কিছু কিছু কষ্ট হাসি মুখে মেনে নেওয়া যায়, 🚉বগুড়া টু টাঙ্গাইল ভ্রমণ🚅||১০% shy-fox এর জন্য
|
---|
জীবনে চলার পথে মানুষ এমন অনেক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় যার জন্য সে কখনো প্রস্তুত থাকে না। আজকে আমার বগুড়া থেকে টাঙ্গাইল ভ্রমণ হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া।সিদ্ধান্ত নেই রাতে ট্রেনে যাব। আমার এক বন্ধু বাংলাদেশ রেলওয়েতে সহকারী লোকো মাস্টার এর চাকরি করে। সে পঞ্চগড় টু ঢাকা পঞ্চগড় এক্সপ্রেস নিয়ে আজকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিবে। সকালে দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস পার্বতীপুরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে,সে কারণেই পঞ্চগড় এক্সপ্রেস প্রায় ৫ ঘণ্টা বিলম্বে যাত্রা শুরু করে। আমার বন্ধুর সাথে ফোনে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেই আমি বগুড়া থেকে পদ্মরাগ ট্রেনে সান্তাহার যাব সেখান থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস এ উঠবো। আমার এই বন্ধুর সাথে প্রায় ৩ বছর হলো দেখা হয় না।আজকে দেখা হওয়ার একটা সুযোগ হাতছাড়া করতে পারলাম না। জানি এই ভ্রমণটা আমার জন্য অনেক কষ্টকর হবে তারপরও বন্ধুর সাথে দেখা হবে অনেকদিন পর সেটাই বা কম কি। সন্ধ্যা ৭:৫০ মিনিটে পদ্মরাগ বগুড়ায় স্টেশনে এসে পৌঁছালো। এই ট্রনটি সান্তাহার টু লালমনিরহাট যাতায়াত করে। |
---|
https://w3w.co/florists.factories.horizons
বগুড়ায় স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে পড়লাম।বাহিরে প্রচন্ড ঠান্ডা, ট্রেনের ভিতর ঠান্ডা টা একটু কম লাগলো। ট্রেনে ওঠার কিছুক্ষণ পরে পাশের সিটের যাত্রীদের সাথে গল্প করতে করতে সময় কেটে গেল।৯:৪০ মিনিটে সান্তাহার স্টেশনে পদ্মরাগ প্রবেশ করলো। ট্রেন থেকে নামার পর বুঝতে পারলাম প্রচন্ড শীত। অনেক কয়টা শীতের কাপড় পড়েছি, তারপরও অনেক ঠান্ডা লাগছিল। ট্রেন থেকে নেমে প্লাটফর্মে অবস্থান করলাম এবং চা খেয়ে নিলাম। |
---|
https://w3w.co/florists.factories.horizons
https://w3w.co/florists.factories.horizons
তারপর আমার বন্ধুকে ফোন দিলাম,সে জানালো পঞ্চগড় এক্সপ্রেস জয়পুরহাটে স্টেশন ছেড়ে এসেছে। স্টেশনে পায়চারি করতে লাগলাম।১০:৩০ মিনিট এ পঞ্চগড় এক্সপ্রেস শান্তাহার স্টেশনে প্রবেশ করল। আমি যেহেতু আমার বন্ধুর সাথে ইঞ্জিনে ভ্রমণ করব। তাই একদম প্ল্যাটফর্মের সামনে অবস্থান করলাম। ট্রেন থামা মাত্র ইঞ্জিন থেকে নেমে দুজন জড়িয়ে ধরলাম সত্যিই অনেক আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিলাম আমরা। |
---|
https://w3w.co/florists.factories.horizons
