুরা আমার বাস্তব জীবনের সেই শৈশবের একটি মধুমখা চমৎকার স্মৃতিচারণ আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করে নেব।আপনারা অনেকেই জানেন যে, ক্লাস সিক্স এর বাষিক পরীক্ষার পর আমার বিয়ে হয়ে যায়। ঠিক এই সময়টাতেই শৈশব-কৈশোর নাকি তরুণ্যের সময় বলে আমার ঠিক জানা নেই। তারপরে অনেক অসুস্থতা চড়াই-উৎরাই, নানা রকম ঝামেলায় অতিবাহিত হয়েছিল। এবং এক পর্যায়ে আমি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলাম।তখন মানসিক রোগের চিকিৎসা করা হচ্ছিল আমার।ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবারের সকলেই আমাকে হাসিখুশি রাখার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। সেই সুবাদে বাবা-আমাকে গানের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন।আর আমাকে একটা হারমোনিয়াম ও কিনে দিয়েছিলেন। গানের স্কুল টির নাম ছিল।আনন্দধ্বনি সুর নিকেতন। এই স্কুলটি পরিচালনা করতেন এডভোকেট অসিত কুমার ধর। আমার বাবা দাদাকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে আমার মেয়েটাকে একটু হাসিখুশি রাখার জন্য আপনার গানের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলাম। প্লিজ আমার অনুরোধ আপনি মেয়েটাকে একটু হাসানোর চেষ্টা করবেন। দাদা বলে ঠিক আছে আজ থেকে সাথি আমার মেয়ের মত। ওকে সুস্থ করে তোলার জন্য আমিও আমার পক্ষ থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করব। যাইহোক বেশ কয়েকদিন গেলাম গানের স্কুলে।আমার মত অনেকেই ছোট-বড় সবাই আসতো সেখানে। ছোটদের জন্য মজার মজার ছড়া গান শেখাতো।আমি কারো সাথে কথা বলতাম না নিশ্চুপ হয়ে গান শুনতাম।কখনো কখনো ঠোঁট নাড়াতাম।তবে গান ও গাইতাম না সেভাবে। হাসতাম ও না। সেভাবে কথা বলতাম না কারো সাথে। বিষয়টি দাদা লক্ষ করত।তিনি আমার নাম দিলেন কবিতা।সেই থেকে গানের স্কুলে সবাই আমাকে কবিতা বলে ডাকত। কবিতা বলেই চিনতো।
গানের স্কুলে অনেকের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন। তিনি যেমন- সুদর্শন, তেমনি তার মায়াবী চেহারা, মধুমাখা গানের গলা, চুলগুলো মোলায়েম আর সিল্কি। অপূর্ব চাহনি। আসলে তার সৌন্দর্যের বর্ণনা আমি ঠিক এই মুহূর্তে দিতে পারছি না। এক কথায় অপূর্ব। তিনি আমার চেয়ে বেশ বড় ছিলেন। আমি ওনাকে অপূর্ব ভাইয়া বলেই ডাকতাম। যদিও কোনদিনও সামনাসামনি কথা বলিনি। যাই হোক দাদা একদিন দায়িত্ব দিল অপূর্ব ভাইয়াকে, হারমোনিয়ামে আমাদের আঙ্গুল তুলে দিতে।আমি সহ আরো কয়েকজনকে।সেদিন অপূর্ব ভাইয়া প্রথম আমাকে কথা বলছে। কবিতা দেখো হারমোনিয়াম কিভাবে ধরতে হয়। এবং আঙ্গুর গুলি কিভাবে কাজ করতে হয়। তার আগে আঙুলগুলোয় সা রে গা মা পা ধা নি সা কোনটা কোন আঙ্গুল সেগুলো শিখিয়ে দিলেন। আমিও বেশ মনোযোগ সহকারে শিখলাম।কিন্তু হারমোনিয়ামে যখন প্র্যাকটিস করতেছি তখন ঠিক পারতেছিলাম না। আঙ্গুলগুলো গুলিয়ে ফেলেছিলাম। একটা সময় বিরক্ত হয়ে অপূর্ব ভাইয়া আমার আঙ্গুলগুলো ধরে শিখিয়ে দিচ্ছিলেন। যখন উনি আমার আঙ্গুলে স্পর্শ করেছিলেন, তখন আমার পুরো শরীরে একটা ইলেকট্রিক শর্ট কাজ করছিল।