লাইস্টাইলঃ- হাসপাতাল নয় যেন এক কসাইখানা।

in আমার বাংলা ব্লগlast month

আসসালামু আলাইকুম,

সম্মানিত ব্লগার ভাই ও বোনেরা সবাই কেমন আছেন। আশা করি বন্ধুরা আপনারা সবাই ভালো আছেন। নিশ্চয়ই আমিও ভালো আছি। বন্ধুরা আমি আজকে আবার হাজির হয়ে গেছি নতুন একটি টপিকস নিয়ে। চেষ্টা করি সব সময় ভালো মন্দ বিষয়গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে। তাই আজকে হাজির হয়ে গেছি একটি দৈনন্দিন জীবনের বিষয় নিয়ে। সকাল থেকে অনেক ব্যস্ত ছিলাম। আজকে বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ হলেও কোচিং ছিল। তাছাড়া বড় মেয়ের শব্দায়নে ক্লাস ছিল। তাই ব্যস্ততার যেন শেষ নেই। গতকালকে আমার হাজবেন্ডের অফিসে যেয়ে ডাক্তার অ্যাপার্টমেন্টে নিয়েছিলাম। সেখানে ডাক্তার দেখে অনেকগুলো টেস্ট দিল। সেখানে খালি পেটে টেস্ট দিতে বলছে আমাকে। তাই কাল থেকে প্ল্যান করে রাখছিলাম আজকে সকাল সকাল যেয়ে টেস্ট করাই দিব।

f4.jpg

যদিও কথা আর কাজের মধ্যে কোন মিল থাকে না এদিক ওদিক হয়ে থাকে। ইদানিং আমার ঘুমের পরিমাণ একটু কম হচ্ছে তাই এত সকালেই উঠতে পারিনি একটু লেট হয়ে যায়। সকালে উঠতে উঠতে নয়টা বেজে গেছিল। বাচ্চাদেরকে আগে রেডি করায় দিলাম। তারা খাওয়া-দাওয়া করে আমি তাদেরকে রেডি করে দিয়ে কোচিংয়ে গেল ছোট মেয়ে। তো আমি ফ্রেশ হয়ে কোনরকম রেডি হয়ে হাসপাতালে চলে গেলাম। আমি গেছিলাম কক্সবাজারের ইউনিয়ন হসপিটালে। যেহেতু ইকরাস ক্লিনিক এর স্পন্সর ইউনিয়ন হসপিটাল। ইউনিয়ন হসপিটাল থেকে টেস্ট করালে পেমেন্ট করতে হবে না। তাই আমি সোজা চলে গেছি ইউনিয়ন হাসপাতালে। তাদেরকে টেস্টের কাগজটা ধরাই দিলাম তারা কিছু বলল না যেহেতু তারাই বুঝতে পারছে আমি UNHCR এর পক্ষ থেকে গেছি।

f1.jpg

রিপোর্টগুলো রিসিভ করে আমাকে একটি রিসিভ দিল। সেটা নিয়ে আমি ব্লাড কালেকশনে গেলাম। যদিও অনেক লম্বা সিরিয়াল সকাল হলেও। তারপর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় নি আমাকে। দশ মিনিট পরে আমার নাম ডাকলো ব্লাড দেওয়ার জন্য। তো আমি সোজা ব্লাড কালেকশন রুমে প্রবেশ করে ব্লাড দিলাম। তারা বলল আমাকে নাস্তা করে আবারো ঠিক দুই ঘন্টা পরে যাওয়ার জন্য। তখন আমি সেই চিন্তা ভাবনা করে বাসায় ফিরে আসি। বাসায় ফিরে এসে খাওয়া দাওয়া করলাম খাওয়ার শেষে ওষুধ ছিল সকাল টাইম এর সেগুলো খেয়েছি। একটু করে রেস্ট নিয়ে ভাবলাম যে রান্নাটা বসায় দিই। যেহেতু আমাকে সাড়ে বারোটার দিকে আবার যেতে হবে তাই যেতে হয়তো পারবো কিন্তু আসতে যদি দেরি হয়ে যায় তাহলে বাচ্চাদের খাওয়া দাওয়ার জন্য সমস্যা হয়ে যাবে।

