শীতের সকালে ভার্সিটির ক্লাস|| ১০% প্রিয় লাজুক-খ্যাকের🦊 জন্য থাকলো by sajjadsohan
আসসালামু আলাইকুম
আমি @sajjadsohan from 🇧🇩.
২৩ই- জানুয়ারি, রবিবার।
আ মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি।শীতের সকালে কিছু অনুভূতি আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব।
শীতের সময় সকালে ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছে করে না। সকালের ঘুমটা যেন আরো বেশি মধুময় ও আরামের হয়ে থাকে। এছাড়াও বৃহস্পতিবার হ্যাংআউটে বেশ রাত করে ঘুমাই, এছাড়া যে খুব আগে ঘুমিয়ে যাই তা নয়। বরাবরই আমার ঘুমাতে বেশ রাত হয়ে যায়।
পরের দিন শুক্রবার আমাকে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে হয়। যেহেতু শুক্রবার ক্লাসের মাঝখানেই নামাজের জন্য বিরতি থাকে, তাই সকালবেলায় একবারে গোসল করে বের হয়ে যেতে হয়। সকালবেলা গোসল করে রেডি হওয়ার অনুভূতিটা অন্য রকম।
আমি রেডি হতে হতে আমার বন্ধু চলে আসে, দুজনেই নাস্তা করিনি এত সকালে বাসায় নাস্তা তৈরি করা হয়নি, আমরা হোটেল থেকে নাস্তা করে নিলাম এবং নাস্তা শেষ করে ঘড়িতে সময় দেখলাম সাতটা বাজে। আমরা রওনা হলাম বনানী যাওয়ার উদ্দেশ্যে।
তখনো বেশ ভালো কুয়াশা রয়েছে, আমরা হাঁটা শুরু করলাম। আমার বাসা থেকে বাজারে আসছে ৪ থেকে ৫ মিনিট সময় লাগে যদি হেঁটে আসি। বাজারে আসতে দেখলাম প্রচুর মানুষের ভিড়। শীতের সকালে ও মানুষ জীবিকার জন্য বের হয়ে যায়। হয়তো তারা ভোর বেলায় বের হয়ে গেছে ব্যবসার কাজের জন্য, শীত কেও হার মানায় যখন একজন মানুষের উপর তার পরিবারের দায়িত্ব থাকে।
এই মানুষগুলো তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য, হয়তো ভোর বেলায় চলে যায় কাঁচামাল সংগ্রহ করার জন্য, এবং সকাল সকাল তারা এগুলো বাজারজাত করে এবং তাদের থেকে পরবর্তীতে আমরা কিনে নিয়ে আসি।
পূর্বে আমাদের এখানে একটি বিশাল বাজার ছিল। কিন্তু মেট্রোরেলের কাজের জন্য, আমাদের এখানকার বাজার উঠিয়ে দেয়া হয়। বাজারে কিছু অংশ রয়ে গেছে, এবং বাকি মানুষরা সকালবেলা এভাবে অস্থায়ীভাবে কয়েক ঘণ্টার জন্য টাটকা সবজি বিক্রি করে। বেশ অনেকখানি জায়গা জুড়ে এই অস্থায়ী বাজারটি বসেন সকালের বেশ কিছু সময়, এবং পরবর্তীতে এই জায়গা গুলো কিছু হকার বসে।
আজকে রাস্তায় বাসের সংখ্যা একটু কম, বিআরটিসি বাসের দেখা তো নাই। বাস বেশিরভাগ বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। তারপরে বঙ্গবন্ধু বাস দিয়ে রওনা হলাম। কন্টাকটারের সাথে একটু তর্ক হল, সকাল আটটার পর থেকে নাকি স্টুডেন্ট ভাড়া নেয়ার আইন রয়েছে, কিন্তু আমাদের ক্লাসে যদি হয় আটটার সময় তাহলে আমরা কয়টায় বের হব। যাক কয়েক মিনিটের মধ্যেই আমরা বনানী পৌঁছে গেলাম। তখনও আমাদের ক্লাস শুরু হতে বেশ কিছু সময় বাকি রয়েছে।
আজকে আমাদের অনলাইন এবং অফলাইন দুইভাবেই ক্লাস হবে। আমরা সরাসরি ভার্সিটিতে ক্লাস করছি। ক্লাস চলাকালীন সময় আমাদেরকে দুইটি সফটওয়্যার এর কথা বলা হয়। যেহেতু সকলের কাছে মোবাইল রয়েছে, তাই মোবাইলের একটি সফটওয়্যার ডাউনলোড করতে বললেন। স্যারের কথা মত আমরা সফটওয়্যার ডাউনলোড করলাম এবং সেই সফটওয়্যার এর খুঁটিনাটি কাজ সম্পর্কে আমাদেরকে ধারণা দেয়া হলো।
প্রথমে আমরা একটি গ্যাস সিলিন্ডারের আকার তৈরি করার চেষ্টা করলাম এই সফটওয়্যার এর মাধ্যমে। খুব সিম্পল একটি অবকাঠামো কিন্তু এটি তৈরি করতে যে সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে খুব ভালোই ভোগান্তি হয়েছে, কারণ সফটওয়্যারটি আমাদের কাছে নতুন।দুইটি ক্লাস করার পর আমাদের একটি লম্বা বিরতি ছিল। আমরা ভার্সিটির মধ্যে ঘোরাঘুরি করলাম। এখানে খেলাধুলা করার জন্য তিন ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে, এটি রেকেট খেলার মাঠ।
