রাইটিংঃ- "ভালবাসার ডালা"
সবাইকে শুভ দুপুর,
প্রিয় @amarbanglablog কমিউনিটির সকল ব্লগার ভাই বোনেরা আসসালামু আলাইকুম। আমি @samhunnahar আমি আপনাদের সাথে যুক্ত আছি বাংলাদেশের কক্সবাজার শহর থেকে। সত্যি কথা বলতে বন্ধুরা বাংলা ভাষায় ব্লগিং করতে পেরে এত বেশি ভালো লাগে যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমাদের শ্রদ্ধেয় প্রিয় দাদাকে অনেক বেশি শ্রদ্ধা জানাই এমন সুন্দর একটি কমিউনিটি আমাদেরকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। যার মাধ্যমে বাংলা ভাষায় নিজের মনের ভাবগুলো প্রকাশ করতে পারি সবার মাঝে। বন্ধুরা আশা করি আপনারা সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভাল আছি আপনাদের দোয়ায় সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে। প্রতিদিনের মতো আজকেও উপস্থিত হয়ে গেছি আপনাদের সাথে ভালো মন্দ শেয়ার করার জন্য।
আজকে আমি যে বিষয়ে শেয়ার করব তা হচ্ছে “ভালবাসার ডালা” বিষয় নিয়ে। অবশ্যই আপনারা একটু বিভ্রান্তিতে পড়ে যাবেন আসলেই "ভালোবাসার ডালা" মানে কি ভালোবাসা নিয়ে কথা বলবে নাকি আপু। একদম না অবশ্যই খাবারের ডালা দেখেছেন এই খাবারের নাম “ভালবাসার ডালা”। এটা হচ্ছে একটি খাবারের ডালার নাম। তো বন্ধুরা বিস্তারিত শেয়ার করতেছি—---------------
আপনাদেরকে কিছুদিন আগে আমি শেয়ার করেছিলাম বাচ্চার স্কুলে ফুড ফেস্টিভ্যালে গেছিলাম। তো সেখানে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছিলাম। যেহেতু গার্ডিয়ানেরা ভালা মন্দ রান্না করে আনছিল। তবে একটা বিষয় আমাকে খুব বেশি ভাবাচ্ছিল সেটা হচ্ছে যে বেশির ভাগ গার্ডিয়ানরা খাবার গুলো অনলাইন থেকে অর্ডার করে নিয়ে আসলেন। আসলেই বর্তমান সময়ে সবগুলো এত বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলতেছে সবাই। কি দরকার বলেন তো আপনি যতটুকু পারেন ততটুকু নিয়ে আসবেন রান্না করে আনবেন। কিন্তু অনলাইন থেকে খাবার এনে নিজের নামে প্রেজেন্টেশন করার কোন মানে হয় না। তার মানে আপনি অন্যের ক্রিয়েটিভিটি কিনে এনে নিজের ক্রিয়েটিভিটি বলে বিক্রি করে দেবেন। শুধু সেটা না বর্তমান সময়ে সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রে বলেন চাকরি ক্ষেত্রে বলেন সবকিছু এখন টাকার মূলেই হচ্ছে।
