জেনারেল রাইটিং ||| আইসক্রিম ওয়ালার আইসক্রিম।
আজকে আমি আপনাদের মাঝে এমন একটি বিষয় নিয়ে উপস্থিত হতে চলেছি।আশা করি ছোটবেলার অনেক স্মৃতি সবারই মনে পড়বে আমার এই গল্পটি পড়ে।আজকের আমার গল্পটির নাম "আইসক্রিম ওয়ালার আইসক্রিম"।আমরা সকলেই ছোটবেলায় আইসক্রিম ওয়ালার থেকে আইসক্রিম কিনে খাইনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।আমরা সকলেই ছোটবেলায় স্কুলে কত আইসক্রিম কিনে খেয়েছি এবং এই আইসক্রিম নিয়ে আমাদের অনেকেরই অনেক স্মৃতি বিজড়িত কিছু বিষয় আছে যেগুলো আসলে আমরা ভুলেই গিয়েছি।
আজকে হঠাৎ বাহিরে একটি আইসক্রিম ওয়ালার কাছ থেকে কিছু ছোট বাচ্চা আইসক্রিম কিনে খাচ্ছিল।এই দৃশ্যটি দেখে ছোটবেলার স্মৃতিগুলো আমার মনে পড়ে গেল এবং সঙ্গে সঙ্গে তার একটি ফটোগ্রাফি করে ফেললাম।আপনাদের সাথে আমার ছোটবেলার স্মৃতি বিজড়িত আইসক্রিম কিনে খাওয়ার বিষয় শেয়ার করব।
আমি প্রতিদিন বাসা থেকে স্কুলে যাওয়ার সময় টিফিন খাওয়ার জন্য কিছু টাকা নিয়ে যেতাম আর সেই টাকা দিয়ে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের নাস্তা কিনে খেতাম।তবে গরমের সময় বিশেষ করে আইসক্রিম ছাড়া অন্য কিছু খাওয়া হত না আমার এবং খেতে ভালোও লাগতো না।আমাদের ইস্কুলের পাশে একটি নির্দিষ্ট স্থান পর্যন্ত আইসক্রিম ওয়ালা আসতে পারতো এর ভিতরে আশা তার অনুমতি ছিল না।আর আমাদের সবার মধ্যে প্রতিযোগিতা ছিল টিফিনের সময় দৌড়ে সেই আইসক্রিম ওয়ালার কাছে কে কত দ্রুত যেতে পারে এবং কত দ্রুত আইসক্রিম কিনে খাওয়া শুরু করতে পারে।কিন্তু আমি একটু ছোটবেলায় দুরন্তপনা ছিলাম। তাই দৌড়ে সবার আগে আইসক্রিম ওয়ালার কাছে যেতাম এবং সবার আগে আইসক্রিম কিনে খাওয়া শুরু করতাম প্রতিনিয়ত।এ নিয়ে প্রতিনিয়ত আমার বান্ধবীদের সঙ্গে আমার খুব কথা কাটাকাটি হত।
এভাবে প্রতিনিয়ত আমরা আইসক্রিম কিনে খেতাম। হঠাৎ একদিন দৌড়ে সবার আগে গরমের মধ্যে গিয়েছি কিন্তু গিয়ে দেখি সেই আইসক্রিম ওয়ালা সেখানে দাঁড়িয়ে নেই।তখন খুব খারাপ লেগেছে এবং মন খারাপ করে আস্তে আস্তে হেঁটে আবার স্কুলে চলে আসি।এবার পরের দিনের পালা আবার দৌড়ে সবার আগে গিয়েছি কিন্তু গিয়ে দেখি ঠিক একই অবস্থা আইসক্রিম ওয়ালা নেই।এরপর মন অনেক খারাপ করে স্কুলে ফিরে আসি।
তখন আমাদের সবার খুব জানার ইচ্ছা হলো যে আইসক্রিম ওয়ালার কি হয়েছে।তখন খোঁজ নেওয়া শুরু করলাম এবং শুনতে পেলাম আইসক্রিম ওয়ালা অনেক অসুস্থ এবং সে বাসায় একদম বেড়ে শুয়ে পড়েছে।শুনে মনটি অনেক খারাপ হয়ে গেল এবং আমরা সব বান্ধবীরা মিলে ঠিক করলাম যে আইসক্রিম ওয়ালাকে দেখতে যাব।এবার খোঁজ নেওয়া শুরু করলাম যে সেই আইসক্রিম ওয়ালার বাসাটি কোথায়? তখন আমাদের স্কুলের দপ্তরি চাচা বলল যে আমাদের বাউন্ডারির পাশে ওনার একটি ঘর আছে সেখানে উনি থাকেন।তখন আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিলাম স্কুল ছুটির পরে সকলেই সেই চাচাকে দেখতে যাব এবং ইস্কুল ছুটি শেষে আমরা সবাই মিলে সেই ঘরের দিকে রওনা দিলাম।
এবার পৌঁছে ঘরে ঢুকে দেখি চাচা অনেক কাতরাচ্ছে এবং তার গায়ে প্রচন্ড জ্বর, সে কথা বলতে পারছে না, তার পাশে কেউ নেই।তখন আমরা জিজ্ঞেস করলাম চাচা তুমি ওষুধ পত্র কিছু খেয়েছো?সে উত্তরে বলে আমি ওষুধ পত্র কোথায় পাবো মা।আমি তো খাবারই খাইনি গতকাল থেকে কারণ এই আইসক্রিম বিক্রি করে যে টাকা পায় সে টাকা দিয়ে আমার সংসার চলে কিন্তু গত দুইদিন হলো তো আমি কোন আইসক্রিমই বিক্রি করতে পারিনি।তখন বললাম চাচা চাচী কোথায়? উত্তরে বলল তোমার চাচী একটু মানুষের বাড়ি গিয়েছে যদি কিছু খাবার নিয়ে আসতে পারে এজন্য।বিষয়টি শুনে আমাদের অনেক খারাপ লাগলো এবং আমাদের কাছে যে সব টাকা ছিল তা একত্রে করি এবং চাচাকে দিয়ে তার ওখান থেকে বেরিয়ে আসি আমরা।
আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার। আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা এবং শিক্ষিকা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।তাই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং তাদের সহযোগিতায় নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখি।
কমিউনিটিঃ- আমার বাংলা ব্লগ।
আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ..........
