চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মন্দির ঘিরে আছে যত রহস্য
সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ পাহাড়
চন্দ্রনাথ পাহাড় হিমালয় হতে বিচ্ছিন্ন হিমালয়ের পূর্বাঞ্চলীয় অংশ। এই পাহাড়টি হিমালয়ের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক ঘুরে ভারতের আসাম এবং ত্রিপুরা রাজ্যের মধ্য দিয়ে ফেনী নদী পার হয়ে চট্টগ্রামের সঙ্গে মিশেছে। চট্টগ্রাম অংশে ফেনী নদী থেকে চট্টগ্রাম শহর পর্যন্ত এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৭০ কিলোমিটার। এই পাহাড়ের পাদদেশে নির্মিত হয়েছে সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক।
(ছবিটি ফেইসবুক থেকে নেয়া)
বিশাল এক পাহাড়ের উপরেই আছে এক জাগ্রত শিবমন্দির। সাধু-সন্নাসীসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্ত অনুরাগীদের তীর্থ স্থান এটি। সেইসঙ্গে পর্যটকদের জন্যও রোমাঞ্চকর এক স্থান। এই পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে দেশের দুর-দুরান্ত থেকে পর্যটকরা ভিড় জমান। অনেকেই বিশাল এই পাহাড়ে উঠতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে নিচে নেমে যান। আবার অনেকেই পাহাড় জয় করার আনন্দ নিয়ে সেখান থেকে ফেরেন।
চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩৭ কিলোমিটার উত্তরে, ঢাকা-চট্টগ্রাম
মহাসড়ক থেকে সাড়ে ৩ কিলোমিটার পূর্বে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের অবস্থান। এর সর্বোচ্চ চূড়ার স্মৃতিবিজড়িত অসংখ্য মঠ-মন্দির আছে এই পা
প্রতি বছর ফাগুন মাসে এখানে পূজা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়। দূরদূরান্ত থেকে অনেক মানুষ এসে এতে অংশগ্রহণ করেন।
ধর্মগ্রন্থ ও ইতিহাস মতে, এখানে মহামুনি ভার্গব বসবাস করতেন। অদ্ধার রাজা দশরথের পুত্র রামচন্দ্র তার বনবাসের সময় এখানে এসেছিলেন। তারা আসবেন জানতে পেরে মহামুনি ভার্গব এখানে স্নানের জন্য তিনটি কুণ্ড সৃষ্টি করেন। এরপর রামচন্দ্রের স্ত্রী সীতা এই কুণ্ডে স্নান করেন। এরপর থেকেই স্থানের নামকরণ করা হয় সীতাকুণ্ড।
যেটিতে রাম স্নান করেছিলেন সেটির নামকরণ করা হয় রামকুণ্ড। তবে বর্তমানে কুণ্ডগুলো শুকিয়ে গেছে। ইটের দেয়াল দিয়ে চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে স্থানগুলোকে। চন্দ্রনাথ মন্দিরের পাদদেশে আছে উল্টা পাতালকালী মন্দির, ক্রমধেশ্বরী কালী মন্দির, ভোলানন্দগিরি সেবাশ্রম।
আরও আছে কাছারি বাড়ি, গিরিশ ধর্মশালা, বিবেকানন্দ স্মৃতি পঞ্চবটি, মহাশ্মশানভবানী মন্দির, অন্নপূর্ণা মন্দিরসহ আরও অনেক সনাতনী স্থাপনা। চন্দ্রনাথ মন্দিরে যাওয়ার পথে ব্যাসকুণ্ডের পশ্চিম পাড়ে এবং ভৈরব মন্দিরের বাম পাশে একটি বিশাল বটবৃক্ষ আছে। এটি অক্ষয় বট নামে পরিচিত।
চন্দ্রনাথ পাহাড় ভ্রমণে যা দেখবেন
চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় উঠলেই শিব মন্দিরের দেখা পাওয়া সম্ভব। তবে এর জন্য আপনাকে পাড়ি দিতে হবে ২২০০ এরও বেশি সিঁড়ি। কোনো কোনো স্থানের সিঁড়িগুলো এতোটাই পিচ্ছিল ও সংকীর্ণ যে ওঠা বিপজ্জনক হতে পারে। আর বুঝতেই পারছেন, সামান্য এদিক-সেদিক হলে পা পিছলে পড়বেন পাহাড়ের খাদে।
এই রাস্তাটা সম্পূর্ণ পাহাড়ি পথ এবং কিছু ভাঙা সিঁড়ি আছে। আর ডান পাশের পথটার প্রায় পুরোটাই সিঁড়িপথ যেটা দিয়ে ওঠা বেশ কঠিন। অনেকে এই পথ দিয়ে উপরে উঠতে গিয়ে অর্ধেক পথে ফিরে আসে।
প্রয়োজনীয় তথ্য
চন্দ্রনাথ পাহাড়ের উচ্চতা খুব বেশি না হলেও এর চূড়ায় ওঠার পথটি বেশ সরু এবং দুর্গম। কেউ তাড়াহুড়া করে পাহাড়ে ওঠার চেষ্টা করবেন না। তাতে যেকোনো বড় দুর্ঘটনা হতে পারে। তাছাড়া পাহাড়ে উঠতে, নামতে নির্দিষ্ট পথ অনুসরণ করুন। উল্টো পথে কখনো উঠতে কিংবা নামতে চেষ্টা করবেন না।
ছবির | বিবরণ |
---|---|
ডিভাইস | স্যামসাং M21 |
জায়গা | সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ পাহাড়। |
ফোটোগ্রাফার | @sami456 |
আজকের গল্পটি এখানে শেষ করছি। দেখা হবে নতুন কোনো গল্পে।
অজানা অনেক তথ্যসহ চন্দ্রনাথ পাহাড়ের রহস্যময় স্থানের দৃশ্য আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। এখানে অনেক মানুষ কেন যায় কি করতে যায় কখন যায় এই সমস্ত বিষয়ে আমার এতটা ধারণা কখনোই ছিল না। আপনার আজকের পোস্ট এর মধ্য দিয়ে আমি অনেক বিষয়ে অবগত হতে পারলাম। এত সুন্দর ভাবে এই চন্দ্রনাথ পাহাড় সম্পর্কে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি কমিউনিটি রুলস ভঙ্গ করেছেন। আপনি নিজের ফটো অথবা কঁপিরাইট ফ্রী ফটো ছাড়া আপনার পোষ্টের মধ্যে ব্যবহার করতে পারবেন না।
কমিউনিটির নিয়মাবলী :
https://steemit.com/hive-129948/@rme/last-updated-rules-of-amar-bangla-blog-community-16-aug-22
কমিউনিটিতে নিউ মেম্বার নেওয়ার নিয়মাবলী:
https://steemit.com/hive-129948/@rme/5h8hue
যে কোন বিষয়ে জানার প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে Discord এ যোগাযোগ করুন।
Discord server link: https://discord.gg/ettSreN493