ছোট গল্প ||| রহস্যময়ী শ্যাওলা গাছ শেষ পর্ব ||| Original story by @saymaakter.
আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল ভাই ও বোনেরা আশা রাখি সুস্থ আছেন এবং সুন্দরভাবে সময় অতিবাহিত করছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় পরিবারসহ ভালো আছি।
আজকে আমি আবার আপনাদের মাঝে আমার ছোট গল্প "রহস্যময়ী শ্যাওলা গাছ শেষ পর্ব" নিয়ে হাজির হলাম।বিগত পর্বগুলোতে আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্য পেয়ে প্রতিটি পর্ব লেখার অনেক আগ্রহ পেয়েছি। এজন্য আপনাদেরকে জানাই অনেক অনেক ধন্যবাদ। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শেষ পর্বে কি আছে তা দেখে নেওয়া যাক।
রক্ষা কবজ সালেহাকে রক্ষা করতে পেরেছিল। এভাবে কয়েক বছর যাওয়ার পর সবাই ভাবল সালেহার আর সমস্যা হবে না। শ্যাওলা গাছের সাইডে যত গাছ আছে এলাকার সবাই মিলে একত্রিত হয়ে সব গাছ কেটে ফেলল। আর সেই গাছের সাইডে কিছু লাইটিং এর ব্যবস্থা করল। যেন সেই জায়গাটি অন্ধকারে পরিপূর্ণ না হয়। কারণ সেই এলাকার শ্যাওলা গাছের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো সবাই জানতো। এই গাছের নিচ দিয়ে যাওয়া আসা চলাচলের রাস্তাটি ছিল সবার। সহজ রাস্তা মানুষের যাতায়াতের জন্য।যদিও অন্য সাইটে রাস্তা ছিল কিন্তু চলাচলের জন্য অনেক দূর হয়ে যেত। তাই সবাই মিলে পদক্ষেপ নিল কিভাবে এর সমাধান করা যায়। যেমন ভাবনা তেমন কাজ সবাই সিদ্ধান্ত নিয়ে সব কাজ করে ফেলল।
এরপর আর এরকম কোন সমস্যা হতে দেখা যায়নি। আর সালেহা যে পরিবারে থাকতো সেখানে তার মেয়েও সেই পরিবারের সাথে গড়ে উঠেছিল।কেউ দেখলে বুঝতে পারত না তার মেয়ে সেই পরিবারের অন্য কোন একজন। কিছুদিন নিশ্চুপ সবকিছু থাকার পর। হঠাৎ একদিন সালেহা রান্না করছিল রান্নাঘরে।সেদিন রাতের মেনু ছিল শুটকি ভর্তা এবং শুটকির তরকারি। শুটকি রান্না করছিল আর সালেহা কেন জানি আবোল তাবোল কি বলছিল। কারণ তার পূর্বের ঘটনাগুলো থেকেই সবাই সবকিছু জানতো। যখনই ও ফিসফিস করে একা একা কথা বলে তখনই ওর কোন না কোন সমস্যা হয়। তখন পরিবারের সবাই বুঝতে পারলো আজ সালেহার কিছু একটা হবে। তাই তাকে সবাই চোখে চোখে রাখলো। কিন্তু আগের মতোই একই অবস্থা করলো সালেহা।
প্রচন্ড মাথা চুলকায় আর ফিসফিস করে বলে আমাকে ছেড়ে দে আমি চলে যাব আমাকে নিতে এসেছে আবার। আমাকে ডাকছে আমি চলে যাব তোরা আমাকে আটকে রাখতে পারবি না। যখন আরো রাত হল তখন ওর সমস্যা আরো বাড়তে থাকল। ওকে বেঁধে আটকে রাখা হয়েছিল।কিন্তু কখন যেন সেই রশির গিট খুলে মেন দরজা ধাক্কা দিয়ে খুলে বের হয়ে চলে গেছে অন্য রাস্তায়। এদিক ওদিক সবাই তাকে খুঁজছে কিন্তু কোথাও পাচ্ছিলনা।এক প্রকার টেনশন ধরে গেল সেই পরিবারে। এর আগে তাও তাকে পাওয়া গিয়েছিল সেই গাছের নিচে। কিন্তু আজ তাকে কোথাও পাওয়া গেল না। খোঁজাখুঁজি করতে করতে যখন অনেক দূরে এক সাইডে রেললাইনের কাছে সবাই চলে গেছে। তখন রেল লাইনের সাইডে কিছু লোক ছিল তাদেরকে জিজ্ঞাসা করতে তারা বলল একটি মহিলা দৌড়িয়ে এদিকে এসেছিল কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই দেখি আর নেই সেটা দেখে আমরাও ভয় পেয়ে গেছি।তারপর আর বুঝতে বাকি রইল না। যে সেই মহিলাটি কে।
তখন টর্চ নিয়ে সেই লোকগুলো আরো সামনের দিকে এগুলো। রেল লাইনের পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে সামনে গিয়ে দেখা গেল ঠিক রেল লাইনের মাঝে তাকে ভূত ফেলে রেখে গেছে। আর সেটা দেখে তারা সঙ্গে সঙ্গে রেললাইন থেকে উঠিয়ে অন্য সাইডে টেনে নিয়ে আসলো সৃষ্টিকর্তার অনেক রহমত ছিল সে আবারো বেঁচে গেছে। কারণ সালেহাকে রেল লাইন থেকে উঠিয়ে নেওয়ার পরে ট্রেন আসছিল। তারপর তার মুখে কিছুপানি ঝাপটা দিল ঠিক সেই সময় তার জ্ঞান ফিরে এল। এবং সবাই তাকে ধরাধরি করে বাড়িতে নিয়ে আসলো।
পরের দিন সকালে তাকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিল। আর সালেহার একটি অনুরোধ ছিল আমি চলে যাচ্ছি তবে আপনাদের মত ভাল মানুষ এই পৃথিবীতে আর একটিও হয় না আমার মেয়েকে আপনাদের কাছে রেখে গেলাম। আমি চাইনা আমার যে সমস্যা আমার মেয়ের সেই সমস্যা হোক। আমি জানি আমার থেকে আমার মেয়েকে আপনারা অনেক ভাল রাখতে পারবেন। তাই আজ থেকে আমার মেয়ের সমস্ত দায়িত্ব আপনাদের কাছে দিয়ে গেলাম। এরপর সালেহা চলে গেছে তাদের বাড়িতে আর তার মেয়েটি ছিল সেই পরিবারে।
আমার পরিচয়।
আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার।আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।তাই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং তাদের সহযোগিতায় নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখি।
আগের পর্বটা পড়েছিলাম, পড়ে খুব ভালো লেগেছিল। ভাবলাম হয়তো সালেহা সবকিছু থেকে রেহাই পেয়ে গেল। কিন্তু আজ গল্পের বাকি অংশ পড়ার পর বুঝলাম যে সালেহার সাথে এই ঘটনার শেষ তখনও হয়নি। পরবর্তীতে যে সে রেললাইন থেকে বেঁচে ফিরছে এটাই তো বড় কথা। আর সে তার মেয়েকে সেখানে রেখেই চলে গিয়েছে। আর সে চেয়েছে তার মেয়ে যেন ভালো থাকে। খুব ভালো লাগলো আপনার আজকের এই গল্পের শেষ পর্বটা পড়ে আপু।
আমার লেখা গল্প আপনার কাছে ভালো লেগেছে জন্য। এটা আমার জন্য অনেক ভালো বিষয়।
এরকম গল্পগুলো আপনার কাছ থেকে চাই আপু।