|| আমার দৈনন্দিন জীবন ||
আজকে আমি সম্পূর্ণ অন্য ধরনের একটা লেখা শেয়ার করতে চলেছি।এটা আমার নিজের জীবনের কথা নিয়ে।বর্তমানে আমার সাথে যা হচ্ছে এরকম কিছু কথা।
গত কয়েকদিন ধরেই আমি নিয়মিত পোস্ট করতে পারছি না, তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। প্রথমেই কমিউনিটির এডমিন মডারেটরদের কাছ থেকে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এই অনিয়মিতার কারণে। আসলে হঠাৎ করেই আমার ওপরে বেশ কিছু দিক থেকে একটু বেশি প্রেসার চলে এসেছে। পড়াশোনার প্রেসার তো রয়েছেই, পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে চাকরির জন্য পড়াশোনা। আমি যেহেতু প্রাইভেট কলেজে পড়ি আমাদের প্রতি কোর্সের শেষের বছরে আমাদের কলেজে অনেক কোম্পানি আসতে শুরু করে তাদের রিক্রুটমেন্ট এর জন্য, কারণ তারা আমাদের মতন ফেসার্সদের দের লক্ষ্য করে। অলরেডি আমার কলেজেও এরকম কোম্পানি আসা শুরু হয়ে গেছে গত একমাস ধরে। ফলে তার জন্য আলাদাভাবে প্রিপারেশন নিতে হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহেই একটা-দুটো করে পরীক্ষা থাকছে, কোন কোন সপ্তাহে তিনটে পরীক্ষাও থাকছে। যার জন্য একটু চাপ পড়ে যাচ্ছে। এটা গেল পড়াশোনার দিকের। এবার বলি আমাদের যে NGO, তার কথা। পুজোর মরশুমে আমরা বেশ কিছু দুস্থ বাচ্চাদের নতুন জামা কাপড় দিয়ে থাকি, যারা আমার আগের পোস্টটি পড়েছেন তারা হয়তো এই কর্মকান্ডের ব্যাপারে বিশদে জানেন। এই কাজের জন্য আমাকে প্রায় প্রতিদিনই সময় বের করতে হচ্ছে ৩-৪ ঘন্টা করে।
মূল অনুষ্ঠান যেইদিন গুলোতে থাকে সেইদিনটা পুরোটা তো চরম ব্যস্ততা থাকেই।তাছাড়াও অনন্যা দিন গুলিতে থাকে মূল অনুষ্ঠানের প্রিপারেশন নেওয়া।
যেমন ধরুন, আমরা যে সমস্ত ছোট ছোট শিশুদের জামাকাপড় দিচ্ছি,এই কাজের কথাই বলি।একেকটি জায়গায় আমাদের গড়ে ১৫০ শিশুকে দিতে হয়। এবার এই ১৫০ জন শিশুর বয়স তো আর সমান নয়।কারোর বয়স ৫ বছর,কারোর ৮ বছর,কারোর আবার ১৩ বছর,কারোর হয়তো ২ বছর।এবার সমস্যা হোলো এই জামাকাপড় আলাদা করা।এই বয়স দেখে জামাকাপড় আলাদা করা যেমন সময়সাপেক্ষ তেমনই মাথায় প্রেসার পড়ে।এরকম ধরুন প্রতিদিন ৩-৪ ঘন্টা করে করা,তারমধ্যে ছেলে ও মেয়েদের আবার আলাদা করা।সব মিলিয়ে প্রচন্ড রকম একটা চাপের পুরোটাই।
এই গেলো আমার NGO এর কথা।এবার একটু কলেজের কথায় আসি।
এরই মধ্যে আবার কলেজে পালন করেছিলাম শিক্ষক দিবস। সেখানেও বেশ ব্যস্ত থাকতে হয়েছিল।
শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আমার কলেজের বন্ধুরা প্ল্যান করছিল যে এই বছরটা একটু অন্যভাবে উদযাপিত করা। বেশিরভাগ বন্ধু-বান্ধব স্কুল লাইফেই শেষ শিক্ষক দিবস পালিত করেছে। কলেজে উঠে আর সেভাবেই দিনগুলি পালন করা হয় না, আমার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু যেহেতু এটাই আমাদের কলেজের শেষ বছর তাই সবাই মিলে ঠিক করেছিল এই বছরে কিছু করতে। বন্ধুরা ঠিক করে তারা আমাদের স্ট্রিমের জুনিয়রদের সাথে একসাথে হয়ে কিছু নাচ গান কবিতা আবৃত্তি এগুলোর মাধ্যমে দিনটি স্যার-ম্যাডামদের সাথে পালিত করবেন।
সেইমতো তারা রিহার্সেল দিতে লাগে।
মজার বিষয় হল কয়েকটি বন্ধু বান্ধব মিলে আমাকে জোর করতে থাকে নাচ করার জন্য। এখন বিষয়টা হলো আমি তো জীবনে কোনদিন নাচ করিনি। এক সপ্তাহের মধ্যে প্র্যাকটিস করে পারফর্ম করাটা বেশ একটা চ্যালেঞ্জিং বিষয়ে হয়ে যাচ্ছিল আমার কাছে। কিন্তু আমাদের ক্লাসেই দুই বান্ধবী ছিল যারা ছোট থেকে নাচ শেখে, তারা আমাকে অনেক ভাবে অনেক সাপোর্ট করতে থাকে নাচটা প্র্যাকটিস করানোর জন্য। তাও সবার সামনে স্টেজে উঠে পারফর্ম করতে আমার একটু লজ্জা বোধই হচ্ছিল, তাই হ্যাঁ বলতে পারছিলাম না। কিন্তু তারাও নাছোড়বান্দা আমাকে নাচ করিয়েই ছাড়বে। আসলে তারা একটা গ্রুপ ডান্স এর কথা ভাবছিল, সেখানে একজন ছেলে কম পড়ছিল, তাই আরো আমাকে ফোর্স করছিল। আমি তাদেরকে হ্যাঁ বলি। মোটামুটি এক সপ্তাহ ধরে আমরা প্রতিদিন কলেজে গিয়ে নাচের প্র্যাকটিস করতে থাকে আমি আস্তে আস্তে রপ্ত করে ফেলি।তবে যে কথাটি না বললেই নয়,আমার ওই দুই বান্ধবী আমাকে নাচ প্র্যাকটিস করাতে বেশ খাটাখাটনি করেছিল।তাদের উদ্দমেই আমি নাচ টা করতে পেরেছি।
একটা সত্যি কথা বলি ভাই তুমি যে এত সব কাজের সাথে যুক্ত আছো এ ব্যাপারটা আমার খুব ভালো লাগে,, আমি নিজে হলে এত কিছুর সাথে কখনোই মানিয়ে চলতে পারতাম না। আর ভাল কাজের সাথে থাকলে আমার মনে হয় মন মানসিকতাও অনেক ভালো থাকে। সবদিকে সমানভাবে তাল দেয়া একটু কঠিন। তবুও চেষ্টা করো যতটা সম্ভব এগোনোর। আর হ্যাঁ আমি তো ভাইয়ের নাচের ভিডিও দেখতে চাই এবার। পরের পোস্ট যেন ঐ প্রোগ্রাম আর নাচের ভিডিও দেখতে পাই।
একসাথে সব কিছুর সাথে মানিয়ে চলা সত্যিই কঠিন।কিন্তু ওইযে বললে না, "ভাল কাজের সাথে থাকলে আমার মনে হয় মন মানসিকতাও অনেক ভালো থাকে",ঠিক এই কারণে নিজেকে সব কিছুর সাথে ব্যাস্ত রাখতে ভালো লাগে।আসলে নিজেকে ভালো রাখতে গেলে নিজের মন ভালো রাখাটা খুব জরুরী।