SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 20]
This post is made for recovering lost SBD : 1470
Recovered so far : 494.713 SBD
গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ১৯
Copyright Free Image Source : PixaBay
"সেই মন্দিরের ঠিক পাশেই একটা তাল, নারিকেল ও খেঁজুর পাতায় ছাওয়া ছোট্ট একটা কুঁড়ে ঘর । এই ঘরটা কিন্তু আগে ছিল না । মাত্র বছর দুই পূর্বে এক কাপালিক এসে ঠাঁই নিয়েছে এই মহাশ্মশানে । ভয়ঙ্কর চেহারার কাপালিক, সারা গায়ে সর্বদা ছাই মাখানো, রক্ত জবার মতো দুটি চোখ, পরনে একটা বহু পুরোনো বাঘছাল, মাথায় বৃহৎ জটা, এক হাতে চিমটে আরেক হাতে ভয়ানক দর্শন ছোট্ট একটা ত্রিশূল ।"
"জনশ্রুতি আছে কাপালিকের অনেক অলৌকিক ক্ষমতা । গাঁয়ের মধ্যে কখনো প্রবেশ করে না সে । সব সময়ই পড়ে থাকে শ্মশানে । তার এক অনুচরও আছে । সেই কাপালিকের সার্বক্ষণিক সঙ্গী । অনুচরটি মাঝে মাঝে গাঁয়ে প্রবেশ করে । লোকটিকে কেউই পছন্দ করে না । ভয়ানক ধূর্ত । রোগা চিমসে চেহারার । আর অসম্ভব কূটবুদ্ধি সম্পন্ন । কাপালিকের শিষ্য বলে গাঁয়ের কেউই অবশ্য তাকে ঘাটাতে সাহস পেতো না । স্বয়ং জমিদারবাবুও নন ।"
"জমিদার বাড়িতে সে আসতো মাঝে মাঝে । আতপ চাল, ঘী, কাঁচকলা আর সৈন্ধব লবণের সিধা নিয়ে যেত সে যখনই দরকার পড়তো । স্বয়ং কাঁচাখেগো কাপালিকের শিষ্য বলে জমিদার ভূপতিবাবুও বেশ সমীহ করে চলতেন কাপালিকের এই শিষ্যকে । ভূপতিবাবু যখন দ্বিতীয়বার বিবাহের উদ্যোগী হয়েছিলেন তখন এই শিষ্যের মাধ্যমেই ভূপতিবাবুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী তাঁকে বিবাহ কার্য থেকে নিবৃত্ত করার চেষ্টায় ব্রতী হয়েছিলেন । কিন্ত, জমিদারবাবু তখন এতটাই আত্মহারা ছিলেন যে সেই চেষ্টাও বিফলে যায় । সেই থেকে জমিদারের দ্বিতীয় স্ত্রীর উপর বেজায় চটা কাপালিকের ঐ শিষ্য ।"
"এসব ঘটনা আগের থেকেই জানতেন করালী বাবু । সেই মতো ঘুঁটি চাললেন তিনি । বটুকেশ্বরের সাথে মিলে দু'জনে অতি ভয়ঙ্কর এক পরিকল্পনার জন্ম দিলেন । পরিকল্পনা মাফিকই বটুকেশ্বরের হঠাৎ আগমনএই শ্মশানে । কাপালিকের অনুচরের সাথে জমিদারের নায়েবের গুজুর গুজুর, ফুসুর ফাসুর চললো বেশ কিছুক্ষণ ধরে । কপালিক তখন নদীর তীরে ধুনির আগুন জ্বেলে সাধনায় বসেছে । সেই দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে কাপালিকের অনুচর জানালো যে - "বাবাকে আমি রাজি করাবই, সাধনায় সিদ্ধিলাভের জন্য এটা আমাদের জন্যও বিশাল একটা সুযোগ । এ সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবে না । তবে কি না নায়েব মশাই কাজটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ । আমাদের খুবই সাবধানে এগোতে হবে । জমিদারবাবু জানতে পারলে ঘাড়ে মাথা থাকবে না আর ।" এ কথা শুনে ঘাড় নেড়ে সায় দিলেন বটুকেশ্বর । বিশাল ঝুঁকিপূর্ণ কাজ সন্দেহ নেই, কিন্তু, এর চাইতে ঢের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ অতীতে তিনি অসংখ্যবার করেছেন ।"
"জমিদারের বহু দুষ্কার্যের সঙ্গী বটুকেশ্বর । কিন্তু, কাপালিকেদের সাথে মিলে এমন একটা ঘটনা ঘটাতে যাওয়া এই প্রথম । সেই দিক থেকে তাঁর বেশ কিছুটা উত্তেজনা যেমন হচ্ছে ঠিক তেমনই কিছুটা দুঃশ্চিন্তাও কিন্তু হচ্ছে । অনেক আট ঘাঁট বেঁধে নামতে হবে । একটুখানি ভুল করলেই তাঁর প্রাণ নিয়ে টানাটানি পড়ে যাবে । নদী তীরে কাপালিকের ধুনির আগুন থেকে আগুনের ফুলকি ছুটছে, যেন অসংখ্য জোনাকি জ্বলছে আর নিভছে । ঘনায়মান সাঁঝের অন্ধকারে নায়েবের চোখের মণিতে সেই আগুনের ফুলকি দেখতে লাগছে হায়েনার চোখের মতো । প্রতিহিংসার আগুন জ্বলছে সেখানে ধিকি ধিকি করে ।"
[চলবে]
ভয়ানক কিছুর পরিকল্পনা বেশ সন্তর্পণে এগিয়ে যাচ্ছে সেটা ঠিকই বুঝা যাচ্ছে, তবে আগ্রহটা থেকে যাচ্ছে অন্য খানে, কি হবে সেই ভয়ানক কিছু। পরের পর্বের অপেক্ষায় দাদা।
প্রতিহিংসা যেদিকে গিয়েছে সেদিকটাই পুড়ে ছাড়খাড় করে গিয়েছে।এখানের তেমন টা হবে আশা করা যাচ্ছে।দেখা যাক,পরের পর্বে কি হয় ।
দাদা কাপালিক সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিলো না আমার, তবে গুগলে সার্চ দিয়ে জানতে পারলাম। যাইহোক সব শয়তান যেহেতু একত্রিত হয়ে গিয়েছে, ভূপতিবাবুর দ্বিতীয় স্ত্রী কে তো মনে হচ্ছে মেরে ফেলবে। আর এক্ষেত্রে ভূপতিবাবুও তেমন কিছু করতে পারবে না। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
যতই পড়ছি ততই যেন ডুবে যাচ্ছি গল্পের ভিতরে, ক্রমে ক্রমে মোড় নিচ্ছে গল্প, অপেক্ষায় থাকলাম ভাই পরের পর্বের জন্য।
অসাধারণ গল্প
যাক সবাই মিলে ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা করা শেষ। এখনো দেখার অপেক্ষায় রইলো যে কি পরিকল্পনা করেছে। মনে তো হচ্ছে জমিদারের দ্বিতীয় স্ত্রী কে বলি দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে। বিষয়টি আসলেই বেশ দুশ্চিন্তার। জমিদার যদি টের পায় তাহলে এদের কি হবে সেই চিন্তা করছি।