বদ অভ্যাস || ১০% প্রিয় লাজুক-খ্যাকের🦊 জন্য থাকলো
আসসালামু আলাইকুম
আমি @sajjadsohan from 🇧🇩.
০৭ ই- মার্চ, সোমবার।
আ মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি । আমাদের প্রত্যেকের জীবনে কোনো না কোনো সময়ে একটি করে বদ অভ্যাস তৈরি হয়ে যায়। এই কয়েকদিনে আমার বেশ কয়েকটি বদ অভ্যাস হয়ে গেছে এর ফলে আমি আমার কাজগুলো করতে ব্যর্থ হচ্ছি, এই নিয়েই আজকের আমার পোস্ট ।
কিছুদিন যাবত আমি লক্ষ্য করছি আমার রাতে ঘুম হচ্ছে না, রাতে অন্যরকম একটি নেশা কাজ করে আমার মধ্যে। আগে রাত জাগলে হয়তো আমি ফেইসবুক ব্যবহার করতাম কিংবা কোনো মুভি দেখতাম। কিন্তু এখন আমি যতই রাত জাগি আমি কোন মুভি দেখি না কিংবা কোনো কাজ করিনা। বুঝতে পারছি মনের মধ্যে কোনো অস্থিরতা কাজ করছে। চার দেয়ালের মাঝে এই মন আর থাকতে চায় না। অনেক চেষ্টা করেছি মুভি দেখে মাইন্ড চেঞ্জ করার, কিন্তু কোনোভাবেই আমি মনকে স্থির ভাবে আমার পছন্দের কাজগুলো করতে পারছিনা।
সারারাত না ঘুমিয়ে আমি সকালে ঘুমাই, কিংবা আমি যদি রাতেও ঘুমায় তবুও আমি সকাল থেকে সন্ধ্যা ঘুমের অবস্খাতেই থাকি। শীতের সময় ব্যাপারটি আমার কাছে স্বাভাবিক ছিল, এখন এটি হয়ে গেছে আমার জন্য বিরক্ত করে কি জিনিস, কোনোভাবেই আমি আমার ঘুমকে পূরণ করতে পারছি না। রাত জাগা হচ্ছে অনেক আর সারাদিন ঘুম, না ঘুমালেও মন খিটখিটে হয়ে থাকে এবং ঘুমালেও ওই একই অবস্থা।
এর ফলে যখনই আমি আমার কোন কাজ করতে যাই তখনই আমি আমার মনোযোগ হারিয়ে ফেলি। আমি যখনই ভাবি এই কাজটি আমাকে এখন করতে হবে ঠিক তখনই কেন যেন আমার ফেসবুক ইউটিউব ইত্যাদি তে ইন্টারেস্টিং জিনিস গুলো চলে আসে। এমনি সময় এইগুলো আমার তেমন ভাল লাগে না কিন্তু কাজের সময় কেন জানো এগুলো আমার অতিরিক্ত রকম ভালোলাগা শুরু হয়ে গেছে। খানিকটা অসুস্থ থাকার কারণে বেশিরভাগ সময় বিশ্রামে কাটাচ্ছি আমি ঠিকই, কিন্তু নিজের মন থেকে বুঝতে পারছি আমি একটি চক্রের মধ্যে আটকে যাচ্ছি। ঘুম এবং কম্পিউটার স্ক্রিন আর মোবাইলের স্ক্রিন আবার ঘুম, এর ফলে আমি কাজের প্রতি মনোযোগ কিছুটা হারিয়ে ফেলছি।
আমাদের শরীর হচ্ছে আরামপ্রিয় একটি জিনিস, অর্থাৎ আমরা আমাদের শরীরকে যেই পরিমান আরাম দিব সে আরও পরিমাণ চাইতে থাকবে। অলসতার মধ্যে থাকলে সারাদিন ওই ভাবেই থাকতে ইচ্ছা করবে। সময়ের কাজ সময়ে না করলে আমাদের মধ্যে অলসতা বেশি কাজ করেন। যখন অতিরিক্ত কাজ জমে যায় তখন আমরা আরও ভীত হতে থাকি কাজটি শুরু করার জন্য।
এজন্য আমাদের কোন কাজ ফেলে রাখা উচিত নয় কারণ কাজ যত বৃদ্ধি পাবে শুরু করতে আমাদের ততো বেশি কষ্ট হবে তাই কাজ যত ছোট থাকবে তখনই কাজটিকে শেষ করে ফেলা উচিত। আমাদের জীবনটা এখন হয়ে গেছে অনলাইন ভিত্তিক, আমরা অনলাইনে পড়াশোনা করছি আমাদের বই এখন অনলাইনে পিডিএফ এর মাধ্যমে দেয়া হয়, আমরা ভার্চুয়াল ভাবে ফ্রেন্ডের সাথে আড্ডা দিচ্ছি, আমরা ভার্চুয়াল জিনিস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছে। আমরা বাস্তব জীবন থেকে অনেকটা দূরে সরে যাচ্ছি।
এই বাস্তব জীবন থেকে দূরে সরে যাওয়ার কারণে আমাদের মানসিক কিছু পরিবর্তন হয়ে থাকে, এখন আমরা অল্পতেই রেগে যাই আমাদের মেজাজ সবসময় খিটখিটে হয়ে থাকে, আমরা বড় কোন ভিডিও কিংবা বড় কোন লেখা পড়তে চাই না। আমরা খুব অল্পতেই আমাদের মনোযোগ হারিয়ে ফেলে এবং চেষ্টা করি অন্য কিছুর মধ্যে চলে যাওয়ার।
খেয়াল করে দেখবেন এখন আমরা ছোট ছোট জিনিস বেশি পছন্দ করি বড় কোন আর্টিকেল সেটা যতই জ্ঞানী হোক আমরা একটু এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। আমরা বই পড়তে পছন্দ করছি না এখন অথচ একটা সময় মানুষ বই পড়ে অনেকটা সময় কাটাতো, বই থেকে জ্ঞান অর্জন করত বইয়ের সাথে ছিল আবেগ অনুভূতির একটি সম্পর্ক। কিন্তু এখন আমরা সেই ধৈর্য নিয়ে বই পড়তে পারি না কিংবা ধৈর্য নিয়ে কোন কাজ করতে পারে না অর্থাৎ আমাদের মানসিকভাবে কিছু পরিবর্তন হয়েছে যার ফলে আমরা ধৈর্য এই গুণাবলী কমে যাচ্ছে আমাদের মধ্যে থেকে।
