|| বন্ধুদের সাথে ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম ভ্রমণ | ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্যে ||
নমস্কার আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, আশা করি প্রত্যেকে ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলকে ভালোবাসা জানিয়ে আজকে আমি আমার পোস্টটি শুরু করছি ।
আমার শেষ পোস্টটিতে আমি যেখানে শেষ করেছিলাম, আজ আবার সেখান থেকেই শুরু করতে চলেছি।
আমার শেষ পোস্ট দিতে আমি বলেছিলাম যে বন্ধুর জন্মদিন কাটিয়ে রাস্তায় লেভেলটির ভাইবা পরীক্ষা দিয়ে আমি দিদির বাড়িতে চলে যাই। সেদিন ছিল সোমবার। তারপর দিন অর্থাৎ মঙ্গলবারে আমার বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা। আমি ভেবেছিলাম যে মঙ্গলবারে দুপুরবেলা খাওয়া-দাওয়া করে বাইরের রোদ কমলে তারপরে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেব।
কিন্তু হঠাৎ বেলা বারোটার দিকে কলেজের কিছু বন্ধুবান্ধব ফোন করে বলল, পরীক্ষা শেষ হয়েছে তাই সবাই একটু ঘুরতে যেতে চায়। আসলে প্রায় এক-দেড় মাস পরীক্ষায় প্রস্তুতি চলেছে তাই সবাই একপ্রকার বিধ্বস্ত ছিল। স্বভাবতই হালকা রিফ্রেশমেন্ট এর জন্য সবাই চাইছিল যাতে কোথাও ঘুরতে যাই ।
কিন্তু আসলে কোথায় যাওয়া হবে সেটা আর কেউ ডিসাইড করতে পারছে না। সবাই ঠিক করল বেশি দূরে কোথাও না গিয়ে একদিনের মধ্যে যাতে ঘুরে আসা যায় এরকম কোন জায়গা, এই বিষয়টাতে সবাই একমত হলো। তাই সবাই কলকাতা বা কলকাতার আশেপাশে কোন জায়গার নাম বলতে লাগলো। কিন্তু বিভিন্ন কারণে কোনটাই ফাইনাল হচ্ছিল না। তারপর অনেক আলোচনার পরে আমরা ডিসাইড করলাম আমরা ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম ঘুরবো, পার্ক স্ট্রিট সিমেট্রি ঘুরবো এবং প্রিন্সেপ ঘাট ঘুরবো।
তো সবাই মিলে ঠিক করলাম পরের দিন অর্থাৎ বুধবারই সবাই ঘুরতে যাবো।
তো যেহেতু আমি সেদিন কলকাতাতেই ছিলাম, বাড়ি ফিরে গেলে আমাকে পরের দিন আবার উল্টো জার্নি করে আসতে হতো তাই আমি আর সেদিনকে বাড়ি ফিরিনি। ঠিক করলাম বুধবারে ঘোরাঘুরি করে সবাই মিলে একসাথে যে যার বাড়ি ফিরে যাব। তাই আমি আর সেদিনকে বাড়ি ফিরিনি।
ঠিক হয় বুধবার দিন ১১ টা থেকে ১১:১৫ এর মধ্যে আমরা সবাই দমদম স্টেশনে মিট করব। তারপর সেখান থেকে মেট্রো করে সবার প্রথমে মিউজিয়াম ঘুরবো তারপর বাকি সব জায়গা।
এরপর বুধবার সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে আমি তাড়াতাড়ি করে স্নান করে নিলাম। সেদিন সকাল থেকেই ওয়েদারটা একটু মেঘলা মেঘলা ছিল। মিট করার টাইম অনুযায়ী আমাকে বাড়ি থেকে সাড়ে দশটার সময় বেরোলেই হয়ে যেত। তাই আমি তাড়াতাড়ি করে স্নান করে ১০:১৫ এর খাওয়া দাওয়া করে রেডি হয়ে নিলাম। কিন্তু সমস্যা হল হঠাৎ মারাত্মক পরিমাণে বৃষ্টি নামায়। যেহেতু আমার হাতে অল্প কিছু সময় ছিল তাই আমি তাড়াহুড়ো করিনি। কিন্তু সময় যত বাড় ছিল বৃষ্টির বেগও তত বাড়ছিল। এইভাবে অপেক্ষা করতে করতে প্রায় এগারোটা বেজে গেল। এরপর বাকিদের ফোন করলাম, করে জানলাম আমার মতন তাদেরও একই অবস্থা। বৃষ্টির জন্য কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারেনি।