f2.jpg

সেই চিন্তা করে রান্নাটা বসিয়ে দিলাম তাড়াহুড়ো করে রান্না শেষ করে দিলাম। রান্না শেষ করতে করতে বারোটা ত্রিশ মিনিট পার হয়ে যায়। তো আমিও কোনো রকম রেডি হয়ে সোজা ইউনিয়নের হাসপাতালে চলে যায়। সেখানে যাওয়ার পরে আবারো ব্লাড দিলাম এবং আরো কিছু ছিল সেগুলো করে নিলাম। যেহেতু রিপোর্ট দিতে দু তিন ঘন্টার ব্যাপার তাই আমি আর অপেক্ষা করি নাই সোজা বাসায় চলে এসেছি। ভাবলাম যে একদম সন্ধ্যার পরে ৭/৮ টার দিকে যেয়ে রিপোর্টগুলো নিয়ে ডক্টর দেখায় ফেলবো। যেহেতু আজকে ১০ তারিখ আমার ডাক্তার দেখানোর ডেট তাই তার আগে আমি টেস্ট গুলো করায় নিয়েছি যেগুলো ডাক্তার আমাকে সাজেস্ট করেছিল। ডাক্তার আমাকে যেগুলো সাজেস্ট করেছিল সেগুলো আমি ইকরাস ক্লিনিক থেকে লিখে নিয়েছি। যাতে করে আমাকে নগদ কোন টাকা দিতে না হয়।

f5.jpg

তো বন্ধুরা এখনো রিপোর্ট হাতে পাইনি। আশা করি রিপোর্টে সব ভালো ফলাফল আসবে সেটা কামনা করছি। যেহেতু এর আগেও অনেকগুলো টেস্ট করেছিলাম কোন নেগেটিভ কিছু পাইনি। আশা করি এবারও ভালো ফলাফল পাবো। কিভাবে ডাক্তার দেখাবো বলেন সামান্য কিছু টেস্টের মধ্যে যদি নয় হাজার টাকা চলে আসে। এর আগেও টেস্ট করাইছিলাম অনেক টাকা আসছিল। ডাক্তার দেখানো কোন ব্যাপার না তারা যে টেস্ট গুলো লিখে দেই সেগুলোতে বিরাট অংকের টাকা চলে আসে। হয়তো আমি বা আপনি আমরা দেখাতে পারছি কিন্তু যাদের ইনকাম কম তারা তো কখনো সম্ভব না এভাবে টেস্ট করিয়ে ডাক্তার দেখানো।আমাদের দেশে খাদ্যদ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি থেকে শুরু করে সবকিছুর মূল্য এত বৃদ্ধি যে যা কিছু ধরাছোঁয়ার বাইরে হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।

f.jpg

যখন আমি টেস্টগুলো দিতে গেলাম তখন একজন মহিলা রিসিপশন থেকে জিজ্ঞেস করল একটা কাগজ দিয়ে সেই টেস্টের মূল্য কত। তখন রিসিপশন থেকে তাকে জানালো সেই টেস্টের দাম পড়বে ১০০০ টাকা। তখন মহিলাটা তো একদম হিমশিম খেয়ে গেল আসলে এই ১০০০ টাকা সে কিভাবে ছেড়ে দিবে। কারণ তার কাছে ১ হাজার টাকা মানে সেই অনেক টাকা। হয়তো তার কাছে হাজার টাকা জোগাড় করা অনেকদিন অপেক্ষা করতে হবে। যেহেতু তাদের দিনের খাবার দিনে যোগাড় করে খেতে হয় তার মানে এক হাজার টাকা জোগাড় করতে তাদের অনেক কষ্ট হয়ে যাবে। আমি মহিলা টার দিকে বেশ সমইয় নিয়ে চেয়ে থাকছিলাম। এমন অনেক মানুষ আছেন যারা চিকিৎসার অভাবে মরে যাচ্ছে ভালোভাবে চিকিৎসা নিতে পারছে না অনেক কষ্ট পাচ্ছে।

