লাইফস্টাইলঃ-অফিসিয়াল পিকনিকে একদিন (পর্ব-১)।
হ্যালো বন্ধুরা!
প্রিয় পরিবারের সকল সম্মানিত ব্লগার ভাই ও বোনেরা আসসালামু আলাইকুম। সবাইকে শুভেচ্ছা ও স্বাগতম জানাচ্ছি আমার আজকের নতুন ব্লগিংয়ে। প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি নতুন কোন বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে তুলে ধরার। তাই আজকে আমি আবার উপস্থিত হয়েছি নতুন একটি টপিক্স নিয়ে আশা করি ভালো লাগবে। আমি আজকে যে বিষয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো তা হচ্ছে একটি পিকনিকে কাটানো মুহূর্ত। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের পিকনিকের আয়োজন করা হয়ে থাকে। সেটা পারিবারিকভাবে হোক কিংবা কোন অফিসিয়াল পিক নিতে হোক বেশ ভালো লাগে পিকনিকে যেতে। কারণ পিকনিকে গেলে সবাই মিলে আড্ডা, খেলাধুলা, খাওয়া-দাওয়া, গান সব কিছু মিলিয়ে বেশ সুন্দর সময় যায়। সে সময়ে খুব সুন্দর সুন্দর প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পিকনিকের মুহূর্তটি শেষ হয়।
বেশেষ করে বয়স্করা যেমন খুশি হয় তাতে বাচ্চারা আরো অনেক বেশি খুশি হয়। চলুন তাহলে আমি কোন পিকনিকের কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো নিশ্চয়ই আপনারা এখনো বুঝতে পারেননি। আমি যে পিকনিকের কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো তা হচ্ছে আমার হাজবেন্ডের অফিসে একটি পিকনিকের আয়োজন করা হয়েছিলো। যদিও শীতকালের শেষের দিকে পিকনিক করেছিল। সব ন্যাশনাল স্টাফদের কে নিয়ে এখানে পিকনিকের আয়োজন করা হয়। যেহেতু ইএনএইচসিআর এর আন্ডারে যারা চাকরি করেন সেখানে ইন্টারন্যাশনাল স্টাফ রয়েছে। এই অফিসে পিকনিক করেছিলো কক্সবাজারের হেড অফিসে। সকল ন্যাশনাল স্টাফ দের কে নিয়ে পিকনিকের আয়োজন ছিলো।
বেশ বড়সড়ো করে আয়োজন ছিল পিকনিকের। অনেকদিন ধরে তারা এই পিকনিকের কার্যকলাপ, পরিকল্পনা গুলো সাজিয়েছিলেন। আমাকে আগে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল বাচ্চাদেরকে প্রস্তুতি করার জন্য। সেখানে যেহেতু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন আছে তাই মেয়েদেরকে গান শিখানো এবং কবিতা আবৃত্তি সবকিছু আমাকে প্র্যাকটিস করার জন্য দায়িত্ব দেই মেয়েদের বাবা। তো আমিও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। যেদিন পিকনিক হবে সেদিন সকালে উঠে গেছি। যেহেতু বাচ্চাদের খেলাধুলার ব্যবস্থা ছিল একটু গরমের পরিমাণ বেশি ছিল তাই সকাল সকাল খেলার বিষয়টা শেষ করে নিবে সেই জন্য। রেডি হয়ে চলে গেলাম অফিসের আঙিনায়।
