লাইফস্টাইলঃ-স্বপ্ন সুপার শপে একদিন।
শুভ দুপুর সবাইকে,
আশা করি সকলের দিনকাল বেশ ভালো যাচ্ছে। দিনের শুরুতে যখন সকালটা খুব সুন্দরভাবে শুরু হয় তাহলেই ধরে নেওয়া যায় যে বেশ ভালো কাটে সময় গুলো। আর যখন কোন কারণে সকালটা একটু খারাপ ভাবে শুরু হয় আসলেই দিনটা খুবই খারাপ যায় সেটা আমরা সকলেই এমনটাই বিশ্বাস করি। তবে সেই বিশ্বাসটুকু কার কাছে কি রকম জানিনা। যাক সেদিকে আর যাচ্ছি না। আমিও ভালো আছি সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে। প্রতিনিয়ত ভালো থাকার চেষ্টা করি এবং সবাইকে ভালো রাখার চেষ্টা করি। আমি যখন নিজে ভালো থাকবো তখন সবাইকে ভালো রাখতে পারবো। তাই সব সময় নিজের ভালো লাগা এবং ভালো থাকা নিজেকে নিশ্চিত করতে হবে। এই পৃথিবীতে কেউ কারো ভালো থাকার সুযোগ করে দেই না। সব সময় নিজের ভালোটুকু কিভাবে থাকতে পারি সেই চিন্তা করে আমাদেরকে চলতে হয়।
বন্ধুরা আবারো উপস্থিত হয়েছি নতুন একটি টপিক্স নিয়ে। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো হঠাৎ করেই স্বপ্ন সুপার শপে কেনাকাটা করতে যাওয়ার একটি মুহূর্ত। আপনারা অনেকে জানেন প্রায় সময় শোরুম থেকে আমার কেনাকাটা গুলো করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে বাচ্চাদেরকে নিয়ে আমি একটু ঝামেলায় যেতে চাই না। যদিও আমার খারাপ লাগে শোরুম থেকে কেনাকাটা করতে টাকা একটু বেশি নিয়ে নেই সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু এই গরমে ছোট বাচ্চাদেরকে নিয়ে অপারগ আমি তাই আমাকে বাধ্য হয়ে শোরুমে যেতে হয়। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে বাইরের যে জিনিস শোরুমে সেই জিনিস কিন্তু শোরুমের দাম বেশি নেই বাইরে দাম কম নেই। কিন্তু পার্থক্য কোথায় জানেন? যখন জিনিসটা ব্যবহার করতে যাবেন তখনই বোঝা যাবে যে বাইরের জিনিস এবং শোরুমের জিনিসের মধ্যে পার্থক্য কেমন।
আমি একই জিনিস বাইর থেকে নিয়ে ব্যবহার করেছি আবার শোরুম থেকেও নিয়ে ব্যবহার করেছি। সত্যি বাইরের জিনিসের প্রতি একটু আস্থা কম আমার। কারণ যারা বাইরের জিনিস কিনে ঠকছেন তারাই বুঝতে পারবেন বাইরে জিনিসগুলোকে ভালো ব্রান্ড বলে একদম নকল টা দিয়ে দেয়। কিন্তু শোরুমের মধ্যে কিছুটা হলেও আস্থা রাখা যায় সেই বিষয়ে দিক থেকে। তারপরও মাঝেমধ্যে বাইরে থেকে কেনাকাটা করে থাকি। বাইরের জিনিসগুলো ঘোরাঘুরি করে কিনলে একটু কম দামে পাওয়া যায়। হঠাৎ করে আমাকে আমার মেয়ের বাবা ফোন দিয়ে জানালো বাসায় গেস্ট আসবে। তাও আবার আমাকে জানালো যে বিকেল ৪ টার দিকে। যেহেতু চারটার দিকে জানালো রাতে খাবে তাহলেই বাজার ছিল না তেমন বাসায়।
তাহলেই বুঝতে পারছেন আমি একজন মানুষ কেনাকাটা করে রান্না করাটা কথাটা ডিফিকাল্ট ছিল আমার জন্য। খুব বেশি টেনশনে পড়ে গেলাম কারণ আমরা নতুন বউকে দাওয়াত করেছিলাম। আমার ভাইয়ের ছেলে নৌবাহিনীতে চাকরি করে সেই সবে মাত্র বিয়ে করেছে। যখন তারা কক্সবাজার ঘোরাঘুরি করতে আসলো আপনাদের ভাই শোনলেন তখন উনি জানতে পারলো দাওয়াত করে দিলে। কিন্তু সাথে সাথে আমাকে জানালো না। পরে আমাকে বিকেলে বললেন আমার সাহেব। আমার হাজবেন্ডের বড় ভাইয়ের ছেলে নয়ন। আপনাদের ভাইয়া এনগেজমেন্ট অনুষ্ঠানে গিয়েছিল কিন্তু আমি যায়নি আমার বউ দেখার খুবই শখ ছিল।
