জন্ম না দিয়েও মা হওয়া যায়, বোনের ছেলে মেয়ে মানে নিজের সন্তান।💐প্রিয়@shy-fox 10% beneficiary।💐
আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হলাম।আপনারা হয়তো টাইটেল দেখেই বুঝতে পারছেন।চলুন তাহলে শুরু করি আসলে বুঝতে পারছি না কি ভাবে শুরু করবো।
আসলে বাবা মারা গেছেন চার বছর হয়নি তাঁর মধ্যে আবার বাবার মতো বড় বোন।
৬ জুলাই আমার মেজু আপু কুমিল্লা মুক্তি হসপিটালে যায়। আপুর বাবুর পজিশন ভালো ছিল না। তাই সব মিলিয়ে আপুকে ১০ ব্যাগ ব্লাড দিতে হয়েছে।হসপিটালে যাওয়ার সময় ৬ ব্যাগ দিয়েছে।৬ জুলাই আপু সিজাররের আরও চার ব্যাগ দিবে বলছেন। আপু ৬ জুলাই আপু সিজার করার প্লেন করে যায়নি।আপুর প্লেন ছিল বাবুর পজিশন ভালো আছে কি না দেখবে শুধু।আর সিজার করতে রিতা আপুর বাসায় গিয়ে চট্টগ্রাম।পরে মহিলা ডাক্তার দেখে বলে পজিশন ভালো আছে সিজার করতে পারবে।আপু আমাকে ফোন দিয়ে বলে আপুর ছেলেকে নিয়ে হসপিটাল চলে যেতে। আমিও তাড়াতাড়ি করে বাসা থেকে বের হয়ে চলে যায় আপুর ছেলে কে নিয়ে হসপিটালে।আমি হসপিটালে গিয়ে দেখি আপুকে স্যালাইন দিয়ে রেখেছে সন্ধা ৬ টাই সিজার। এরপর সন্ধা ৬ টা হওয়ার সাথে সাথে আপুকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। আমি আমার বোনের ছেলে দুলাভাই অনেক কান্না করছিলাম।কারণ ছিল আপুর পজিশন টা ভালো না আর এইরকম পজিশন হাজারে এক জনের হয়।এরপর আলহামদুলিল্লাহ ছোট বাবু আসে বাবু ও আপু একদম সুস্থ ছিল। একটি নার্স বাবুকে কোলে করে নিয়ে আসে এরপর সবার প্রথমে আমার কোলে দেয়।এই বাবুটা একদম আপুর মতো হয়েছে মাশাআল্লাহ।
এরপর আপুকে নিয়ে আসে অবজারভেশনে ওইখানে রেখে দুই ব্যাগ ব্লাড দেয়।আর বাবু অনেক কান্না করছিল খিদায় পরে অবজারভেশনে নিয়ে খাওয়ায়।বাবুকে প্রথমে অবজারভেশনে নেওয়ার পর আপু বলছিল আমার ছেলে সুন্দর হইছে কি আমার মতো? আমি বলি হ্যা আপু তোমার এই ছেলে তোমার মতো হইছে।আপু শুনে অনেক খুশি হয়।এরপর কেবিনে নিয়ে যায় বাবুকে আর আপু অবজারভেশনে সকালে কেবিনে নিয়ে আসবে। এরপর কেবিনে যাওয়ার সাথে সাথে শিশু ডাক্তার এসে বাবুকে দেখে যায় ওর কোনো সমস্যা আছে কি না আলহামদুলিল্লাহ কোনো সমস্যা ছিল না। তবে বাবু নয় মাসে সিজার হওয়াতে ডাক্তার বলেছেন শ্বাস নেয় কি না ঠিক ভাবে কিছু সময় দেখতে হবে এই বলে ডাক্তার চলে যায়। এরপর সারারাত একটুও ঘুমাইনি একটু পর পর দেখি বাবু শ্বাস নেয় কি না।আমার প্রচুর পরিমানে মাথা করছিল সকাল হতেই আপুকে নিয়ে আসে কেবিনে।এরপর আপুর কাছে বাবুকে দিয়ে আমি প্রায় ৪ ঘন্টা ঘুমায়।হসপিটালে তিনদিন ছিলাম তিন দিনের মধ্যে বাবু শুধু খাওয়ার সময় আপুর কাছে যেতো আর না হয় সব সময় আমার কাছেই।
তিনদিন পর আপুকে রিলিজ দেয়। আপুর শশুর বাড়িতে চলে আসি বাবুকে নিয়ে। এরপর যেহেতু ঈদের আগের দিন ছিল তাই আমাদের বাসায় অনেক কাজ ছিল আর আম্মু ও অনেক অসুস্থ ছিল।তাই আমার বাসায় যেতেই হতো আর বাসায় যাওয়ার সময় আপুর জন্য খুব মায়া লাগছিল কখনও এতো মায়া লাগেনি। পুরো রাস্তা আমি কান্না করতে করতে বাসায় যায় আর যাওয়ার সময় আপুকে বার বার বলি আপু তোমার সমস্যা হলে আমাকে ফোন দিবে।