ইস্ আপু আপনি তো একেবারে টেনে নিয়ে গেলেন সেই ছোট বেলায়। এটা কি ঠিক হলো। ছোটবেলায় আমরাও কিন্তু স্কুলে যাওয়ার সময় এমন করে আইক্রিম ওয়লার কাছ থেকে আইসক্রিম খেতাম। বেশ স্মৃতি বহুল একটি পোস্ট শেয়ার করলেন। যা দেখে আপু মুগ্ধ না হয়ে পারলাম না।
যাক আপনার ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দিতে পেরেছি এটাই আমার সার্থকতা।
আসলে ছোটবেলার হয়তো অনেকেরই এরকম স্মৃতি আছে আইসক্রিমওয়ালা থেকে আইসক্রিম কিনে খাওয়ার। তবে আমার এই ধরনের স্মৃতি গুলো খুব কম বললেই চলে। যাই হোক আপনার আইসক্রিম ওয়ালার থেকে আইসক্রিম কিনে খাওয়ার স্মৃতিগুলো বেশ ভালো লাগলো। তবে শেষে জেনে খারাপ লাগলো যে সেই আইসক্রিম ওয়ালা হুট করে বেশ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গিয়েছিল এবং যার কারণে তিনি আইসক্রিম বিক্রি করতে পারছিলনা এবং তার ঘরে খাবার বলতে কিছু ছিল না। যাইহোক আপনারা তাকে হেল্প করেছেন জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ
সুন্দর মন্তব্য করে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ।
আপনার আজকের এই আইসক্রিম আলার ঘটনা পড়ে মনে পড়ে গেল ছোটবেলায় যে সমস্ত আইসক্রিম ওয়ালাদের কাছে আইসক্রিম খেতাম সেই সমস্ত কথা। আপনি বেশ ভালো কাজ করেছেন। যেহেতু আইসক্রিম আলা আর আসছে না, আপনারা সবাই সন্ধান করে তার বাসায় গেছেন। তার অসুস্থতা দেখে আপনাদের কাছে যে টাকা ছিল তা দিয়ে এসেছেন। এটা জেনে আরো বেশি ভালো লেগেছে আমার। আসলে গরীব মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকলে তার দেখাশোনার লোক থাকে না।
সুন্দর করে গুছিয়ে মন্তব্য করে উৎসাহ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
এখন তো দোকানে দোকানে ফ্রিজ এবং তাতে নামি দামি সব কোম্পানির আইসক্রিম। এখন আর এইরকম আইসক্রিম ওয়ালা দেখাই যায় না। ব্যাপারটা খুবই দুঃখজনক। ছোটবেলা এসব আইসক্রিমওয়ালার থেকে আমিও আইসক্রিম খেয়েছি। তবে একটা কথা এদের অবস্থা কিন্তু খুবই শোচনীয়। অবস্থা টা এমন একদিন আইসক্রিম বিক্রি না হলে এদের সংসার চলে নাহ।
জি ভাই আপনি ঠিক বলেছেন আপনার সঙ্গে আমি একমত।
আসলেই ছোট বেলা এমন আইসক্রিম কিনে খাওয়ার অনেক স্মৃতি আমাদের রয়েছে। তবে এখন আর আগের মতো তেমন আইসক্রিম ওয়ালাদের দেখা যায়না। আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। তবে হুট করে আইসক্রিম ওয়ালার অসুস্থ হয়ে পড়ার বিষয়টি জেনে অনেক খারাপ লাগলো। তবে আপনারা সব বান্ধবী মিলে আইসক্রিম ওয়ালা বাসায় গিয়ে অসুস্থ দেখে আপনাদের কাছে থাকা সব টাকা দিয়ে এসেছেন জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থেকে সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ।