বাস্তব ঘটনা |||| ভালোবাসার কষ্ট-২।

আসসালামু আলাইকুম।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল ভাই ও বোনদের জানাই শীতের উষ্ণ অভিনন্দন।আশা করি সকলেই সবার পরিবার নিয়ে সুস্থ আছেন এবং সুন্দর সময় অতিবাহিত করছেন।আমিও আপনাদের দোয়ায় ও সৃষ্টিকর্তার করুণায় পরিবারসহ ভালো আছি।

আজকে আমি আপনাদের মাঝে বাস্তব জীবনের সত্য ঘটনা নিয়ে হাজির হতে চলেছি। জানিনা এ গল্পের প্রথম পর্বটি কেমন লেগেছে?তবে আশা করি দ্বিতীয় পর্বটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে ইন-সা-আল্লাহ।চলুন আর কথা না বাড়িয়ে দ্বিতীয় পর্বে কি ঘটেছে তা দেখে নেওয়া যাক।

আজ সেই নীলা আর নেই। হঠাৎ বুকে ব্যথা উঠেই সে পরপারে চলে গেছে।ডাক্তারের কাছে নেওয়ার আগেই সে এই পৃথিবী থেকে চলে গেছে। কারণ সুস্থ সবল একটি মানুষ হঠাৎ করেই বুকে ব্যথা উঠে এই পৃথিবী ত্যাগ করল এটি মেনে নেওয়ার মতো না।যখন যাকে এই পৃথিবী থেকে চলে যেতে হবে তাকে যেতেই হবে।নিলয় ছোট মানুষ সে বুঝতে পারছে না তার মা আর এই দুনিয়াতে নেই। পরিবারটির ভিতরে যেন কান্নার সাগর বয়ে যাচ্ছে।কেউ শান্তি পাচ্ছে না এই ছোট বাচ্চাকে নিয়ে।নিলয় বারবার বলছে আম্মু কোথায় গেছে আম্মুকে এনে দাও। আমার আম্মুকে ছাড়া কিছুই ভালো লাগছে না।তাকে খাওয়াতে গেলেও একটি কথা আমি আম্মুর হাতে খাব,গোসল করাতে গেলেও একটি কথা ছেলেকে কিছুতেই যেন মানাতে পারছে না তার বাবা হাবিব।

নিলয়ের দাদু ও ফুপু অনেক চেষ্টা করে কিন্তু তারপরও ছেলেকে কেন জানি মানাতে পারছে না। সব সময় মায়ের ছবিটি হাতে নিয়ে ঘুমায়। আর নিলয় তার মাকে ঘুমের মধ্যেও ডাকতে থাকে। এক প্রকার নিলয় অসুস্থর মতোই হয়ে গেছে মায়ের জন্য।আসলে পৃথিবীতে মায়ের মত আপন কেউ না। মা শব্দটির মধ্যে কেমন যেন একটি অন্যরকম ভালোবাসা রয়েছে।পৃথিবীর সব ভালবাসার উপরের স্থান দখল করে নিয়েছে মা । মায়ের ভালোবাসার সাথে কোন ভালোবাসার তুলনা চলে না।তবে এবার নিলয় বুঝতে পারছে যে মা কি জিনিস। কত না দুষ্টুমি করেছে কত না যন্ত্রণা করেছে মাকে। কিন্তু মা কখনো একটি বারের জন্যও বিরক্ত হয়নি।

বরং সব সময় খাবারের বাটি হাতে পিছু পিছু ছুটেছে সেই ছেলের দিকে । হাবিবকে আবার সবাই মিলে দ্বিতীয় বিয়ে দিল। নিলয়ের নতুন মা ঘরে আসার পর সবাই নিলয় কে বলল এটি তোমার আরেকটি মা। তখন নিলয় বলল আমার মা তো এরকম না দেখতে। আমি আমার আগের মাকেই চাই। এ প্রশ্নের উত্তর আর কেউ দিতে পারল না। সবাই চুপচাপ থেকে নীরবে রইল। কিছুদিন গেলে হয়তোবা ঠিক হয়ে যাবে।

কিন্তু নিলয় সব সময় চুপচাপ থাকে। আগের মত তাকে আর আনন্দ করতে দেখা যায় না। তার বাবা হাবিব বাসায় একদিন আত্মীয়-স্বজন সকলকে বাসায় দাওয়াত করলো। সকল আত্মীয়-স্বজন তাদের ছেলে মেয়েকে নিয়ে রীতিমতো সেখানে পৌঁছল।দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল।সবাই যখন সবার বাচ্চাকে খাওয়াচ্ছিল তখন নিলয় সেই ব্যাপারটি ফলো করছিল।সবাই সবার বাবুকে খাওয়াচ্ছে কিন্তু আমাকে কেউ খাওয়ায়ে দিচ্ছে না। এই বলে নিলয় দৌড়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে একা একা কাঁদতে লাগলো।

সবাই কাজে যখন ব্যস্ত ছিল তখন নিলয় কে মেহমানদের সঙ্গে খাবার দেওয়া হয়েছিল। নিলয় একটু পরে বারান্দা থেকে এসে একজন ভদ্রমহিলাকে বলছিল আন্টি আমাকে একটু খাওয়ায় দিবে? তুমি তো তোমার বাবুকে খাওয়াচ্ছ আমার তো মা নেই। আর যদি নাই খাওয়ায় দিতে পারো তাহলে আমাকে একটু ভাতগুলো মেখে দাও প্লিজ। সেই মুহূর্তে সেই বাচ্চার কথাটি শুনে সকলেই কেঁদে বুক ভাসিয়ে ছিল। আজ ভালবাসার কষ্ট নিলয় বুঝতে পারছে। এতোটুকু বাচ্চা হয়েও বাস্তবতা ও অতীত এর পার্থক্য মিলিয়ে যখন দেখলো তখন সেখানে ভালোবাসার কষ্ট তার বুকে আঘাত হানছে । আসলে নিলয়ের নীরব থাকা কষ্ট হয়তো মানেই সে বুঝতে পারবে।

আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার। আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা এবং শিক্ষিকা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।তাই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং তাদের সহযোগিতায় নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখি।

বিষয়ঃ- বাস্তব ঘটনা "ভালোবাসার কষ্ট-২"।

কমিউনিটিঃ- আমার বাংলা ব্লগ।

আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ..........

🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