স্মরণঃ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
সবাইকে রবীন্দ্র জয়ন্তীর শুভেচ্ছা।
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, আশাকরি সবাই ভালো আছেন সবাই? আমিও ভালো আছি। হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালি,কবি,গীতিকার,কথা সাহিত্যক,ছোট গল্পকার,নাট্যকার,প্রাবন্ধিক। বাংলা সাহিত্যের এমন কোন শাখা নেই যেখানে তার উপর আর কেউ ছিলনা, এখনও নেই। শুধু সাহিত্যে নয় তিনি দার্শনিক, সমাজ সংস্কারক। সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় তার বিচরণ রাজার মত থাকলেও তার পরিচয় কবি হিসেবে। তার ঋণে আমরা চির ঋণি।কার কথা বলছি, নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন! তিনি আর কেউ নন, তিনি আমাদের প্রাণের কবি,গুরুদেব, বিশ্বকবি,কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।আমার বাংলা ব্লগে নিয়মিত ব্লগিং এ আমার আজকের নিবেদন সংক্ষিপ্ত বরীন্দ্র জীবনি। আজ এই মহান মনিষীর জন্মদিন।জন্মদিনে আমাদের প্রণতি।
রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম কলকাতা জোড়াসাকোর অভিজাত ঠাকুর পরিবারে। ১৮৬১ সালের ৭ মে,১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ শে বৈশাখ মায়ের কোলে পদার্পন করেন, বাংলা সাহিত্যকে পৃথিবীর বুকে তুলে ধরতে। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মাতা সারদা দেবীর চতুর্দশ সন্তান। পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরত বিখ্যাত জমিদার। ঠাকুর পরিবার শুধু জমিদারি আর ব্যবসা বানিজ্য নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন না,পাশাপাশি জনহিতকর কাজেও সাফল্য অর্জন করেন। উনিশ শতকের বাঙালির নবজাগরনে,ধর্ম ও সমাজ-সংস্কারে জোড়াসাকোর ঠাকুর পরিবারের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পড়া-লেখায় তেমন মনোযোগ ছিলনা রবীন্দ্রনাথের।কলকাতার ওরিয়েন্টাল সেমিনারিতে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হলেও পরে বেশ কয়েক বছর পড়া লেখা করেন নর্মাল স্কুলে।বিদ্যাসাগর প্রতষ্ঠিত এই নর্মাল স্কুলে তার বাংলা শিক্ষার মজবুত ভিত্তি তৈরি হয়।সেন্ট জেভিয়ার্স ছিল রবী ঠাকুরের সর্বশেষ স্কুল। কিন্ত আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় মনোযোগি না হওয়ায় অনুপস্থিতির কারণে পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু বাড়িতে বসে অব্যহত রাখেন পড়ালেখা। পিতার কাছে তিনি সংস্কৃতিও পড়তেন। জমিদার পুত্র পড়লেখা করবেনা তা কি হয়! ভাইয়ের সাথে ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য তাকে বিলাতে পাঠানো হয়। তবে এ পড়াও শেষ না করে দেড় বছরের মাথায় দেশে ফিরে আসেন। তবে রবীন্দ্রনাথ ইংল্যান্ড থেকে কোন ডিগ্রী না নিলেও প্রতিভা বিকাশের পথ খুজে নিয়েছেন।
১৮৮৩ সালের ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশের খুলনার বেণীমাধব রায় চৌধুরীর মেয়ে মৃণালিনী দেবী রায়চৌধুরীকে বিয়ে করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথ ও মৃণালিনী দেবীর তিন কন্যা ও দুই পুত্র ছিল।পারিবারিক জীবনে রবীন্দ্রনাথ নানা বিপর্যয়ের সন্মুখীন হন। বিয়ের মাত্র উনিশ বছরে মৃণালিনী দেবীর মৃত্য হয়। তার কয়েকমাস পরেই মারা যান কন্যা রেনুকা। তার তিন বছর পর কবির বাবার মৃত্যু ও বাবার মৃত্যুর পর কবির ছোট ছেলে শমীন্দ্রনাথের মৃত্যু কবিকে শোকে বিহবল করে দেন। এই সময় পারিবারিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি কবি অর্থ সংকটেও পড়েন। এত সংকটেও ভেঙ্গে পড়েননি,থেমে থাকেনি সাহিত্য সাধনা।
