SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 15]

This post is made for recovering lost SBD : 1470

Recovered so far : 269.767 SBD


গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ১৪


vampire-2115396_1280.jpg
Copyright Free Image Source : PixaBay


কোনোরকমে আচমন করেই খাবারের ওপর যেনো ঝাঁপিয়ে পড়লেন রমেশবাবু । গোগ্রাসে খেতে লাগলেন ভাত-ডাল, ভাজাভুজি আর সবজি । খেতে খেতে একটিবার জল খাওয়ার জন্য মুখ তুললেই দেখলেন মহুয়া এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে তাঁর দিকে । সেই দৃষ্টি কোমল, তাতে নেই কোনো নিষ্ঠুরতা, নেই কোনো ভয়ঙ্কর অমানুষিক ভয়ঙ্কর জিঘাংসা । একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে জলটুকু গলায় ঢেলে দিলেন । জলটা খুব ঠান্ডা । বুকটা একদম শীতল করে দিলো । এতক্ষণে, তাঁর ক্ষুধা-তৃষ্ণা মিটেছে ।

খাওয়া শেষ হতেই বুড়োটা কর্কশ স্বরে তাঁকে চীনে মাটির বাটিতেই হাত ধুয়ে নিতে বললো । রমেশবাবু তাই করলেন । মহুয়া রান্নাঘরে যাওয়ার দরজা বন্ধ করে দিতে সেদিকে ঘুরতেই বুড়োটা হঠাৎ টেবিলে দুই হাতে ভর দিয়ে রমেশবাবুর দিকে একটু ঝুঁকে তাকালো । তার চোখ জুড়ে হিংসা আর জিঘাংসা তীব্রতর হচ্ছে । কর্কশ ফিসফিস স্বরে বুড়োটা বললো -

"তুই তো খেলি । এখন আমার যে খিদে পেয়েছে বাপ্ । আমাকে খেতে দিবিনে ?"

রমেশবাবু ভীষণ ঘাবড়ে গেলেন । আবার গলা বুক শুকিয়ে উঠছে তাঁর । বিনয়ের অবতার বুড়োটা হঠাৎ এমন বিশ্রী ভাবে তুই তোকারি করছে কেন তাঁর সাথে ? আর তাঁর কাছেই বা খেতে চাইছে কেন ? তিনি কি করে তাকে খাওয়াবেন ? তবে কী তাঁকেই খেতে চাইছে বুড়োটা ?

তীব্র আতঙ্কে কাঠ হয়ে গেলেন রমেশবাবু ।

আবার ফিসফিস স্বরে কথা বলে উঠলো বুড়ো - "আমার মেয়েটার জন্য এখনো তুই বেঁচে আছিস । নইলে এতক্ষণ তো কোনো শিকারই জ্যান্ত থাকে না । তবে আমিও দেখবো কতক্ষণ মহুয়া তোকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে ? তোর গলায় দাঁত বসিয়ে নলি যদি ছিড়ে নিতে না পারি তবে ....."

বাকি কথা আর বলার অবকাশ পেলো না বুড়ো । মহুয়ার তীক্ষ্ণ স্বরে কথা থামিয়ে বুড়োটা উঠে গেলো টেবিল ছেড়ে ।

"কী কথা বলছিস বাবুর সাথে বাবা ?"

বুড়ো তার কোনো উত্তর না দিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে রমেশবাবুর দিকে একবার জ্বলন্ত দৃষ্টি হেনে তৎক্ষণাৎ ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলো । রমেশবাবুর হাত পা ক্রমশ ঠান্ডা হয়ে আসছে আবার ।

মহুয়া এসে রমেশবাবুর খুব কাছ ঘেঁষে দাঁড়ালো হঠাৎ । তারপরে খুব স্নিগ্ধ স্বরে জানতে চাইলো পেট ভরেছে কি না ? খাবার ভালো লেগেছে কি না ?

রমেশবাবুর আতঙ্কিত ভাব তখনও কাটেনি । জড়ভরতের মতো অবস্থা তাঁর তখন । গলা দিয়ে স্বর বেরোলো না । ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ জানালেন ।

মহুয়া সলজ্জ ভাবে মাথা নিচু করে জানালো যে সব খাবার সে নিজে রান্না করেছে । আর তারপরে মৃদুস্বরে আরো অনেক কথা বলে চললো মেয়েটি । শুনতে শুনতে আতঙ্কের ভাব কেটে গেলো রমেশবাবুর । আবার তিনি মুগ্ধ নয়নে মহুয়ার দিকে তাকিয়ে রইলেন । তন্ময় হয়ে শুনতে লাগলেন মেয়েটির কথা ।

[চলবে]

Sort:  
 4 months ago 

আপনি তো দাদা পুরো পাজেলড করে দিলেন।গত পর্বে মনে হয়েছিলো মহুয়াও একই দলের।কিন্তু এখন আবার মহুয়া কে ভালো মনে হচ্ছে।আপনার গল্প মানেই সেরা,একেবারে আনপ্রেডিক্টেবল!
নেক্সট পর্ব পড়তে চাই জলদি।

 4 months ago 

মহুয়ার প্রেমে কি রমেশ হাবুডুবু খেতে শুরু করলো নাকি।
নাকি মহুয়ায় পড়ে গেল রমেশের প্রেমে। কি যে অপেক্ষা করছে সামনে, কে জানে তা । অপেক্ষায় রইলাম ভাই পরের পর্বের জন্য।

 4 months ago 

এমনিতেই রমেশবাবু তাকে দেখে ভয় পাচ্ছিল আর খাওয়া শেষে যদি

"তুই তো খেলি । এখন আমার যে খিদে পেয়েছে বাপ্ । আমাকে খেতে দিবিনে ?"

এমন একটা কথা বলে বসে তাহলে তো অবস্থার বারোটা বেজে যাওয়ার কথা।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

দাদা রমেশ বাবু আর মহুয়ার মধ্যে তো প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হবে মনে হচ্ছে। কারণ দু'জন দু'জনকে পছন্দ করতে শুরু করেছে। তবে বুড়োটা যা করছে রমেশ বাবুকে খাওয়ার জন্য। যাইহোক গল্পটি এককথায় দারুণ লাগছে পড়তে। দাদা এই গল্প যেনো আরও ১০ পর্বেও শেষ না হয়। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

বুড়ো তার আসল রূপ তাহলে প্রকাশ করেই দিলো রমেশবাবুর সামনে। কিন্তু মহুয়ার চরিত্র বোঝা যাচ্ছে না। সে ও কি রমেশ বাবুর প্রেমে পড়ে গেল নাকি? প্রেমে পড়লে হয়তো তার প্রানটা বেঁচে যেত। কি যে হবে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। এমন ভাবে প্রতিদিন গল্প দিলে না পড়ে আরাম পাওয়া যায়। আপনার গল্পগুলো আসলেই সেরা হয়।

 4 months ago 

দিনে দিনে আরও রহস্যময় হয়ে উঠছে গল্প। মনে হচ্ছে মহুয়া পছন্দ করতে শুরু করেছে রমেশবাবুকে। তাহলে কি তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তোইরি হচ্ছে।দেখা যাক কি ঘটতে চলেছে।অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64741.88
ETH 3457.21
USDT 1.00
SBD 2.55