ছোটবেলায় বৈশাখী মেলাতে দোলনায় চড়ার এক মজার ঘটনা।
হ্যালো বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন?
আশা করি সকলে ভাল আছেন এই বৃষ্টি বাদল দিনে। হঠাৎ বৃষ্টি হঠাৎ গরম এই প্রকৃতিকে যেন চেনা যায় না। একটু বৃষ্টি হলে কিছুক্ষণ ঠান্ডা হয় আবার যখন রোদ দেয় তখন গরমের জন্য আর থাকা যায় না। হয়তো শীত আসার আগে প্রকৃতিটা এত বেশি উত্তপ্ত হয় আমি মনে করছি। আমিও মোটামুটি ভালো আছি আপনাদের দোয়ায় সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে। তবে বাচ্চারাও একটু অসুস্থ হালকা পাতলা ঠান্ডা লেগেছে। কিন্তু সাথে তো মেডিসিন দিচ্ছি দেখি কি হয়। যদি ভাল না হয় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। দোয়া করবেন আশা করি ভালো হয়ে যাবে। যাক অনেক কথা বলে ফেলেছি আজকের মূল টপিক্স এ চলে যায়।
ছোটবেলায় বৈশাখী মেলাতে দোলনায় চড়ার এক মজার ঘটনা।
আপনাদেরকে আমি এর আগেও বলেছিলাম আমার ছোটবেলা কিংবা শৈশব সবকিছু গ্রামে কেটেছে। গ্রামে বেড়ে উঠা এক চঞ্চল মেয়ে আমি। আমার মধ্যে অনেক চঞ্চলতা ছিল অনেক ছটফটে ছিলাম। বলতে গেলে এত বোকা ছিলাম না একটু চালাক টাইপের ছিলাম হি হি হি। নিজের সুনাম নিজেই করতেছি। তো পুরা গ্রাম জুড়ে ঘুরে বেড়াতাম এদিক আর ওদিক। আপনারা তো জানেন গ্রামের মানুষ বৈশাখী মেলা আসলে অনেক বেশি আনন্দ করে। আমরাও অপেক্ষা করতাম কখন বৈশাখী মেলা আসবে বৈশাখী মেলাতে যাব সবাই মিলে। তো ছোটবেলার একটা স্মৃতি আমার খুব বেশি মনে পড়ে। আমাদের গ্রামের পাশাপাশি সব গ্রামের মধ্যেই এলাকা বেঁধে বৈশাখী মেলা শুরু হতো। চেষ্টা করতাম সব বৈশাখী মেলার মধ্যে যাওয়ার জন্য। যদি অনেক দূরে হয় তারপরও আমরা বৈশাখী মেলা নাম শুনলেই চলে যেতাম সবাই মিলে।
বৈশাখী মেলা মানে তো বুঝতে পারছেন আপনারা গ্রামীণ ঐতিহ্য। যেখানে গ্রামের সব ধরনের খাবার-দাবারের দোকান বসে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের খেলনার দোকান বসে। মাটির তৈরি করা জিনিসের দোকান বসে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। তো আমাদের গ্রাম থেকে দূরে একটি গ্রামের মধ্যে বৈশাখী মেলার আয়োজন হয়েছিল। সবাই তো আমরা অনেক বেশি আনন্দিত। এখন আমাদের সিনিয়র কিছু আপু ছিল সেই সাথে আমরা ছোটরা ও ছিলাম। আমরা সবাই মিলে দল বেঁধে মেলায় চলে গেলাম। মেলায় যাওয়া মানে হচ্ছে যে প্রধান আকর্ষণ দোলনাতে চড়া। কিন্তু আমি তো দোলনায় একদম চড়তে পারি না আমার ভীষণ ভয় হয়।
আপনারা হয়তো শুনলেই হাসবেন এমন একটি মজার ঘটনা আমার জীবনে ঘটেছিল। সত্যি বলতে আমি এখনো দোলনায় চড়তে পারি না। উপরে উঠে যখন নিচে নামে আমার কেমন জানি অনেক ভয় হয়। এমনিতে স্বাভাবিক যেই ছোট দোলনা গুলো আছে সেগুলোতে যদি জোরে দোল দেওয়া হয় তাহলে আমার অনেক ভয় লাগে। তো আমারও ইচ্ছে হয়েছে সবাই যেহেতু দোলনাতে উঠবে। তাই আমিও চেষ্টা করছিলাম দোলনাতে দোলার জন্য। আমার আপু ছিল সে আমাকে তুলে দিল আমার ছোট বান্ধবীদের সাথে। সে তো নিচে দাঁড়িয়ে থাকছে আমরা যখন নেমে যাব আমার বোন এবং আমার বোনের বান্ধবীরা উঠবে। এখন দোলনায় আমাকে তুলে দিল। হয়তো আমার বয়স বেশি না ৭ বছর কিংবা ৮ বছর হবে।
দোলনাতে অনেক মানুষ জন ছিল। কিন্তু গ্রামে যখন বৈশাখী মেলা হয় সেই গ্রামের বৈশাখী মেলাতে অনেক সময় বড় বড় মহিলারাও চুপি চুপি দোলনায় চড়ার জন্য চলে আসতো। ঠিক আমরা যে দোলনাতে উঠছিলাম সেখানে অনেক বড় মেয়েরা ছিল বোরকা পরে মুখ বেঁধে গিয়েছিল। দোলনা যখন চালানো শুরু করে দিল তখন প্রথমে আমার এত ভয় লাগেনি। যখন স্পিড বাড়াই দিল তখন আমার চিৎকার আর চেচামেছি শুরু হয়ে গেল। বললাম আমাকে নামায় দাও! আমাকে নামায় দাও! আমি আর থাকবো না। যখন নিচ থেকে দিয়ে উপর দিক থেকে ঘুরে আসে তখন যেন আমার প্রাণ টা চলে যায় এমন অবস্থা। আমি তো কিছুতেই থাকতে চাইছি না যতই দোলনার স্পিড বাড়ছিল ততই আমি কান্না করছিলাম। কিন্তু সেই দোলনা চালানোর লোকটি আরেক নাছোড়বান্দা কার কথা কে শোনে। হয়তো সেই তার নির্দিষ্ট টাইম শেষ করেই তারপরে দোলনা বন্ধ করবে। যেমন ভাবা তেমনই কাজ হল সেই দোলনা বন্ধ করলো না। আর আমাকেও নামায় দিল না। আমি তো কান্না করতেছি আর কান্না করতেছি। মনে হচ্ছিল লাফ দিয়ে দোলনা থেকে নেমে যাই এমন অবস্থা।
শেষমেশ দোলনা চালানো শেষ আমাকে নামায় দিল। কিন্তু নিচে যারা ছিল তারা সবাই আমার কান্ড দেখেই হাসতে শুরু করল। আর আমার তো আরেক নাজাহাল অবস্থা। যেহেতু আমি কান্না করেছি সেই সাথে আবার সবাই হাসাহাসি করতেছে। রীতিমত আমি একটু লজ্জায় পড়ে গেলাম। কি আর করার ছোট মানুষ এত লজ্জা তজ্জা কিছু বুঝিনা। যখন নামায় দিল তখন আমার আপু বলল এত কান্না করতে হয় নাকি? আমি বললাম আমাকে তো নামায় দিতে বলছি নামিয়ে কেন দিল না? তো আপু বলল শেষ না করে কিভাবে তোমাকে নামায় দিবে।
তো আমার জীবনের অনেক ভয়ঙ্কর একটি ঘটনা ছিল। সেদিন আমি দোলনাতে চড়ে অনেক বেশি ভয় পেয়ে গেছিলাম। এই পর্যন্ত আমি আর কখনো দোলনাতে উঠি নাই। তবে আমার হাজবেন্ড অনেক রিকোয়েস্ট করে বাচ্চাদেরকে নিয়ে দোলনা যাওয়ার জন্য। যখন আমি কোন মেলাতে কিংবা কোন জায়গায় ঘুরতে যাই তখন দোলনায় মেয়েদের সাথে ওদের আব্বু যাই। কিন্তু আমি যাই না। যখন আমি দোলনার কাছাকাছি যাই তখন আমার সেই ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যায়।
