মহীচরণ বিলে একটি বিকেল|| ১০% shy-fox এর জন্য

💞মহীচরণ বিলে একটি বিকেল💞

---

---

---

---

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কাছে সব সৌন্দর্যই মলিন। আমি সব সময় প্রকৃতির প্রেমে পড়ে যাই। প্রকৃতিকে ভীষণ ভাবে উপভোগ করি। অনেক সময় আবেগে জড়িয়ে পড়ি। তারপরও প্রকৃতিক সৌন্দর্য অনেক ভালোবাসি। কাজের ব্যস্ততার কারণে অনেকদিন ধরে মহীচরণ বিলে যাব ভাবছি কিন্তু যাওয়া হচ্ছে না। আজ বিকালে একটু সময় পেলাম সেই সুযোগে রওনা দিলাম মহীচরণ বিল দেখার জন্য।জানি এখন শীতকাল এই সময়ে পানি থাকলেও খুব কম পরিমাণে থাকবে।তারপরও অনেক আগ্রহ বিলের আশেপাশের প্রকৃতি ভালোভাবে দেখব। বিকাল ৪ টা ২০ মিনিটে বাসা থেকে বের হলাম।একটা অটো ধরে বিল থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে একটি মাটির রাস্তার পাশে নামিয়ে দিল। কারন তার পরে আর অটো যাবেনা সেখান থেকে পায়ে হেঁটে যেতে হবে। যেহেতু আমি একা ছিলাম। একা একা হাঁটা একটু কষ্টকর তারপরও হাঁটা শুরু করলাম হাঁটতে হাঁটতে দেখলাম রাস্তার পাশে ধান লাগানো হয়েছে। বিভিন্ন রকম সবজি চাষ করা হয়েছে। রাস্তার পাশে সারি সারি তালগাছ । কিন্তু আশেপাশে মানুষ খুঁজে পাচ্ছিলাম না অনেক দূরে দূরে একজন মানুষ দেখা যাচ্ছিল।

রাস্তার পাশে খেয়াল করলাম মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছে,ঠিক তার পাশের জমিতে কাঁচা মরিচ চাষ করা হয়েছে দেখলাম মরিচ গাছে পেকে আছে। গাছে পাকা মরিচ দেখতে ভালই লাগলো। তারপর আবার হাঁটা শুরু করলাম। বিলের কাছাকাছি পৌঁছে গেলাম, ঠিক তার আগেই দেখলাম মাটির রাস্তায় একটি ব্রিজ। ব্রিজের পাশে বড় একটি বটগাছ। বৃদ্ধ একজন কাকার সাথে দেখা হলো তাকে জিজ্ঞেস করলাম এই রাস্তা ধরে বিল এর কাছে যেতে পারবো তিনি বললেন হ্যাঁ।আমাকে রাস্তা দেখিয়ে দিলেন। দেখলাম চাচা ধানের চারা নিয়ে যাচ্ছেন জমিতে রোপণ করার জন্য। আমি হাঁটতে শুরু করলাম তখন থেকেই বিলের বিশালতা আমি উপলব্ধি করতে পারলাম কোথাও বাড়িঘর দেখা যাচ্ছে না অনেক দূরে দূরে দু-একজন মানুষ চোখে পড়ছে তারা জমিতে কাজ করতেছে।

বিলের সাথেই একটি পুকুর দেখলাম।পুকুরের পানি অনেক পরিষ্কার কিছু কচুরিপানা রয়েছে। তারপর বিলের ধার দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম অনেক ধানের জমি পার করে খুব কাছাকাছি চলে গেলাম।জানি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি বর্ষাকালে হয়তো এখানে গভীর পানি থাকবে শীতকাল হওয়ার কারণে আমি এতদুর পৌঁছাতে পেরেছি। দেখলাম দুটি নৌকা খুব ইচ্ছে করলো নৌকার উপরে ওঠার কিন্তু নৌকাগুলো একটু দূরে হওয়ার কারণে উঠতে পারলাম না কিন্তু দেখতে অনেক ভালো লাগলো। হঠাৎ খেয়াল করলাম ডোঙ্গা দিয়ে পানি দেওয়া হয়। এখান ডোঙ্গা এখন খুলে রাখা হয়েছে কিন্তু অন্যান্য সরঞ্জাম দেখে বুঝলাম এখান থেকে ধানের জমিতে পানি দেওয়া হয় যেটা একসময় গ্রামবাংলায় ছিল নিয়মিত ঘটনা।

কোথাও কোন মানুষ খুঁজে পাচ্ছিলাম না মনে হচ্ছিল এত বড় রাজ্যে আমি একাই। একান্ত মনে দশ মিনিটের মত বসে রইলাম বিলের ধারে। বিলের মাঝখানে সামান্য পরিমাণ পানি আছে আর সব জায়গায় ধান চাষ করা হয়েছে। মাঝে মাঝে সাদা বক চোখে পড়ছে হঠাৎ হঠাৎ উড়াল দিয়ে চলে যাচ্ছে। বিলের আশেপাশের কিছু ছবি তুলে আবার রওনা দিলাম। ততক্ষণে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে আসার পথে বারবার পিছন ফিরে দেখলাম আবার হয়তো কখন এখানে আসা হবে কিনা জানিনা তবে ইচ্ছা আছে বর্ষাকালে এখানে আসার।তখন এখানকার বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারব।

আসার সময় মাটির রাস্তা পাশে হঠাৎ করে মজার একটি দৃশ্য দেখতে পেলাম।তিনটি কুকুর একটি কালো বিড়ালকে ধাওয়া করেছে।বিড়ালটি গাছের কিছু উপরে উঠে ঝুলে আছে তাই ক্যামেরাবন্দী করতে ভুল করলাম না সন্ধ্যা হওয়ার কারণে ছবিটা অতটা পরিষ্কার আসলো না।তারপরও তুলে রাখলাম। বিকেলটা একা একা কাটালেও অনেক ভাল সময় কাটালাম আমি।কারণ প্রকৃতি সবসময় আমাকে প্রশান্তি দেয়।

মাঝে মাঝে একা একা সময় কাটাইতে অনেক ভালোই লাগে। তখন নিজের সাথে নিজে কথা বলি।আজকে বিকেলটা ও আমার অনেক ভালো কাটলো। এই বিলে একটা জিনিস খেয়াল করলাম যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে কিছু কিছু জায়গায় যেটা আসলে পরিবেশের জন্য অনেক হুমকি স্বরূপ।

💮💮💮💮💮💮💮💮💮💮💮💮💮💮
💝💖💗💞💕💓💝💖💞💕💞💕💓💗
মোবাইল ক্যামেরা:i99
লোকেশন: বগুড়া
https://w3w.co/stunted.ratifies.hook

---

---

---

আমার পরিচয়

আমি মো: সেলিম রেজা। বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরি করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার অনেক ভালো লাগে। আমি লেখালেখি, বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণ করতে বেশি পছন্দ করি।