এই জিনিসটা আমাকে খুব বেশি কষ্ট দিয়েছে কারণ এখানে যেহেতু ফুড ফেস্টভ্যাল হচ্ছে। এখানে কার খাবারের মান ভালো হলো কে কিভাবে প্রেজেন্টেশন করলো তার উপর ভিত্তি করে একটা প্রাইজ দেওয়া হবে। তো বন্ধুরা অনলাইন থেকে খাবার কিনে এনে অনেকে নিজের নামে প্রেজেন্টেশন করলেন। তার মানে বিষয়টা কেমন হয়ে দাঁড়ালো? অন্যজনের ক্রিয়েটিভিটিকে নিজের নামে চালিয়ে দিলেন। সবচেয়ে বেশি আফসোসের কারণ হচ্ছে যারা বিচার বিবেচনা করলেন আসলে তাদের চোখ কি অন্ধ? যারা ভালো খাবার খেতে পারলো তারা মুগ্ধ হয়ে গেল খাবার দেখে। আর যারা নরমালি খাবার ঘর থেকে কোয়ালিটি পূর্ণ খাবার তৈরি করে নিয়ে গেল কিন্তু তাদের কোন বিচার বিবেচনা করা হলো না।
দুনিয়াটা দিন দিন কেমন জানি হয়ে যাচ্ছে। মনে হয় যে মাঝে মাঝে পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে ঘৃণা করতে ইচ্ছে করে। ঘৃণা করতে ইচ্ছে করে কিছু কিছু মানুষের মন মানসিকতা দেখে। সেই দিন দেখলাম একটা গার্ডিয়ান ৬০০০ টাকা দিয়ে অনলাইন থেকে একটা খাবারের ডালা অর্ডার করে নিল। তো আমি যখন স্কুলে গেলাম তখন আমি দেখে অবাক হয়ে গেলাম। আমি গার্ডিয়ান কে জিজ্ঞেস করলাম ভাবি আপনি এই খাবারটা কিভাবে রেডি করলেন অনেক আইটেম এখানে। তখন উনি আমাকে উত্তর দিয়ে বললেন আমি সারা রাত কাজ করেছি। এমনকি ফজরের আযান শেষ হয়ে গেল এই খাবারের ডালা রেডি করতে করতে। আমি উনাকে প্রতি উত্তরে বললাম আমি তো মনে করেছি ভাবি আপনি এই খাবারটা অনলাইন থেকে অর্ডার করলেন।
উনি আমাকে বললেন না…… তা কি করা হয়! চোখ একদম কপালে তুলে ফেললো কথা গুলো বলার সময়। বললেন এই খাবার আমি নিজেই তৈরি করেছি। এটা কখনো সম্ভব হতে পারে না বাইর থেকে আনা। কারণ খাবারের প্রেজেন্টেশন খাবারের মেনু সব গুলো দেখেই বুঝা যাচ্ছে এই খাবার অনলাইন থেকে অর্ডার করা। তারপরে আমার মেয়ে যখন স্কুল থেকে বাসায় আসলো তখন মেয়ে আমাকে বলল মা এই খাবার নাকি অনলাইন থেকে অর্ডার করা হয়েছে। মেয়েটা ক্লাস থ্রিতে ছিল আমার মেয়ের ক্লাসের। সেই গার্ডিয়ান এই খাবারের ডালাটি অর্ডার করে নিয়ে আসলো। তো স্কুলের শিক্ষকরা খাবার পরিদর্শনের জন্য যখন আসলেন এবং খাবারের ডালাটি দেখে বললেন এই খাবারটা আমাদেরকে খেতে হবে। এই খাবার অনেক ভালো লাগবে খেতে। খাবারের ডালা দারুন হয়েছে টিচারেরা বললেন।
তো সেই ভাবি ও বলল ঠিক আছে স্যার আমি আপনাদের রুমে পাঠিয়ে দেবো। তখন স্যারেরা এই “ভালবাসার ডালা” খাবার খেয়ে মুগ্ধ হয়ে গেল। এবং যখন ফুড ফেস্টিভ্যাল এর লাস্ট মোমেন্টে নাম ঘোষণা করছিলেন তখন ওনার নামটি আগে চলে আসলো। এই ভালবাসার ডালা খেয়ে স্যারেরা একেবারে মুগ্ধ হয়ে গেছিল। তো বন্ধুরা একটা কথা ভেবে দেখেন তো অন্যজনের ক্রিয়েটিভি কে যদি নিজের ক্রিয়েটিভিটি বলে চালিয়ে দেই। অন্য জনের “ভালোবাসার ডালা” কিনে এনে যদি নিজের নামে চালিয়ে দেয় তাহলে দুনিয়াটা কোথায় যেয়ে দাঁড়াল?