তারপর ইঞ্জিনে উঠে পড়লাম।এর আগেও অনেকবার ইঞ্জিনে ভ্রমণ করেছি তবে এবার ভ্রমণ একটু ভিন্ন রকম, যেহেতু অনেকদিন পর ওর সাথে দেখা। দুজনের অনেক জমানো কথাগুলো বলতে থাকলাম সাথে সাথে সে ট্রেন চালাতে থাকলো। পঞ্চগড় এক্সপ্রেস হচ্ছে ব্রডগেজ গাড়ি, আজকে ইঞ্জিন নাম্বার ৬৫২১। বাংলাদেশ রেলওয়েতে ব্রডগেজ এর মধ্যে সবচেয়ে লেটেস্ট ইন্জিন ছিল এই ৬৫ সিরিজ।কিছুদিন আগে বাংলাদেশে আনা হয়েছে ৬৬ সিরিজ। নাটোর স্টেশনে পৌঁছালে ট্রেন যখন থামে, তখন কিছু খাবারের অর্ডার দিল বন্ধু। খুব তাড়াতাড়ি খাবার ইঞ্জিনে পৌঁছে গেল এবং খেয়ে নিলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই নাটোর স্টেশন ছেড়ে দিল পরবর্তী যাত্রাবিরতি বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম স্টেশন। |
---|
https://w3w.co/florists.factories.horizons
ট্রেন চলতে থাকলে ৮০ কিলোমিটার গতির উপরে । আমরা দুজনে অনেক স্মৃতি বিজড়িত গল্প করতে থাকলাম।যে গল্প কখনো পুরনো হয় না মনে গেঁথে থাকে সব সময়। আমাদের বন্ধুত্ব সেই স্কুল জীবনের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত চলমান। কোনো কারণবশত আমার বন্ধুর নামটা এখানে বলতে পারতেছি না। দুজনে গল্প করতে করতে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম স্টেশনে ট্রেন থেমে গেল। আমার যাত্রা ওইখানে শেষ হয়ে গেল কারণ এই ট্রেন বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব এবং টাঙ্গাইল কোন স্টেশনে দাড়ায় না। তাই আমাকে এখানে নামতে হলো। ট্রেন এখানে ৫ থেকে ১০ মিনিট যাত্রাবিরতি করে কারণ যমুনা সেতুতে ট্রেন ওঠার আগে এখানে চেকিং করা হয়। এই সুযোগে দুজনে কফি খেয়ে নিলাম। কিছুক্ষণ পর সিগনাল হলো বন্ধু ট্রেন ছেড়ে দিবে এখন। বিদায় টা অনেক কষ্টকর ছিল, ইচ্ছে ছিল ঢাকা পর্যন্ত সঙ্গী হওয়ার কিন্তু সেটা হলো না। হর্ন বাজিয়ে ট্রেনটা ছেড়ে দিলো বন্ধু চলে গেল।আমি স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকলাম এখানে কোন ওয়েটিং রুম নেই প্রচন্ড শীত। |
---|
https://w3w.co/laudable.nitrate.strolls
https://w3w.co/laudable.nitrate.strolls
আমি ছাড়া এই প্ল্যাটফর্ম আরো দুজন যাত্রী রয়েছে তারা বয়স্ক। তারা বাইরে বসে ছিল কারন ওয়েটিং রুম না থাকার কারণে। এক থেকে দেড় ঘন্টা পরে নীলসাগর এক্সপ্রেস আসবে।সেই ট্রেনে উঠে যমুনা সেতু পূর্ব স্টেশনে নামবো। সেখান থেকে আমি বাড়ি চলে যাব। সময় যেন এখানে কাটতেই চাইছিল না। একদিকে ঘুম অন্যদিকে শীত দুটোই খুব তাড়া করে বেড়াচ্ছিল। রাত দুটোর পরে নীলসাগর এক্সপ্রেস স্টেশনে এসে দাঁড়ালো আমি উঠে পরলাম।সেতু পার হলো যমুনা সেতু পূর্ব স্টেশন এ আমি নেমে গেলাম। |
---|
https://w3w.co/laudable.nitrate.strolls
এখান থেকে আমার বাড়ি কাছেই কিন্তু ভোর ছয়টার আগে এখান থেকে কোন সিএনজি পাবো না। তাই বাধ্য হয়েই স্টেশন প্লাটফর্মে বসে রইলাম। কিছুক্ষণ পর ওয়েটিং রুমে যেয়ে বসলাম তীব্র শীতের কারণে। এরমধ্যে বন্ধু তিন চার বার ফোন করে খোঁজ খবর নিয়েছে। আমি ইচ্ছা করলে বগুড়া থেকে রাতে রংপুর এক্সপ্রেসে আসতে পারতাম। শুধুমাত্র আমার বন্ধুর সাথে দেখা করার জন্য এই কষ্ট গুলো মেনে নিয়েছি। সাড়ে পাঁচটার সময় ফজরের আজান দিল তখন ভোর হয়নি। ৬ টার পরে আমি সিএনজিতে উঠে পড়লাম। আমার বাড়িতে আসতে প্রায় এক ঘণ্টার মতো সময় লাগলো। অনেক কষ্টের একটি রাত ছিল। সারারাত একটুও ঘুমাতে পারেনি।বাসায় এসে দাঁত ব্রাশ করে শুয়ে পড়লাম। বন্ধুত্বের সম্পর্ক গুলো এমনই যেখানে কিছু কিছু কষ্ট হাসি মুখে মেনে নেয়া যায়। ভালো থাকো বন্ধু। |