গীতাঞ্জলি কাব্যের জন্য ১৯১৩ সালে তিনি নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। এবং বাংলা সাহিত্যকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করেন। সারা বিশ্বে তিনি কবি হিসেবে বিখ্যাত হলেও ১৯১৫ টি গান,১৩ টি উপন্যাস,৯৫ টি ছোট গল্প,৩৬ টি প্রবন্ধ ও ৩৮ টি নাটক লিখেছেন। তার সৃষ্টিকর্ম এত বিশাল যে তা রবীন্দ্র রচনাবলী নামে ৩২ খন্ডে প্রকাশিত হয়েছে। ১৯২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর তিনি শান্তিনিকেতনকে কেন্দ্র করে বিশ্ব ভারতী বিশ্ব বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। নিরীহ মানুষদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিনেন ও জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ব্রিটিশদের দেয়া নাইট উপাধী ত্যাগ করেন। জীবদ্দশায় তিনি ৩০ টির অধিক দেশ ভ্রমণ করেন। ভ্রমণকালে আইনস্টান সহ অনেক বিখ্যাত মানুষ তার সাথে দেখা করেন।
কবির শেষ জীবনটা কেটেছে কষ্ট ও যন্ত্রনায়।নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি।দীর্ঘ রোগ ভোগের পর ১৯৪১ সালের ৭ আগষ্ট জোড়াসাকোর বাড়িতে ৮০ বছর বয়সে শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন।
আমাদের জাতীয় জীবনে কবিগুরু এখনও অপরিহার্য। তিনি আমাদের পরিচিতি দিয়েছেন। আলোকিত করেছেন। তাঁর কাছে আমাদের অশেষ ঋণ। আমাদের যাপিত জীবনে জন্য তাঁর দান অশেষ।অপসংস্কৃতি,অনাচার,কুপমুন্ডকতা ও ধর্মান্ধতা-সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধে রবীন্দ্র পাঠ, রবীন্দ্র চর্চা আমাদের জন্য জরুরি। সবার জীবন রবীন্দ্রময় হলে ক্ষতি নেই, কিন্তু রবীন্দ্র বিমুখ আমাদের ব্যক্তি জীবন,সমাজ সংস্কৃতির জন্য অশনি সংকেত।
তিনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি দু"দেশ-বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা।
কবিগুরু জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা।
পোস্ট বিবরন
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @selina75 |
লোকেশন | ঢাকা,বাংলাদেশ |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
https://twitter.com/selina_akh/status/1655996151722840064
কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।আপনি কবির জন্মদিনের শ্রদ্ধা জানিয়ে বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করলেন,পড়ে খুব ভালো লাগলো।আপনি কবি গুরুর বেশকিছু তথ্য আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ৮০ বছর বয়সে এই কবি আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়েছেন।সত্যি আমরা গর্বিত এমন গুনী কবি আমাদের দেশে পেয়েছি বলে।তার অবদানের কথা ভুলে যাবার নয়।যুগ যুগ ধরে তিনি থাকবেন আমাদের মাঝে বেঁচে তার অবদানে।ধন্যবাদ আপু।
জি আপু তিনি থাকবেন যুগ যুগ ধরে আমাদের মাঝে। অনেক ধন্যবাদ আপু।
প্রথমেই জন্মদিনে আমাদের প্রাণপ্রিয় একজন কবি, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানায়।তিনি আমাদের দেশ এমনকি সারা বিশ্বের কাছে সম্মানিত একজন ব্যক্তি।তিনি আমাদের থেকে বিদায় নিলেও রয়ে গেছে তার অস্তিত্ব এখনও বাঙালির মনে।কবিগুরুর জন্মদিনে আপনার লেখা পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লেগেছে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
সারা বিশ্বে তিনি তার কর্মের জন্য বেচে থাকবে যুগ যুগ ধরে। অনেক ধন্যবাদ আপু।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কে না চেনে। তবে অনেকেই মনে রাখে না তার জন্মদিন গুলো। আজ আপনি শ্রদ্ধার সাথে তাকে স্মরণ করে আমাদের মাঝে সুন্দর একটি পোস্ট ক্রিয়েট করেছেন দেখে আমার অনেক ভালো লেগেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।