একটু অসুস্থতা জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়া।
আসলামুআলাইকুম ......
আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন নতুন সদস্য,এই প্লাটফর্মের সাথে যুক্ত হয়েছি। সত্যি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যুক্ত হতে পেরে আমার কাছে অনেক ভালো লাগতেছে। আজকে আমি আপনাদের সাথে , অসুস্থতা জন্য ডাক্তারের কাছে গিয়ে ফেরার পথে আমার চোখের দেখা একটি ভালোবাসার গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
বেশ কিছুদিন আগে আমি অসুস্থ হয়েছিলাম।তাই আমাকে ডাক্তার দেখানোর জন্য রংপুর শহরের নিয়ে যাই,সাথে আমার আম্মু ছিলো।আমাদের বাড়ি থেকে রংপুর শহরের যেতে প্রায় ৪০ মিনিট সময় লাগে। ডাক্তার ৪ টা থেকে রোগী দেখা শুরু করে,তাই আমার বিকেল ৩ টায় বাসা থেকে বের হয়ে পরি রংপুর উদ্দেশ।
আমাদের হসপিটালে পৌঁছাতে ৪ টা বেজে যায় , সেখানে গিয়ে দেখতে পায় আমাদের মতো অনেকেই ডাক্তার দেখানো জন্য ডাক্তারের চেম্বারের সামনে বসে আছে।আমার ফোন দিয়ে আগে থেকেই সিরিয়াল দিয়ে রেখেছে।তাই নাম ডাকার জন্য অপেক্ষা করলাম। কিছুক্ষণ পরে আমার নাম ডাকলো আমি আম্মুকে নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলাম।
ডাক্তারকে সব সমস্যার কথা বলা শেষ এ,ডাক্তার বেশ কয়েকটি টেস্ট লিখল।এখন তো টেস্ট সারা কোনো ওষুধ এই দেয় না।তাই আমরা টেস্ট গুলো করলাম। দুঃখ বিষয় টেস্ট করতে যতোটা না সময় লাগলো টেস্ট এর রিপোর্ট দিতে ২ ঘন্টা সময় নিলো।রিপোর্ট নিয়ে আবার ও ডাক্তারের কাছে গেলাম। আলহামদুলিল্লাহ রিপোর্ট পজেটিভ আছিলো ।যে সমস্যা কিছু দিন ওষুধ খেলেই ঠিক হয়ে যাবে। এরপর ডাক্তার ওষুধ লিখে দিলো। তারপর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৮.৩০ মিনিট বাজে। এরপর হসপিটাল থেকে বেরিয়ে পড়লাম বাসার উদ্দেশ্যে।
সব কাজ শেষে শাপলা চত্ত্বরে বাসে উঠছিলাম এই রাত ৯ টায়। টার্মিনাল এ এসে যখন বাস দাড়ালো,,দেখলাম এক ভাই তার ভালোবাসাকে বিদায় দিতে আসছে। বাস টার্মিনালে বাস টি বেশ অনেকটা সময় দাড়িয়ে ছিলো। ভাই টা কি মায়া ভরা দৃষ্টিতে বোনটাকে দেখে যাচ্ছিলো..!
এতো রাত তাই হয়তো তিনি চিন্তিত ছিলো।
বোনের মুখ নিকাব দিয়ে ঢাকা ছিলো।তবুও দেখলাম দুজনের পলক পড়ছে না। একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে৷ ভাইয়ের চোখ ছলছল..!
আমার মনে হলো তার চোখজোড়া ইশারায় বলছিলো 'তুমি যাচ্ছো,যেতে দিতে মন চাচ্ছে না যে;চিন্তা হচ্ছে '।
পরে দেখলাম ভাই তার পকেট থেকে ফোন বের করে কানে গুজলো,তৎক্ষনাৎ বোন টা ও ফোন ধরলো। দুজনে ফোন কানে দিয়ে চুপচাপ হয়ে আছে আর পুরো শহর জুড়ে ব্যস্ততায় ঘেরা।
আমার অসুস্থতা মাঝে ওদের দিকে তাকিয়ে দেখছিলাম।কেমন যেন! মনে হচ্ছে এই তো ভালোবাসা 🌼 মন চাচ্ছিলো ভাইকে বলি 'ভাই কেনো এতো কষ্ট করছেন তাকে যেতে দিয়ে?উঠে পড়ুন;আমি নাহয় আপনাদের নিয়ে আরেকটু কল্পনা করতে পারবো'।কিন্তু বলতে পারিনি। চুপচাপ দুজনকেই দেখে গেলাম। মায়া... বড্ড মায়া।
বাস ছেড়ে দিলো,, ভাইয়ের বুকের চঞ্চলতা আরো বেড়ে গেলো,,,,। জ্যাম রাস্তায় বাস ধীরে চলছিলো। বোনের চোখে পানি। ভাই নির্জীব হয়ে পা বাড়াচ্ছে আর জানালা দিয়ে তাকিয়ে আছে তার ভালোবাসার দিকে।
আমি তৃতীয় পক্ষ,,যে সবটা একদৃষ্টিতে অবলোকন করছি। কখন যে আমার চোখ গড়িয়ে পানি এসেছে টের ই পাইনি। বাস প্যাসেন্জার উঠানোর জন্য থামলো,, ভাই এগিয়ে আসলো। আবারো তার চাহনি। তার চাহনিতে এটা স্পষ্ট,, সে মনে মনে বলছে 'চিন্তা হচ্ছে যে;একা যেতে পারবা?'।
তারপর আর কি!! বাস তার নিজ গতিতে ছেড়ে দিলো। ভাই এগোতে এগোতে থেমে গেলো। বোন তার চোখ মুছলো। আর আমি! আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম 💔
ভাবলাম ভালোবাসা সুন্দর। সত্যিই অনেক সুন্দর ''; ভয়ংকর রকমের সুন্দর 🖤
তারিখ:১৪-০৮-২০২৪ ইং
সময়:রাত ৯:1৫ মিনিট
Device | Infinix hot 12 play |
---|---|
Camera | 13 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
অসুস্থতায় মানুষকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দেয়। একদিকে যেমন হয়রানের শিকার হতে হয় আরেকদিকে আর্থিক খরচ। তবুও যদি দ্রুত সুস্থ হয়ে যাওয়া যায় তাতেই মনের প্রশান্তি মেলে। দোয়া করি আপনাদের জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া।