||পুজোয় 'টাকিতে' রাইডিং কাম ট্যুর এর কাহিনী || ১০% বেনিফিট @shy_fox এর জন্যে
নমস্কার বন্ধুরা আশাকরি সবাই ভাল আছেন।বেশকয়েকদিন পরে আমি প্লাটফর্মে ফিরলাম।
পারিবারিক এবং শারীরিক কিছু কারণে বিগত একটা লম্বা সময় আমার কোন অ্যাক্টিভিটি ছিল না। তার জন্য প্রথমেই আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব গত দু'বছর আগে আমার ছোট্ট একটি বাইক রাইডিং কাম ট্যুর এর গল্প। ২০২০ সালের দুর্গা পুজাতে আমি ও আমার দুই দাদা মিলে 'টাকি'তে ঘুরতে যাই। সেই টাকির খুঁটিনাটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব।
যেহেতু ২০২০ সাল টা খুব খারাপ গেছিল কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয়নি তাই অনেকদিন ধরেই আমাদের ছোটখাটো একটা ট্যুরের প্ল্যান হচ্ছিল।
তারপর আমরা ঠিক করলাম টাকি যাব।
সেখানকার বিশেষত্ব হচ্ছে,দূর্গা পূজার দশমীর দিন ইছামতি নদীতে সেখানকার সমস্ত ঠাকুর বিসর্জন দেওয়া হয়। আর এখানে সবার থেকে মজার বিষয় হচ্ছে ইছামতি নদীর এপারে ভারত ওপারে বাংলাদেশ। খুব বেশি হলে দেড়শো থেকে একশো আশি মিটার চওড়া হবে নদীটি,যার ফলে ওপারের জিনিস মোটামুটি স্পষ্ট দেখা যায়।
তো এরপর আমরা প্ল্যানমাফিক ২০২০ সালের ২৪ শে অক্টোবর দুর্গাপূজার অষ্টমীতে বেরিয়ে পড়ি।আমরা সকাল ছ'টায় তিন ভাই মিলে দুটি বাইকে করে বাড়ি থেকে রওনা দিই।
রওনা দেওয়ার দের-দুই ঘণ্টা পর আমরা একটি দোকানে দাঁড়িয়ে ব্রেকফাস্ট করে নিলাম,কারণ ওতো সকালে আমরা কেউই বাড়ি থেকে সেরকম কিছু খেয়ে বেরোতে পারিনি।ফলে একটি খাওয়ার দোকান দেখে দাঁড়িয়ে আমরা ডিম-টোস্ট,কলা,কেক,চা, বিস্কুট এসব খেয়ে নিয়ে ১০ মিনিট মতো রেস্ট নিয়ে আবার যাত্রা শুরু করলাম।
[যে দোকানে আমরা ব্রেকফাস্ট এর জন্য দাঁড়িয়েছিলাম,সেখানে দেখলাম এই বয়স্ক ভদ্রলোক একটি জাল বুনছে । সেই জালটির ব্যবহার জানার জন্য আমি তাকে জিজ্ঞেস করায় সে বলল সে একজন জেলে, মাছ ধরার জন্য জাল বুনছে।একটি নতুন জিনিস আমি দেখতে পেলাম তাই মনে হলো ফটো তুলে রাখি। তাই আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে নিলাম।]👇🏻
আমাদের দুটি বাইক এর মধ্যে আমি এবং আমার এক দাদা ছিলাম একটি বাইকে, আরেকটি বাইকে আরেক দাদা যাচ্ছিল আমাদের তিনজনের লাগেজ নিয়ে।
আমাদের বাইকে আমার দাদা ড্রাইভ করছিল এবং আমি পেছন গুগল ম্যাপ অন করে রাস্তার ডাইরেকশন দিচ্ছিলাম আর পেছনে ছিল আমাদের আরেকটি বাইক।
এভাবে আরো দুই ঘন্টা রাইডিং এরপর আমরা আবারো একটি ছোট চা-বিরতি নিয়েছিলাম ১০ মিনিটের জন্য এবং তারপরে আবার আমাদের রাইড শুরু হয়।