একান্তই আর কোন উপায় না থেকে সবাইকে বৃষ্টি কমার জন্য অপেক্ষা করতে হলো। আমার বেরোতে বেরতে প্রায় ১১:২৫ হয়ে গেল। আমাকে একটু ব্রেক জার্নি করে পৌঁছতে হল। কারণ আমি ছিলাম ডানলপ, সেখান থেকে দমদম যাওয়ার ডাইরেক্ট বাস পাওয়া যায় অথবা অটো করে বেলঘড়িয়া স্টেশন হয়ে তারপরে সেখান থেকে ট্রেন ধরে দমদম যেতে হয়। আমি বাসস্টপে প্রায় কুড়ি মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পরও কোন বাস পেলাম না। অগত্যা আমাকে ব্রেক জার্নি করে যেতে হল।তো যাইহোক, এরপর আমরা সবাই মিলে যেখানে মিট করার কথা সেখানেই মিট করলাম,তখন সময় প্রায় বেলা ১২:১৫ । আমরা আমাদের নির্ধারিত সময় থেকে প্রায় এক ঘন্টা দেরিতে চলছিলাম। বেশি কিছু না ভেবে আমরা আমাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
দমদম থেকে আমরা মেট্রোর টিকিট কেটে ময়দান নামলাম। সেখান থেকে হাঁটা পথে ১০ মিনিটের মধ্যেই আমরা ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম পৌঁছে গেলাম। সেখানে পৌঁছে আমরা টিকিট কেটে ব্যাগ জমা দিয়ে ভেতরে ঢুকলাম। তখন প্রায় দুপুর একটা হয়ে গেছে। সবাই ভাবছিলাম আমাদের যেহেতু অতো লেট হয়ে গেল তাই বাকি জায়গাগুলো কিভাবে কখন ঘুরবো। যাইহোক এ সমস্ত ভাবতে ভাবতেই আমরা পুরো মিউজিয়ামটি ঘুরলাম, অনেক মজা করলাম সবাইমিলে। অনেক নাদেখা জিনিস দেখলাম,অনেক অজানা জিনিস জানলাম। ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম আমি প্রথম গেছিলাম অনেক ছোটবেলায় বাবা এবং দিদির সাথে। তখন আমার বয়স খুব বেশি হলে ১০-১১ বছর। এতদিন পর গিয়ে সব কিছু আরো ভালোভাবে অনুধাবন করলাম।
মিউজিয়ামের ভেতরটা অনেকটাই বড়। সম্পূর্ণ মিউজিয়ামটা ভালোভাবে ঘুরতে কমপক্ষে তিন থেকে চার ঘন্টা সময় নিয়ে ঘোরা উচিত। সেখানে আমরা তাড়াহুড়ো করে আড়াই থেকে তিন ঘন্টার মধ্যে বেরিয়ে পড়তে বাধ্য হয়েছি, কারন আমাদের আরো কয়েকটি জায়গায় ঘোরার ছিল। কিন্তু বাদ সাধলো আবার সেই বৃষ্টি।আমরা ০৩:৩০ এর অল্প কিছু সময় পর মিউজিয়াম থেকে বেরোনোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, কিন্তু সেই সময় আবার মুষলধারে বৃষ্টি নামে। তাই আমরা আরো কিছুক্ষণ সেখানে অপেক্ষা করে যাই। এদিকে দুপুর হয়ে গেছে, সবার খিদেও পেয়ে গেছিল। তাই সবাই আলোচনা করে ঠিক করলাম মিউজিয়াম থেকে বেরিয়ে সবার প্রথমে কোনো রেস্টুরেন্টে গিয়ে আগে খাওয়া-দাওয়া করব ,সেখানে বসে সিদ্ধান্ত নেব যে তারপরে কোথায় যাওয়া হবে। মিনিমাম ৩০ মিনিট একইভাবে বৃষ্টি হওয়ার পরে কিছুটা কমলো। তারপরে আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে ১০ মিনিট হাটা পথে একটি রেস্টুরেন্টে গেলাম,যার নাম 'কস্তুরী'।
রেস্টুরেন্টে ঢুকতে ঢুকতে প্রায় ০৪:৩০ বেজে যায়। তাই আমরা ঠিক করি সেই দিনকে আর কোথাও ঘুরবো না, কারণ বাইরের ওয়েদার একদম ভালো নয়। এখান থেকে খাওয়া-দাওয়া করে সবাই ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরে যাব।