আমার মধ্যেও ধৈর্যের কিছু পরিবর্তন হয়েছে আগে আমি অনেক ধৈর্য্য নিয়ে কোন কিছু কাজ করতে পারতাম, কিন্তু চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী থাকার কারণে কিংবা জীবনটাকে অনলাইন ভিত্তিক করে ফেলার কারণে আমার মধ্যে অধৈর্য জিনিসটি কমে গেছে। তাই নিজের মনের বিরুদ্ধে কোন কিছু করা উচিত নয়।
নিজেকে নিজেরই ভালো বন্ধু হতে হবে, যদি একজন মানুষ নিজেকে বেশি ভালবাসতে না পারে, সে মানুষ কখনোই অন্য মানুষকে ভালবাসতে পারে না। প্রথমে আপনার নিজেকে নিজের বন্ধু হতে হবে নিজের ভালো-মন্দ বুঝতে হবে, কি করলে নিজের মাইন্ড ফ্রেশ হয় কিংবা নিজেকে আরো ডেভলপ করা যায় সেই বিষয়ে ভাবতে হবে।
যদি কোন বস্তু বা কোনো কিছুর জন্য আপনার মাইন্ড বারবার পরিবর্তন হয়, সেই জিনিস একদম পরিহার করা উত্তম। বর্তমান সময়ে আমার কাজের মধ্যে বাধা সৃষ্টি করছে ফেইসবুক। তাই এখন থেকে আমি যখন কাজ করবো তখন ফেসবুক অ্যাপ ওপেন করব না এবং কম্পিউটারেও ফেসবুকের টেপ বন্ধ রাখবো। রাতে ঘুমানোর একটা চেষ্টা করতে হবে এবং দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ একটিভ থাকতে হবে।
এই অভ্যাসগুলো আমার এখন বদ অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাচ্ছে তাই এগুলো কি আমার পরিবর্তন করতে হবে। আমার শরীর অসুস্থ হবার বাহানা দিয়ে আমার মস্তিষ্ককে আরো বেশি কাবু করে ফেলছে। আমার শরীর এবং মস্তিষ্ক লড়াইয়ের মধ্যে শরীর প্রতিবারই জিতে যাচ্ছে, কারণ বদ অভ্যাস থাকে সাপোর্ট করছে।
দূরে কোথাও থেকে ঘুরে আসলে হয়তো আমার ভাল লাগত কিন্তু সেই উপায় আমার নেই, কিছু কারণেই সব সময় আমার এই ইচ্ছেটিই কে মাটিচাপা দিতে হয়। তবে খুব শীঘ্রই আমার মধ্যে কিছু পরিবর্তন দেখতে পারবেন। জীবনটাকে অনেকটা বোরিং করে ফেলেছি। তাই জীবনটাকে কিছুটা রাঙ্গিয়ে তুলবে এবং সেটি আপনাদের মাঝে ভাগ করে দেবো।
আমি সাজ্জাদ সোহান
আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন শিক্ষার্থী। আমি ঢাকাতে বসবাস করি। আমি ট্রাভেল করতে অনেক ভালোবাসি, এছাড়া অবসর সময়ে মুভি দেখি, ফটোগ্রাফি করি, গান করি। আমি একটু চাপা স্বভাবের তাই কম কথা বলি কিন্তু আমি একজন ভালো শ্রোতা। ভালোবাসি নতুন জিনিস শিখতে, মানুষকে ভালবাসি তাই মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
টুইটার লিংক
ভাই আপনার পোস্টটি পড়লাম কি মন্তব্য করব বুঝতে পারছি না। কেননা আমার ক্ষেত্রেও ওই একই সমস্যা বিদ্যমান। সবকিছু ভার্চুয়াল হয়ে গেছে। রাতে ঘুম আসে না তাই গভীর রাত জাগা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। আর পড়ার প্রতি যে মানুষের অনীহা তৈরি হয়েছে আপনার এই পোস্টটি কয়জন মানুষ পড়ে সেটা দেখলেই বুঝতে পারবেন। যাই হোক শুভকামনা রইল আপনার জন্য
জি ভাই আমরা যখন দেখি অনেক লেখা তখন এই পোস্টগুলোকে এড়িয়ে যাই। যেখানে লেখা কম মানুষ সেই পোস্ট গুলোর প্রতি বেশি আকর্ষিত হয়। আমার পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাই কি বলবো বুঝতে পারছিনা আপনার মত আমিও একই ক্রাইসিসে আছি। রাতের মধ্যেই ঘুম যে কি জিনিস সেটা মনে হয় আমি ভুলেই গেছি। মাঝেমধ্যে রাতের মধ্যেই এত বিরক্ত লাগে যে নিজেই নিজের ওপর রাগ হই। মনে হয় এই বুঝি পাগল হয়ে গেলাম 😢
এটা এখন আমাদের রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে, এর ফলে ভবিষ্যৎ যে আমাদের খুব খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে তা বুঝতে পারছি।