অফিসে ঢুকতে হলে এন্ট্রি দিয়ে ঢুকতে হয় তাই উনাকে কল দিলাম। উনি আমাদেরকে এসে নিয়ে যায়। যেহেতু অফিশিয়াল কিছু কাজকর্ম ছিল তাই মেয়েদের বাবা আগে চলে গেছিলো অফিসে। আমরা অফিসের গেটে যাওয়ার পরেই মেয়ের বাবা এসে আমাদেরকে ভিতরে প্রবেশ করায়। আমি যেতে যেতেই হাড়িভাঙ্গা শুরু হয়ে গেছিলো। মেয়েরা খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করে সব বাচ্চাদেরকে পুরস্কার দেওয়া হয়। যেহেতু একজন বাচ্চাকে দিলে অন্য বাচ্চারা কান্নাকাটি করে সেইজন্য সবাইকে দেওয়ার ব্যবস্থা করছিলো। বাচ্চাদের খেলাধুলার শেষেই বড়দের খেলাধুলা শুরু হয়। এখানে খেলাধুলার বিভিন্ন সেগমেন্টে ভাগ করা হয়েছিলো।
মেয়েদের জন্য আলাদা খেলা এবং পুরুষদের জন্য আলাদা খেলাধুলা ছিলো। আপনারা ফটোগ্রাফির মাধ্যমে হাড়ি ভাঙ্গার কিছু দৃশ্য দেখতে পাচ্ছেন। বেশ উত্তেজনা মুখর একটি পরিবেশ ছিল হাড়িভাঙ্গার সময়। অবশ্যই মেয়েদের জন্য আলাদা ছিলো। এছড়া পুরুষদের জন্য আলাদা ছিলো বেশ ভালো লাগছিল মুহূর্তটি। তবে হাড়ি ভাঙতে গিয়ে হাড়ি ভাঙতে পারি নাই। অনেকের আবার বেশ ভালো আইডিয়া আছে একটা বরিতেই ভেঙে দিছিলো। আর বল নিক্ষেপ ছিল বেশ ভালো লাগছিল খেলতে। আমিও অংশগ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু কথা হচ্ছে যে হাজবেন্ডের অফিসেই খেলাধুলা তার জন্য একটু আনইজি ফিল করছিলাম।
যদি নিজের অফিসে হতো তাহলে একটু ভালো লাগা কাজ করতো। কিন্তু হাজবেন্ডের অফিসে অনেক স্টাফ ছিলো তাই একটু আনইজি ফিল করছিলাম শুধু অংশগ্রহণ করেছিলাম। খেলাধুলা শেষ করে হালকা নাস্তার ব্যবস্থা করা হয়। নাস্তার ব্যবস্থা করার পরে আমরা বসে সবাই কোল্ড ড্রিংকস খাই। ঠান্ডা শরবত, কলা, কেক এবং বিভিন্ন ফ্রুটস এর ব্যবস্থা ছিল। এগুলো খাওয়া দাওয়া করে আমরা বসে ছিলাম কিছুক্ষণ। এদিক ওদিক হাঁটাহাঁটি করছিলাম এবং কিছু ফটোগ্রাফিও নিয়েছিলাম। সেই মুহূর্তে যারা খেলাধুলা শেষ করে তাদেরকে এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সাথে সাথে শেষ করে।
কারণ বিকেল বেলায় অনেকগুলো সেগমেন্ট ছিল সেই জন্য তারা খুব তাড়াহুড়া করছিলেন প্রোগ্রামগুলো দিনের মধ্যে শেষ করে দেওয়ার জন্য। সবাই বেশ ভালো ভালো পুরস্কার পেয়েছিলেন। এরই মধ্যে দুপুর হয়ে যায়। দুপুর হয়ে গেলে খাবারের বিরতি দেওয়া হয়। বিশাল খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলো।হাজবেন্ডের অফিসে ২০০/৩০০ স্টাফ আর তাদের ফ্যামিলি। আসলে এত বড় আয়োজন আপনারা বুঝতে পারছেন। অনেকেই খাওয়া-দাওয়া করতে চলে গেছিল সেই ফাঁকে আমি এদিক ওদিক ঘুরাঘুরি করছিলাম। যেহেতু জায়গাটি বেশ সুন্দর ছিল সেখানে খুব সুন্দর ফুলের বাগান ছিল। ফুলের বাগানে কিছু ঘোরাঘুরি করছিলাম।
ঘোরাঘুরি করার পরেই আমরা যখন খেতে যাই সেখানে সবাই বসে পড়ছিল। যেহেতু অনেক লোকজন তাই একটু দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল। গ্রামে যখন থাকতাম তখন মুরুব্বীদের কাছ থেকে একটা সব সময় কথা শুনতাম। সেটা হচ্ছে যে কোন মেলাতে খাওয়া দাওয়া মানে আগেভাগে যেতে হয় হি হি হি। আর যদি কোন ঝগড়াতে যেতে হয় তাহলে নাকি একদম ঝগড়ার শেষে যেতে হয় হা হা হা। কথাগুলো সত্যি কথা আসলে কোন খাবারের মেলা যখন হয় সেখানে আগে গেলে ভালো ভালো খাবার খাওয়া যায়। যখন লাস্টে যাবেন তখন খাবার একদম ঝরাঝুরা হয়ে যায় হি হি হি।
