স্কুল জীবনের মজার স্মৃতি গুলো||১০% shy-fox এর জন্য

স্কুল জীবনের মজার স্মৃতি গুলো

book-1822474_640.jpg
source

জীবন সবচেয়ে মধুর সময় স্কুল জীবনের সময় গুলো। স্কুল জীবনের মধুর স্মৃতি গুলো কখনো ভুলে যাওয়ার নয়।খুব ইচ্ছে করে যদি আবার স্কুল জীবনে ফিরে যেতে পারতাম। মাঝে মাঝে চিন্তা করি যদি স্কুল জীবনে ফিরে যেতে পারতাম, তাহলে আগের থেকে অনেক বেশি আনন্দ করতাম। আজ আপনাদের সাথে স্কুল জীবনের কিছু মজার স্মৃতি শেয়ার করব।

school-298680_640.jpg
source

💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖

আমার শৈশব এবং কৈশোর কেটেছে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলায়।১৯৯২ সালে অনেক ছোট থাকতে পার্বতীপুরে আসি বাবার চাকরির সুবাদে। আমাদের বাসা ছিল একটি আবাসিক এলাকায়।১৯৯৪ সালে আমি নর্সারিতে কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ভর্তি হই। স্কুলের নাম কেলোকা প্রিপারেটরি স্কুল। তখন একটি উপজেলায় হয়তো দুই একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল ছিল। নার্সারিতে আমি সহ ৬ জন ছাত্র-ছাত্রী ছিলাম। লেখাপড়ায় মোটামুটি ভালো ছিলাম, তবে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ ছিল অনেক বেশি এবং ভাল খেলতাম।

pexels-photo-6936021.jpeg
source

💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖

কিন্ডারগার্টেন স্কুলে পড়ার কারণে অনেক নিয়মকানুনের মধ্যে দিয়ে যেতে হতো। এরপর ক্লাস ওয়ানে উঠলাম ওয়ান থেকে যখন ক্লাস টুতে উঠলাম তখন ঘটল মজার একটি ঘটনা। আমি এবং আমার এক বান্ধবী ক্লাস ওয়ানের ফাইনাল পরীক্ষায় একই নাম্বার পেয়েছিলাম। এখন কাকে ১ রোল দিবে এটা নিয়ে একটু সমস্যা দেখা দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত আমার বান্ধবীকে ১ রোল দিয়েছিল এবং আমাকে দিয়েছিল ২ রোল। এই কিন্ডারগার্টেন স্কুলে আমি ক্লাস সিক্স পর্যন্ত পড়েছি। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা অনেক কম ছিল এখানে। যখন চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ি তখন আমার বন্ধু ইমরান হাসান আমাদের স্কুলে এসে ভর্তি হয়। তারপর থেকে আমাদের পথ চলা আজও পর্যন্ত ভালো বন্ধুত্ব রয়েছে আমাদের।

pexels-photo-5445616.jpeg
source

💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖

যেহেতু ছোটবেলা থেকে বড় হয়েছি আবাসিক এলাকায়,তাই বাইরের পরিবেশ এর সাথে অতটা পরিচিত হয়ে উঠতে পারিনি । ২০০১ সালে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হলাম।আমার বাসা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে পার্বতীপুরের জ্ঞানাঙ্কুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ পার্বতীপুরের জ্ঞানাঙ্কুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।এই ব্যাপারটা নিয়ে আমরা খুব গর্ব বোধ করতাম। এই স্কুলে প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী। আমাদের সপ্তম শ্রেণীতে সম্ভবত ২০০ উপরে ছাত্র ছাত্রী ছিল। এই স্কুলে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে জীবনের অনেক কিছুই পাল্টে যেতে থাকলো। নতুন নতুন বন্ধু জুটলো ভালো-খারাপ সব বন্ধুই। বাসা থেকে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যেতাম। স্কুল ফাঁকি দিয়ে সাইকেল নিয়ে ঘুরতে বেড়াতাম। স্কুল পালানোর জন্য স্যারের হাতে অনেক মার খেয়েছি কিন্তু তারপরও স্কুল পালানো ছাড়তে পারিনি।আমার এক বন্ধুর নাম রুবেল তাকে সাথে নিয়ে সাইকেলে প্রচুর ঘুরেছি।একবার সৈয়দপুরে সাইকেল চালিয়ে গিয়েছিলাম দুজনে,যেটা পার্বতীপুর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে। সেখানে যাওয়ার পর একটি হোটেলে আমরা খেয়েয়েছিলাম এবং হোটেলের বিল না দিয়ে আমরা পালিয়ে চলে এসেছিলাম। ব্যাপারটা ভাবলে এখনো অনেক মজা লাগে।

