ভালোলাগার অনুভূতি ||| শুভ জন্ম দিন সায়মা ||| ১০% লাজুক শিয়ালের জন্য।
সবাইকে শুভেচ্ছা। দূরের ও কাছের সকল ভাই-বোনদের জীবনের মঙ্গল কামনা করছি। আশা রাখছি সকলে পরিবারকে নিয়ে সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি।
আমি আজ আপনাদের মাঝে কোন রেসিপি, ডাই পোস্ট নিয়ে আসিনি। আমি এসেছি আমার আনন্দের একটি অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে। ১৯/১০/২০২২ইং অক্টোবর রাত যখন ৭.০৫মিঃ বাজে তখন পড়াচ্ছিলাম আমার ছেলেকে। অনেক মনোযোগ দিয়েই পড়াচ্ছিলাম। কারণ সকালে ছেলের পরীক্ষা। আমি নিজেও বাসায় প্রশ্ন তৈরি করে ছেলের পরীক্ষা নেই। ওর যেন প্রশ্ন বুঝতে কোন অসুবিধা না হয়। এক থেকে দেড় ঘণ্টা ছেলেকে পড়ার পর আমার হাজব্যান্ড অফিস থেকে এসেই আমাকে বলল,গেট লাগিয়ে দাও আমি একটু বাইরে যাব।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম কেন? সে আমাকে বলল অফিসের কাজে একটু বাইরে যেতে হবে। তারপর সে চলে গেল। আমিও রাতের রান্না শেষ করলাম। রান্নার কিছুক্ষণ পর আমার হাজব্যান্ড জাফি এলো এবং একটি বড় বক্স বাসায় নিয়ে এলো। বাসায় এসে আমাকে বলল এটা খোলা যাবে না সাবধানে রাখো বাচ্চারাও যেন না খুলে। আমি সেই বড় বক্সটি নিরাপদ জায়গায় রেখে দিলাম যেন বক্সটি বাবুরা নষ্ট না করে। বক্সটি দেখে বোঝার উপায় নেই এর ভিতরে কি আছে। জাফী আমাকে শুধু বারবার বলছে রাতের খাবার তাড়াতাড়ি সেরে নেই চলো। আমি বললাম এত তাড়াতাড়ি করার কি আছে। আমরা তো একটু দেরি করেই খাই। তারপরও সে আমাকে অনেক অনুরোধ করে আজ রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খাব। আমি তারপর ডাইনিং এ খাবার দিয়ে সবাইকে ডাকলাম। পরিবারের সবাই একত্রে রাতের খাবার খেয়ে নিলাম।
তখন ঘড়িতে ঠিক ১১.১০মিঃ বাজে জাফী আমাকে বলল আমার ঘুম আসছে না। আমি আজ একটু দেরিতে ঘুমাবো। তুমি কি ঘুমাবে। আমি বললাম কেন? জাফী বলল না কিছু না। একটু পরে আমাকে আবার জাফী বলল তোমাকে একটি কথা বলতে ভুলে গেছি তোমার জন্য একটি লাল জামা এনেছি একটু পরে দেখবে কেমন হয়েছে? আমি বললাম পরে পড়ব?