অনুভূতিটা ঠিক বোঝাতে পারবো না। আমি খুব দ্রুত হাত সরিয়ে নেই। এবং হাঁপাতে থাকি অবিরাম। আমার সাথে যারা ছিল তারা সবাই ভয় পেয়ে গেল। এমনকি অপূর্ব ভাইয়া নিজেও। তিনিও ঠিক বুঝতে পারছিলেন না কি হল। সেই থেকে আর গানের স্কুলে যাওয়া হলো না। গান শেখার ইতি টানলাম সেখানেই। তবে সেই অনুভূতিটা এখনো মাঝে মাঝে কাজ করে মনের ভেতরে।মনের অজান্তেই চমকে উঠি বারবার। ভালোলাগা নাকি মন্দ লাগা এটা আজও বুঝিনি। তবে সেই অপূর্ব ভাইয়া, আজ আবারো হঠাৎ করে আমাকে আবিষ্কার করে কল দিয়েছিলেন। বিশ্বাস করুন তার কন্ঠস্বর আমি আজও ভুলি নাই। বেশ খানিকটা সময় কথা হলো আজ। সেই পুরনো স্মৃতিচারণ। অপূর্ব ভাইয়াকে নিয়ে কবিতা লিখেছিলাম অপূর্ব তুমি। পুরনো কথা মনে করে আজ প্রাণ খুলে হাসলাম দুজন দুদিকে। অপূর্ব ভাই আমার চেয়ে বড় হলেও তার বিয়ে হয়েছে অনেক দেরিতে। আর তাই ওনার মেয়ের বয়স এখন 10 বছর।আমাকে একটা প্রস্তাব দিয়ে দিলো। আমরা কি বেয়াই- বিয়ান হতে পারি-? কি অদ্ভুত এক কথা।
পুরনো স্মৃতিচারণে ও অদ্ভুত একটা প্রশান্তি কাজ করে। নানারকম কৌতুহলে প্রচন্ড হাসি পায়। চোখের সামনে জ্বলজ্বল করে ভেসে ওঠে সেই সব মধু মাখা স্মৃতি। স্মৃতি হোক মধুময়। উদার আকাশে ভেসে উঠুক ক্ষণে ক্ষণে। এই রঙিন পৃথিবীর বিশালতায় অপূর্ব তুমি ভালো থেকো। অপরূপ রূপের মোহনায়। আজ এ পর্যন্তই,,
২২ মে ২০২৩ইং
সময় রাত ১১:৩০
কবিতা কুটির-নীলফামারী।
আমি সেলিনা সাথী। আমার প্রফেশন, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার ও মোটিভেটর। আমি একজন সমাজ কর্মি ও সংগঠক। এছারা ও তৃনমূল নারী নেতৃত্ব সংঘের নির্বাচিত সভাপতি বাংলাদেশ। আমি "নারীসংসদ"
এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি "সাথী পাঠাগার"। আমার লেখা মোট ১০ টি একক ও যৌথ কাব্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। একুশে বই মেলায় প্রতি বছর একটি করে কাব্য গ্রন্থ প্রকাশের চেস্টা করি। আমার লেখা কাব্যগ্রন্থের মধ্যে "মিস্টি প্রেম" (উপন্যাস), "অশ্রু ভেজা রাত" (কবিতা), "জীবন যখন যেমন" (কবিতা), "একুশের বুকে প্রেম" (কবিতা), "নারীকন্ঠ" (ম্যাগাজিন) অন্যতম।
আপনার জীবনের গল্প এর আগেই পড়েছি। কিভাবে আপনি বিয়েটা হয়েছিল। আসলেই এরকম অবস্থায় মন মানসিকতা অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায় এবং আপনি মানসিক রোগীর মতন হয়ে গিয়েছিলেন। যার কারণে আপনাকে একটি গানের স্কুলে ভর্তি করে দেয় এবং সেখানে আপনি মন ভাল করার জন্য চেষ্টা করেন এবং হারমোনিও একটা কিনে দিয়েছিল আপনার বাবা। যাই হোক আজকে আপনার এই গল্পটি পড়ে আপনার সেই স্মৃতিময় দিনের কথা ভালো করে জানতে পারলাম। যাই হোক আসলে এই গানের স্কুলটা আপনাকে অনেকটাই অনুপ্রেরণা দিয়েছে। আজকের পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাইয়া আজকের পোস্টে তো আমি কোন কবিতা পোস্ট করিনি। পোস্ট না দেখে শুধু সংখ্যার জন্য মন্তব্য না করাই উত্তম। অনুরোধ থাকলো সময় থাকলে পোস্টটি আর একবার চোখ বুলিয়ে নেবেন।ভালোবাসা অবিরাম♥♥
অন্য কবিতার পড়ে কমেন্ট করতে ভুলে আপনার পোস্ট হয়ে গেছে।
ও আচ্ছা!
