|| মুর্তির তীরে কিছুক্ষণ | ডুয়ার্স সফর | পর্ব-০৭ | ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্যে ||
ডুয়ার্স সফরের শেষ পর্বে আমি আপনাদের ট্রাইবাল ডান্স এর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত একটি সন্ধ্যের কথা শেয়ার করেছিলাম। সেটি ছিল আমাদের ট্যুরের চতুর্থ দিন। আজকে বলবো পঞ্চম দিনের সকালের সুন্দর একটি মুহূর্তের কথা।
আমরা যে রিসর্টে ছিলাম, আগেই বলেছি সে বিষয়টি ছিল নিউমাল বাজারের 'চালসা' নামক শহরে। সেই শহরের পাশ দিয়েই বয়ে চলেছে 'মূর্তি' নদী। তো আমরা ঠিক করি পঞ্চম দিন সকালবেলা সবাই মিলে 'মূর্তি' নদীর ধারে যাব।
আসলে এই দিনটা ছিল আমাদের ট্যুরের অন্তিম দিন। এই দিনের আমাদের সিডিউল ছিল দুপুর বারোটায় রিসোর্ট থেকে বেরিয়ে ছোট্ট একটি জঙ্গল সাফারি। তাই সকাল থেকে বারোটা অব্দি সেরকম কোনো কাজ ছিল না। আমরা আগের দিন রাত্রে বেলা ঠিক করি কয়েকজন মিলে ভোর ভোরের দিকে মূর্তি নদীর ধার থেকে ঘুরে আসবো। ঠিক হয় সকাল ছয়টায় ঘুম থেকে উঠে সাড়ে ছটার সময় সবাই বেরোবো। মোটামুটি আমরা সাত আট জন ঠিক করি যে সকালবেলায় বেরোবো, মূলত ছোটদের নিয়ে ঘুরে আসা হবে।
তো সেই মতো সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে সবাই যখন তৈরি হয়ে বেরোচ্ছি দেখা যাচ্ছে সবমিলিয়ে ১৬-১৭ জন লোক যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে গেছে।
তো যাই হোক আমরা আমাদের হোটেল থেকে বেরিয়ে সামনের রাস্তায় টোটো ধরার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। মূর্তি নদীটা আমাদের হোটেল থেকে মোটামুটি দেড় কিলোমিটার দূরত্বে ছিল। কিন্তু সমস্যা হল সকালবেলা সেখানে কোন টোটো পাওয়া যাচ্ছিল না। আমরা অপেক্ষা করতে করতে প্রায় এক ঘন্টার উপরে হয়ে গেছিল। ততক্ষণে সারা রাস্তায় একটু টোটো দেখতে পাওয়া গেল না। শুধুমাত্র পায়ে হাটা মানুষ এবং কিছু জন সাইকেল নিয়ে কাজে যাচ্ছে।
প্রায় এক ঘন্টারও অল্প কিছু সময় পর একটি টোটোর দেখা পাওয়া গেল। কিন্তু আমাদের অত জন লোকে তো একটা টোটো সম্ভব নয়। সেই টোটওয়ালা কে বলা হলো তার পরিচিত আরও তিনটি টোটো দেখে নিয়ে আসতে। এভাবে আরও ১৫ মিনিট সময় কেটে গেল। তারপর চারটি টোটো অবশেষে পাওয়া গেল। এরপর আমরা সবাই মিলে চারটি টোটো করে রওনা দিয়ে দিলাম মূর্তি নদীর উদ্দেশ্যে। টোটো তে পড়ে মোটামুটি মিনিট পনেরো সময় লাগলো পৌঁছাতে।
সেখানে পৌঁছে ভোর বেলায় নদীর অপরূপ শোভা থেকে চোখ জুড়িয়ে গেল। নদীটি মোটামুটি ৭০ থেকে ৭৫ মিটার চওড়া। নদীর পাড়ে ছোট বড় পাথর ভর্তি। চওড়া কম হলেও নদীর তে স্রোত প্রচন্ড পরিমাণেই ছিল। সারা বছর কম বেশি সময় ভালোই স্রোত থাকে নদীতে। নদীর স্রোতের চটে সেখানকার পাথরগুলি ক্ষয়ে গিয়ে সব গোলাকার আকৃতি ধারণ করেছে। নদীর উপরে একটি ব্রিজও ছিল, যেটি নদীর এপার ওপারের সংযোগের মাধ্যম।
নদীর পাড়ের পরিবেশটা সত্যিই খুব মনোরম ছিল। সকালবেলা হালকা ঠান্ডা ঠান্ডা ওয়েদার, এখানে কোন শব্দ দূষণ নেই হালকা স্নিগ্ধ হাওয়া হয়ে চলেছে সর্বক্ষণ সাথে নদীর জলের শব্দ। ইচ্ছে করছিল না সেখান থেকে ফিরে যেতে। সেখানে আমরা মোটামুটি এক ঘন্টা সময় কাটালাম। অনেক আনন্দ করলাম,ফটো তুললাম। তারপরে সেখান থেকে আমরা আবার হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
তো বন্ধুরা এখানেই শেষ করছি আজকের গল্প।
স্থান | মূর্তি নদীর তীর,চালসা,নিউ মালবাজার |
---|---|
ক্যামেরা পরিচিতি | POCO M3 |
দিন | 4th June,2022 |
ভাইয়া ঘুরতে আমারও কুব ভালো লাগে, ট্যুরের দিন মানেই অন্য রকম বিনোদন, আপনার লেখা এবং ফটোগ্রাফি দেখি এটা স্পষ্ট যে আপনি অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছে, মুর্তি নদীর পিক গুলো অস্থির ছিলো ভাইয়া, এতো সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে ভাই ঘোরাঘুরি করলে মন খুব ভালো থাকে।
জেনে ভালো লাগলো আপনারও ঘুরতে ভালো লাগে।
ভালো থাকবেন, শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্যে।