আমরা খেলার জন্য সরঞ্জামগুলো খুজছিলাম, যার কাছে খেলার সরঞ্জাম গুলো থাকে সে অসুস্থতার কারণে আসতে পারেনি। তাই আমরা আর খেলতে পারলাম না। আমরা ভার্সিটি থেকে বের হলাম যেহেতু আমাদের বেশ লম্বা একটি বিরতি। আমরা হাঁটতে হাঁটতে বেশ খানিকটা দূরে চলে আসলাম চা খাওয়ার জন্য।
যদিও আমি দুধ চা খাই না, বরাবর রং আমার পছন্দ। কিন্তু ভুল করে দোকানদার বানিয়ে ফেলেছে তাই আর না করলাম না। চা খাচ্ছি এবং আড্ডা দিচ্ছি, যদি ও আড্ডা তেমন জমছে না কারণ এখনো ও আমাদের ভালো করে পরিচয় হয়নি। বাকি ক্লাস গুলো নামাজের পর হবে, তাই ভাবলাম এত সময় আমরা কি করব কিছু সময় ভার্সিটিতে থাকি এবং তারপর বাসায় চলে যাব। চা শেষ করে আমরা ভার্সিটির দিকে রওনা হলাম, যাওয়ার সময় রাস্তায় কিছু ছবি তুললাম।
আমি খেয়াল করলাম আমার ছবি তোলা দেখে, সবাই মোবাইল বের করে ছবি তোলা শুরু করলো। আমি তো তাড়াতাড়ি ছবি তুলে ফেললাম, বাকিরা ছবি তুলতে প্রায় অনেকটা সময় লাগে ফেলছে। ভার্সিটির ভিতরে আসলাম স্টুডেন্টদের কিছু কাজ দেয়ালে টাঙ্গানো ছিল সেগুলো দেখলাম।
আপনারা কি কেউ টাকার গাছ দেখেছেন? আমাদের এখানে টাকার গাছ আছে। আমাদের টাকাগুলো এখানে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। চিন্তার কিছু নেই এগুলো সব কৃত্রিম নোট।
আমি খেয়াল করেছি যখনি আমি মোবাইল বের করে ছবি তুলছি, সবাই মোবাইল বের করে ছবি তোলা শুরু করছে। ব্যাপারটা কেমন যেন লাগলো। তারা কি আমাকে ফলো করছে, নাকি আমার ছবিগুলো নষ্ট করার ধান্দা, যাক মজা করলাম তেমন কোনো বিষয় নয়। কিছু সময়ের জন্য লাইব্রেরীতে বসলাম আমরা।
গত সপ্তাহে একটি বই পড়েছিলাম, তার বাকি অংশ আজ পড়ার জন্যই লাইব্রেরীতে এসেছি, কিছু সময় বই পড়লাম, এবং আস্তে আস্তে নিজেদের মধ্যে গল্প করলাম। আরো অনেক সময় রয়েছে আমাদের ক্লাস হতেন, তাই সবাই বলল আজ আর ক্লাস করবে না বাসায় চলে যাবে। আমি স্যারকে জানালাম আমাদের ক্লাস গুলো অনলাইনে নেয়ার জন্য, লাইব্রেরী থেকে বের হওয়ার সময় দেয়ালে আরো কিছু কারো চিত্র দেখলাম।
তারপর আমরা বাসায় চলে আসি, নামাজ এবং খাওয়া-দাওয়ার পর বাকি ক্লাসগুলো আমরা অনলাইনে করি। আজ এখানেই শেষ করছি, দেখা হবে আবার অন্য ব্লগে। এত সময় নিয়ে আমার পোস্ট পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং আমার জন্য দোয়া করবেন।
আমি সাজ্জাদ সোহান
আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন শিক্ষার্থী। আমি ঢাকাতে বসবাস করি। আমি ট্রাভেল করতে অনেক ভালোবাসি, এছাড়া অবসর সময়ে মুভি দেখি, ফটোগ্রাফি করি, গান করি। আমি একটু চাপা স্বভাবের তাই কম কথা বলি কিন্তু আমি একজন ভালো শ্রোতা। ভালোবাসি নতুন জিনিস শিখতে, মানুষকে ভালবাসি তাই মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
বাহ অসাধারণ একটি পোস্ট ছিল ভাই। তবে আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লাগছে টাকার গাছটা। ঈস সত্যি যদি একটা টাকার গাছ থাকতো। যাইহোক সকালে উঠে ঠাণ্ডা পরিবেশে কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে আমার ক্লাস করার অভ্যাস আছে। আর এই সময়ে চা যেন সবচেয়ে উপযোগী একটি খাবার। আপনার পোস্টের ফটোগ্রাফি গুলো দারুণ ছিল
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্ট পড়ার জন্য, যদি সবার কাছে টাকার গাছ থাকতো তাহলে হয়তো টাকার মূল্যটা কমে যেত। যাইহোক আপনার জন্য রইল শুভকামনা।
শীতের সকালে উঠে স্কুল, কলেজ কিংবা ভার্সিটিতে যেতে ভীষণ কষ্টকর। আপনি তো আজকে ভার্সিটির অনেকগুলো মুহূর্ত আমাদের সাথে তুলে ধরেছেন। আপনার ভার্সিটির পরিবেশটা একদমই অন্যরকম ছিল। এরকম পরিবেশ আমার ভীষণ ভালো লাগে। আর একটা টাকার গাছের ফটোগ্রাফি দিয়েছিলেন। এটি আমার কাছে বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে। সব মিলিয়ে আপনার পুরো পোস্ট অনেক ভালো লেগেছে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মতামত দেওয়ার জন্য এবং আমার পোস্ট দেখার জন্য।