আজ আপনার কবিতার সাথে অনেক সুন্দর একটি পুরনো স্মৃতির গল্প পড়তে পেলাম আপু। কখনো কখনো অতীতের কথাগুলো মনে পড়লে একান্ত অনেক ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে আপু এত সুন্দর কবিতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য
আপু আজ আমি কবিতা লিখি নাই তো। ছোটবেলার মধুমাখা একটি স্মৃতিচারণ করেছি। একটু মনোযোগ সহকারে পড়লে বুঝতে পারবেন। অনেক মজার একটি অনুভূতি।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য♥♥
আপু আপনার লেখাটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো । আসলে এ ধরনের মধুর স্মৃতিচারণ করতেও বেশ ভালো লাগে। হয়তো তখন বুঝতে পারেননি সেটা ভালোলাগা না অন্য কিছু ।তারপরেও এত বছর পর আবার আপনার সঙ্গে কথা হয়েছে বিষয়টা বেশ অবাক লাগলো । এত বছর পর আপনাকে কি করে খুঁজে পেলেন সেটাই ভাবছি । যাইহোক ওনার প্রস্তাবটা কিন্তু আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে ।ভেবে দেখতে পারেন কিন্তু । ধন্যবাদ আপনাকে ।
হা হা হা,, কেমন করে এটা সম্ভব বলুন। তবে ওনার তীব্র ইচ্ছা আমরা দুজন বিয়াই -বেয়ান হলে ভালই হবে। উনি কি করে আমাকে খুঁজে পেল এখনো জানা হয়নি।কাল রাতে যখন কল দিয়েছিল তখন আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম।
♥♥
আপু অবাক তো হওয়ারই কথা আমিও অবাক হয়েছি । এর জন্য জিজ্ঞাসা করেছিলাম আপনাকে খুঁজে কি করে পেলো । সত্যিই বেশ ভালো লাগলো ।
আপু আমি তোমার জন্য মন থেকে অনেক বেশি দুআ করি আল্লাহ তায়ালার কাছে। আল্লাহ তোমাকে আরও বেশি ধৈর্য্য দিক জীবনে চলার পথে। আপু তোমার জীবনের গল্প তোমার মুখে আর এই পোস্ট আবার অনেক আগের একটি পোস্টের পড়েছিলাম। পোস্ট পড়ে তোমার জীবনের সাথে ঘটনা সত্যি আমার চোখে পানি চলে আসে।এই টুকু একটা ছোট মেয়ে ছিলে কতো কষ্ট সয্য করতে হয়েছে। গল্পটি পড়েও তোমার সেই পুরোনো স্মৃতি দিনের কথা আরও জানতে পারলাম।যাইহোক আপু তোমার ছোটবেলার মধুমাখা একটি স্মৃতিচারণ জেনে খুব ভালো লাগলো।
আর শেষের কথাটা ভালো হলে দেখতে পারো আপু।
ধন্যবাদ আপু তোমার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইলো।