আমার অনুভূতি |||| সন্দেহ।

আসসালামু আলাইকুম।আমার বাংলা ব্লগের সকল ভাই ও বোনেরা আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি।আমি আজ আপনাদের মাঝে কোন রেসিপি কোন ডাই পোস্ট কোন কবিতা নিয়ে হাজির হয়নি।আজ এসেছি আপনাদের মাঝে ছোট বাস্তব একটি গল্প নিয়ে। আমার গল্পের নাম "সন্দেহ"।

আমরা এই সুন্দর পৃথিবীতে এসেছি মাত্র কয়েকটি দিনের জন্য। এ সুন্দর পৃথিবীতে আমাদের প্রত্যেকেরই সঠিকভাবে সুন্দরভাবে বাঁচার অধিকার আছে। তাই সুন্দরভাবে জীবন গড়ার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছি।জীবন যুদ্ধে সব কাজ কর্ম করি কিছু অর্থ উপাজনের জন্য। তবুও আমাদের জীবনটা যেন সঠিক ও সুন্দরভাবে পরিচালিত করতে পারি।প্রতিটি মানুষের আশা থাকে। সেই আশা নিয়েই মানুষ বাঁচে থাকা।

আমাদের সবারই জীবনের একটি সময় বাবা-মার ঘরে থাকতে হয়।যখন সেই পরিবারের মেয়েটি বড় ও ম্যাচুইয়েট হয়ে উঠে তখন তাকে চলে যেতে হয় অন্যের ঘরে। আর এটি মেয়েদের জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। বাবা মাকে ছেড়ে অন্য একটি পরিবারে গিয়ে সকলকে আপন করে নিতে হয় এবং সেই পরিবারের সাথে খাপ খাওয়ায়ে নিতে হয় নিজেকে।আমার মনে হয় একটি মেয়ে কখনো কোথাও দীর্ঘ স্থায়ীভাবে এক জায়গায় থাকতে পারে না যা ছেলেরা পারে। তাইতো নারীরা সবকিছুই মেনে নিতে পারে এবং এজন্য নারীদেরকে বলা হয় মমতাময়ী।

মাত্র কয়েক দিন হল সংসার জীবন। প্রায় দু মাস হলো বিয়ে হয়েছে মিতা ও ফয়সালের।তাদের সংসার জীবন বেশ আনন্দেই কাটছিল। ফয়সাল একটি কোম্পানিতে জব করে এবং মিতা পড়ালেখা অবস্থায় তার বিয়ে হয়েছে।মিতা অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়তে।বিয়ের পর তাকে তার শ্বশুরবাড়িতে বেশিদিন রাখা হয়নি। কারণ ফয়সাল জব করে।একা রান্না করে খাওয়া তার পক্ষে সম্ভব ছিল না।তার পরিবারকে বুঝিয়ে বলার পর তার পরিবার রাজি হয়েছে যে বৌমা থাকবে তার ছেলের সঙ্গেই।

তাই একটি বাসা ভাড়া নিয়ে মিতাকে নিয়ে তারা স্বামী বসবাস করতে লাগলো। কিন্তু হঠাৎ মিতার মাঝে মধ্যে ফোন আসে এবং বন্ধু বান্ধব সবাই ফোন করে তার নতুন বিয়ে হয়েছে খোঁজ খবর কৌশলাদি অনেক কিছু জানার চেষ্টা করে সবাই। যেহেতু সে পড়ালেখা অবস্থায় ছিল এবং বাকি পরীক্ষাগুলো দিবে সেই ক্ষেত্রে তাদের সাথে সম্পর্ক রাখাও অনেক জরুরী ছিল। আর রীতিমত সেই ফোন আসা ফয়সালের এক প্রকার বিরক্ত মনে হচ্ছিল।

কিছুদিন দেখার পর ফয়সাল আর চুপ থাকলো না। প্রতিদিন তাকে মেসেঞ্জার ও কল বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করতে থাকে।মিতাকে রীতিমতো গায়ে হাত উঠাতে থাকে ওর সাথে কারো সম্পর্ক আছে কিনা। মিতা একপ্রকার কান্নাকাটি করে তাকে বলতে লাগলো আমার কারো সাথে সম্পর্ক থাকলে তোমার সাথে কিভাবে আমি সংসার করছি।এভাবে সন্দেহের পালা শুরু হয়ে গেল । একপ্রকার তাকে তার বাবা-মা আত্মীয়-স্বজন কারো সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হলো না এবং তার ফোনটি ভেঙ্গে নষ্ট করে রেখে দেওয়া হল।

মিতা ও রীতিমতো কান্নাকাটি করতে লাগলো এবং সে বলল মানুষের উপরেরটা দেখে ভেতরেরটা চেনা যায় না। তোমার মনে এই ছিল এত সন্দেহ বাসা বাঁধলে তো সংসার করা যায় না। এক দুই দিনের ব্যাপার নয় সংসার তো সারা জীবনের। একটি মানুষের সাথে যদি মনের মিল না হয় তাহলে সেখানে সংসার করা অনেক কঠিন।

পর্যায়ক্রমে দুজনের কথা চলতে থাকলো এবং অনেক কথা। রীতিমতো তারা বলল এবং তাকে ফয়সাল আর বাকি পরীক্ষাগুলো দিতে দিবে না। কিন্তু মিতার খুব ইচ্ছা সে গ্রেজুয়েশন কমপ্লিট করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। কিন্তু ফয়সালের কথা আমি জব করছি তোমার টাকায় কি হবে তোমার টাকা লাগবে না।আমি যেটা উপার্জন করবো সেটাই তোমার চলে যাবে। আসলে একটি সংসারে যদি দুজন দু রকমের হয় তাহলেও মানানো যায় কিন্তু সেখানে যদি সন্দেহ বাসা বাঁধে তাহলে সেই সংসার করা অনেক কঠিন হয়ে যায়। আর আমাদের এখনকার সমাজে প্রায় সন্দেহের অবকাশ টাই বেশি।

তাই চলুন আমরা অন্যকে বুঝার ক্ষমতা অর্জন করি। দুজনার আপদে বিপদে সুন্দরভাবে সংসার জীবন গড়ি।

আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার। আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা এবং শিক্ষিকা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।তাই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং তাদের সহযোগিতায় নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখি।

বিষয়ঃ- আমার অনুভূতি "সন্দেহ"।

কমিউনিটিঃ- আমার বাংলা ব্লগ।

আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ..........

🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