জেনারেল রাইটিংঃ শীতকাল ।

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

সবাইকে শুভেচ্ছা।

আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, কেমন আছেন? আশাকরি, সবাই ভালো আছেন। ভালো থাকুন এই প্রত্যাশা করি। আমিও ভালো আছি।আজ ৩রা মাঘ, শীতকাল,১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রীস্টাব্দ।

w1.jpg

source

বরাবরের মত আজও আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুদের জন্য একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি।আজকের ব্লগ একটি জেনারেল রাইটিং। বিষয় শীত। শীত নিয়ে জেনারেল রাইটিংটি আশাকরি ভালো লাগবে আপনাদের। সূর্যের দেখা নেই বেশ কয়েকদিন। কোথাও কোথাও কুয়াশাছন্ন দিন-রাত। সারাদেশেই কমবেশি শীত। কোথাও তীব্র শীত। ঋতু হিসেবে পৌষ-মাঘ মাস শীতকাল। কিন্তু হেমন্তের সোনালী ডানায় ভর করে আগমন ঘটে শীতের।শীতকাল বৈচিত্রে ভরা। অনেকেরই পছন্দের ঋতু।

শীতকাল আনন্দ উৎসবের ঋতু। কত অনুষ্ঠানে । বিভিন্ন পিঠাপুলির আয়োজন,বিয়েসাদীসহ নানা ধরণের অনুষ্ঠানে সদা সরব শীতকাল।শীত এলেই দাওয়াত আর ঘুরাঘুরি রেওয়াজও দীর্ঘ দিন ধরে।এছাড়া বিভিন্ন অতিথি পাখির আগমন ও বিভিন্ন ফুলের সৌরভে প্রকৃতিও নতুন রুপে সাজে।মানুষের শীত উদযাপন শুরু হয়ে যায়।

শীত-বর্যা-গ্রীস্ম কারো আনন্দ, কারো বেদনার। আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী বা উচ্চবিত্তদের জন্য আনন্দের।আর সমাজের প্রান্তিক মানুষদের জন্য বেদনার। প্রান্তিক অনেক মানুষের নেই মাথাগোঁজার ঠাই! এই শীতে তারা অমানবিক জীবন যুদ্ধে পার করছে দিন রাত।এই শীতে নিম্ন আয়ের মানুষদের আয় কমে যাওয়ায় পরিবারের সদস্য দিতে পারছেনা পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র। রাস্তা ঘাটে, ষ্টেশনে,বাসটার্মিনালে,লঞ্চঘাটে,ফুটপাতে তাকালেই শীতে জবুথবু মানুষ গুলোকে আমরা দেখতে পাই।গ্রামেও চিত্র একই।শহরে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান শীতবস্ত্র বিতরণের চিত্র দেখতে পাওয়া গেলেও গ্রামে সে চিত্র প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এক টুকরো গরম কাপড়ের অভাবে শীতকষ্টে দিনাতিপাত করছেন অসংখ্য মানুষ। শুধু মানুষ নয় শীতকষ্টে আছে অন্যান্য প্রাণীকূলও।

আবহাওয়াবিদদের ভুল প্রমাণিত করে এবার ভালই জাকিয়ে বসেছে শীত। ঢাকায় এতদিন ধরে টানা শীত গত কয়েক বছরে দে্ষা যায়নি।আজ যখন এই ব্লগ লিখছি তখন তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ এখন দুপুর।লেপ মুড়ি দিয়ে এই ব্লগ লিখছি। আবহাওয়াবিদদের ভাষ্যমতে দু'একদিনের মধ্যে বৃষ্টি হতে পারে এবং পুরো জানুয়ারি জুড়েই থাকতে পারে শীতের তীব্রতা।এবারের শীতে লক্ষণীয় বিষয় খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে কম। কাজ শেষেই ঘরে ফিরছে। সন্ধার পরেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।ফুটপাতে ব্যাবসা করে যারা জীবন নির্বাহ করত,তাদের বিক্রিতে বেশ মন্দা ও পরিবার পরিজন নিয়ে খারাপ সময় পার করছে মানুষ গুলো। তবে গরম কাপড়ের ব্যাবসা জমজমাট।

বন্ধুরা,শীতে পরিবারের বয়স্ক ও শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্ন ও নজর দিন।শীতে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতার শিকার হয়ে থাকেন তারা।হাসপাতাল গুলোতে শিশু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে খবর বেরিয়েছে।ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। বিশেষ করে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। সরকারের পক্ষ্য থেকে ঘোষণা দিয়েছে ১০ ডিগ্রীর নীচে তাপমাত্রা নামলেই স্কুল বন্ধের। ডাক্তারেরাও শীতে শিশুদের স্কুলে পাঠাতে নিরুৎসহিত করছেন। আমাদের সবার পরিবারের সদস্য সহ সবাই এই শীতে নিরাপদ হোক।তাড়াতাড়ি তীব্রশীত কমে স্বাভাবিক শীতে ভরে উঠুক পকৃতি। পরিশেষে, প্রিয় কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের বিখাত কবিতা প্রার্থীর কয়েকটি লাইন শেয়ার করছি আমার আজকের ব্লগ। সবাই ভালো থাকুন,নিরাপদে থাকুন।
হে সূর্য!
তুমি আমাদের স্যাঁতসেঁতে ভিজে ঘরে
উত্তাপ আর আলো দিও
আর উত্তাপ দিও
রাস্তার ধারের ঐ উলঙ্গ ছেলেটাকে।