তখন সে আমাকে বলল মানুষের মনের ইচ্ছা পূরণ করতে হয়।পরে সময় সুযোগ নাও হতে পারে। আজ যে সময় আসছে কাল সেই সময় নাও থাকতে পারে। তারপর জাফীর কথাটি শুনে আমার একটু খারাপ লাগলো আমি লাল জামাটা পড়ে এবং একটু সাজু গুজু করে আসলাম তখন প্রায় ১১.৫২মিঃ বাজে। সংসারের কাজে ও ব্যস্ততার ভিড়ে স্বামী-সন্তানদের কেয়ার নিতে আমি আমাকেই ভুলে গেছি। আজ রাত বারোটার পর যে আমার জন্মদিন।সেটা ওদের কথা ভাবতে ভাবতে আমি নিজের জন্মদিনের কথাটিও ভুলে গেছি। ওদের কথা ও আমি বুঝতে পারিনি আজ আমার জন্মদিন রাত ১১.৫৮মি যখন ঘড়িতে বাজে তখন আমাকে বলল সেই নিরাপদে রাখা বক্স নিয়ে এসো। আমি রীতিমত বক্সটি এনে দেই জাফীর হাতে।সেই বক্সে কেক ছিল আমার জন্য লাল জামা গিফট ছিল সেটা এভাবে আমাকে সারপ্রাইজ দিবে আমি বুঝতে পারিনি।
আমার ছেলেও জানতো। ওরা দুজনে প্লান করেই কাজটি করেছে। আমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য। রাত বারোটা যখন বাজলো তখন আমার ছেলে এবং ছেলের বাবা আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালো। ছেলে আমাকে নিয়ে কেক কাটল জন্মদিনের সারপ্রাইজ টা আসলে অন্যরকম মনে হয়েছে আমার কাছে। কারণ বোঝার উপায় ছিল না যে এর ভিতরে কি আছে। ছেলের সঙ্গে কেক কেটে অনেক আনন্দ করছিলাম আমি আর জাফী।
জাফীকে বললাম এজন্যই তুমি আমাকে বক্সটি অতিযত্নে ও নিরাপদ জায়গায় রাখতে বলেছিলে।এই কেকটি আমি দেখে ফেললে তো সারপ্রাইজ নষ্ট হয়ে যেত। তাই চালাকি করে আমাকে বক্সটি ধরতে দাওনি। কেকের কালার টি ও আমার অনেক পছন্দ হয়েছে। আমার হাজব্যান্ড জাফীর দেওয়া জামাটি ও আমার অনেক ভালো লেগেছে। সব মিলিয়ে অনেক আনন্দ করে রাত্রি পার করেছি। জন্মদিন আমার অনেক আনন্দে কেটেছে। হতে পারে অল্প টাকার জিনিস তবে এটাতে আমি মনে করি অনেক অনেক ভালোবাসা লুকিয়ে আছে। যা টাকার সাথে তুলনা করা চলে না। এই ভালোবাসা আসলে কোথাও পাওয়া যায় না।
এই ভালবাসার অর্থ হচ্ছে প্রকৃত ভালোবাসা। আসলে প্রিয়জনের কাছ থেকে যদি কেউ এরকম সারপ্রাইজ পায় সেটা যে কতটা আনন্দ হতে পারে তা বলে বুঝানো যাবে না।
এই ছিল আমার হঠাৎ সারপ্রাইজের অনুভূতি। তাই ভাবলাম আমার বাংলা ব্লগে আমি আমার হঠাৎ সারপ্রাইজের অনুভূতিটা সবার মাঝে শেয়ার করি।
আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার। আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা এবং শিক্ষিকা।রেসিপি তৈরি করতে,কবিতা লিখতে এবং বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন তৈরি করতে পছন্দ করি। যেকোনো বিষয়ে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে ভালো লাগে।তাই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি।
বিষয়ঃ- অনুভূতি "শুভ জন্ম দিন সায়মা" ।
কমিউনিটিঃ- আমার বাংলা ব্লগ।
আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ.....
জন্মদিনের শুভেচ্ছা রইল ম্যাডাম। আপনাদের সবাইকে সুন্দর লাগছিল। এমন মুহূর্তগুলো জীবনে বারবার আসুক, এমনটাই প্রার্থনা করি ।
আপনার মন্তব্যটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনাদের মত দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে এমন মন্তব্য পেলে কার না ভালো লাগে, আসলে আমি অনেক অনেক আনন্দিত এবং কাজে অনেক গুণ আগ্রহ বেড়ে গেল আপনার এই মন্তব্যটি পড়ে।
দেরিতে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।তবে ভালো থাকুন সবসময়।
হঠাৎ ওই সারপ্রাইজটা পেয়ে নিজেকে এক মুহুর্তের জন্য হলেও পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হয়েছিল,তাইনা?