তো একদিকে যেহেতু বাসায় দাওয়াত করতেছি সেই দিকে আমার বউ দেখার সুযোগ হয়ে যাবে হি হি হি। বলতে পারেন আমি তাদের ছোট মা। বউয়ের ছোট শাশুড়ি হি হি হি একটু ভাব নিলাম শাশুড়ির ভাব। তাই আপনাদের ভাই পরামর্শ দিল আমাকে স্বপ্নতে গিয়ে মাংসগুলো কিনে আনার জন্য। সোজা চলে গেলাম বাচ্চাদেরকে নিয়ে একটা অটো নিয়ে স্বপ্ন সুপার শপে। যেহেতু সেই দিন আদিলার স্পীক আপে ক্লাস ছিল তা শেষ করে সোজা চলে গেলাম স্বপ্নতে। তো সেখানে গিয়ে দেখলাম মাছ মাংস তেমন ভালো নেই। যেহেতু বিকেল চারটার দিকে হয়ে গেছে। তারপরও যেরকম আছে সেখান থেকে মাংস নিয়ে নিলাম। হাড্ডি ছাড়া মাংস নিলাম এক কিলো ৯৯০ টাকা দিয়ে। মুরগি কিনি নাই মুরগি বাইরের বাজার থেকে কিনেছি। স্বপ্নতে দেশি মুরগি পাওয়া যায় না।
আপনাদের ভাই জানালো আরো কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটা করার জন্য। তো আমি ঘুরে ঘুরে আরো কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কিনলাম একটা ফরচুন বিরিয়ানি চালের পেকেট নিলাম বাসমতি চাল। একটা ময়দার প্যাকেট নিলাম। এরপরে একটা টক দই নিলাম যেহেতু মাংস তে দিব। সে সাথে বাচ্চারা মিষ্টি দই খাবে তাই বাচ্চাদের জন্য মিষ্টি দই নিলাম। এছাড়া ও আরো কিছু টুকটাক কেনাকাটা করলাম। এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে দেখলাম বেশ ভালো লাগে আমার স্বপ্ন সুপার শপে গেলে। বিশাল একটি জায়গাকে কেন্দ্র করে এই সুপার শপ টি স্থাপন করা হয়েছে। ইদানিং দেখলাম স্বপ্ন সুপার শপে মধ্যে কাঁচা বাজার থেকে শুরু করে এখন আবার কাপড়-চোপড়ের আইটেমও দেখা গেল।
তবে এর আগে কয়েকবার গিয়েছিলাম তখন কাপড়-চোপড় দেখা যায় নি। কিন্তু এবারে কাপড়ের একটা কর্ণারও দেখতে পেলাম। এই সুপার শপ থেকে জিনিসগুলো কেনাকাটা করলে একটু দাম বেশি নেই। তারা বাইরে চেয়ে বেশ ভালো দাম নেই বলতে হয়। তবে এইবার একটা জিনিস আমার কাছে খুবই খারাপ লাগছিল সেটা হচ্ছে যে আমি যে ময়দার প্যাকেটটা নিয়ে আনছিলাম সেটা নষ্ট। কারণ এখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ কাস্টমার যায় না। বিশেষ করে খাবারের জিনিস গুলো বাজার থেকে নিলে ভালো হয়। আসলে বাধ্য হয়ে যেতে হয় কারণ এই বিকেল চারটার সময় আমাদের এখানে যে পাশের বাজার আছে সেখানে মাংস পাওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়ে মাংসের জন্য আমাকে স্বপ্ন শোরুমে যেতে হল।
যখন আমি ময়দার প্যাকেট থেকে ময়দা নিয়ে কিছু নাস্তা বানালাম নাস্তা খেতে একদম তিতা হয়ে গেল। পরবর্তীতে আমি ময়দা গুলো যখন জিব্বা তে লাগালাম তখন বুঝতে পারলাম যে ময়দা গুলো নষ্ট। খুব আফসোস হলো কারণ একটা প্যাকেট আমি ২ কেজির নিয়েছিলাম। পুরো প্যাকেটের ময়দা আমাকে ফেলে দিতে হলো। যদিও আমি ময়দা গুলো একটি টিফিন বক্সের মধ্যে নিয়ে রাখছিলাম প্যাকেটটা আমি ফেলে দিয়েছিলাম। আর একটা ময়দার প্যাকেট নিয়ে তাদের শোরুম যাব সেটা আমার পক্ষে সম্ভব ছিলনা। আসলে যাওয়া উচিত ছিল কারণ তারা সুপার শপে খারাপ জিনিস রাখবে আর এত বেশি দাম নেবে আর কাস্টমারদের কে হয়রানি করবে এটা মোটেও উচিত নয়। মাঝেমধ্যে যারা খাদ্য নিয়ে তদারকি করেন তাদের উচিত এই ধরনের সুপার শপ গুলোতে একটু তল্লাসি করে আসা।