kids-909715_640.jpg
source

💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖

জীবনে প্রথম সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখেছি অষ্টম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায়। সিনেমা হলে এক বন্ধুর সাথে গিয়েছিলাম প্রথম সিনেমা দেখতে। বাসায় ধরা খেয়ে গেছিলাম তারপর বাবা প্রচুর মেরেছিল সেই সিনেমা দেখার জন্য। স্কুল ফাঁকি দিয়ে অনেক দূরে দূরে ক্রিকেট খেলতে যেতাম। আমাদের স্কুলের ভিতরে সাইকেল গ্যারেজ ছিল। সকাল দশটার সময়ে স্কুল শুরু হতো নয়টার সময় যেতাম। গ্যারেজের ভিতরে সাইকেল রাখতাম তারপর প্রথম ক্লাস করে দোতলা দিয়ে পাইপ ধরে ধরে নিচে নেমে স্কুল পলাতাম। আবার চারটার সময় যখন স্কুল ছুটি হতো তখন এসে সাইকেল নিয়ে যেতাম এভাবে অনেকদিন স্কুল পালিয়েছে। স্কুলে যখন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকতো তার অনেক দিন আগে থেকেই রিয়ার্সেল শুরু হতো সেগুলো খুব উপভোগ করতাম। ইন্টার স্কুল ক্রিকেটে অনেক কয়বার খেলতে গিয়েছিলাম।

board-2433993_640.webp
source

💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖

স্কুলে যখন দুপুরে টিফিনের সময় হত মাঝে মাঝে বাসা থেকে খাবার নিয়ে আসতাম।কখনো হোটেলে গিয়ে পুরি খেতাম। এক টাকা করে একটা পুরীর দাম ছিল। মাঝে মাঝে অনেক সময় ঝাল মুড়ি খেতাম।২০০৩ সালে নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হই। ২০০৪ সালে স্কুল জীবনের শেষ বছর। এবছর মাঝে মাঝে খুব খারাপ লাগতো এ বছরই শেষ স্কুল জীবন ।সকালবেলা সাইকেল চালিয়ে প্রাইভেট পড়তে যেতাম গণিতের শিক্ষক প্রতাপ স্যারের কাছে। মাঝে মাঝে খুব সকালে যেয়ে স্যারকে ডেকে তুলতাম, স্যার অনেক সময় বকুনি দিতেন। অনেক সময় তাড়াতাড়ি গেলে তিনি দরজা খুলতে না ব্যাপারটা আমরা খুব এনজয় করতাম।

india-6316122_640.jpg
source

💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖💖

স্কুল জীবনের স্মৃতি বলে শেষ করা যাবেনা। আমাদের সময় মোবাইল বা ডিজিটাল বাংলাদেশ ছিল না কিন্তু বিনোদনের অভাব ছিল না।এখন যখন স্কুলের সামনে দিয়ে যাই, স্কুলের দিকে তাকাই।তখন ভাবি এই স্কুলে এক সময় পড়তাম,এখন কত অচেনা লাগে কারণ সেই আগের পরিবেশ নেই। আমাদের সময়কার শিক্ষকদের বেশিরভাগ শিক্ষকই এখন নেই। স্কুল জীবনের প্রতিটা সময় এখন খুব মিস করি। স্কুল জীবনের বন্ধুরা কোথায় হারিয়ে গেছে দুই একজন ছাড়া আর কারো সাথে যোগাযোগ নেই।

🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸

আমার পরিচয়

আমি মো: সেলিম রেজা। বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরি করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার অনেক ভালো লাগে। আমি লেখালেখি, বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণ করতে বেশি পছন্দ করি।

Sort:  
 3 years ago 

আসলেই স্কুল জীবনের স্মৃতি কখনো ভুলার যাবে না। স্কুল লাইফ আমাদের প্রত্যেকের জীবনে খুবই মজার একটি সময় ছিল। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ ভাই

জি ভাই ঠিকই বলেছেন স্কুল জীবনের স্মৃতি গুুলো ভোলা যায়না।মনে পড়ে সেই ছোট্ট কালের স্কুল জীবনের স্মৃতির কথা। আমরা সবাই কম বেশি স্কুলজীবনে মজা করেছি। যাইহোক আজকের পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

অনেক ধন্যবাদ ভাই অসাধারণ মন্তব্য করার জন্য

 3 years ago 

আসলেই স্মৃতিগুলো ভোলা যাবেনা।
আর এই গল্প বলেও শেষ করা যাবেনা।
যাক স্মৃতিগুলো বেঁচে থাকুক হৃদয়ে আমৃত্যু।
ভালো থাকো বন্ধু সবসময়ই সেই দোয়া করি।

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো। সব সময় অনেক ভালো থাকো এই দোয়া করি

 3 years ago 

কিছু স্মৃতি কোন দিনই ভোলার নয়।আপনার এমন গল্পপড়ে ছোটবেলার ভালো সময়গুলো নাড়া দিয়ে দিচ্ছে।কত মধুর সময় ছিলো,আর কতো তাড়াতাড়ি হাড়িয়ে ফেললাম।খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লেখাটি উপহার দিয়েছেন শ্রদ্ধেয়।

অনেক ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্যের জন্য

 3 years ago 

স্কুলজীবনের মজার স্মৃতি নিয়ে লেখাটি দারুন করেই মন কেড়েছে।খুব চমতকার লিখেছেন।

 3 years ago 

আপনার স্কুল জীবনের মজার স্মৃতি গুলো পরে আমারো মনে পরে গেলো পুরনো স্মৃতির কথা।খুব সকালে স্কুলে যাওয়া তারপর পিটি করা কতই না মধুর স্মৃতি। মাঝে মাঝে আমিও স্কুল পালাতাম বন্ধুরা মিলে।আমি ও সকালে গনিত পরতে যেতাম মজিবর স্যারের কাছে।পুরানো সৈই দিনের কথা আর ভোলা যায়।ভালো ছিলো।ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু। পুরনো স্মৃতিগুলো মনে হলে বুকের ভেতর কেমন যেন হাহাকার করে ওঠে।

আসোলেই স্কুল জীবনের স্মৃতি গুলো যেন অমর হয়ে থাকে প্রত্যেকটি স্টুডেন্টদের মনের মধ্যে।তেমনি আপনার-আমার সকলেরই স্মৃতিগুলো আছে এবং মনে পড়লে খুব কষ্ট হয় যেন ফিরে যাই সেই স্কুল জীবনের হারানো বন্ধু এবং স্কুলটির কাছে। যাক খুব সুন্দর একটা পোস্ট করেছেন ভাইয়া আপনার জন্য শুভকামনা রইল।❤️❤️❤️

ধন্যবাদ ভাই সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 3 years ago 

জীবন সবচেয়ে মধুর সময় স্কুল জীবনের সময় গুলো

কোন সন্দেহ নাই জীবনের সেরা স্মৃতিময় সময় গুলোর মধ্যে অন্যতম স্কুল জীবনের মুহূর্ত। খুব ভালো লিখেছেন আপনি লেখাগুলো পড়তে পড়তে অনেকটা আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিলাম। আসলে কি না সবার জীবনের স্কুলজীবনের এরকম স্মৃতিময় একটি অধ্যায় থাকে হয়তো এ জন্যই। ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই।স্কুল জীবনের স্মৃতি কখনো ভুলার নয়। সেটা সারাজীবন হৃদয়ে গেঁথে থাকে। শুভকামনা আপনার জন্য

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 59035.93
ETH 2519.79
USDT 1.00
SBD 2.47