মহাকাশ থেকে বেঁচে ফিরার গল্প ||
আসসালামু আলাইকুম
মহাকাশ নিয়ে কম বেশি সবার আগ্রহ থাকে। বিশেষ করে চাঁদে যাওয়া নিয়ে নাসার অনেক গবেষণা রয়েছে। তারা এতে সফল হয়েছে। অ্যাপোলো-১১ এর মাধ্যমে এটা সফল হয়েছে। আর চাঁদে প্রবেশ করা প্রথম ব্যাক্তিটি ছিল নীল আর্মস্ট্রং।
অ্যাপোলো-১১ স্পেইসসিপটি যখন ছাড়া হয় তখন প্রায় ৭ মিলিয়ন মানুষ এটাকে সরাসরি দেখতে এসেছিল। এবং এটা নিয়ে মানুষের প্রচুর পরিমাণ আগ্রহ ছিল। তারা সফলভাবে চাঁদ ল্যান্ড করে সেই সাথে তারা পৃথিবীতে ফিরে আসে। এরপর অ্যাপোলো-১২ এর মাধ্যমে চাঁদে যাওয়া হয় এবং এটাও সফল হয়।
কিন্তুু অ্যাপোলো-১১ এ যতটুকু আগ্রহ মানুষের ছিল তা অনেক কমে যায় অ্যাপোলো-১২ তে। তারপর সরকার এর বাজেট কমিয়ে দেয়। তবে হঠাৎ করে আগ্রহ বৃদ্ধি পায় যখন অ্যাপোলো-১৩ চাঁদের দিকে রওনা দেয়। কারণ তখন এমন কিছু ঘটেছিল, যা পত্রিকার হেডলাইন হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।
৩ জন যাত্রী নিয়ে অ্যাপোলো-১৩ রওনা দেয় এবং প্রথম ২৪ ঘন্টা তারা খুব সুন্দর ভাবে চাঁদের দিকে ট্রাভেল করে। তাদের কোন সমস্যা হয় নি। তবে সমস্যাটা মূলত এরপর থেকে শুরু হয়। আমরা জানি পৃথিবী থেকে আমরা যত উপরে ওঠবো ততো আমরা অক্সিজেন হারাবো। আমরা বেশির ভাগ অক্সিজেন গাছ থেকে পাই।
তাই আমরা যদি এমন জায়গায় চলে যাই যেখানে গাছ নেই তাহলে আমাদের অক্সিজেনের ঘটতি দেখা যাবে। মহাকাশে অক্সিজেন না থাকায় অক্সিজেন সিলিন্ডার দেওয়া হয় নভোযাত্রীদের। অ্যাপোলো-১৩ এর একটি অক্সিজেন পুরোপুরি ব্লাস্ট হয়ে যায়। যার ফলে নাসা হুমরি খেয়ে পরে। এবং ১৯৭০ সালে এটা হয়ে যায় ট্রেন্ডিং টপিক।
যা পেপার পত্রিকায় সারা ফেলে দেয়। মানুষ এটা নিয়ে চিন্তা করতে থাকে। অ্যাপোলো-১৩ এ থাকা ৩ জন যাত্রীর কি হবে? এমন সময় তাদের হাতে ২ টি অপশন থাকে। প্রথমত তারা তাদের স্পেইসসিপ চাইলে রির্ভাস করে আবার পৃথিবীর দিকে আসতে পারে। কিন্তু যেহেতু অক্সিজেন সিলিন্ডার ফেটে গেছে তাই তাদের ধারণা এর ফলে হয়তো যান্ত্রিক সমস্যা হতে পারে। তাই রির্ভাস করলে হয়তো সমস্যা হতে পারে।
এইক্ষেত্রে তাদের সামনে আরেকটি অপশন থাকে। আর তা হলো তারা চাইলে চাঁদেকে প্রদক্ষিণ করে পৃথিবীতে ব্যাক করতে পারে। কিন্তু এতে ৪-৫ দিন সময় লাগবে। যেহেতু এটা একটা লম্বা সময় তাই এখানে রিস্ক অনেক আছে। প্রথমত এখানে অনেক কার্বনডাই-অক্সাইড এর সংখ্যা বেড়ে যাবে।
কারণ মানুষ ৪-৫ দিন থাকলে বেশি পরিমাণ কার্বডাই-অক্সাইড হবে এবং যার ফলে এটা বড় একটা ইফেক্ট ফেলবে। এই সব সমস্যা নিয়েই দ্বিতীয় অপশন তারা বেছে নেয়। এবং তারা নাসার কাছে এটা জানিয়ে দেয়।
এভাবে দেখা যায় তারা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে ফেলে এবং তারা পৃথিবীর দিকে আসতে থাকে। কিন্তু এখানেই চিন্তার শেষ হয় না। কারণ পৃথিবীতে আসার আগে তাদেরকে বায়ুমন্ডল পার করে আসতে হবে। বায়ুমন্ডলের অনেক স্তর খুব শীতল আবার অনেক স্তর অনেক গরম।
এটা স্পেইসিপের জন্য ভালো দিক নয়। তবে তারা এই স্তরগুলো সফলতার সাথে ট্রাভেল করতে সক্ষম হয়। এবং তারা প্যারাসুটের মাধ্যমে আবার পৃথিবীতে ব্যাক করে। আনন্দের বিষয় হচ্ছে সবাই পৃথিবীতে বেঁচে ফিরে।
এবং এই ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে একটি বিরল ঘটনা হিসেবে রয়ে যায়। তো বন্ধুরা ঘটনাটি আপনার কাছে কেমন লেগেছে কমেন্ট করে জানাবেন। আজ এখানেই শেষ করছি। আসসালামু আলাইকুম।