আমাদের আশেপাশের এমন কিছু গার্ডিয়ান আছেন যারা আসলেই অতিরিক্ত মাত্রায় বাড়াবাড়ি পর্যায়ে নিয়ে যায়। কোন মানে হয় না একটা সামান্য পুরস্কারের জন্য ৬০০০ টাকা দিয়ে একটা খাবারের ডালা অর্ডার করে খাওয়ানোর কোন মানে হয় না। ভালবেসে রান্না করে খাওয়াতে পারেন। পুরষ্কার জিতার জন্য এমন কেন করতে হলো? আমি মনে করি এরকম সার্টিফিকেটের কোন দরকার নেই। আমি মনে করি এরকম সুনামের কোন প্রয়োজন নেই। আমি মনে করি এটা একদম বাড়াবাড়ি এবং একদম বোকামি। একটা সার্টিফিকেটের জন্য প্রথম স্থানে নামটা রাখার জন্য ৬০০০ টাকা দিয়ে অনলাইন থেকে ভালবাসার ডালা কিনা মানে কতটা নিচু টাইপের আপনারা একটু ভেবে দেখেন। এমনিতে খাওয়ানোর জন্য অর্ডার করতে পারেন।
অনেক বেশি রাগ হয়েছিল আমার কাছে। আসলে এটা নিয়ে স্কুল গ্রুপে কিছু লেখালেখি করতে চেয়েছিলাম। আবার চিন্তা করলাম যাক দরকার নেই। যাদের ভালো মন্দ তারাই বুঝবে। তো বন্ধুরা আপনাদের মতামত একটু জানাবেন আশা করি ভালো লাগবে। কারন বিষয়টি আমার একদম ভালো লাগেনি। আজকে এখানে শেষ করছি আশা করি সকলেই ভালো আছেন এবং ভালো থাকবেন সেই কামনা করি।
ডিভাইসের নাম | Wiko,T3 |
---|---|
মডেল | W-V770 |
Location | কক্সবাজার |
ফটোগ্রাফার | @samhunnahar |
ক্যাটাগরি | রাইটিং |
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।
🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
আপু আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। সত্যি আপু বর্তমান মানুষের কোন মনুষ্যত্বই নেই। আসলে একজন অনেক কষ্ট করে রান্না করলো আর একজন টাকার জোরে খাবার নিয়ে আসলো। সত্যি বর্তমান নিজের ক্রিয়েটিভি কেউ দেখেনা অন্যের জিনিস নিজের নামে চালিয়ে দিতে পারলেই ভালো। আসলে পৃথিবীতে ভালো মানুষের অনেক অভাব। ধন্যবাদ আপু সুন্দর লিখেছেন।
অনেক ধন্যবাদ আপু সময় দিয়ে আমার পোস্ট পড়ার জন্য।
সত্যি ছয় হাজার টাকা দিয়ে অনলাইন থেকে খাবারে ডালা নামের খাবার ক্রয় করা অভিভাবকের জন্য একেবারেই বোকামির কাজ। পুরস্কার জেতার আশায় এরকম কাজে অংশগ্রহণ করা হল মূর্খতার পরিচয় দেওয়া।
খাবারের থালাটা দেখতে ভীষণ ভালো লাগছে আপু। যদি বর্তমান মানুষগুলো এই থালার মত সুন্দর হয়ে থাকতো। তবে কি করার বর্তমান অনেক মানুষ টাকার জোর দেখায় অনেক বেশি। আপনার পোস্ট পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমার কাছে ব্যাপারটা একদম পছন্দ হয়নি আপু।
সত্যি তো অনলাইনে অর্ডার করে ফুড ফ্যাস্টিভ্যালে যোগ দেয়ার কোন মানেই হয় না।এটা তো রিতি মতো অন্যের ক্রিয়েটিভি চুরি করার মতো অপরাধ। ভালোবাসার ডালা টি সত্যি বেশ সুন্দর লাগছে দেখতে।আসলে অনলাইনের খাবার গুলো দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও ঠিক তেমনি মজাদার হয়ে থাকে।তাই হয়তো সবার নজর কেড়েছেও খেতে ভালো লেগেছে। আসলে এমন নামের কি দরকার। এমন পুরস্কারের কি বা দরকার।নিজের মেধা খরচ করে যদি পুরস্কার না পাওয়া যায় তবুও আত্মতৃপ্তি থাকে।ধন্যবাদ আপু পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
হে আপু খাবারের ডালা টি অসাধারণ ছিল। তবে বিষয়টা আমার কাছে পছন্দ হয়নি। যেহেতু কিনে এনে পার্টিসিপেট করলেন তাই।
Twitter
আপনার পুরো গল্পটি পড়ে আমি অনেকটা অবাক হয়ে গেলাম। কিভাবে একটা মানুষ অনলাইন থেকে খাবার নিয়ে নিজের নামে চালিয়ে দিতে পারে। মহিলার অনেক সাহস আছে। আর টিচার কেমন বিচার বিবেচনা না করে শুধু ডেকোরেশন দেখে বা চোখে ভালো লাগলো দেখেই উইনার ঘোষণা করলেন।যাইহোক আপু মন খারাপ করবেন না ছলচাতুরীর ফল একদিন না একদিন উনি ঠিক পাবেন।
অনেক ধন্যবাদ আপু আপনাকে। এখনকার টিচারেরা ও এমন আপু।