আর যখন ঝগড়াতে যাবেন যারা ঝগড়া গুলো মিটমাট করতে চায় তারা মারপিট গুলো খেয়ে ফেলে। আর লাস্টে গেলে কি হয় ঘটনার মূল বিষয়গুলো সুন্দরভাবে জানা যায়। ঝগড়ার শুরুতে গেলে সেখানে আপনি বা আমিও সাক্ষী হয়ে যেতে পারি সেজন্য বিপদ। তাই অফিসিয়াল পিকনিকের খাবার দাবারেও এমন অবস্থা ছিল। অবশেষে আমরা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরে একটা সিট পেয়ে গেছিলাম। একটি সিটের মধ্যে প্রায় ১০-১২ জনের মত বসা যাবে এমন বড় করে সিটগুলো বসানো হয়েছিল। তো বন্ধুরা আমরা সবাই বসে পড়েছিলাম।
সেই বিষয়টি নিয়ে আমি আরেকবার আপনাদের সাথে পর্ব শেয়ার করবো। আজকে এতটুকুতে সমাপ্তি করছি। আশাকরি আমার আজকের শেয়ার করা বিষয় আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। সবাইকে ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগ ভিজিট করার জন্য।
ডিভাইসের নাম | Wiko,T3 |
---|---|
মডেল | W-V770 |
Location | UNHCR OFFICE- কক্সবাজার |
ফটোগ্রাফার | @samhunnahar |
ক্যাটাগরি | লাইফ স্টাইল |
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।
আমার পরিচয়
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার প্রিয় একটি নেশা। আমি বিভিন্ন ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
#picnicspot-coxsbazar #officialpicnic #enjoytime #lifestyle #amarbanglablog #steemit #steemexclusive
আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। আপনার শেয়ার করা পোস্ট দেখে খুবই ভালো লাগলো। আপনি দেখছি অফিসিয়াল পিকনিকে বেশ দারুন একটা সময় অতিবাহিত করেছেন। আর পিকনিক মানে যেন আনন্দের একটা অন্য মুহূর্ত। তবে পিকনিকে যে হাড়িভাঙ্গা খেলা হয়েছিল এটা সত্যিই বেশ দারুন একটা খেলা। এই খেলার মাধ্যমে সুন্দর একটা মুহূর্ত উপভোগ করা যায়। আপনি খুব সুন্দর করে হাড়িভাঙ্গা খেলার ক্যামেরা বন্দি করেছেন দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ প্রথম পর্বটি শেয়ার করার জন্য আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
সবাই মিলে অনেক আনন্দ করেছি। সময়টি খুবই মধুর ছিলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সময় দিয়ে পড়ার জন্য।
বেশ অনেক অনেক ভালো লাগলো এত সুন্দর একটি আয়োজন দেখে। আমি যতক্ষণ আপনার এই পোস্ট দেখছিলাম পড়ছিলাম যেন মনে হচ্ছিল আমিও আপনার সাথে একই জায়গায় অবস্থান করছিলাম। আজকে যতগুলো পোস্ট দেখেছি তার মধ্যে যেন অন্যরকম প্রশান্তি খুঁজে পেয়েছি এই পোস্টে। সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
সাবলীল ভাষায় গঠনমূলক মতামত দিয়ে আমাকে প্রতিনিয়ত সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
https://x.com/nahar_hera/status/1798784484592243118?t=2Lh3V1w4EsqB7uRy5Ai9dw&s=19