সেই সাথে আমার অনেক হাসিও পায়। আবার অনেক ভয় কাজ করে। কিন্তু এই পর্যন্ত আমি দোলনাতে চড়তে পারি নাই কোনদিন। আশা করি আমার সেই শৈশবের ছোটবেলার স্মৃতির কথা আপনাদের পড়ে অনেক বেশি ভালো লাগবে। ধন্যবাদ সবাইকে সময় দিয়ে আমার লেখাগুলো পড়ার জন্য।
লেখার উৎস | বাস্তব অভিজ্ঞতা |
---|---|
ইমেজ সোর্স | ভিক্টিজি ডট কম |
অবস্থান | কক্সবাজার, বাংলাদেশ |
রাইটিং ক্রিয়েটিভিটি | @samhunnahar |
ক্যাটাগরি | জেনারেল রাইটিং |
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।
🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
হা হা আপু চমৎকার ছিল। তবে আপনি যেটার কথা বলছেন সেটা সম্ভবত নাগরদোলা আবার দোলনাও বলা হয়ে থাকে। নাগরদোলায় উঠলে আমার নিজেরও বেশ ভয় করে। তবে বেশ মজাও পাওয়া যায়। গ্রামের দিকে বৈশাখী মেলায় এটা থাকবেই। আপনার ছোটেলার কথা পড়ে বেশ ভালো লাগল। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
নাগরদোলা না ভাইয়া যেগুলো কাঠের ছিল চারদিকে ঘুরে ওই দোলনা গুলো। নাম টা ও ঠিক জানিনা।
https://steemit.com/hive-129948/@samhunnahar/0fc7f0093a768
আপু আমার কাছে তো বেশ মজার লাগে দোলনায় চড়তে। দোলনা যতই জোরে ঘোরাক না কেন, কোন ভয়ই লাগে না। তবে আপনার ভাবি ঠিক আপনার মতই কথা বলে, সে কোনদিন দোলনায় চড়তে চায়না। বরং ছেলে মেয়েদের সাথে আমাকেই চড়তে হয়। যাক দোলনায় চড়ে নাকের পানি চোখের পানি এক করে ফেলেছিলেন আপু হা হা হা । ছোটবেলায় বৈশাখী মেলাতে দোলনায় চড়ার মজার ঘটনাটি পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু, শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
সেই থেকে ভাইয়া আর কখনো দোলনা তে আমি চড়ি নাই।
আপু আপনার মতো আমার ও একই অবস্থা হয়েছিল দোলনায় উঠে ছোটবেলায়। আমি আজ ও দোলনায় চড়িনি।তবে আপু আমাদের বাচ্চারা কিন্তু ভয় পায় না। আপনার পোস্ট পড়ে কিছু সময়ের জন্য সেই ছোটবেলায় ফিরে গিয়েছিলাম। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
এখনের বাচ্চাগুলো খুবই ভয়ংকর তারা দোলনায় ভয় পায় না।
ছোটবেলায় তাহলে দোলনায় উঠে এক ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন দেখছি আসলে দোলনায় যারা প্রথমবার ওঠে তাদের কাছে এরকমই মনে হয়। আমি যখন ছোটবেলায় প্রথমবার দোলনায় উঠেছিলাম ঠিক আপনার মত আমারও একই রকম অবস্থা হয়েছিল একই রকম ভাবে যখন উপর থেকে নিচের দিকে নাম ছিল মনে হচ্ছিল এই মনে হয় দম বের হয়ে যাবে তবে আমি কান্না করি নি। দোলনা থেকে নামার পরে যখন কান্না করছিলেন তখন সবাই হাসাহাসি করছিল এই ব্যাপারটা অনেক বেশি ভালো লেগেছে এবং আমিও খুব হেসেছি হাহাহা। আপনার ছোটবেলার এই ছোট্ট একটি মজার কাহিনী আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আমার কাছে তখন কিন্তু খুবই লজ্জা জনক ছিল ব্যাপার টা যখন অন্যরা হাসাহাসি করছিল হা হা হা।
