আমার অনুভূতির গল্প ||| মা যখন সন্তানদের ভাগের বিষয় হয় পর্ব-২।
আসসালামু আলাইকুম।আমার বাংলা ব্লগের সকল ভাই ও বোনেরা আশা করছি সকলে পরিবারকে নিয়ে সুস্থভাবে দিন যাপন করছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি।
আমি আপনাদের মাঝে "মা যখন সন্তানদের ভাগের বিষয় হয় পর্ব-২" নিয়ে হাজির হয়েছি।আসলে পৃথিবীতে মায়ের তুলনা হয় না। এটা যেমন চিরন্তন ঠিক তেমনি বড় না করলে আমরাও বড় হতে পারতাম না। তাই তো বলছি মায়ের মমতার নেই কোন তুলনা। মিরাজ উদ্দিনের দুই ছেলে দুই মেয়েকে নিয়ে পরিবার।তাদের সংসারে মোট সদস্য সংখ্যা ৬ জন। মিরাজ উদ্দিন তার পরিবারকে নিয়ে খুব সুখেই দিন কাটাচ্ছিল।বেশ ভালো একটি চাকরি করতো। সেই চাকরির সুবাদে কোয়াটারে বাসা পেয়েছিল। যারা চাকরি অবস্থায় থাকবে তারাই সেই কোয়ার্টারে থাকতে পারবে। সেই দিক থেকে মিরাজ উদ্দিনের একটু লাভই হয়েছিল। কারণ বাইরে কোন বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে গেলে তার বিশাল অংকের একটি টাকার অ্যামাউন্ট চলে যাবে।
কিন্তু এই কোয়ার্টারে থাকতে গেলে ফিক্সড একটি টাকার অংক তার বেতন থেকে কেটে নেওয়া হবে। তাই সে চিন্তা ভাবনা করে দেখল যে এখানে থাকলে তার ছেলেমেয়েরা অনেক সুবিধা পাবে এবং ভালো একটি পরিবেশে গড়ে উঠবে।আস্তে আস্তে যখন দিন যেতে লাগলো ছেলে মেয়েরাও বড় হল। মিরাজ উদ্দিন ছিল অনেক সৎ মানুষ। সে সব সময় তার স্ত্রী জেসমিনকে সন্তানদের ব্যাপারে অনেক তথ্য ও পরামর্শ দিত। কিভাবে তার সন্তানরা আদর্শ ভাবে মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে। মিরাজ উদ্দিন কখনো অপচয় করা পছন্দ করত না। কিন্তু তার বউ জেসমিন ও ছেলে মেয়েদের ব্যাপারে সে অন্যরকম।দেখতে দেখতে যখন ছেলেমেয়েরা বড় হয়ে গেল।তখন ছেলেদের লেখাপড়ার জন্য বাইরে ভর্তি করে দিল। আর মেয়েদের সেই কুয়াটারের ভিতরে কলেজে ভর্তি করে দিল।
এদিকে মিরাজ উদ্দিনের খরচের পরিমাণও বেড়ে গেল কারণ চারটি ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ এবং বাইরে থাকার খরচ সব মিলিয়ে প্রচুর টাকা তাকে ছেলে মেয়েদের পিছনে খরচ করতে হত।ছেলে দুটো অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করা শেষ। আর মেয়ে দুটোর একটি অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে এবং ছোট মেয়েটি ফার্স্ট ইয়ারে। মিরাজ উদ্দিন নিজে শিক্ষিত ছিল জন্যই তার ছেলেমেয়েদেরকেও আগ্রহর সহীত শিক্ষার প্রতি জোর দিয়েছে কারণ সে জানত শিক্ষার কোন বিকল্প নেই । তাইতো সে তার সর্বস্ব দিয়ে ছেলে মেয়েদেরকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে চেষ্টা করেছে।
