SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 31]
This post is made for recovering lost SBD : 1470
Recovered so far : 1030.783 SBD
গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ৩০
Copyright Free Image Source : PixaBay
বসে বসে কমলাদেবী অধীর আগ্রহে তেষ্টা মেটানোর জন্য ভাঙের শরবতের অপেক্ষা করতে লাগলেন । রাত্রি এখন কত হবে ? সম্ভবতঃ মধ্যরাত শেষ হতে চললো । দ্রুত এখানে পুজো দিয়ে আবার ভোরের আলো ফোটার পূর্বেই তো তাঁকে রাজপ্রাসাদে ফিরতে হবে । তা না হলে লোক জানাজানি হতে বাধ্য । আর সেটা হলে এত কষ্টের কোনো ফল হবে না । চন্ড তাঁকে বলেছে যে গভীর রাতে দেবী কালিকার সামনে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে পুজো দিয়ে ভোর হওয়ার পূর্বেই প্রাসাদে ফিরতে হবে, কাক-পক্ষীতেও টের পেলে এই সাধনার কোনো ফল মিলবে না । জমিদারবাবুকে তাহলে আর বাঁচানো যাবে না ।
এসব ভাবতে ভাবতে একটু আনমনা হয়ে পড়েছিলেন কমলাদেবী । একটু আগে কী একটা জিনিস দেখে তাঁর কাছে কেমন জানি খাপছাড়া আর অদ্ভুত লেগেছিলো । কিন্তু, তখন ক্ষণিকের উত্তেজনায় ভালো করে সেটা নিয়ে ভাবতে পারেননি, এখন প্রানপনে চেষ্টা করেও মনে করতে পারছেন না কিছুতেই । কাপালিকের মধ্যেই কী একটা খাপছাড়া গোছের তিনি দেখেছিলেন, কিন্তু এখন কিছুতেই আর সেটা মনে পড়ছে না । ভারী জ্বালা তো ! কমলাদেবী আবার পুজোরত কাপালিকের দিকে নিষ্পলকে চেয়ে রইলেন । তিনি শুনেছিলেন তাঁদের এই শ্মশানের কাপালিকের বিশাল চেহারা, কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছেন তা তো নয়, কাপালিকের উচ্চতা মাঝারি গোছের, শীর্ন এবং মোটেই প্রকান্ড শরীর নয় তার । বরং তার ধড়াচূড়াই কেমন একটা বেখাপ্পা ধরণের । খুব লম্বা চওড়া শরীরের সাথে মানানসই যেমন ধারা জটাজুট, দাড়িগোঁফ, বাঘছাল থাকে এই কাপালিকের শীর্ন চিমসে চেহারার সাথে তা মোটেই মানানসই নয় ।
কিন্তু, এসব দেখে তাঁর তখন বেখাপ্পা লাগেনি, অন্য কী একটা জিনিস দেখেছিলেন যা কোনোভাবেই এই মুহূর্তে মনে করতে পারছেন না তিনি । আর গাঁয়ের লোকের মুখে শোনা কথা, তাই কাপালিকের চেহারা নিয়ে তাই আর কিছু ভাবতে চাইলেন না কমলাদেবী । গাঁয়ের লোকের স্বভাবই সব কিছু বাড়িয়ে বলা,নইলে ছোটখাটো চেহারার কাপালিককে কীভাবে তাঁরা প্রকান্ড শরীরের অধিকারী হিসেবে প্রচার করে ?
যাই হোক, এসব চিন্তা এখন থাকুক । তেষ্টায় বুক ফেটে যাচ্ছে তাঁর, অথচ চন্ডের দেখা নেই এখনো । কোথায় গেলো সে ? এত দেরী হচ্ছে কেন ? ভাঙের শরবত করতে এতো দেরি লাগে কখনো ? তা ছাড়া সে তো বলেই গেলো যে সব কিছুর জোগাড়যন্ত্র করাই আছে ।
দূরে কোথাও শেয়াল ডেকে উঠলো একটানা । নদীর দিক থেকে ঠান্ডা শীতল হাওয়ার ঝাপ্টা আসছে মাঝে মধ্যে । আজকে আবহাওয়া বেশ বৈরী ভাবাপন্ন । সন্ধ্যের একটু আগে এদিকে বেশ একটা ছোটখাটো ঝড়ও হয়েছিল আজ । গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও পড়েছিল তখন । তবে দেখা যাচ্ছে শ্মশানের দিকে বৃষ্টি টিষ্টি হয়নি কিছুই । এখানকার মাটি ভেজা নয় মোটেও । কিন্তু, বৃষ্টি না হলেও সেই ভ্যাপসা গরমটা আর নেই । বেশ শীতল মনোরম একটা মাঝ রাত্তির এখন ।
নাহঃ তেষ্টাটা আর সহ্য করা যাচ্ছে না এখন । শ্মশানতীরবর্তী নদী হলে কমলাদেবী যে তৎক্ষণাৎ নদীর জলে তেষ্টা মেটাতে ছুটতেন তা তাঁর তেষ্টায় কাহিল অবস্থা দেখে বেশ বোঝা যাচ্ছে । কিন্তু, নদীর এই স্থানে নদীর জলে মিশে রয়েছে চিতাভস্ম, মড়া পোড়া কাঠ, গলিত শবদেহ । এর জল কোনোমতেই তাই পানযোগ্য নয় ।
এভাবে আরো কিছুক্ষণ কাটলো । সহসা তেষ্টায় কাতর কমলাদেবীর পেছনে অস্পষ্ট কিছু একটা শব্দ হলো । শিউরে উঠে পেছন ফিরে তাকালেন কমলাদেবী ।
[চলবে]
হুম, আগ্রহের মাত্রাটা এমন জায়গায় এসে থেমে গেলো, উত্তেজনাটা মনে হচ্ছে আরো বেড়ে গেলো। কি দেখলেন কমলাদেবী কাপালিকে নাকি অন্য কিছু?
পেছনে ফিরে কি কমলাদেবী তার ক্ষতির কিছু মূহুর্ত ই দেখলো?
দারুণ উত্তেজনার মূহুর্ত একেবারে টান টান উত্তেজনা যাকে বলে।দারুণ হচ্ছে দাদা।
দাদা ক্রমশ উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কি ঘটবে কমলাদেবীর ভাগ্যে।মৃত্যুই কি রয়েছে তার ভাগ্যে না কোন কিছুর কল্যানে বেঁচে যাবেন! অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
চন্ড কি আসলেই ভাঙের শরবত তৈরি করছে কমলাদেবীর জন্য, নাকি কমলাদেবীকে মেরে ফেলার আয়োজন করছে। এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করেছে যে,কমলাদেবীকে মেরে ফেলার পরেও, কেউ চন্ড বা কাপালিককে সন্দেহ করতে পারবে না। তবে সত্য কখনো গোপন থাকে না। কমলাদেবীকে মেরে ফেললেও,পরবর্তীতে সবাই ঠিকই জানতে পারবে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
এমন ভাবে এসে এ পর্ব শেষ করলেন ভাই , যেন নিজের ভিতরে হালকা একটা ধাক্কা খেলাম। শুধু কমলাদেবী না, আমি নিজেও শিউরে উঠেছি।
অপেক্ষায় থাকলাম পরের পর্বের জন্য।
চন্ড মনে হয় ইচ্ছা করেই দেরি করছেন যাতে কমলাদেবীর তৃষ্ণা আরো বেড়ে যায়। কিন্তু পেছনে কি দেখতে পেল কমলাদেবী? নাকি চন্ড কমলাদেবীকে মারার জন্য রেডি হয়েছে।