বৈশাখী মেলা মানেই গ্রামে উৎসব । তাদের একমাত্র আনন্দ ছিল বৈশাখী মেলায় বেড়ানো। তাইতো অনেক বয়স্ক মহিলারাও যেতো বৈশাখী মেলায় ঘুড়তে। আপনি দোলনায় চড়তে ভয় আর আমি পার্কে গেলে সব ধরনের রাইডে চড়তে ভয় পাই ,একমাত্র ট্রেন ছাড়া। ছোট বেলার বেশ মজার একটি স্মৃতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ আপু গ্রামের মধ্যে অনেক আনন্দময় একটি পরিবেশ শুরু হয় তখন।
গ্রামগঞ্জে বৈশাখী মেলা হয়ে থাকে উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আপনার দোলনায় ওঠার ঘটনাটি সত্যিই হাস্যকর ছিল কারণ আমি নিজ চোখে দেখেছি মেয়েরা দোলনায় উঠলে অনেক ভয় পেয়ে আতঙ্কিত হয় চিৎকার চেঁচামে শুরু করে। আমিও অনেকবার উঠেছি মনে হয় ভেতর থেকে সব বেরিয়ে যাচ্ছে সে জন্যই এরকম আতঙ্কিত হয়ে পড়ে মেয়েরা ভালো লাগলো জানতে পেরে।
হ্যাঁ ভাইয়া অনেক চিৎকার করেছিলাম অনেক কান্নাও করেছিলাম হা হা হা।
আসলে আপু আপনার মত আমারও এ দোলনায় চড়তে ভীষণ ভয় লাগে ।আমি দু বছর আগে মেলায় যেয়ে দোলনায় চড়েছিলাম সে কি চিৎকার আর ভয় পেয়েছিলাম তা বলে বোঝানোর না। যা দেখে নিচে দাঁড়িয়ে আমার হাসবেন্ড হাসছিল। যদিও ছোটবেলায় এই ভয়ে দোলনায় চরি নি। বড় বেলায় চড়ে ও দেখলাম ভীষণ ভয় করে । আপনার দোলনায় চড়ার কাহিনী শুনে আমার ও মনে পড়ে গেল । আর আপনার বাচ্চাদের সুস্থতা কামনা করছি ।ধন্যবাদ।
একদম পারিনা আপু যে গুলো স্বাভাবিক গাছের মধ্যে বেধে চড়া হয় সেগুলোতে ও পারিনা হা হা হা।
আপু আপনার মতো দোলনায় উঠতে আমারও খুব ভয় লাগে। আমি এখনো দোলনায় উঠতে পারি না। দোলনায় উঠলে আমার খুব ভয় লাগে এবং মাথা ঘুরায়। ভয় লাগা সত্তেও অনেকবার দোলনায় উঠেছি এবং চিল্লাচিল্লি করেছি। ছোটবেলায় আপনার দোলনায় চড়ার মজার কাহিনী পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু ধন্যবাদ আপনাকে।
দোলনা গুলো যখন নিচের দিকে নামে তখন মনে হয় যে আমি মরে যাচ্ছি।
আরও উঠবেন কখনো দুলনায় আপনি 😂😁। এ ভুল আর কইরেন না! আমি একবার উঠে শিক্ষা পেয়েছিলাম তবে আপনার মতো কান্না করেনি 😁। যাক, ভাগ্নীদের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি আপু 🦋☘️
আর তো কখনো ওটা হয়নি সেইদিন একদম কানে ধরে ছিলাম 🤣।