জেনারেল রাইটিং ||| পশু প্রাণীর ভালোবাসা।
আসসালামু আলাইকুম আমার বাংলা ব্লগের সকল ভাই ও বোনেরা আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ও সৃষ্টিকর্তার মেহেরবানীতে ভালো আছি।
আমি আজ আপনাদের মাঝে জেনারেল রাইটিং নিয়ে হাজির হয়েছি।আমার আজকের লেখা "পশু প্রাণীর ভালোবাসা"। আমি আপনাদের মাঝে বড় গল্প ছোট গল্প ও বাস্তব জীবনের ঘটনা নিয়ে হাজির হই।জানিনা আমার গল্পগুলো আপনাদের কেমন লাগে তবে চেষ্টা করে যাচ্ছি।
যেকোনো মানুষ যদি ভেতরের মনকে মারতে চায় তাহলে তার জন্য সেই প্রিয় মানুষটির অবহেলাই যথেষ্ট। প্রকৃতপক্ষে পিস্তল চাকু দিয়ে অ্যাটাক করে মারলে সেটা মরা না অবহেলা কষ্ট যন্ত্রণা যদি চলে মনের ভিতর তা তিলে তিলে সহ্য করার চেয়ে মরাই ভালো। আর বেচে থেকে মরার চেয়ে কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়াই ভালো। অনেক কিছু জোর করে করা যায় কিন্তু জোর করে ভালো থাকা যায় না।
আমাদের এই সমাজে মন বোঝার মানুষের চেয়ে ভুল বোঝার মানুষ বেশি। কাছের মানুষ যদি বিশ্বাস ভাঙ্গে তবে তার চেয়ে কষ্টের কোন কিছু থাকে না আর অবাক লাগে তখন সেই প্রিয় মানুষটি যখন বিশ্বাস ভাঙ্গে।যে তুমি একটি মুহূর্তে আমাকে না দেখলে অন্যরকম হয়ে যেতে সেই তুমি কি করে পারলে আমার বিশ্বাস ভাঙতে।
ভালোবাসার অধিক মায়া মমতা দিয়ে একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে । আর সেই সম্পর্ক যদি টিকে রাখার দায়িত্ব শুধুযদি একজনকে নিতে হয় তাহলে সেই সম্পর্কে ভালোবাসা থাকার কোন মানে হয় না। ভালোবাসা কথাটি অনেক মধুর এবং অর্থবহ কিন্তু এই ভালোবাসা আজকাল কেনাবেচা হাটের মতো ক্রয় বিক্রয় করা হচ্ছে।
কিন্তু একটি জিনিস আজ আমার হঠাৎ নজরে পড়ল। আর সেই ঘটনাটি আপনাদের সাথে আমি শেয়ার করতে যাচ্ছি। সকালে ঘুম থেকে উঠে যখন বাসার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন দেখলাম একটি কুকুর প্রচন্ড কান্নাকাটি করছে। আমি সেই কুকুরটিকে লাঠি দিয়ে তাড়ানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু সেই মুহূর্তে পাশের ফ্ল্যাটের এক আপু আমাকে বলল কুকুরটিকে লাঠি দিয়ে তাড়ায়েন না ও অসুস্থ আমি আসছি ওকে নেওয়ার জন্য এবং কুকুরটিকে বলল তুই কোথাও যাসনে আমি আসছি।
কুকুরটিকে এত বললাম এই যাল সরে যা সরে যা কিন্তু কুকুরটি আমার কথা শুনলো না সেখানেই বসে রইল। কিছুক্ষণ পরে সেই আপু ও তার হাজবেন্ড এল। তাদের হাতে কেক ও বিস্কুট ছিল। যেই মাত্র কুকুরটি তাদের দুজনকে দেখলো রীতিমতো আরো কান্না শুরু করে দিল। তখন ভাইটি ওকে ডেকে ওর মাথায় কিছুক্ষণ হাত বুলিয়ে দেওয়ার পরে সে চুপ করে রইল।আসলে এটিও এক প্রকার ভালোবাসা।
কুকুরটি অসুস্থ কিন্তু সে একটু ভালোবাসা চাচ্ছে প্রিয়জনের কাছ থেকে। সে আপু ভাইয়াকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম কুকুরটা অসুস্থ নাকি। তারা দুজনেই ডাক্তার। সে আমাকে বলল হ্যাঁ অসুস্থ কিছুদিন আগে ওষুধ খাওয়ায়ে ছিলাম। ওর বয়স হয়ে গেছে প্রায় আট নয় বছর হয়ে গেছে। আমি ছোট থেকেই ওকে দেখি। ও আমার বাসার সামনে থাকে। ভাই যখন কুকুরটিকে আদর করছিল কিন্তু কুকুরটি ভাইয়ের একার আদর চাচ্ছিল না।
সেই আপুটি যতক্ষণ পর্যন্ত তার মাথায় এবং মুখে হাত না বুলিয়ে দিল ততক্ষণ পর্যন্ত সেই আপুর কাছেও এসে ঘুরঘুর করছিল। আপুটি যখন তাকে আদর করে বলল আমি কখন থেকে তোকে ডাকছি শুনছিস না কেন তোর জন্য খাবার নিয়ে এসেছি ক্ষুদা লাগছে নেয় খেয়ে নে। খেয়ে বাসার সামনে আসিস আমি এখন চলে যাচ্ছি। তারা দুজনেই যখন চলে যাচ্ছিল তখন কুকুরটি মাথা নেড়ে তাদেরকে কি যেন বোঝানোর চেষ্টা করছিল। কুকুরের সামনে খাবার রাখা ছিল। কুকুর সেই খাবার গুলো ফেলে দৌড়ে তার সেই ভালোবাসার মানুষগুলোর কাছে চলে গেল।