f3.jpg

আগেকার দিনের চিকিৎসা এবং এখনকার দিনের চিকিৎসার মধ্যে অনেক পার্থক্য চলে এসেছে। একটা সামান্য টেস্টের পরিমাণ অনেক টাকা হয়ে গেছে। যেখানে একটা টেস্ট আগে করাইতে ৫০০ টাকা সেখানে এখন নেই ১৫০০ টাকা করে। কিভাবে দরিদ্র মানুষেরা চিকিৎসা করবে খাওয়া-দাওয়া করবে বুঝতে পারছি না। দোয়া করবেন আমার জন্য যাতে রিপোর্টগুলো সব ঠিক আসে। রিপোর্টগুলো নিয়ে সন্ধ্যায় ডাক্তার দেখাতে যাব। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন আপনারা সবাই ভালো থাকবেন। আমার লেখা এখানে সমাপ্তি করছি আল্লাহ হাফেজ।

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1Eh2qs4cCyucf3FD7ahStNw2cTHPk2QiaQacbQjJNEWnuhyjY1PXfUUMr27ifyD15nkQhFHksgx6bm9BxYLdCkQDMy8JhQrktZHYy6njdzRU4bQ9b1d2xjCdoVzCDDY85pLPq2s7FhKBwPjpuHdozHaReDxEaFH2aYse13zaqogf9utVshuSban6ex1saRA.png

ডিভাইসের নামWiko,T3
মডেলW-V770
Locationকক্সবাজার
ফটোগ্রাফার@samhunnahar
ক্যাটাগরিলাইফ স্টাইল


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

আমার পরিচয়


hira.jpeg

আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার প্রিয় একটি নেশা। আমি বিভিন্ন ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7DiLvzq9baKkST8T1mkhiizFXSFVv2PXDydTeMWpnYK2gToiY733FT9uwSdBSXWz7RnGmzsa8Pr9pGoyYaQFsuS3p.png

New_Benner_ABB1.png

Banner_PUSS1.png

Sort:  
 last month 

আপু সত্যি বর্তমান ডাক্তাররা আসলে কসাই। সত্যি বলতে সাধারণ লোকজনের পক্ষে এমন ভাবে ডাক্তার দেখান মোটেও সম্ভব নয়। তবে হাজার কষ্ট হলেও আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।

 last month 

হ্যাঁ আপু এটা আপনি ঠিক বলছেন শত টাকা খরচ করলেও ডাক্তার দেখিয়ে কোন উপায় থাকে না।

 last month 

সত্যি আপু আগের দিনের চিকিৎসা আর এখনকার দিনের চিকিৎসার মধ্যে অনেক পার্থক্য। এখন একটা পরীক্ষা করতে নেই হাজারের উপরে। কিন্তু আগেকার দিনে হাসপাতালে গেলে প্রায় তিন-চারটা পরীক্ষা দিয়ে এক হাজার টাকা হতো। তারপরেও কিছু করার নেই আপু আমাদের অসুস্থতার জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়া লাগে। আশা করছি আপনার রিপোর্ট গুলো সবই ভালো আসবে। আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল আপু।

 last month 

আগেকার দিনে চিকিৎসার খরচ অনেক কম হতো এখন কিন্তু অনেক বেশি খরচ হয় আপু। রিপোর্টে ভালো এসেছে আপু আমার জন্য দোয়া করবেন।

 last month 

দীর্ঘদিন মায়ের অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে বেরিয়েছি। হাসপাতাল সম্পর্কে যথেষ্ট অবগত রয়েছি। আর বিশেষ করে ক্লিনিক ডায়গনস্টিক সেন্টারগুলো তো আরো। যাইহোক বিস্তারিত তুলে ধরেছেন অনেকে জানার সুযোগ করে দিয়েছেন যে কি ভালো লাগলো।

 last month 

আপনার আম্মুর সুস্থতা কামনা করছি ভাইয়া। দোয়া রইল সব সময়। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.20
JST 0.034
BTC 91530.30
ETH 3127.22
USDT 1.00
SBD 3.07