ঈদের দিন খুব সুন্দর করে কাটে আপুর সাথেও কথা হয় আপু ভালো আছে। ঈদের পর দিন আপুকে অনেক ফোন দেই কিন্তু আপু একটা ফোনও রিসিভ করে নাই। আমি ভাবছি আপু ঘুমাচ্ছে হয়তো রাতে ঘুমাতে পারে না তাই হয়তো ফোন রিসিভ করছে না।এরপর সন্ধা ৭ টাই আমার ফোনে আপুর হসপিটালের একটি ছেলে ফোন দেয়।আমাকে বলে আপুকে নাকি হসপিটালে নিয়ে আসছে আপুর শরীল ভালো না।আমি শুনে তাড়াতাড়ি পাগলের মতো করে বাসায় বের হই বাসা থেকে। এরপর ৩০ মিনিটের মধ্যে আপুর হসপিটালে যায়। গিয়ে দেখি আপু শুয়ে আছে আর দুলাভাই কান্না করছে। আমি আপুর হাতে ধরে বলছিলাম আপু ওঠো না আপু ওঠো না তোমার কি হইছে। আপুর হাত তখনও অনেক গরম ছিল আমি ভাবতেই পারি নাই যে আপু মারা গেছেন।😭😭😭সবাই আমার আপুর জন্য দুআ করবেন আল্লাহ যেনও আমার আপুকে জান্নাতুল ফেরদৌসে দান করে আমিন।আর ১১ জুলাই থেকে জন্ম না দিয়ে ও দুই ছেলের মা হয়ে গেলাম। কারণ সবাই বলে মায়ের শরীলের গন্ধ নাকি খালামনির শরীলে পায়।দুআ করবেন সবাই আল্লাহ তায়ালা যেনও ভালো রাখে সুস্থ রাখেন দুইটা নিষ্পাপ ছেলে কে😭😭😭।ছোট বাবুর বয়স আজকে ২৪ দিন। ২৪ দিনে বাবুর অনেক জ্বর আসছে। এখন আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দুয়াতে ভালো আছে।
আর ১১ জুলাই থেকে বাবুকে ফিটার খাওয়ানো থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সব আমার দায়িত্ব হয়ে গেছে।আর বাবু নয় মাসে সিজার হওয়াতে এখন তাকে প্রি বায়োমিল দুধ খাওয়ানো হয়।এই দুধ টা তেমন একটা পাওয়া যায় না।
অনেক দিন পর আপনাদের সাথে একটি ব্লগ শেয়ার করতে পেরে আমার কাছে অনেক ভালো লাগছে।আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। সবাই আমার বোন আর বোনের ছেলেদের জন্য মন থেকে দুআ করবেন।
ফটোগ্রাফার | @santa14 |
---|---|
স্মার্ট ফোন | ViVo y11 |
স্থান | https://w3w.co/mockery.extent.seahorse |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অনেক দিন পর আপু আপনার পোস্ট দেখলাম।আপু বাবুর জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং ভালোবাসা রইল। আল্লাহ ওকে সুস্থ রাখুক সবসময়ই। আপনাকেও অনেক ধৈর্য ধারন করার ক্ষমতা দেক।ধন্যবাদ
আসলেই বেদনাদায়ক ঘটনা। বাবুটার জন্য বেশিই খারাপ লাগছে। আর আপনার বোনের জন্য দোয়া করি যেন সৃষ্টিকর্তা তাকে সে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করে।
প্রথমে আপুর জন্য অনেক অনেক দোয়া থাকবে আল্লাহ যাতে উনাকে বেহেস্ত নসিব করে।
আর এটা ঠিক বলেছেন জন্ম না দিয়েও মা হওয়া যায়, বোনের ছেলে মেয়ে মানে নিজের সন্তান এই অনুভূতিটি অনেক খালাম্মারাই নিয়ে থাকেন। আর কথায় আছে না মায়ের বোন খালা, মায়ের চাইতে ভালা। মজা করলাম আপু ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার আপুর কথা শুনে তখন বেশ খারাপ লেগেছিল। অনেকদিন পরে আপনার পোস্ট দেখতে পেলাম। বাবুর জন্য অনেক দোয়া রইল। আশা করি ও আপনার কাছে ভালো এবং সুস্থ থাকবে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
খুবই খারাপ লাগলো আপু সত্যি বাবুটার জন্য বেশি খারাপ লাগলো। তবে মা না থাকলেও খালা আছে এটাও আসলে ওর জন্য অনেক বড় কিছু। দোয়া রইলো বাবুর জন্য যেন মানুষের মতো মানুষ হয়। আর আপনার আপুর জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল যেন আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করেন।
কথাটা দারুণ বলেছেন আপু। এবং এটা একেবারে সত্য একটা কথা। বাচ্চা এবং মা দুজনের জন্য শুভকামনা। আশাকরি দুজনই সুস্থ থাকবে। এবং বাচ্চাটা অনেক কিউট হয়েছে।।
আপু আপনার বোনের জন্য দোয়া রইল। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করেন। সেই সঙ্গে আপনার জন্য আমার পক্ষ থেকে রইল অসংখ্য ভালোবাসা। আসলে বোনদের মধ্যে যে আত্মিক ভালোবাসা থাকে তা ভাইয়ের মধ্যে কখনো থাকে না। শুধুমাত্র বোনের পক্ষেই সম্ভব বোনের ছেলে মেয়েকে নিজের ছেলে মেয়ের মত মানুষ করা। কি আজব এই দুনিয়া সন্তান না জন্ম দিয়েও মা হয়ে গেলেন। আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।