পোস্ট বিবরণ

পোস্টজেনারেল রাইটিং
পোস্ট তৈরিselina75
তারিখ১৭জানুয়ারী, ২০২৪

আমার পরিচয়

আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পাড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সাথে থাকার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ

Sort:  
 6 months ago 

আমাদের সবার অবস্থাই এমন আপু। ঠান্ডাতে লেপ থেকে বের হতে পারছি না। সব কাজ লেপের মধ্যেই হচ্ছে। আমিও আমার ব্লগ লেখার কাজগুলো এই লেপের মধ্য থেকেই করছি। দিনের বেলায় ১৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা মানে তো অনেকটাই কম। শীতটা এবার একটু বেশিই পড়েছে সব জায়গায়। এই শীতে বৃদ্ধ , শিশু সবাইকেই সাবধান রাখতে হবে, এটা একদম ঠিক কথা। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলেই স্কুল বন্ধের ঘোষণা, সরকারের একটা ভালো উদ্যোগ। তবে তাপমাত্রা এত বেশি নিচে নামবে কিনা তা বলা যাচ্ছে না।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 6 months ago 

সত্যি আপু শীত ভালো লাগে যদি শীতে সূর্যের আলো দেখা যায়। আর এখন সারাদেশে ঝাকিয়ে পড়ছে শীত। তবে এটা সত্যি শীতে রাস্তা ঘাট একেবারে ফাঁকা। বিশেষ কোন প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না।আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 6 months ago 

অনেক ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 6 months ago 

ষড়ঋতুর দেশ আমাদের এই দেশ বাংলাদেশ। তবে বর্তমানে তিনটে ঋতু হয়ে গেছে। এর মধ্যে শীত একটি। কিছু মানুষের শীত ভালোলাগে আবার কিছু মানুষের শীত ভালো লাগে না। কিন্তু শীতের সময় বেশ পিঠাপুলি খাওয়া হয়। তবে সবকিছু ছাপিয়ে বেশ কিছুদিন বেশি পড়ছে। শীতের এই প্রকোপে মানুষের জীবনযাত্রার বিষাদ হয়ে উঠেছে। বেশ ভালো লিখেছেন ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

এটা ঠিক বলেছেন কয়েক দিন হল রোদের করা দেখা নেই। তবে আজকে কিছুটা রোদ দেখা গিয়েছে। বেশ কয়েকদিন ধরেই অনেক বেশি ঠান্ডা পড়ছে। তাছাড়া এই শীতের মধ্যে গরম গরম পিঠা খেতে আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। যদিও শীত উপভোগ করতে ভীষণ ভালো লাগে কিন্তু বেশি শীত হলে আমার অনেক কষ্ট হয়। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

 6 months ago 

শীতকালে পিঠা খেতে বেশ ভাল লাগে।কিন্তু শীতে রাস্তায় বাস করা মানুষেরা কস্টে থাকে।ধন্যবাদ আপু।

 6 months ago 

আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী বা উচ্চবিত্তদের জন্য আনন্দের।আর সমাজের প্রান্তিক মানুষদের জন্য বেদনার।

আমি সহমত প্রকাশ করলাম কারন সব মৌসুমেই সমাজের প্রান্তিক মানুষদের যুদ্ধ করে জীবন যাপন করতে হয়।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

ঠিক তাই ভাইয়া।ধন্যবাদ ভাইয়া।

 6 months ago 

শীতকাল নিয়ে আপনার লেখাগুলো পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আসলে শীতের সময় পরিবারের বয়স্কদের এবং শিশুদের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা উচিত। একই সাথে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি অর্থাৎ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে স্কুল বন্ধ করার বিষয়টি বেশ ভালো একটি উদ্যোগ। কারণ প্রচন্ড ঠান্ডায় বাচ্চারা ঠান্ডা জনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করার জন্য।

 6 months ago 

এই কয়েকদিন হলো সুর্যের কোন দেখাই মিলছে না। আজকে সকালে একটু সুর্য দেখা গিয়েছিল তবে তার কিছুক্ষণ পর থেকেই আবার তা চলে গেল এবং ঠান্ডা আরো বৃদ্ধি পেতে লাগলো।৷ দুপুর বেলা বৃষ্টি হয়েছে আমাদের এখানে কিছু পরিমাণে৷ তাছাড়া এই শীতের মধ্যে গরম গরম পিঠা খেতেও আমার অনেক ভালো লাগে। এই সুন্দর শীতের সকালে গরম গরম পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা৷ খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে৷

 6 months ago 

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57839.82
ETH 3132.70
USDT 1.00
SBD 2.43