SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 37]
This post is made for recovering lost SBD : 1470
Recovered so far : 1301.429 SBD
গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ৩৫
Copyright Free Image Source : PixaBay
বজ্র কঠিন স্বরে একটা আদেশ বাতাসে ভর দিয়ে কমলাদেবীর কর্ণকুহরে প্রবেশ করলো । তাঁকে কেউ উত্তর দিকে মুখ করে অর্থাৎ, মন্দিরের দিকে যেদিকে হাঁড়িকাঠ পোতা সেদিকে মুখ করে বসতে বলছে । একটুক্ষণ পরে কমলাদেবী হৃদয়ঙ্গম করলেন যে এই আদেশ তাঁকে করেছেন তাঁর প্রভু চন্ড । এই আদেশ অমান্য করার মতো মনের জোর বা সাহস কোনোটাই তাঁর নেই ।
ধীরে ধীরে হাঁটু মুড়ে সেই মাটির তৈরী বেদীর উপরে বসে পড়লেন কমলাদেবী । গর্ভের শিশুটি বড্ড বেশি নড়াচড়া করছে । টের পাচ্ছেন তিনি । হাঁটু মুড়ে বসতে তাঁর বেশ কষ্ট হচ্ছে । কিন্তু, কিছুই করার নেই, প্রভুর আদেশ তাঁকে মানতেই হবে ।
কমলাদেবী বসার কিছুক্ষণ পরে সহসা মন্দির থেকে সেই কাপালিক বের হয়ে এলো । তার দক্ষিণ হস্তে ধরা রয়েছে একটা বড় মাটির সরা । সেই সরায় একটা কলাপাতায় রয়েছে বেশ খানিকটা সিঁদুর মাখানো । কাপালিক বেদীর কাছে এসে দাঁড়ালো । তারপর চন্ডের সাথে কিছুক্ষণ কীসব ফিসফাস করলো কিছুক্ষণ ধরে । এরপরে কাপালিক চোখের ইশারা করা মাত্রই যমদূতের মতো সেই অনুচরদের মধ্যে একজন এসে বিশাল সেই জলভরা কলসীটি তুলে ঢেলে দিলো কমলাদেবীর মস্তকে ।
বরফ শীতল সেই জলে স্নান করা মাত্রই দারুন শীতে ঠক ঠক করতে কাঁপতে লাগলেন কমলাদেবী । ইশ ! কী শীত ! এখন তো শীতকাল নয় তবুও নদীর জল ভয়ানক ঠান্ডা । মনে হয় অসময়ের ঝড় বৃষ্টির জন্য এমন ঠান্ডা হয়েছে জল ।
হু হু করে পুব দিক থেকে হাওয়া উঠেছে । বড় ঠান্ডা , বড় তীব্র সেই ভেজা পূবালী হাওয়া । সিক্ত বসনে দারুন কনকনে ঠান্ডায় কেঁপেই চলেছেন কমলাদেবী । এমন সময় কমলাদেবীর সামনে এসে কাপালিক একটু সামনে ঝুঁকে তাঁর কপালে সেই গোলা সিঁদুরের মস্ত একটা টিপ পরিয়ে দিলো । এরপরে পাশের ভাঙা সেই মস্ত সরা থেকে রক্ত জবার মালাটা নিয়ে পরিয়ে দিলো কমলাদেবীর কণ্ঠে ।
তারপরে জোরে জোরে কিছু দুর্বোধ্য সংস্কৃত মন্ত্র আওড়াতে লাগলো কাপালিক । হাওয়ার বেগ যেনো আরো কিছুটা বেড়েছে, কালিগোলা আকাশের বুক চিরে মাঝে মাঝে বিদ্যুতের ফলা আকাশের এ মুড়ো থেকে ও মুড়ো অব্দি যেনো চিরে ফেলছে, সেই সাথে গুড়গুড় করে মেঘের গর্জন । ঝড়ের পূর্বাভাস ।
শ্মশানের এই ঝোড়ো পরিবেশে একটা গা ছমছমে আবেশ তৈরী হয়েছে । চন্ডের মতো দুর্ধর্ষ দয়ামায়াহীন মানুষের বুকেও যেন রক্ত ছলাৎ করে উঠলো । একটু কাঁপা গলায় সে জিজ্ঞেস করলো কাপালিককে, "সময় হয়েছে ?" কাপালিক ঘাড় নাড়লো । চোখের কোন দিয়ে নীরব ইশারা করলো সে তার দুই দুর্ধর্ষ অনুচরকে । মশালের অস্পষ্ট আলোতেও সেই ইশারা পড়তে পারলো যমদূতদ্বয় ।
গা ঝাড়া দিয়ে এগিয়ে গেলো তারা কমলাদেবীর কাছে । চন্ড এগোলো মন্দিরের পেছন পানে যেখানে বলির বিশাল খড়গটি রাখা আছে । কাপালিক আবার দুর্বোধ্য স্বরে সংস্কৃত মন্ত্রোচ্চারণ করতে লাগলো । তবে এবার কিন্তু তার কণ্ঠে কিছুটা জড়তা, কিছুটা ভয় আর কিছুটা কম্পন লক্ষ্য করা গেলো । দুর্ধর্ষ কাপালিকের হৃদয়ে এ কিসের ত্রাসের সঞ্চার হলো ?
শ্মশান থেকে অল্প একটু দূরে নদীর পাড় ধরে বিশাল একটা কালো অবয়ব হনহন করে দ্রুত পায়ে এগিয়ে আসছে মন্দিরের দিকে । তার চোখ আঁধারেও দারুন ক্রোধে ধিকি ধিকি জ্বলছে । মাথার চুল শনের মতো হাওয়ায় উড়ছে । দ্রুত, আরও দ্রুত তাকে যেতে হবে ওই মন্দিরে । মহা পাপ ঘটতে যাচ্ছে আজ কালীমায়ের সামনে । যে করেই হোক রুখে দিতে হবে সেটাকে ।
[চলবে]
কাপালিক এবং চন্ডের মনে একেবারেই দয়ামায়া নেই। সেই কালো অবয়ব টা আসলে কি এবং সে কি কমলাদেবীকে বাঁচাতে পারবে কিনা,সেটা জানার আগ্রহ অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
ঠিক জানতাম,কমলাদেবী বেঁচে যাবে।আগের পর্বেই কমেন্ট করেছিলাম সেটা।দেখা যাক কি হয়!
ব্যাপারটা তো ঘোলাটে লাগছে এখন, কমলাদেবী কি মারা যাবে নাকি তার শেষ রক্ষা হবে। অপেক্ষায় থাকলাম পরের পর্বের জন্য ভাই।
মনে হচ্ছে কমলা দেবীর বাঁচার সম্ভাবনা মনে হচ্ছে বেড়ে গেছে। তাহলে কি কমলাদেবী বেঁচে যাবেন!টানটান উত্তেজনা অনুভব করছি। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।