এভাবে আমরা দীর্ঘ ৫ থেকে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা রাইডিং এরপর আমরা আমাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাই।
সেখানে আগে থেকেই আমাদের হোটেল ঠিক করা ছিল। আমাদের হোটেলের চেকইন টাইম ছিল বারোটা। নির্দিষ্ট সময়ের কুড়ি মিনিট আগেই আমরা সেখানে পৌঁছে যাই এবং রেজিস্টার করে রুমে ঢুকে পড়ি।
হোটেলে আমাদের রুম নেওয়া হয়েছিল দ্বিতীয় তলে।
(আমার কাছে আমাদের তোলা হোটেলের কোনো ছবি না পাওয়ায় হোটেলের এই ছবিটি আমি গুগল থেকে কালেক্ট করেছি)
আমরা যে হোটেলটি বুক করেছিলাম তার নাম 'দিশা গেস্ট হাউস'।
সেই হোটেলটি একদম ইছামতি নদীর তীরে অবস্থিত।হোটেলটির এক-তৃতীয়াংশ নদীর ওপরে পিলার দিয়ে তৈরি হয়েছে, হোটেলের ব্যালকনি থেকে দেখা যায় ইছামতি নদী এবং নদীর অপর প্রান্তেই বাংলাদেশের ভূমি।
তো সেখানকার সমস্ত হোটেলের মধ্যে আমাদের হোটেলের একটি একক বৈশিষ্ট্য ছিল, আর তা হল হোটেলের লাগোয়া নদীর যে একটি মাত্র ঘাট,মেরে কেটে যার ৬ ফুট দূরত্ব, সেই ঘাট দিয়েই টাকির সমস্ত ঠাকুর নদীতে বিসর্জন হয়। যেহেতু টাকি একটি বর্ডার এরিয়া,তাই সেখানকার সরকার পুরো শহরের একটি মাত্র ঘাটেই বিসর্জনের অনুমতি দিয়ে রেখেছেন। অর্থাৎ আমাদের হোটেলের ব্যালকনিতে বসে বিসর্জন দেখা যাবে।
[হোটেলের ব্যালকনি থেকে ইছামতী নদীর দৃশ্য]👇🏻
[নদীর ডান পারে বাংলাদেশ দেখা যায়]👇🏻
আমাদের মোট চারজনের যাওয়ার কথা ছিল সেই হিসেবে আমরা মোট দুইটি রুম নিয়েছিলাম ।হোটেলে ঢোকার সাথে সাথে দুটি রুমের চাবি আমাদের দিয়ে দেয়।
আমাদের চার নম্বর জনের কিছু কাজ থাকায় সে আমাদের সঙ্গে সকাল বেলা রওনা দিতে পারেনি,তার দুপুরবেলায় রওনা দেওয়ার কথা ছিল।
এরপর রুমে ঢুকে আমরা ফ্রেশ হয়ে আধ ঘন্টা রেস্ট নিয়ে সেখানকার ঠাকুর দেখা আশপাশের এড়িয়া ঘোড়া এবং দুপুরের খাওয়ার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি।
হোটেল থেকে বেরিয়ে সর্বপ্রথম আমরা গেলাম 'টাকি রাজবাড়ী' সেখানকার দুর্গা প্রতিমা দর্শনে।
[ টাকি রাজবাড়ী] 👇🏻
[ টাকি রাজবাড়ীর দুর্গা প্রতিমা]👇🏻
সেখানে দেখলাম একটি ছোট জলাশয়ে টাকির ভাসানের যে ঐতিহ্য তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে থিম এর মাধ্যমে।
[টাকি রাজবাড়ীর থিম]👇🏻
তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে আশে পাশের আরও কয়েকটি ছোটখাটো দূর্গা মন্ডপ দর্শন করে আমরা সেখানকার আরো একটি উল্লেখযোগ্য স্থানে গেলাম,যার নাম 'টাকি ঘোষ বাড়ি'।
[টাকি ঘোষ বাড়ির]👇🏻
সেখানকার দুর্গা প্রতিমা দর্শন করলাম।
এরপর আরো কয়েকটা ছোটখাট পূজামণ্ডপ ঘুরে ঘুরতে ঘুরতে আমাদের প্রায় বেলা তিনটে বেজে গেছিল। ফলে দুপুর বেলায় খাওয়ার টাইম হয়ে যাওয়ায় সেদিন কি আমরা আর বেশি ঘুরিনি।
তারপর সেখানকার লোকাল লোকজনের কাছ থেকে একটি ভালো খাবার হোটেলের খোঁজ নিয়ে আমরা সেখানে খেতে যাই।
যেহেতু আমরা বাইক নিয়েই পুরো শহর ঘুরছিলাম তাই খুব সহজেই আমরা আমাদের প্ল্যানমাফিক জায়গায় যেতে পারছিলাম।
খাওয়া দাওয়া করতে করতে আমাদের বেশ বিকেল হয়ে যায়। তারপর আমরা সবাই হোটেলে ফিরে যাই। হোটেলে ফিরে আমরা একটু খানি ঘুমিয়ে নিই, তারপর সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ আমাদের টিমের চার নম্বর মেম্বার,যার সন্ধ্যেবেলা আসার কথা ছিল সে হোটেলে পৌঁছে যায়। সারা সন্ধ্যা থেকে রাত অব্দি আমাদের বিভিন্ন গল্প-গুজব করে আড্ডা মারতে মারতে কেটে যায়।
এভাবেই আমাদের ট্যুরের প্রথম দিনটি কাটে।
বাকি দিনগুলির কথা আরেকটি পর্বে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব।
প্রত্যেকটি ফটো-MI-A1 মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় তোলা।
এবং প্রত্যেকটি ফটো 'টাকি' ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে গৃহীত।
আজকে তোমার Viva দেওয়ার শেষ সুযোগ কিন্তু তোমাকে ডিসকর্ড সার্ভারে মেনশন করতে পারলাম। DM করেছি কিন্তু মেসেজ যায়নি।
অনেক ধন্যবাদ দাদা আমাকে এভাবে সাহায্য করার জন্যে।
আপনি লেভেল ওয়ান পোস্ট করেছেন এক মাসের বেশি। লাস্ট পোস্ট করেছেন ২৭ দিন আগে। এমন অনিয়মিত হলে তো সমস্যা। আপনি কি আপনার সমস্যার কথা কাউকে জানিয়েছিলেন? আপনার উচিত ছিল আমাকে জানানো। যেহেতু আপনি লেভেল ওয়ান এ আছেন। এই ধরনের পোস্টে what3words লোকেশন কোড এবং ক্যামেরা ডিটেলস দিতে হবে।
আসলে দাদা,আমার পারিবারিক কিছু কারণে আমি কোনো কাজ করতে পেরেছিলাম না।আশাকরি ভবিষ্যতে আমার এরকম ভুল হবে না,আমি আগে থেকে আপনাদের জানিয়ে দেবো।
আর আমি পোস্ট এডিট করে লোকেশন এবং ক্যামেরা ডিটেলস দিয়ে দিচ্ছি।
আপনাকে ডিসকর্ড এ পাওয়া যাচ্ছে না। আপনি এই মেসেজটি পড়া মাত্রই ডিসকর্ডে জয়েন করবেন এবং আমাদের মডারেটর @kingporos এর সাথে যোগাযোগ করবেন। আজ রাতে আপনার লেভেল ২ এর ভাইভা নেয়া হবে।
টেকনিক্যালি কোনো ভুলবশত আমি সার্ভার থেকে বেরিয়ে গেছিলাম,আমি @kingporos দাদার সাথে যোগাযোগ করে আবার জয়েন হয়েছি।
আর সেদিন সকাল থেকে আমার পরীক্ষা থাকায় আমি এখানে অন হতে পারিনি ফলত আপনাদের কমেন্ট খেয়াল করিনি দাদা।