এরপর রেস্টুরেন্টে আমরা খাবার অর্ডার করলাম। আমাদের প্রত্যেকের প্রিয় মেনু হচ্ছে বিরিয়ানি। আমরা সেই হোটেলের সবথেকে ভালো মানের বিরিয়ানি টি অর্ডার করলাম। খাওয়ার আসতে ৩০ মিনিট সময় লাগলো। সেই ফাঁকে আমরা গল্পগুজব করলাম, আড্ডা মারলাম। এরপরেই খাওয়ার চলে আসে। সকাল থেকে সারাদিন ঘোরাঘুরি করে বৃষ্টিতে ভিজে আমাদের প্রত্যেকেরই বেশ খিদে পেয়েছিল। তাই খাওয়ার আসার পরে কেউ আর বেশি দেরি না করে খাওয়া শুরু করে দিয়েছিল😅।
সেখানকার বিরিয়ানিটা ছিল সত্যিই অসাধারণ। রেস্টুরেন্টে প্রত্যেকটি রান্নায় ছিল বাঙালিআনার ছোঁয়া, এবং রেস্টুরেন্ট ডেকোরেশনটিও ছিল খুবই সুন্দর। সেখানে আমাদের খাওয়া দাওয়া করে বেরোতে বেরোতে প্রায় সাড়ে পাঁচটা বেজে যায়। কিন্তু বেরোনোর সময় আবার সেই বৃষ্টি নামে। সেই বৃষ্টিতে আমরা প্রত্যেকেই অল্পবিস্তার ভিজে যাই। যেহেতু আমি ভিজে গেছিলাম তাই সেদিনকে আমি আমার বাড়ি অর্থাৎ কৃষ্ণনগর না ফিরে আবারো দিদি বাড়িতেই ফেরত গেলাম। কারণ কৃষ্ণনগর আসতে গেলে তিন ঘন্টা সময় লাগবে,আর ভেজা শরীরে এতক্ষন থাকলে এমন আবার ঠান্ডা লেগে জ্বর আসতে পারতো।আর দিদির বাড়িতে ৩০ মিনিট থেকে ৪৫ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যাবে। তাই সহজ অপশনটি বেছে নিলাম।
তো বন্ধুরা এখানেই আজকে আমি আমার গল্প শেষ করছি।
মিউজিয়ামে ঘোরার সম্পূর্ণ খুঁটিনাটি নিয়ে আমি এর পরে আবার পোস্ট করব, সেই পোস্টগুলিতে আপনারা আরো কিছু তথ্য জানতে পারবেন।
ভালো থাকবেন সকলে।
আপনার এই পোস্ট দেখেই বোঝা যাচ্ছে বন্ধুদের সঙ্গে ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম দেখতে গিয়ে অনেক চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। সেই সাথে কিছু সুন্দর মুহূর্তের ফটোগ্রাফিও আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ।এত সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের সকলের মাঝে চমৎকারভাবে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলেই বন্ধুদের সঙ্গে মুহূর্তগুলো সব সময় খুব ভালো হয়। আমি বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে খুবইভালোবাসি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে কমেন্ট করার জন্য।
বন্ধুদের সময় অনেক ভালো একটি সময় কাটিয়েছেন। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আমি বিশ্বাস করি আপনি একজন ভাল মানের ব্লগার হয়ে উঠতে পারবেন। তবে আপনি আপনাকে একটু রেগুলার হতে হবে। আপনার পোষ্টের সংখ্যা এবং কমেন্ট সংখ্যা অনেক কম। অন্যের পোস্ট পড়বেন এবং রেগুলার পোস্ট করার চেষ্টা করবেন ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ দাদা আমার ওপর ভরসা করার জন্য। আপনার বিশ্বাসের যথাযথ মর্যাদা রাখার আমি চেষ্টা করব। আসলে পড়াশোনা এবং পারিপার্শ্বিক কাজের পাশাপাশি রেগুলার হতে একটু সমস্যা হচ্ছে। আমি চেষ্টা করব দ্রুত এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে এসে নিয়মিত কাজ করার।
Your post was upvoted by @hustleaccepted
We're inviting you to join our communities at:
Hustle Accepted III Quit Porn III Quit Drugs III Q&As III Life-Changing Quotes