---|
🚝🚄🚅🚆🚇🚈🚉🚃🚊🚝🚃🚄🚅🚊
বন্ধুত্ব এমন একটা সম্পর্ক যেটা সব সময় চিরসবুজ। জীবনে চলার পথে অনেক বন্ধুর দরকার হয় না ভালো বন্ধু দুই একজন হলেই যথেষ্ট।
ফটোগ্রাফার : @selimreza1
mobile camera :i99
লোকেশন:বগুড়া টু টাঙ্গাইল
|
---|
আমি মো: সেলিম রেজা। বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরি করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার অনেক ভালো লাগে। আমি লেখালেখি, বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণ করতে বেশি পছন্দ করি।
আপনার কথাগুলো সত্যি খুব ভালো লেগেছে ভাইয়া। জীবনে চলার পথে খুব বেশি বন্ধুর প্রয়োজন হয় না তবে একটা ভালো বন্ধুর অনেক বেশি দরকার। আপনার বাড়ি ফেরার সুন্দর একটি অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আজকে আপনি। আপনার অনুভূতি গুলো জানতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। শুভ হোক আপনার যাত্রা পথ এই কামনা করি ভাইয়া।
অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছি দুই একজন ভালো বন্ধু যথেষ্ট।
চমৎকার একটি এক্সপেরিয়েন্স আমাদের সাথে শেয়ার করলেন ভাইয়া । খুবই ভালো লাগলো আপনার ট্রেন জার্নির গল্প । বাস্তবে বন্ধু মানে মন ভালো হয়ে যাওয়া ।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
আপনার ভ্রমন কাহিনি শুনেই ভালোই লাগলো। ট্রেন দেড়িতে ছাড়াটা সত্যি অনেক খারাপ লাগে। তবে এর জন্য আপনি আপনার পুরোনো বন্ধুর সাথে দেখা করতে পেরেছেন জেনে ভালো লেগেছে। আমার অনেক শখ ট্রেন এর ইঞ্জিনে করে যাওয়া। কখনো পুরন হবে কিনা জানিনা।
ধন্যবাদ আপনাকে।আমার সাথে যোগাযোগ কইরেন ইন্জিনে ভ্রমণ করার শখ পূরণ করে দিব। আপনার জন্য শুভকামনা
এই লাইনটি সেই ছিল। আপনার লেখাগুলো অসাধারণ ছিল। লেখা গুলোকে খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন আপনি। পড়ে বেশ ভালই লাগলো🖤
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই
তোমার ভ্রমন কাহিনী চমৎকার ছিল। পুরো ঘটনাটা বেশ চমৎকার ফুটিয়ে তুলেছো।
আর তোমার পুরোনো বন্ধুর সাথে দেখা এবং পুরো সময়টা বেশ আনন্দদায়ক ছিল বুঝতেই পারছি । আমিও এই ব্যাপারগুলো বেশ অনুভব করি কিন্তু আসলে দুরত্বের কারনে অনেক কিছু সম্ভব হয়ে ওঠে না। যাক ভালো থাকো সবসময়ই এই দোয়া করছি।
আর ভালো কাজ করো ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু হবে 👌
ধন্যবাদ বন্ধু
উপাস্থাপনা ও সাজানো বিষয়টা আকর্ষণীয় ছিল।দোয়া করবেন। আমরাও যেন শিখতে পারি। সুন্দর ছিল।
ধন্যবাদ। আপনার কাছ থেকেও আনেক কিছু শিখছি
আপনার জন্য রইল, সবসময় শুভকামনা।