একসময় তার বড় মেয়ে নীলার একটি বিয়ের অফার আসে।ছেলে দেখতে শুনতে অনেক ভালো এবং ছেলের পারিবারিক অবস্থাও অনেক ভালো। তারপর মিরাজ উদ্দিন বলল এই ছেলের সঙ্গেই তার মেয়েকে বিয়ে দিবে এবং বড় মেয়েকে বিয়ে দিল। বড় মেয়ের বিয়ের পর তার বড় ছেলে আসিফের ভালো একটি চাকরি হলো। আসিফের ছোট ভাই নয়নও অনেক চেষ্টা করে একসময় তারও একটি চাকরি হলো। মিরাজ উদ্দিন অনেক আনন্দে আত্মহারা হয়ে বলতে লাগলো আমার কষ্ট মনে হয় সার্থক হয়েছে।আজ আমার সুখের দিন আমার দুই ছেলের চাকরি হয়েছে ও আমার এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে।এখন সংসারে শুধু ছোট মেয়ে ভাবনা রয়ে গেল।ভাবনাকে অনেক পড়ালেখা করিয়ে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে তাকে একটি জব পাওয়ায়ে দিবে এটি মিরাজ উদ্দিনের অনেক ইচ্ছা।
আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার। আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা এবং শিক্ষিকা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।তাই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং তাদের সহযোগিতায় নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখি।
বিষয়ঃ- আমার অনুভূতির গল্প "মা যখন সন্তানদের ভাগের বিষয় হয় পর্ব-২"।
কমিউনিটিঃ- আমার বাংলা ব্লগ।
আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ..........
মিরাজ উদ্দিন শিক্ষিত তাই সে তার চার ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া শেখাতে পিছপা হননি।বড় মেয়ের ভালো ঘর দেখে বিয়ে ও হয়ে গেলো।বড় ছেলের চাকরিও হলো।যাক সবকিছুই খুব সুন্দরভাবে গুছিয়ে নিয়েছেন মিরাজ উদ্দিন সাহেব।তারপর আসলে কি হল?? আবার সামনে জানা যাবে।ধন্যবাদ আপু।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। সুন্দর মন্তব্য করে সহযোগিতা করার জন্য।
আপনার এই গল্পের মেইন চরিত্র মিরাজ উদ্দিন এর মত অনেকে রয়েছে।যারা তাদের ছেলে সন্তানকে মানুষের মত মানুষ গড়ে তোলার জন্য শহরে ভালো কোন কোয়ার্টারে থাকেন। আর মিরাজ উদ্দিন সাহেব তার ছেলে মেয়েদেরকে উচ্চশিক্ষিত করতে পেরেছেন এতেই ওনার অনেক সুখ। যাই হোক আগামী পর্বে কি ঘটতে যাচ্ছে এখনো বুঝা যাচ্ছে না। আশা করছি আগামী পর্ব পড়লে বুঝতে পারবো ধন্যবাদ আপনাকে।
সুন্দর মন্তব্য করে উৎসহ দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
প্রায় প্রতিটি মা বাবা চায় তাদের সন্তান যেন পড়াশোনা করে শিক্ষিত হয় এবং মানুষের মতো মানুষ হয়। মিরাজ উদ্দিন তো চার ছেলে মেয়েকে পড়াশোনা করিয়ে শিক্ষিত করেছে। এদিকে বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছে এবং দুই ভাইয়েরও চাকরি হয়েছে। এতে করে মিরাজ উদ্দিন সফল। অবশ্যই উনার কষ্ট সার্থক হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে অনেক ছেলেরা ইনকাম করে ঠিকই, কিন্তু বিয়ের পর পরিবর্তন হয়ে যায়। এতে করে মিরাজ উদ্দিনের মতো মানুষদের স্বপ্ন ভেঙে চুরে একেবারে চুরমার হয়ে যায়। আমার তো মনে হয় মিরাজ উদ্দিনের সাথেও এমনটা ঘটতে চলছে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
মন্তব্য করে সহযোগিতা করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।