রোড ডিভাইডারে সবজি চাষ। কিস্তি-১

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

বন্ধুরা,শুভেচ্ছা জানবেন।
আশাকরি ভালো আছেন সবাই? আমিও ভালো আছি।
ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে গত তিন/চার দিন পোস্ট দিতে পারিনি। দেরি হলেও আজ একটু ভিন্নতা নিয়ে হাজির হয়েছি। রান্না-বান্ন,আর্ট আর হাতের কাজের পোস্ট তো নিয়মিত দেই তাই আজকের পোস্টটা একটু অন্যরকম।
আশাকরি ভাল লাগবে সবার।
ঢাকা ইট -রড-পাথর আর কংক্রিটের শহর। সবুজের ছায়া-ছোয়া খুব কম। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের খুব কম হওয়া হয়। গত কয়েক দিন আগে ব্যক্তিগত কাজে আগারগাঁও যেতে হয়েছিল। আগারগাঁও দেখে আমি মুগ্ধ। যারা ৮/১০ বছর আগে আগারগাঁও দেখেছিলেন আমি নিশ্চিত আপনারা চিনবেননা!!
আগারগাঁও ছিল একসময় ঢাকা শহরের মাদকের প্রধান আখড়া। বস্তি- ঝিল -বিল দিয়ে ভরা । সন্ধ্যারপর তো প্রশ্নেই উঠেনা, দিনে দুপুরে অনেক এলাকায় ঢুকতেই ভয় লাগতো! কিন্তু সে চিত্র এখন নেই।
আগারগাঁও এখন প্রসাশনিক এলাকা। গত ৮/১০ বছরের এখানে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অফিস কাজ শুরু করায় চিত্র পালটে গেছে। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের আধুনিক স্থাপনার পাশাপাশি ফোর লেনের সুন্দর -মসৃণ ঝকঝকে অত্যাধুনিক রাস্তা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যাবে।
আজ আমি ফোর লেন রাস্তার একটা ছোট অংশ রোড ডিভাইডার নিয়ে কিছু শেয়ার করবো। শুরুতেই বলেছিলাম আজকের পোস্টের ভিন্নতা আছে আর সে ভিন্নতা হচ্ছে ইট -রড-পাথর আর কংক্রিটের ঢাকা শহরের রাস্তার রোড ডিভাইডারে সবজি চাষ।
e.jpgলাল শাক।

আগেই বলেছি ব্যক্তিগত কাজে আগারগাঁও গিয়েছিলাম। যাওয়ার সময় রিক্সায় ছিলাম এবং তাড়া ছিল বলে খেয়াল করিনি। তালতলার পর থেকে বিএনপি বাজার পর্যন্ত নতুন যে রাস্তাটি হয়েছে সেখানে রোড ডিভাইডারে সারি সারি বিভিন্ন গাছ রোপন করা হয়েছে। যার অধিকাংশই সৌনর্য বর্ধণের জন্য বিভিন্ন ফুলের গাছ।
h.jpg রোড ডিভাইডারে খাচায় লাগানো সারি সারি গাছ।
ফেরার সময় যেহেতু তাড়া ছিলনা তাই পায়ে হেটে রওনা দিলাম। নতুন রাস্তা বলে ফুটপাত গুলোও ঝকঝকে পরিস্কার ।খাল-খন্দ নেই। ফুটপাত দিয়ে হাটছি আর তাকাচ্ছি । রাস্তা বড় হওয়ার ফলে ফুটপাত থেকে রোড ডিভাইডার কিছুটা দুরে। ঠিকমত দেখা যাচ্ছিলোনা! তাই সিদ্ধান্ত নিলাম ফুটপাত নয় রোড ডিভাইডারের পাশ দিয়ে হেটে যাব। নতুন রাস্তা বলে গাড়ি-ঘোড়ার চাপ তেমন নেই। তার পরেও অতি সর্তক ভাবে রোড ডিভাইডারের কাছে চলে এলাম। আর না আসলে এই পোস্টা মিস হত!! রোড ডিভাইডারের পাশ ধরে কয়েক কদম হাটতেই অবাক হয়ে দেখলাম বিভিন্ন সবজির চাষ-বাস।
b.jpgমুলা শাক।

c.jpgলাউ আর ডাটা শাক।

d.jpg পালং শাক।

g.jpg ঢেড়শ।

মুগ্ধ হয়ে দেখছিলাম আর যারা এই মহতি কর্মটি করেছেন তাদের মনে মনে সাধুবাদ জানাচ্ছিলাম। বাংলার মাটি সোনার চেয়েও খাটি । আর বাংলার মানুষ আরো খাটি। মানুষ তার শেকড়কে ভুলতে পারেনা, যতই রাজধানি হোক আর বিদেশ হোক সুযোগ পেলেই মাটিতে সোনা ফলাতে ব্যস্ত হয়ে পরে।
আজ এ পর্যন্তই। পরের কিস্তি আসছে সামনে ,,,,, চোখ রাখুন নিয়মিত আমার বাংলা ব্লগে।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

মোবাইল ফটোগ্রাফিঃ স্যামসং এ ১০

Sort:  
 2 years ago 

ডিভাইডারেও যে চাষ করা হয় এই প্রথম দেখলাম। তাও কেউ চুরি করে নি সেটা আরো বড় বিষয়।ভালো লাগলো দেখে।আপনার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আমিও প্রথম দেখলাম আপু। আপনার মতো আমারও প্রশ্ন কেউ চুরি করে না? ধন্যবাদ কমেন্ট করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু এক অন্যরকম অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরার জন্য। ডিভাইডারে সুন্দর করে সব্জি চাষ করা দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। আমাদের এখানে অর্থাৎ ভারতে যদিও এমনটা বিশেষ দেখা যায় না। এখানে ডিভাইডারে ফুলের বাগান বা বাহারী গাছ দেখা যায়। তবে রেল লাইনের ধারে নানা রকম চাষ করতে দেখা যায়।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

সত্যি যারা এই মহৎ কাজ করেছে তাদের আমিও সাধুবাদ জানাতে চাই আপু। কয়দিন পর যে অবস্থা আসতেছে আমাদের ও এভাবে চাষ করে খেতে হবে। এই এলাকার লোক গুলো সত্যি ভালো। নাহলে এভাবে রোড ডিভাইডার কে কাজে লাগাতে পারতোনা। নানান রকম এর শাক দেখে আমিও মুগ্ধ।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

ঢাকা শহর এখন দিন দিন পরিবর্তন হচ্ছে আগারগাঁও তো অনেক পুরনো জায়গা ওসব জায়গায় মাদকের আখড়া থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এখন বড় বড় বিল্ডিং ওঠার কারণে সব জায়গায়ই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ছবি তুলতে হলে পায়ে হেঁটে যাওয়াটাই ভালো কারণ রিক্সায় করে তেমন ভালো ছবি তোলা যায় না। আর এখন ঢাকার শহরের সব জায়গায় ডিভাইডার এর ভিতরে এরকম গাছপালা দেখা যায় ভালই লাগে দেখতে।

 2 years ago 

ঠিক আপা । মিরপুর এলাকায় মেট্রোরেলের কাজ শেষ হলে ঢাকার সৌন্দর্য্য আরো বৃদ্ধি পাবে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

যদিও এটি কোন নিয়ম নয়, যে ডিভাইডারের মাঝখানে চাষবাস করা। তবে এটি সৌন্দর্য রক্ষার্থে ফুল গাছ রোপন করার জন্য করা হয়েছিল। তবে চাষ বাস করাতে এটি অনেক বেশি ভালো হয়েছে, কেননা বর্তমান পরিস্থিতি খুবই খারাপ তাই যে যেখানে চাষবাস করুক দেশের উপকার হবে।

 2 years ago 

জি ভাই ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 60752.38
ETH 2453.49
USDT 1.00
SBD 2.63