ভালো লেগেছে ভাইয়ার কাহিনিটা।ভালো থাকুন আপনারা সবাই।দোয়া ও ভালোবাসা জানাই🧡
জি ভাই সব চেয়ে সুখী মানুষ মনে হয়ে ছিল।
জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা আপু। আপনার জন্মদিনের কথা অনেক দেরিতে জানতে পেরেছি তাই দেরিতেই শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। সব ব্যস্ততার মাঝে যখন আমরা নিজেদের স্পেশাল দিনগুলোর কথা ভুলে যাই তখন আমাদের প্রিয় মানুষগুলো ঠিকই মনে রাখে সেই স্পেশাল দিনের কথা। প্রিয় মানুষের কাছ থেকে এরকম সারপ্রাইজ পেলে কার না ভালো লাগে। সবার হাসি দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুব সুন্দর কিছু মুহূর্ত পার করেছেন।
জি আপু আপনি ঠিক বলেছেন। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
শুভ জন্মদিন আপু। সারপ্রাইজ গিফট পেতে সবার ভালো লাগে। আর তা যদি হয় প্রিয়জন থেকে তাহলে তার মাত্রা বহুগুন বেড়ে যায়। বিশেষ দিনের ভালো লাগার মহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আসলে প্রিয় মানুষের কাছ থেকে সারপ্রাইজ পেতে অনেক বেশি ভালো লাগে আপনি হয়তো কখনো ভাবতেও পারেননি যে আপনি এত বড় একটা সারপ্রাইজ পাবেন। আপনি একদম সত্য কিছু কথা বলেছেন সেটা হচ্ছে মেয়েরা কিছু কিছু সময় সংসারের দায়িত্ব নিতে গিয়ে নিজের ভালোলাগাকে বিসর্জন দিয়ে থাকে। নিজের জন্মদিন বিবাহ বার্ষিকী কিছুই মনে রাখে না আসলে এরা হচ্ছে প্রকৃত সংসার প্রেমী দের মূল ফোকাস থাকলে সংসারের দিকে। যাই হোক খুবই ভালো লাগলো এরকম একটি পোস্ট করে, সকলকে নিয়ে খুবই সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন দেখে সত্যি মুগ্ধ হয়ে গেলাম।
আসলে ভাইয়া আমার যে রকম অনুভূতি হয়েছে ঠিক হুবাহুব সেটাই লেখার চেষ্টা করেছি।
ওয়াও সত্যিই আপনাদের তো পুরো সিনেমার মতো কাহিনী হয়েছে৷ আপনার জন্মদিনে কিন্তু আপনি ভুলেই গেছেন এই পরিবারের কাজে ব্যস্তার মাঝে৷ আর অন্যদিকে সেই প্রেমিক পুরুষ কিন্তু ঠিকই মনে রেখেছে তার প্রিয় মানুষটির জন্মদিনের কথা৷ আর তাইতো এত সুন্দর একটি কেক বানিয়ে আপনার জন্য লাল টুকটুকে একটি কাপড় এনেছে৷ যা হোক প্রিয় মানুষগুলো এমনই দরকার যে মানুষগুলো সব সময় পাশে থেকে এভাবে ভালোবেসে যাবে৷ যাহোক আপনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন সবসময় ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এমনটাই কামনা করি৷
সুন্দর গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
প্রথমে আপনার জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। সত্যিই প্রিয় মানুষের থেকে কোন কিছু পেলে খুব ভালো লাগে। সাংসারিক কাজের কারণে আপনি ভুলে গেলেন কিন্তু প্রিয় মানুষটি আপনার জন্মদিনে কেক নিয়ে এলেন। সত্যি আপনার কথার সাথে আমিও একমত মেয়েদের সংসারের কারণে অনেক কিছু বিসর্জন দিতে হয়। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ খুব সুন্দর করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। এবং অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
আমাদের দুলাভাই কিন্তু দারুণভাবে জন্মদিনের সারপ্রাইজ দিয়েছেন।লাল জামা এবং চমৎকার একটি কেক কাটার মাধ্যমে দারুণভাবে সেলিব্রেট হল তোমার জন্মদিন প্রিয় আপু।জন্মদিনের অনাবিল শুভেচ্ছা তোমাকে। ভালো থেকো সপরিবারে।♥♥
আপনার মন্তব্য পড়ে খুব ভালো লেগেছে আপু।
প্রিয়জনের থেকে সারপ্রাইজ পেতে সবার ই ভালো লাগে। আপনার জন্মদিনের কেকটা অনেক সুন্দর ছিল।ছেলে ও বাবা মিলে দারুণ সারপ্রাইজ প্ল্যান করেছে। আপনার আগামী দিন গুলো এভাবে সুন্দর কাটুক এই কামনা করি।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।