তো আপনাদের ভাই শোনার পরে আমাকে বললো, এই ধরনের সুপার শপ থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো না নেওয়া ভালো। বিশেষ করে খাবারের জিনিস। যেসব দোকানে বেচাকেনা বেশি সেই সব দোকান থেকেই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো নিলে ভালো হয়। কারণ লোকাল বাজারে খাবারের জিনিস জমা পড়ে থাকে না। যেসব দোকানে বেচাকেনা বেশি হয় খাদ্যের সেখান থেকে নিলে ফ্রেশ জিনিস বেশি পাওয়া যায়। আশা করি পুরো ব্লগটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে। সময় দিয়ে দেখার জন্য সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি অসংখ্য ধন্যবাদ।
ডিভাইসের নাম | Wiko,T3 |
---|---|
মডেল | W-V770 |
Location | স্বপ্ন সুপার শপ |
ফটোগ্রাফার | @samhunnahar |
ক্যাটাগরি | লাইফ স্টাইল |
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।
আমার পরিচয়
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার প্রিয় একটি নেশা। আমি বিভিন্ন ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
#shwapno-supershop #buyingessentials #lifestyle #amarbanglablog #steemit #steemexclusive #coxsbazar-bangla
আপনি ঠিক বলেছেন ব্র্যান্ডের জিনিসপাতি তো ব্র্যান্ডের মতোই হবে। বাইরের জিনিস আর ব্র্যান্ডে জিনিস একই রকম দেখা গেলেও অনেক ডিফারেন্স। আর হঠাৎ করে এমন মেহমান আসলে একার পক্ষে সব সামলানো মুশকিল। তবে শাশুড়ি হলে বউদের তো একটু খাওয়াতেই হয়। আপনি অনেক কিছু কেনাকাটা করেছেন। ধন্যবাদ আপু সুন্দর কাটানো মূহুর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমার পক্ষে বেশ জটিল হয়ে গেছিলো আপু সেই দিন তবে আপনার ভাইয়া অনেক হেল্প করেছিল। অনেক ধন্যবাদ আপু।
https://twitter.com/nahar_hera/status/1791098478124487018?t=BxIZIa-Xga5VfWOxYL6EcQ&s=19
কেনাকাটা নিয়ে খুব সুন্দর আলোচনা করেছেন আপনি আমাদের মাঝে। অবশ্য বাইরের জিনিস বলুন আর ভেতরের জিনিস বলুন ভেজাল সব জায়গাতেই রয়েছে কম বেশি। যারা অসাধু ব্যবসায়িক দ্বারা সুযোগ পেলেই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। তবে সবকিছুর মাঝ থেকে আমাদের অবশ্যই একটু যাচাই-বাছাই করে কেনাকাটা করা প্রয়োজন হোক সেটা বাইরে অথবা বিশেষ কোনো প্রতিষ্ঠানের মধ্যে।
একদম ঠিক কথা ভাইয়া যাচাই বাছাই ছাড়া কিছু ক্রয় করা মোটেও ভালো কাজ নয়।
এই কথাটা আপনি ঠিকই বলেছেন আপু, জিনিস কেনার পরে আসলে বোঝা যায় যে শোরুমের জিনিস এবং বাইরের জিনিসের পার্থক্যটা ঠিক কোথায়। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো বাইরে থেকে কেনাই ভালো। এই দেখেন, যেমন ময়দা খারাপ হয়ে গেল সুপার শপ থেকে কিনে। যাইহোক, যেহেতু বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন আসছে, এজন্য চাপটা একটু বেশি থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। অনেক ভালো লাগলো আপু, আপনাদের বাজার করার অভিজ্ঞতা জেনে।
একদম ঠিক বলছেন ভাইয়া নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো বাইরে থেকে কিনলে বেশ ভালো পাওয়া যায় যা আমি বুঝতে পেরেছি।
যাক, পরে হলেও এই বিষয়টা যে বুঝতে পেরেছেন, এটাই ভালো ব্যাপার।