আসলে একটি পশুর ভালোবাসা যে কতটুকু যে পশু পাখি পালে সে বুঝতে পারে।মানুষ যে পশু প্রাণী গুলোকে ভালোবাসে সেই পশু প্রাণী গুলো চায়না সেই মানুষের কোন বিপদ হোক বা তারা কোন কষ্ট পাক। পশু প্রাণীর ভালোবাসা একদম নির্ভেজাল। আসলে তারা বোবা প্রাণী তারা নিষ্পাপ। তারা ভালোবাসা উপলব্ধি করতে পারে কিন্তু মানুষের সাথে বেইমানি করতে পারে না। আর মানুষ রূপের কিছু পশু আছে যাদের প্রতিটি নিঃশ্বাসে রয়েছে বিষ।আমি কুকুরের এই ঘটনাটি যখন সকালে দেখছিলাম সেই কুকুরের ভালোবাসা দেখে আমার গা সিউড়ে উঠেছে। আসলে ভালোবাসা এমনই হওয়া উচিত।
আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার। আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা এবং শিক্ষিকা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।তাই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং তাদের সহযোগিতায় নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখি।
বিষয়ঃ- জেনারেল রাইটিং "পশু প্রাণীর ভালোবাসা"।
কমিউনিটিঃ- আমার বাংলা ব্লগ।
আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ..........
খুব চমৎকার লিখেছেন আপু।এটা ঠিক পশুর ভালোবাসা মানুষের ভালোবাসার মতো নয়।মানুষ বিশ্বাস ভাঙ্গে কিন্তু পশুরা বিশ্বাস ভাঙ্গে না।তারা মানুষের ভালোবাসার মূল্য দেয়।পাশের ফ্ল্যাটের আপু ও ভাইয়া কুকুরটিকে অনেক ভালোবাসে।তাইতো তাদের দুজনের ভাষা ও সে বোঝে।যে মানুষ গুলো পশুর যত্ন করে, ভালোবাসে , সেই সব পশু কখনো সেই ভালোবাসার মানুষের ক্ষতি চায় না।ধন্যবাদ আপু আপনাকে সুন্দর বিষয়টি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য।
জি আপু যারা পশুকে ভালোবাসে তারা আসলে পশুর অনেক কিছুই বোঝে।
ভালোবাসার মানুষের অবহেলা একজন মানুষকে ভেঙে চুরে একেবারে চুরমার করে দেয়। বর্তমান সমাজে বেশিরভাগ মানুষ পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। কারণ পশুপাখিকে ভালোবাসা দিলে, তারা কখনোই বেঈমানী করে না। কিন্তু এখনকার বেশিরভাগ মানুষ বেঈমানী করার সুযোগ পেলে বিন্দুমাত্র পিছপা হয় না। কুকুরের ঘটনাটি পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছে আপু। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আমার লেখাটি আপনার ভালো লেগেছে শুনে অনেক ভালো লাগলো।
কুকুরটির বয়স হয়েছে, এজন্য আস্তে আস্তে আর অসুস্থ হয়ে পড়ছে। হাজবেন্ড ওয়াইফ ডাক্তার কাপল বেশ ভালই আদর ও মায়া যত্ন করছে কুকুরটিকে। আর তাছাড়া প্রচুর পাখির ভালবাসাও তাদের মালকিনের জন্য অনেক। তারা কখনোই মানুষের সাথে বেইমানি করে না আমরা মানুষটাই সব কিছু করি।
সুন্দর মন্তব্য করে উৎসাহ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপু।
আমি তো সব সময়ই বলি যে মানুষ পশুর চেয়েও খারাপ। পশুকে ভালোবাসা দিলে সে তা ফিরিয়ে দেয়। আর মানুষ কে ভালোবাসা দিলে সে বিনিময়ে আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়। আজ আপনার লেখাগুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো। বিশেষ করে কুকুরের গল্পগুলো পড়তে বেশ ভালোই লাগছিল।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু যে আমার গল্পটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে।