আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ১৯ || শেয়ার করো তোমার বৃষ্টির দিনের মজার অনুভূতি।
আসসলামুআইকুম “আমার বাংলা ব্লগ” এর সকল বন্ধুরা!!! |
---|
"আমার বাংলা ব্লগ"এর কোন প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করতে পারতেছি সে জন্য।প্রতিযোগিতার বিষয়ঃ “শেয়ার করো তোমার বৃষ্টির দিনের মজার অনুভূতি” নাম টা শুনে আরও খুশি কারন আমার সবচেয়ে প্রিয় ঋতু হচ্ছে বর্ষাকাল। বর্ষাকালে আমি বেশি আনন্দ উপভোগ করি কারন বেশি ঠান্ডা ও না আবার তীব্র গরম ও না। গরম পড়ে তবে এত প্রখর না।
প্রতিযোগিতার বিষয়ঃ শেয়ার করো তোমার বৃষ্টির দিনের অনুভূতি। |
---|
আসলেই বৃষ্টির দিনের অনুভূতি গুলা লেখে শেষ করা যাবে না। তবে এমন কিছু বিষয় আছে যা ক্ষণীকের। আবার কিছু অনুভূতি আছে যা দীর্ঘ স্থায়ী। যে ভাবনা বা অনুভূতি গুলো ক্ষণীকের হয় তা ক্ষণীকের হলেও সুদুর প্রসারী হয়। এক ভাবনা থেকে মানুষ রুপ কথার গল্পে অবচেতন মনে অনেক দূরে হারিয়ে যায়। হঠাৎ যখন কেঊ
এসে নাড়া দেয় তখন বুঝা যায় আমি এই রাজ্যে ছিলাম না। ভাবনার রাজ্যে হারিয়ে গেছিলাম ক্ষণীকের জন্য।
আবার যে সৃতি গুলো দীর্ঘ স্থায়ী তা মানুষ কখন ও ভুলে না। যা জীবনের সৃ্তির পাতায় লেখা হয়ে থাকে সারা জীবন।
আমার সবচেয়ে একটা মজার অনুভূতি হচ্ছেঃ |
---|
আমি যখন দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি। বৃষ্টির দিনে তো বের হওয়া যেত না তাই আমার “মা” আমাকে হাতে কিছু পুতুল বানিয়ে দিত। সেই পুতুল গুলো দেখতে অনেক সুন্দর ছিল। অনেক গুলো পুতুল বানিয়ে দিত। আমি কি করতাম সে পুতুল গুলোকে একটা কে শাড়ি পরাই দিতাম, আরেক টাকে শার্ট-লুঙ্গি পরিয়ে দিতাম।
ওরা হচ্ছে মা-বাবা পুতুল। আরও অনেক পুতুল ছিল এদের মধ্যে ছেলে-মেয়ে এবং ঘরের অন্যান্য সদস্য সাজিয়ে খুব সুন্দর করে কাপড়-চোপড় পারাইয়ে শুয়ে দিতাম এবং ওদের সাথে সময় পার করতাম। পুতুল দের জন্য রান্নার-বান্না, খাওয়ার ব্যবস্থা ইত্যাদি যাবতীয় কাজ করতাম।
আমি নিজে নিজে পুতুলদের সাথে কথা বলতাম। এভাবে আমি বর্ষাকালে আমার মায়ের তৈরী করে দেওয়া পুতুলের সাথে সব সময় খেলা করতাম। যখন স্কুলে বা বাইরে যাওয়া সম্ভব হত না তখন আরও পাশের বাড়ির থেকে বান্ধবিদের ডেকে এনে একসাথে খেলা করতাম।
আস্তে আস্তে যখন বড় হতে থাকি আমার অনুভূতির ও পরিবর্তন হতে থাকে। যখন মাধ্যমিক ও কলেজ জীবন ছিল, এমন কি এখন অবধি একটাই আমার অনুভূতি থেকে গেছে বৃষ্টির দিনের সেটা হলোঃ
যখন বৃষ্টি শুরু হবে তখন আমি রান্না ঘরে যেয়ে কিছু সীম বীচি নিয়ে সেগুলো চুলায় বেজে নিবো। তারপর একটা বাটিতে করে নিয়ে রুমে চলে আসি।
এর পরের মজার ঘটনা হচ্ছে আমি সুন্দর একটা নিরিবিলি জায়গায় বসে মনের সুখে বীচি খেয়ে খেয়ে গান গায় বৃষ্টির ছন্দে মনের আনন্দে। আমার গানের সুর উচর্চ সরে বেঁজে ওঠে বৃষ্টির ছন্দে ছন্দে।
এভাবে গান করতে করতে জীবনে প্রথম প্রেমের কথা মনে পড়ে যায়।
আমার জীবনে তুমি প্রথম ফোঁটা ফুল,
মনকে করেছ তুমি ব্যাকুল…
তুমি যে আমার স্বাধন,
তোমাকে আমি হারাতে চাইনা
তোমাকে আমি হারাতে চাইনা।
যে দিন তুমি এসেছিলে আমার ধরায়,
আমি মনকে তোমার মাঝে হারায়।
যে দিন তুমি এসেছিলে আমার ধরায়,
আমি মনকে তোমার মাঝে হারায়।
তুমি আমার শত কামনা……।
তোমাকে আমি হারাতে চাইনা (ঐ)
সেদিন তুমি যখন চলে গেলে
ক্ষমা চেয়ে ছিলাম তোমার চরণ তলে
ফিরলে না তুমি আমার জীবনে
আমি ভুলবনা তোমায় মরণে (ঐ)
গান যখন শেষ হয়ে যায় তখন মন থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে সে প্রেম হারনোর কথা মনে পড়ে যায়।
কত সৃতি মনের মধ্যে এসে জড়ো হয়ে মনটাকে একদম বিষাদ ময় করে তুলে। চোখের কোণায় জল এসে যায়। কান্না আর থামা যায় না বৃষ্টির ছন্দে কান্নার গতি ও বেড়ে যায়। আসলেই এই দুনিয়াতে কিছু স্থায়ী না। একসময় কান্না থেমে যায়।
আবার একটি নতুন গান ধরি……
আমার নিজের লেখা
শ্রাবণের এই বৃষ্টির দিনে ওগো প্রিয়তম…
তুমি ছুটে এসো আমার মন মোহনায়
শ্রাবণের এই বৃষ্টির দিনে ওগো প্রিয়তম…
তুমি ছুটে এসো আমার মন মোহনায়।
এই বৃষ্টির অ ছন্দে, চোখেরী লোনায়,
আমার এমন আজ বড় অসহায়।
এই বৃষ্টির অ ছন্দে, চোখেরী লোনায়,
আমার এমন আজ বড় অসহায়।
এভাবে গান চলতে থাকে। একসময় বৃষ্টি থেমে যায় আর আমিও নিজস্ব গতিতে ফিরে আসি। আবার শুরু হয় জীবন যুদ্ধ। এদিক-ওদিক ছুটে চলা। মানুষ ভুলে যেতে চাই অতীতকে যে অতীত মানুষ কে কাঁদায়। কিন্তু নিষ্টুর সে অতীত বার বার ফিরে আসে ক্ষণে ক্ষণে।
বন্ধুরা আজ এই পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন। আশা করি আমার বৃষ্টির দিনের অনুভূতি সবার ভাল লেগেছে। সবাই মন্তব্য করে জানাবেন আর সবাই পাশে থেকে সহযোগিতা করবেন। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমিও আপনাদের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করেই আজ এখানেই শেষ করছি। শুভেচ্ছা সবাইকে আমার বাংলা ব্লগ এর পক্ষ থেকে। |
---|
আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ |
---|
শৈশবের সোনালী অতীত গুলো কার নাম মনে পড়ে। অনেক কিছুই সবার সাথে মিলে যায়। কেননা সবার শৈশব প্রায় একই রকম থাকে। সবাই শৈশবের দিনগুলো আনন্দে মেতে ওঠে। আপনার অনুভূতিগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগে। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
ধন্যবাদ ভাইয়া।আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
শৈশবে বৃষ্টিকে ঘিরে সবারই নানা রকম স্মৃতি থাকে। আপনার স্মৃতিগুলোর কথা পড়ে বেশ ভালো লাগলো। চমৎকার লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলেই ভাইয়া সবার স্মৃতি প্রায়ই একই রকম হয়ে থাকে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
প্রথমে আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ এই কনটেস্ট অংশগ্রহণ করার জন্য, খুব সুন্দর ভাবে আপনি আপনার শৈশবের স্মৃতি চারণ করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার বৃষ্টি ভেজা অনুভূতিটা উপস্থাপনা করা খুব দারুণ হয়েছে।
ধন্যবাদ ভাইয়। আপনার মন্তব্য খুব সুন্দর হয়েছে। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল।